ঢাকা ১১:১১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ জুলাই ২০২৪, ১০ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
ড. মুহাম্মদ ইউনুসের নামে প্যারিসে রাস্তার নামকরণ: একটি গৌরবময় মুহূর্ত বাংলাদেশে সাধারণ ছাত্র ছাত্রীদের হত্যা ও নির্যাতনের প্রতিবাদে ফ্রান্সের তুলুজে বিশাল সমাবেশ প্যারিসের ঐতিহাসিক রিপাবলিক চত্বরজুড়ে বিক্ষুব্ধ বাংলাদেশ বালাগঞ্জের হাফিজ মাওলানা সামসুল ইসলাম লন্ডনের university of central Lancashire থেকে মাস্টার্স ডিগ্রী অর্জন করলেন বালাগঞ্জে সাংবাদিকদের সাথে উপ-নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী হাজী রফিক আহমদ এর মতবিনিময় দেওয়ানবাজার ইউপি চেয়ারম্যান নাজমুল আলমের পক্ষ থেকে বন্যার্তদের মাঝে খাবার বিতরণ জনকল্যাণ ডেভেলপমেন্ট এসোসিয়েশন ইউকের পক্ষ থেকে উপহার সামগ্রী বিতরণ প্যারিসে অনুষ্ঠিত হলো, ‘রৌদ্র ছায়ায় কবি কন্ঠে কাব্য কথা’ শীর্ষক কবিতায় আড্ডা ফ্রান্স দর্পণ – কমিউনিটি-সংবেদনশীল মুখপত্র এম সি ইন্সটিটিউট ফ্রান্সের সুধী সমাবেশ অনুষ্ঠিত

ইউকে এগ্রিকালচার ভিসা সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য

  • আপডেট সময় ১২:২৯:৪৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০১৯
  • ৯০৩ বার পড়া হয়েছে

Warning: Attempt to read property "post_excerpt" on null in /home/u305720254/domains/francedorpan.com/public_html/wp-content/themes/newspaper-pro/template-parts/common/single_two.php on line 117

ইউকে এগ্রিকালচার ভিসা নিয়ে বেশ কিছুদিন থেকে টেলিফোন কিংবা দেখা হলে প্রথমেই প্রশ্ন ইউকের এগ্রিকালচার ভিসা নিয়ে কিভাবে ইউকে তে আসা যাবে অথবা কিভাবে আবেদন করা যাবে। অনেকে আবার বিভিন্ন জনের কাছ থেকে শুনে ইউকে আসার জন্য পাসপোর্ট জমা দিয়েছেন। কেউ কেউ আবার অনেককে অগ্রিম টাকা পয়সাও দিয়েছেন।

আবার অনেকে বলছেন যে আবেদন করার সময় নাকি ফেব্রুয়ারির শেষ পর্যন্ত এবং এর পরে আর আবেদন করা যাবে না। এই বিষয়টি নিয়ে আসলে একটা মারাত্মক রকমের বিভ্রান্তি রয়েছে আর এই বিভ্রান্তির সুযোগে কেউ কেউ প্রতারিত হচ্ছেন। আমি আজ এই ইউকের এগ্রিকালচার ভিসা নিয়ে পাঠকদের উদ্দেশ্যে লেখার চেষ্টা করব।

আশা করি এই লেখা পড়লে অনেকেরই ইউকের এগ্রিকালচার ভিসা সম্পর্কে কিছু তথ্য পাবেন এবং আপনারা তথ্যগুলো ভালো করে পড়ে নিবেন। বিভ্রান্তি এবং প্রতারণা থেকে মুক্ত থাকবেন।
ইউকে এগ্রিকালচার ভিসা কি:

ইউকে এগ্রিকালচার ভিসা কোন নতুন বিষয় নয়। ১৯৪৫ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত ইউকের এগ্রিকালচার ইন্ডাস্ট্রিতে ইউরোপিয়ান দেশের লোকজন কাজ করতে আসতেন। মূলত রোমানিয়া এবং বুলগেরিয়ার লোকজন এই ভিসা নিয়ে আসতেন। রোমানিয়া এবং বুলগেরিয়া ২০১৩ সালে ইউরোপের অন্তর্ভুক্ত হলে আর এই ভিসার কোন প্রয়োজনীয়তা থাকেনি। বর্তমান ব্রেক্সিট এর কারণে ইউরোপের সাথে বৃটেনের সম্পর্ক না থাকার সম্ভাবনা কারণে এবং ইউরোপিয়ানরা এখন আর আগের মত এই সেক্টরে বিশেষ করে এগ্রিকালচার সেক্টরে তাদের কাজের আর কোনো আগ্রহ তেমন নাই। প্রকারান্তরে ব্রেক্সিট এর কারণে ইউরোপের লোকজন অবাধে আসা-যাওয়ার ভবিষ্যতে সম্ভাবনাও কম। সুতরাং এই সেক্টরে প্রতিবছরই লোকের প্রয়োজন বিধায় বর্তমান হোম সেক্রেটারি সাজিদ জাভিদ সেপ্টেম্বর ২০১৮ সালে নন ইউরোপিয়ান কান্ট্রি থেকে লোকজন আনার চিন্তা করেন। তিনি আগামী দুই বছরের জন্য অর্থাৎ ২০১৯ এবং ২০২০ সালে প্রতি বছর আড়াই হাজার করে লোক আনার ঘোষণা দেন। যেটাকে পাইলোট স্কিম বলা হয়। অর্থাৎ এই দুই বছর লোকজন আসবে এবং যাবে আর এই যাওয়া এবং আসার পরিসংখ্যান এর মধ্যে একটা সিদ্ধান্ত নেয়া হবে যে ভবিষ্যতে কিভাবে এই স্কিমকে স্থায়ী করা যায়। অর্থাৎ এই স্কিম লেবার সংকট নিরসন নয় বরং প্রাথমিকভাবে লেবার সংকট কমিয়ে আনাটা মূল উদ্দেশ্য। আর সেই সাথে স্থায়ী ভাবে লোকের সংকট নিরসনের পদক্ষেপ গ্রহণ।
কিভাবে আসা যাবে:

ইউকে হোম অফিস বর্তমানে দুটি কোম্পানিকে অনুমতি দিয়েছে, যারা এই ভিসায় আসার জন্য স্পন্সর করতে পারবে। এগ্রিকালচার ভিসায় আসার জন্য তাদের স্পনসর্শিপ সার্টিফিকেট লাগবে।

মোট ২৫০০ ভিসার মধ্যে তাদের প্রত্যেককে ১২৫০ টি ভিসা বা স্পনসর্শিপ বরাদ্দ রয়েছে। হোম অফিসের তথ্য উপাত্ত এবং এই কোম্পানিগুলোর তথ্য উপাত্ত ঘাটলে দেখা যাবে তারা নিজেরা ব্যতীত তাদের কোন এজেন্ট আমার চোখে পড়েনি। একটি কোম্পানির ওয়েবসাইটে পরিষ্কারভাবে লিখে দিয়েছেন যে তারা নিজেরাই সরাসরি লোক নিয়োগ করবেন এবং তাদের কোন এজেন্ট নাই। তারা অনুরোধ করেছেন কোন ভাবে যেন কেউ ভিসার জন্য কারো সাথে কোন প্রকার আর্থিক লেনদেন না করেন।
কোন কোন দেশ এই এগ্রিকালচার ভিসা আওতায় আসবে:

যদিও এই স্কিমে নন ইউরোপিয়ান কান্ট্রি থেকে লোক আনার কথা বলা হয়েছে কিন্তু বাস্তবে যে দুটি কোম্পানির কথা আমি বলেছি তারা মূলত তাদের ওয়েবসাইটে ইউক্রেন, মলদোভা এবং রাশিয়া থেকে লোক আনার কথা বলেছেন। তবে তারা বাংলাদেশ, ইন্ডিয়া কিংবা পাকিস্তান অথবা আফ্রিকান কান্ট্রি থেকে যে লোক আনবেন না সেরকম কোনো কিছু বলেননি। তাদের তথ্য গুলো দেখে আমার কাছে মনে হয়েছে তারা মূলত ইউক্রেন, মালডোবা এবং রাশিয়া থেকে হয়তো আপাতত লোক আনার চিন্তা করছেন।
প্রার্থীর যোগ্যতা:

এখনো পর্যন্ত ইউকে এগ্রিকালচার ভিসা রিকোয়ারমেন্ট নিয়ে কোন বিশদ ব্যাখ্যা হোম অফিস থেকে দেওয়া হয়নি। তবে প্রচলিত হোম অফিসের নিয়ম অনুযায়ী পাঠকদের উদ্দেশ্যে কিছুটা ধারণা দেয়া যেতে পারে অর্থাৎ কী কী যোগ্যতার বিষয় হোম অফিস আরোপ করতে পারে।

• প্রার্থীকে অবশ্যই এগ্রিকালচার কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।

• প্রার্থীকে অবশ্যই তার শারীরিক সুস্থতার সার্টিফিকেট প্রদান করতে হবে।

• প্রার্থীকে মোটামুটি একটি লেভেলের ইংলিশ কথা বলার দক্ষতা থাকতে হবে।

• প্রার্থীকে অবশ্যই ইউকে হোম অফিসের নির্ধারিত এজেন্টের কাছ থেকে চাকুরীর অফার লেটার লাগবে।

• প্রার্থীকে অবশ্যই তার বেতন এবং তার চাকুরীর সময়কাল সহ একটি চুক্তিপত্র ভিসা আবেদনের সাথে জমা দিতে হবে।

• প্রার্থীর অতীত ইমিগ্রেশন বৃত্তান্ত এবং তার পারিবারিক বৃত্তান্ত জমা দিতে হবে।

• সর্বোপরি প্রার্থীকে অবশ্যই ৬ মাসের মধ্যে অথবা ৬ মাস উত্তীর্ণের আগে ইউকে থেকে ফেরত যাবেন এই নিশ্চয়তা প্রদান করতে হবে।
ভিসা সংক্রান্ত লেনদেন:

ইউকে হোম অফিস এবং হোম অফিস কর্তৃক নিয়োগকৃত কোম্পানির কাছ থেকে যে সমস্ত ইনফরমেশন পাওয়া গেছে তা থেকে মনে হয়েছে এই এগ্রিকালচার ভিসা কেনাবেচার কোন সুযোগ নেই। যেহেতু এটা একটি আন স্কিল ভিসা সেজন্য সরকার ইতিমধ্যে কিছু নীতিমালা প্রণয়ন করেছেন। যা হলো এই ভিসা নিয়ে যারা আসবে তারা বিনামূল্যে মেডিকেল ইন্সুরেন্স পাবে। তাদের থাকা এবং খাওয়ার নিশ্চয়তা সংশ্লিষ্ট চাকুরীদাতাকে দিতে হবে। সর্বোপরি তাদের ন্যায্য পারিশ্রমিক যাতে সঠিকভাবে পরিশোধ করা যায় এবং তারা যাতে কাজের সন্ধানে এসে প্রতারিত না হয় সেজন্য ইউকে সরকার বিভিন্ন দিক নির্দেশনা ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট কোম্পানিকে প্রদান করেছেন। সুতরাং এই ভিসা নিয়ে যারা আসবেন তারা টাকা দিয়ে আসবেন না বরং এইখান থেকে কাজ করে পারিশ্রমিক নিয়ে যাওয়ার সুযোগ থাকবে।
আবেদনের সময়সীমা:

এখন পর্যন্ত ইউকে এগ্রিকালচার ভিসার বিশদ ব্যাখ্যা হোম অফিস থেকে আসেনি। ভিসা আবেদনের শর্ত নিয়ম কানুন কিছুই প্রকাশিত হয়নি। আমাদের আগামী মার্চ থেকে জুন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে হোম অফিস কি ধরনের শর্ত আরোপ করেন। তাছাড়া সংশ্লিষ্ট কোম্পানি যারা এই ভিসার জন্য কাজ করছেন তারাও এর মধ্যে সবগুলো বিষয় আশা করি পরিষ্কার করতে পারবেন।

আমার এই লেখার উদ্দেশ্য হলো পাঠকদের মধ্যে ইউকের এগ্রিকালচার ভিসা সম্পর্কে একটি সম্যক ধারণা দেওয়া। অতীতের অন্যান্য ভিসার মতো ইউকের এগ্রিকালচার ভিসা নিয়ে যাতে মানুষ বিভ্রান্ত এবং প্রতারিত না হয়। আমার মতে ইউকে এগ্রিকালচার ভিসা একটি গুরুত্বপূর্ণ ভিসা যদি এই ভিসা স্থায়ীভাবে চালু থাকে এবং আমরা যদি এই ভিসার সঠিক ভাবে ব্যবহার করতে পারি তাহলে একদিকে নন ইউরোপিয়ান দেশ থেকে মানুষ কাজের সন্ধানে ইউকে আসার সুযোগ থাকবে আর এর সাথে মানুষ শুধু পারিশ্রমিক হিসেবে রোজগার করবে না বরং এদেশের এগ্রিকালচার সেক্টর থেকে জ্ঞান অর্জন করে নিজ দেশে তা ব্যবহার করতে পারবে।
লেখক:
ব্যারিস্টার আবুল কালাম চৌধুরী
ইমিগ্রেশন এবং ফ্যামিলি ল স্পেশালিস্ট
প্রিন্সিপাল সলিসিটর
কেসি সলিসিটরস
লন্ডন, ইউকে

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

লক ডাউন পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবেলায় ফ্রান্সে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি

যুক্তরাজ্যে করোনার মধ্যেই শিশুদের মাঝে নতুন রোগের হানা

ড. মুহাম্মদ ইউনুসের নামে প্যারিসে রাস্তার নামকরণ: একটি গৌরবময় মুহূর্ত

ইউকে এগ্রিকালচার ভিসা সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য

আপডেট সময় ১২:২৯:৪৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০১৯

ইউকে এগ্রিকালচার ভিসা নিয়ে বেশ কিছুদিন থেকে টেলিফোন কিংবা দেখা হলে প্রথমেই প্রশ্ন ইউকের এগ্রিকালচার ভিসা নিয়ে কিভাবে ইউকে তে আসা যাবে অথবা কিভাবে আবেদন করা যাবে। অনেকে আবার বিভিন্ন জনের কাছ থেকে শুনে ইউকে আসার জন্য পাসপোর্ট জমা দিয়েছেন। কেউ কেউ আবার অনেককে অগ্রিম টাকা পয়সাও দিয়েছেন।

আবার অনেকে বলছেন যে আবেদন করার সময় নাকি ফেব্রুয়ারির শেষ পর্যন্ত এবং এর পরে আর আবেদন করা যাবে না। এই বিষয়টি নিয়ে আসলে একটা মারাত্মক রকমের বিভ্রান্তি রয়েছে আর এই বিভ্রান্তির সুযোগে কেউ কেউ প্রতারিত হচ্ছেন। আমি আজ এই ইউকের এগ্রিকালচার ভিসা নিয়ে পাঠকদের উদ্দেশ্যে লেখার চেষ্টা করব।

আশা করি এই লেখা পড়লে অনেকেরই ইউকের এগ্রিকালচার ভিসা সম্পর্কে কিছু তথ্য পাবেন এবং আপনারা তথ্যগুলো ভালো করে পড়ে নিবেন। বিভ্রান্তি এবং প্রতারণা থেকে মুক্ত থাকবেন।
ইউকে এগ্রিকালচার ভিসা কি:

ইউকে এগ্রিকালচার ভিসা কোন নতুন বিষয় নয়। ১৯৪৫ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত ইউকের এগ্রিকালচার ইন্ডাস্ট্রিতে ইউরোপিয়ান দেশের লোকজন কাজ করতে আসতেন। মূলত রোমানিয়া এবং বুলগেরিয়ার লোকজন এই ভিসা নিয়ে আসতেন। রোমানিয়া এবং বুলগেরিয়া ২০১৩ সালে ইউরোপের অন্তর্ভুক্ত হলে আর এই ভিসার কোন প্রয়োজনীয়তা থাকেনি। বর্তমান ব্রেক্সিট এর কারণে ইউরোপের সাথে বৃটেনের সম্পর্ক না থাকার সম্ভাবনা কারণে এবং ইউরোপিয়ানরা এখন আর আগের মত এই সেক্টরে বিশেষ করে এগ্রিকালচার সেক্টরে তাদের কাজের আর কোনো আগ্রহ তেমন নাই। প্রকারান্তরে ব্রেক্সিট এর কারণে ইউরোপের লোকজন অবাধে আসা-যাওয়ার ভবিষ্যতে সম্ভাবনাও কম। সুতরাং এই সেক্টরে প্রতিবছরই লোকের প্রয়োজন বিধায় বর্তমান হোম সেক্রেটারি সাজিদ জাভিদ সেপ্টেম্বর ২০১৮ সালে নন ইউরোপিয়ান কান্ট্রি থেকে লোকজন আনার চিন্তা করেন। তিনি আগামী দুই বছরের জন্য অর্থাৎ ২০১৯ এবং ২০২০ সালে প্রতি বছর আড়াই হাজার করে লোক আনার ঘোষণা দেন। যেটাকে পাইলোট স্কিম বলা হয়। অর্থাৎ এই দুই বছর লোকজন আসবে এবং যাবে আর এই যাওয়া এবং আসার পরিসংখ্যান এর মধ্যে একটা সিদ্ধান্ত নেয়া হবে যে ভবিষ্যতে কিভাবে এই স্কিমকে স্থায়ী করা যায়। অর্থাৎ এই স্কিম লেবার সংকট নিরসন নয় বরং প্রাথমিকভাবে লেবার সংকট কমিয়ে আনাটা মূল উদ্দেশ্য। আর সেই সাথে স্থায়ী ভাবে লোকের সংকট নিরসনের পদক্ষেপ গ্রহণ।
কিভাবে আসা যাবে:

ইউকে হোম অফিস বর্তমানে দুটি কোম্পানিকে অনুমতি দিয়েছে, যারা এই ভিসায় আসার জন্য স্পন্সর করতে পারবে। এগ্রিকালচার ভিসায় আসার জন্য তাদের স্পনসর্শিপ সার্টিফিকেট লাগবে।

মোট ২৫০০ ভিসার মধ্যে তাদের প্রত্যেককে ১২৫০ টি ভিসা বা স্পনসর্শিপ বরাদ্দ রয়েছে। হোম অফিসের তথ্য উপাত্ত এবং এই কোম্পানিগুলোর তথ্য উপাত্ত ঘাটলে দেখা যাবে তারা নিজেরা ব্যতীত তাদের কোন এজেন্ট আমার চোখে পড়েনি। একটি কোম্পানির ওয়েবসাইটে পরিষ্কারভাবে লিখে দিয়েছেন যে তারা নিজেরাই সরাসরি লোক নিয়োগ করবেন এবং তাদের কোন এজেন্ট নাই। তারা অনুরোধ করেছেন কোন ভাবে যেন কেউ ভিসার জন্য কারো সাথে কোন প্রকার আর্থিক লেনদেন না করেন।
কোন কোন দেশ এই এগ্রিকালচার ভিসা আওতায় আসবে:

যদিও এই স্কিমে নন ইউরোপিয়ান কান্ট্রি থেকে লোক আনার কথা বলা হয়েছে কিন্তু বাস্তবে যে দুটি কোম্পানির কথা আমি বলেছি তারা মূলত তাদের ওয়েবসাইটে ইউক্রেন, মলদোভা এবং রাশিয়া থেকে লোক আনার কথা বলেছেন। তবে তারা বাংলাদেশ, ইন্ডিয়া কিংবা পাকিস্তান অথবা আফ্রিকান কান্ট্রি থেকে যে লোক আনবেন না সেরকম কোনো কিছু বলেননি। তাদের তথ্য গুলো দেখে আমার কাছে মনে হয়েছে তারা মূলত ইউক্রেন, মালডোবা এবং রাশিয়া থেকে হয়তো আপাতত লোক আনার চিন্তা করছেন।
প্রার্থীর যোগ্যতা:

এখনো পর্যন্ত ইউকে এগ্রিকালচার ভিসা রিকোয়ারমেন্ট নিয়ে কোন বিশদ ব্যাখ্যা হোম অফিস থেকে দেওয়া হয়নি। তবে প্রচলিত হোম অফিসের নিয়ম অনুযায়ী পাঠকদের উদ্দেশ্যে কিছুটা ধারণা দেয়া যেতে পারে অর্থাৎ কী কী যোগ্যতার বিষয় হোম অফিস আরোপ করতে পারে।

• প্রার্থীকে অবশ্যই এগ্রিকালচার কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।

• প্রার্থীকে অবশ্যই তার শারীরিক সুস্থতার সার্টিফিকেট প্রদান করতে হবে।

• প্রার্থীকে মোটামুটি একটি লেভেলের ইংলিশ কথা বলার দক্ষতা থাকতে হবে।

• প্রার্থীকে অবশ্যই ইউকে হোম অফিসের নির্ধারিত এজেন্টের কাছ থেকে চাকুরীর অফার লেটার লাগবে।

• প্রার্থীকে অবশ্যই তার বেতন এবং তার চাকুরীর সময়কাল সহ একটি চুক্তিপত্র ভিসা আবেদনের সাথে জমা দিতে হবে।

• প্রার্থীর অতীত ইমিগ্রেশন বৃত্তান্ত এবং তার পারিবারিক বৃত্তান্ত জমা দিতে হবে।

• সর্বোপরি প্রার্থীকে অবশ্যই ৬ মাসের মধ্যে অথবা ৬ মাস উত্তীর্ণের আগে ইউকে থেকে ফেরত যাবেন এই নিশ্চয়তা প্রদান করতে হবে।
ভিসা সংক্রান্ত লেনদেন:

ইউকে হোম অফিস এবং হোম অফিস কর্তৃক নিয়োগকৃত কোম্পানির কাছ থেকে যে সমস্ত ইনফরমেশন পাওয়া গেছে তা থেকে মনে হয়েছে এই এগ্রিকালচার ভিসা কেনাবেচার কোন সুযোগ নেই। যেহেতু এটা একটি আন স্কিল ভিসা সেজন্য সরকার ইতিমধ্যে কিছু নীতিমালা প্রণয়ন করেছেন। যা হলো এই ভিসা নিয়ে যারা আসবে তারা বিনামূল্যে মেডিকেল ইন্সুরেন্স পাবে। তাদের থাকা এবং খাওয়ার নিশ্চয়তা সংশ্লিষ্ট চাকুরীদাতাকে দিতে হবে। সর্বোপরি তাদের ন্যায্য পারিশ্রমিক যাতে সঠিকভাবে পরিশোধ করা যায় এবং তারা যাতে কাজের সন্ধানে এসে প্রতারিত না হয় সেজন্য ইউকে সরকার বিভিন্ন দিক নির্দেশনা ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট কোম্পানিকে প্রদান করেছেন। সুতরাং এই ভিসা নিয়ে যারা আসবেন তারা টাকা দিয়ে আসবেন না বরং এইখান থেকে কাজ করে পারিশ্রমিক নিয়ে যাওয়ার সুযোগ থাকবে।
আবেদনের সময়সীমা:

এখন পর্যন্ত ইউকে এগ্রিকালচার ভিসার বিশদ ব্যাখ্যা হোম অফিস থেকে আসেনি। ভিসা আবেদনের শর্ত নিয়ম কানুন কিছুই প্রকাশিত হয়নি। আমাদের আগামী মার্চ থেকে জুন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে হোম অফিস কি ধরনের শর্ত আরোপ করেন। তাছাড়া সংশ্লিষ্ট কোম্পানি যারা এই ভিসার জন্য কাজ করছেন তারাও এর মধ্যে সবগুলো বিষয় আশা করি পরিষ্কার করতে পারবেন।

আমার এই লেখার উদ্দেশ্য হলো পাঠকদের মধ্যে ইউকের এগ্রিকালচার ভিসা সম্পর্কে একটি সম্যক ধারণা দেওয়া। অতীতের অন্যান্য ভিসার মতো ইউকের এগ্রিকালচার ভিসা নিয়ে যাতে মানুষ বিভ্রান্ত এবং প্রতারিত না হয়। আমার মতে ইউকে এগ্রিকালচার ভিসা একটি গুরুত্বপূর্ণ ভিসা যদি এই ভিসা স্থায়ীভাবে চালু থাকে এবং আমরা যদি এই ভিসার সঠিক ভাবে ব্যবহার করতে পারি তাহলে একদিকে নন ইউরোপিয়ান দেশ থেকে মানুষ কাজের সন্ধানে ইউকে আসার সুযোগ থাকবে আর এর সাথে মানুষ শুধু পারিশ্রমিক হিসেবে রোজগার করবে না বরং এদেশের এগ্রিকালচার সেক্টর থেকে জ্ঞান অর্জন করে নিজ দেশে তা ব্যবহার করতে পারবে।
লেখক:
ব্যারিস্টার আবুল কালাম চৌধুরী
ইমিগ্রেশন এবং ফ্যামিলি ল স্পেশালিস্ট
প্রিন্সিপাল সলিসিটর
কেসি সলিসিটরস
লন্ডন, ইউকে