ভয়ঙ্কর করোনাভাইরাস বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে মহামারি আকারে। এই ভাইরাসকে থামাতে না পেরে ভয় আর আতঙ্কে কাঁপছে দুনিয়া। করোনা আঘাত হেনেছে বাংলাদেশেও। ফলে সারাদেশের মানুষের মধ্যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে।
এই উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা সিলেটের মানুষের মধ্যে অনেক বেশি। সিলেট প্রবাসী অধ্যুষিত অঞ্চল। করোনাভাইরাস বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ার পরও শত শত সিলেটি প্রবাসী দেশে ফিরেছেন। যুক্তরাজ্য, ইতালি, সৌদিআরব, আরব আমিরাত প্রভৃতি দেশ থেকে এসেছেন তারা। ফলে তাদের মাধ্যমে সিলেট তথা দেশে করোনাভাইরাস এলো কিনা, এ নিয়ে অনেকেই শঙ্কিত।
কিন্তু প্রবাস থেকে ফেরা কিংবা কারো মধ্যে করোনাভাইরাসের লক্ষণ দেখা দিলে নিশ্চিত হওয়ার জন্য পরীক্ষা করার কোনো কিট নেই সিলেটে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সিলেটের এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালসহ কোনো সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালেই করোনাভাইরাস পরীক্ষার কিট নেই।
জানা গেছে, সিলেটে কারো মধ্যে করোনাক্রান্ত হওয়ার কোনো লক্ষণ দেখা গেলে তাকে শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়। এখানে ১০০ শয্যার আইসোলেশন ইউনিট আছে। কয়েক দিন আগে কানাইঘাটের এক যুবক, যিনি আরব আমিরাত থেকে দেশে ফিরেছেন, তার মধ্যে করোনাক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ দেখা গেল এই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু তিনি আসলেই করোনাক্রান্ত কিনা, তা জানতে তার রক্তের নমুনা পাঠানো হয় ঢাকায়। কেননা, সিলেটের কোনো হাসপাতালেই করোনাভাইরাস পরীক্ষার কোনো কিট নেই।
ওই যুবকের রক্তের নমুনা পরীক্ষা করা হয় জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউটে (আইইডিসিআর)। তবে পরীক্ষায় তার শরীরে করোনাভাইরাস পাওয়া যায়নি।
সচেতন সমাজের প্রতিনিধিরা বলছেন, সিলেটে করোনাভাইরাস পরীক্ষা করানোর মতো কিট না থাকা অবশ্যই খারাপ খবর। এই ভাইরাস বাংলাদেশে যদি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে, তখন তাৎক্ষণিক পরীক্ষার জন্য শুধু সিলেটই নয়, দেশের সব জেলায় সব হাসপাতালে এ কিট থাকা প্রয়োজন। কেননা, সিলেট থেকে রক্তের নমুনা ঢাকায় পাঠিয়ে পরীক্ষা করিয়ে আনা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. হিমাংশু লাল রায় সিলেটভিউকে বলেন, ‘আপাতত ঢাকায় কেন্দ্রীয়ভাবে করোনাভাইরাসের পরীক্ষা করা হচ্ছে। তবে সিলেটেও পরীক্ষা করার কিট প্রয়োজন। আমরা আগামীকাল বুধবার সকালে এ বিষয়ে ঢাকায় কথা বলবো।’