ঢাকা ০২:৪৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
ড. মুহাম্মদ ইউনুসের নামে প্যারিসে রাস্তার নামকরণ: একটি গৌরবময় মুহূর্ত বাংলাদেশে সাধারণ ছাত্র ছাত্রীদের হত্যা ও নির্যাতনের প্রতিবাদে ফ্রান্সের তুলুজে বিশাল সমাবেশ প্যারিসের ঐতিহাসিক রিপাবলিক চত্বরজুড়ে বিক্ষুব্ধ বাংলাদেশ বালাগঞ্জের হাফিজ মাওলানা সামসুল ইসলাম লন্ডনের university of central Lancashire থেকে মাস্টার্স ডিগ্রী অর্জন করলেন বালাগঞ্জে সাংবাদিকদের সাথে উপ-নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী হাজী রফিক আহমদ এর মতবিনিময় দেওয়ানবাজার ইউপি চেয়ারম্যান নাজমুল আলমের পক্ষ থেকে বন্যার্তদের মাঝে খাবার বিতরণ জনকল্যাণ ডেভেলপমেন্ট এসোসিয়েশন ইউকের পক্ষ থেকে উপহার সামগ্রী বিতরণ প্যারিসে অনুষ্ঠিত হলো, ‘রৌদ্র ছায়ায় কবি কন্ঠে কাব্য কথা’ শীর্ষক কবিতায় আড্ডা ফ্রান্স দর্পণ – কমিউনিটি-সংবেদনশীল মুখপত্র এম সি ইন্সটিটিউট ফ্রান্সের সুধী সমাবেশ অনুষ্ঠিত

করোনা: বাসায় থাকলে শ্রমিকদের টাকা দেবে ইউরোপ

  • আপডেট সময় ১০:৫৫:৪৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ৮ মার্চ ২০২০
  • ১১০ বার পড়া হয়েছে

ইউরোপকে অনেক সময় তাদের সামাজিক নীতির জন্য উদারতার কেন্দ্র হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কিন্তু বিশ্বের বিভিন্ন দেশ যখন প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে হিমশিম খাচ্ছে তখন ইউরোপের শ্রমিকবান্ধব নীতি ও সামাজিক কর্মসূচি ভাইরাসটির আতঙ্কে অর্থনৈতিক মন্দা ঠেকাতে শক্তিশালী টিকা হিসেবে কাজ করবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। ভাইরাসে আক্রান্ত সন্তানকে কোয়ারেন্টাইনে রাখার ব্যয় বহন করতে মজুরি সঞ্চয়ে রাখা, আক্রান্ত হওয়ার আতঙ্কে কাজে যোগ না দেওয়ার অধিকার ভোগ করার সুযোগ এবং ছয় মাসের অসুস্থতার ছুটি পাওয়া যাবে ইউরোপের সামাজিক নীতির আওতায়।

ইউরোপের সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার আওতায় অসুস্থ হলে বড় ধরনের বিল পরিশোধের আশঙ্কা থাকে না। কারণ গুরুতর মহামারীর সময়ে এর আওতায় ভোক্তাদের ব্যয়ের জন্য আর্থিক সহযোগিতা দেওয়া হয়।

লন্ডনের অক্সফোর্ড ইকনোমিক্সের অর্থনীতিবিদ অ্যাঞ্জেল তালাভেরা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে হলে আমি অনেক উদ্বেগে থাকতাম, না জানি কত বিল আসত। ইউরোপীয় হিসেবে আমাদের মাথায় এই চিন্তা নেই।

ইউরোপীয় দেশগুলো কর্মীদের জন্য জরুরি অসুস্থতার ছুটির জন্য তহবিল বরাদ্দ করছে এবং ছোট ছোট কোম্পানিগুলোকে টিকে থাকতে সহযোগিতা করছে।

বৃহস্পতিবার ইতালি ঘোষণা দিয়েছে, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়া ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও পরিবারকে সহযোগিতায় ৭৫০ কোটি ইউরো বরাদ্দ করা হবে। এর আগে গত সপ্তাহে আরও ৯০ লাখ ইউরো বরাদ্দের ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল।

ইউরোপের বেশিরভাগ দেশে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান তাদের কর্মীদের মজুরিসহ অসুস্থতার ছুটি দিতে বাধ্য। জার্মানি, ফ্রান্স, ডেনমার্ক ও নেদারল্যান্ডসে অন্তত ছয় সপ্তাহের অসুস্থতার ছুটিতে শ্রমিকদের পূর্ণ মজুরি দেওয়া বাধ্যতামূলক। শ্রমিকরা অসুস্থবোধ করলে বা কোয়ারেন্টাইনে থাকলে অথবা নিয়োগ কর্তা যদি তাদের বাসায় থাকতে বলেন তাহলে এই পূর্ণ মজুরি পাবেন তারা।

ফ্রান্সে শ্রমিকরা কাজে যোগ না দিয়ে বাসায় থাকতে পারেন যদি তারা মনে করেন কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা ঝুঁকি রয়েছে। এক্ষেত্রে নিয়োগকর্তা তাদের মজুরি কর্তন বা কোনও শাস্তি দিতে পারবেন না। গত সপ্তাহের শুরুতে প্যারিসের ল্যুভর জাদুঘরে কর্মীরা দর্শণার্থীদের মাধ্যমে ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার আতঙ্কে কাজে যোগ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। কর্তৃপক্ষ এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করলেও তা থেকে শ্রমিকদের সরাতে পারেনি। কর্তৃপক্ষ স্বাস্থ্য নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নতি করা হয়েছে ঘোষণা দিলে তিনদিন পর বৃহস্পতিবার শ্রমিকরা কাজে যোগ দেন।

ফ্রান্সের অর্থমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছেন, ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে আক্রান্ত বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানকে আংশিক বেকারত্ব সুবিধা ও রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগ ব্যাংক বিপিআই ফ্রান্স থেকে সহজ শর্তে ঋণ দেওয়া হবে। এছাড়া ভাইরাসের বিস্তারে দেশটির সরকারি ঠিকাদাররা সরবরাহ নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হলে তাদের জরিমানার মুখে পড়তে হবে না। এছাড়া দেশটিতে শ্রমিকরা দেরিতে কর পরিশোধ করতে পারবেন।

স্পেনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আর্থিক পদক্ষেপ নেওয়ার মতো পরিস্থিতি এখনও আসেনি। জার্মানির অর্থমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছেন, কঠিন অর্থনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যে থাকলেও ভাইরাসে বিস্তার হলে আর্থিক পদক্ষেপ নেওয়া হবে। ডেনমার্কে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অভিভাবকরা ১৮ বছরের কম বয়সী সন্তান গুরুতর অসুস্থ হলে ৫২ সপ্তাহ পর্যন্ত ছুটি নিতে পারবেন।

ব্রিটেনের নিয়োগ কর্তাদের স্বজন বা শিশু অসুস্থ হলে তাৎক্ষণিক ছুটি দিতে নিয়ম জারি করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ঘোষণা দিয়েছেন, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত বা সন্দেহজনক হলে প্রথম দিন থেকেই বাধ্যতামূলক অসুস্থতার ছুটি কার্যকর হবে। 

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

লক ডাউন পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবেলায় ফ্রান্সে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি

যুক্তরাজ্যে করোনার মধ্যেই শিশুদের মাঝে নতুন রোগের হানা

ড. মুহাম্মদ ইউনুসের নামে প্যারিসে রাস্তার নামকরণ: একটি গৌরবময় মুহূর্ত

করোনা: বাসায় থাকলে শ্রমিকদের টাকা দেবে ইউরোপ

আপডেট সময় ১০:৫৫:৪৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ৮ মার্চ ২০২০

ইউরোপকে অনেক সময় তাদের সামাজিক নীতির জন্য উদারতার কেন্দ্র হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কিন্তু বিশ্বের বিভিন্ন দেশ যখন প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে হিমশিম খাচ্ছে তখন ইউরোপের শ্রমিকবান্ধব নীতি ও সামাজিক কর্মসূচি ভাইরাসটির আতঙ্কে অর্থনৈতিক মন্দা ঠেকাতে শক্তিশালী টিকা হিসেবে কাজ করবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। ভাইরাসে আক্রান্ত সন্তানকে কোয়ারেন্টাইনে রাখার ব্যয় বহন করতে মজুরি সঞ্চয়ে রাখা, আক্রান্ত হওয়ার আতঙ্কে কাজে যোগ না দেওয়ার অধিকার ভোগ করার সুযোগ এবং ছয় মাসের অসুস্থতার ছুটি পাওয়া যাবে ইউরোপের সামাজিক নীতির আওতায়।

ইউরোপের সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার আওতায় অসুস্থ হলে বড় ধরনের বিল পরিশোধের আশঙ্কা থাকে না। কারণ গুরুতর মহামারীর সময়ে এর আওতায় ভোক্তাদের ব্যয়ের জন্য আর্থিক সহযোগিতা দেওয়া হয়।

লন্ডনের অক্সফোর্ড ইকনোমিক্সের অর্থনীতিবিদ অ্যাঞ্জেল তালাভেরা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে হলে আমি অনেক উদ্বেগে থাকতাম, না জানি কত বিল আসত। ইউরোপীয় হিসেবে আমাদের মাথায় এই চিন্তা নেই।

ইউরোপীয় দেশগুলো কর্মীদের জন্য জরুরি অসুস্থতার ছুটির জন্য তহবিল বরাদ্দ করছে এবং ছোট ছোট কোম্পানিগুলোকে টিকে থাকতে সহযোগিতা করছে।

বৃহস্পতিবার ইতালি ঘোষণা দিয়েছে, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়া ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও পরিবারকে সহযোগিতায় ৭৫০ কোটি ইউরো বরাদ্দ করা হবে। এর আগে গত সপ্তাহে আরও ৯০ লাখ ইউরো বরাদ্দের ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল।

ইউরোপের বেশিরভাগ দেশে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান তাদের কর্মীদের মজুরিসহ অসুস্থতার ছুটি দিতে বাধ্য। জার্মানি, ফ্রান্স, ডেনমার্ক ও নেদারল্যান্ডসে অন্তত ছয় সপ্তাহের অসুস্থতার ছুটিতে শ্রমিকদের পূর্ণ মজুরি দেওয়া বাধ্যতামূলক। শ্রমিকরা অসুস্থবোধ করলে বা কোয়ারেন্টাইনে থাকলে অথবা নিয়োগ কর্তা যদি তাদের বাসায় থাকতে বলেন তাহলে এই পূর্ণ মজুরি পাবেন তারা।

ফ্রান্সে শ্রমিকরা কাজে যোগ না দিয়ে বাসায় থাকতে পারেন যদি তারা মনে করেন কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা ঝুঁকি রয়েছে। এক্ষেত্রে নিয়োগকর্তা তাদের মজুরি কর্তন বা কোনও শাস্তি দিতে পারবেন না। গত সপ্তাহের শুরুতে প্যারিসের ল্যুভর জাদুঘরে কর্মীরা দর্শণার্থীদের মাধ্যমে ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার আতঙ্কে কাজে যোগ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। কর্তৃপক্ষ এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করলেও তা থেকে শ্রমিকদের সরাতে পারেনি। কর্তৃপক্ষ স্বাস্থ্য নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নতি করা হয়েছে ঘোষণা দিলে তিনদিন পর বৃহস্পতিবার শ্রমিকরা কাজে যোগ দেন।

ফ্রান্সের অর্থমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছেন, ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে আক্রান্ত বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানকে আংশিক বেকারত্ব সুবিধা ও রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগ ব্যাংক বিপিআই ফ্রান্স থেকে সহজ শর্তে ঋণ দেওয়া হবে। এছাড়া ভাইরাসের বিস্তারে দেশটির সরকারি ঠিকাদাররা সরবরাহ নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হলে তাদের জরিমানার মুখে পড়তে হবে না। এছাড়া দেশটিতে শ্রমিকরা দেরিতে কর পরিশোধ করতে পারবেন।

স্পেনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আর্থিক পদক্ষেপ নেওয়ার মতো পরিস্থিতি এখনও আসেনি। জার্মানির অর্থমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছেন, কঠিন অর্থনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যে থাকলেও ভাইরাসে বিস্তার হলে আর্থিক পদক্ষেপ নেওয়া হবে। ডেনমার্কে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অভিভাবকরা ১৮ বছরের কম বয়সী সন্তান গুরুতর অসুস্থ হলে ৫২ সপ্তাহ পর্যন্ত ছুটি নিতে পারবেন।

ব্রিটেনের নিয়োগ কর্তাদের স্বজন বা শিশু অসুস্থ হলে তাৎক্ষণিক ছুটি দিতে নিয়ম জারি করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ঘোষণা দিয়েছেন, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত বা সন্দেহজনক হলে প্রথম দিন থেকেই বাধ্যতামূলক অসুস্থতার ছুটি কার্যকর হবে।