শরণার্থী প্রবেশ ঠেকাতে অভিবাসন নীতি আরও কঠোর করল ফ্রান্স। শরণার্থীদের বৈধভাবে আশ্রয়গ্রহণ ব্যবস্থা আরও কড়াকড়ি করে নতুন কঠোর অভিবাসন আইন পাস করেছে ফ্রান্সের পার্লামেন্টের নিুকক্ষ ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি।
দেশটির পার্লামেন্টে ৬১ ঘণ্টা টানা বিতর্ক শেষে সোমবার নতুন অভিবাসন আইন পাস করা হয়। এ আইনে অবৈধভাবে কেউ ফ্রান্সে প্রবেশ করলে, তাকে এক বছরের কারাদণ্ড দেয়া হবে।
নতুন অভিবাসন বিলে আশ্রয় আবেদন জমা দানের শেষ সময় কমিয়ে আনা হয়েছে, অবৈধ অভিবাসীদের আটক রাখার সম্ভাব্য সময় দ্বিগুণ করা হয়েছে এবং ফ্রান্সে অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে নতুন করে এক বছরের কারাদণ্ড নির্ধারিত হয়েছে।
অভিবাসী ও শরণার্থী অনুপ্রবেশ নিয়ন্ত্রণে আনতে ফরাসি পার্লামেন্টে কয়েকশ’ সংশোধনী প্রস্তাব জমা পড়েছিল। সেখান থেকে বেছে খসড়া বিলের ওপর ভোট হয় গত শনি ও রোববারে।
সেখানে ১৩৯ ভোটের বিপরীতে ২২৮ ভোটে অনুমোদন পেয়েছে নতুন অভিবাসন বিল। ভোট দেয়া থেকে বিরত ছিলেন ২৪ সংসদ সদস্য।
এই আইনকে কঠোর না বলে প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাত্রেঁদ্ধার ক্ষমতাসীন মধ্যপন্থী দল লা রিপাবলিক এন মার্চ (এলআরইএম) বলছে, এটি ফ্রান্সে আশ্রয় আবেদন প্রক্রিয়াকে আরও গতিশীল করবে।
তবে বিরোধীদলীয় নেতা এবং মানবাধিকার সংস্থাগুলোর মতে, নতুন নেয়া ব্যবস্থাগুলো একটু বেশিই কঠোর হয়ে গেছে। এলআরইএমের সদস্য জ্য-মিশেল ক্লেমেন্ত আইনটির বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছিলেন। দলের আরও ১৪ জন ভোটদানে বিরত ছিলেন।
ভোটের পর প্রকাশিত বিবৃতিতে ক্লেমেন্ত বলেন, ‘আমরা এর মধ্য দিয়ে আমাদের সব সময় প্রচার করা সর্বজনীন বার্তাটি বিশ্ব নাগরিকদের কাছে পৌঁছাতে পারছি কিনা, এ ব্যাপারে আমি নিশ্চিত নই।’
ফ্রান্স-অভিবাসন আইন-এমানুয়েল ম্যাত্রেঁদ্ধা মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ আশঙ্কা করছে, আশ্রয় আবেদনের সময়সীমা কমিয়ে ফেললে তা সবচেয়ে বেশি নাজুক অবস্থায় থাকা আশ্রয়প্রার্থীদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। কারণ ওই সময়সীমার মধ্যে আবেদন করতে না পারার সম্ভাবনা তাদেরই বেশি।
সংস্থাটির ফ্রান্সে নিযুক্ত পরিচালক বেনেডিক্ট জেনেরোদ বিবৃতিতে বলেছেন, আরও বেশি কার্যকর আশ্রয় ব্যবস্থা নিশ্চিত করার ছদ্মবেশে আসলে এই বিল এমন কিছু বিষয় আশ্রয় গ্রহণ প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্ত করছে যা বরং সুরক্ষা পাবার সুযোগ ধ্বংস করে দেবে।
বিভিন্ন মহল থেকে বিতর্কিত আইনটি আগামী জুনে ফ্রান্সের পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ সিনেটে আলোচনায় উঠবে।