ঢাকা ০৩:৩৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫, ৬ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
ফ্রান্সে লায়েক আহমদ তালুকদারের পিতার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত অখন্ড বাংলাদেশ আন্দোলনের প্রধান হাসনাত আরিয়ান খানকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ ফ্রান্সে বিশ্ব স্বজন ফাউন্ডেশনের ১ যুগপূর্তি উদযাপন বালাগঞ্জে জামালপুর তোহফা ফাউন্ডেশনের ২০২৫ সালের ক্যালেন্ডার উন্মোচন ফ্রান্স বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এম এ তাহেরকে প্যারিস বিমানবন্দরে ফুলেল অভ্যর্থনা দেওয়ানবাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকের সম্মাননা ও প্রয়াত শিক্ষকদের স্মরণে দোয়া মাহফিল সীমান্ত হত্যা বন্ধে লণ্ডনে ইন্ডিয়ান হাইকমিশন ঘেরাও কর্মসূচি পালিত ফ্রান্সে গহরপুরবাসীর প্রথম সামাজিক সংগঠন ‘গহরপুর এসোসিয়েশন ইন ফ্রান্স’-এর আত্মপ্রকাশ সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশে ব্যবসার মালিকানা পাবেন প্রবাসীরা স্রোতে’র আয়োজনে বিজয়ের কবিতাপাঠ

তুরস্কের নির্বাচনে বিশাল ব্যবধানে এগিয়ে এরদোয়ান

  • আপডেট সময় ০৮:৪২:৩৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ জুন ২০১৮
  • ১৯০ বার পড়া হয়েছে

তুরস্কের নির্বাচনে বিশাল ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান ও তার দল একে পার্টি’র নেতৃত্বাধীন জোট পিপলস অ্যালায়েন্স। প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্ট নির্বাচনের এ পর্যন্ত পাওয়া ফলাফল অনুযায়ী এককভাবে সর্বোচ্চ সংখ্যক ভোট পেয়েছে এরদোয়ান সমর্থকরা।

৮২ দশমিক ৩ শতাংশ ব্যালট বাক্সের ফলাফল অনুযায়ী, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এরদোয়ান পেয়েছেন ৫৪ দশমিক ১১ শতাংশ ভোট। পার্লামেন্ট নির্বাচনে ৭৭ দশমিক ৩০ শতাংশ ব্যালট বাক্সের ফলাফল অনুযায়ী, পিপলস অ্যালায়েন্স পেয়েছে ৫৫ দশমিক ৩৭ শতাংশ ভোট।

প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এরদোয়ানের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী কামাল আতাতুর্কের দল সিএইচপি’র প্রার্থী মুহাররেম ইনজে এ পর্যন্ত পেয়েছেন ২৯ দশমিক ৯৬ শতাংশ ভোট। তার দলের নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল অ্যালায়েন্স পেয়েছে ৩৩ দশমিক ১ শতাংশ ভোট। ৬০০ আসনের পার্লামেন্ট নির্বাচনে জিততে হলে একেপি’কে ৩০০টির বেশি আসন নিশ্চিত করতে হবে। তবে নির্বাচনের পূর্ণাঙ্গ বা আনুষ্ঠানিক ফলাফল এখনও ঘোষণা করা না হলেও বেসরকারি ফলাফলের ভিত্তিতে এরইমধ্যে দেশ-বিদেশ থেকে অভিনন্দন বার্তা পেতে শুরু করেছেন এরদোয়ান।

এরদোয়ানের দল একেপি’র নেতৃত্বাধীন ‘পিপলস অ্যালায়েন্স’ জোটে রয়েছে একে পার্টি, ডানপন্থী জাতীয়তাবাদী দল এমএইচপি। অন্যদিকে ধর্মনিরপেক্ষ মতবাদে বিশ্বাসী কামাল আতাতুর্কের দল সিএইচপি’র নেতৃত্বে ‘ন্যাশনাল অ্যালায়েন্স’ জোটে রয়েছে ডানপন্থী ইয়ি পার্টি এবং ইসলামপন্থী দল সাদাত পার্টি। দুই শক্তিশালী জোটের কারণে এরদোয়ানের পিপলস অ্যালায়েন্সের নিরঙ্কুশ জয় কঠিন হয়ে পড়বে বলে মনে করা হচ্ছিল।

একেপি’র প্রধান প্রতিপক্ষ সিএইচপি আধুনিক তুরস্কের স্থপতি মোস্তফা কামাল আতাতুর্কের দল। ১৯১৯ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকেই তুরস্কের রক্ষণশীলরা দলটিকে অভিজাততন্ত্রের ধারক-বাহক হিসেবে দেখে এসেছে। অন্যদিকে কুর্দিরা দলটিকে দেখেছে বলপ্রয়োগকারী একনায়কতান্ত্রিক শক্তি হিসেবে। কিন্তু এখন যারা এরদোয়ানের বিরোধিতা করছেন তারা সব বিভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার পক্ষপাতী। তাদের প্রত্যাশা, এরদোয়ানবিরোধী ইসলামপন্থী ও কুর্দিদের এক করতে পারবেন মুহাররেম ইনজে।

এরদোয়ানের প্রধান সমর্থক হচ্ছেন রক্ষণশীল এবং ধার্মিক অপেক্ষাকৃত বয়স্ক তুর্কিরা। তিনি তুরস্কের এতকাল ধরে চলে আসা ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রব্যবস্থায় ইসলামী মূল্যবোধকে শক্তিশালী করেছেন এবং তার সময়ে দেশের অর্থনীতি ও অবকাঠামোতে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। তবে নিজ সমর্থকদের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয় হলেও এরদোয়ানকে একনায়ক ও স্বৈরাচারী মনে করে তার বিরোধীরা।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান লিখেছে, আধুনিক তুরস্কের ইতিহাসে এটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন। নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট বিপুল ক্ষমতা হাতে পাবেন তার শাসনকালের শুরু থেকেই। গণভোটে যে ক্ষমতা প্রেসিডেন্টের হাতে তুলে দিয়েছেন তুরস্কের জনগণ তাতে ভাইস প্রেসিডেন্ট ও মন্ত্রিসভার পাশাপাশি বিচারক নিয়োগের একচ্ছত্র ক্ষমতা পাবেন নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট। ফলে নিজের পরিকল্পনা অনুযায়ী ভবিষ্যৎ তুরস্ক গড়ে তোলার সুযোগ পাবেন তিনি।

তুরস্কের নির্বাচন কেন গুরুত্বপূর্ণ?

তুরস্কের অবস্থান এমন এক জায়গায় যে এর নেতা কে হচ্ছেন তার বৈশ্বিক গুরুত্ব আছে। কারণ দেশটির একদিকে ইউরোপ, অন্যদিকে ইরাক আর সিরিয়ার সীমান্ত। মুসলিম বিশ্বের নেতৃস্থানীয় দেশ তুরস্ক পশ্চিমা বিশ্বেরও গুরুত্বপূর্ণ মিত্র, ন্যাটো জোটের সদস্য। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য পদপ্রার্থী। তুরস্কের সেনাবাহিনী ন্যাটো জোটের দ্বিতীয় বৃহত্তম বাহিনী। জেরুজালেমে যুক্তরাষ্ট্রের ইসরায়েল দূতাবাস স্থাপন, মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে জাতিগত নিধনযজ্ঞের মতো মুসলমানদের জন্য স্পর্শকাতর ইস্যুগুলোতে বরাবরই আওয়াজ তুলেছেন এরদোয়ান। সৌদি জোটের কাতারবিরোধী অবরোধ প্রায় ব্যর্থ করে দেওয়ার পেছনে তার গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। ওই অবরোধকে ইসলামবিরোধী পদক্ষেপ বলে মনে করেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট। মূলত এরদোয়ান প্রশাসনের এমন নীতিগত অবস্থানের কারণেই আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশটির নির্বাচনকে আলাদা গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি, আল জাজিরা, বিবিসি, মিডল ইস্ট আই।

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

লক ডাউন পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবেলায় ফ্রান্সে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি

যুক্তরাজ্যে করোনার মধ্যেই শিশুদের মাঝে নতুন রোগের হানা

ফ্রান্সে লায়েক আহমদ তালুকদারের পিতার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত

তুরস্কের নির্বাচনে বিশাল ব্যবধানে এগিয়ে এরদোয়ান

আপডেট সময় ০৮:৪২:৩৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ জুন ২০১৮

তুরস্কের নির্বাচনে বিশাল ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান ও তার দল একে পার্টি’র নেতৃত্বাধীন জোট পিপলস অ্যালায়েন্স। প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্ট নির্বাচনের এ পর্যন্ত পাওয়া ফলাফল অনুযায়ী এককভাবে সর্বোচ্চ সংখ্যক ভোট পেয়েছে এরদোয়ান সমর্থকরা।

৮২ দশমিক ৩ শতাংশ ব্যালট বাক্সের ফলাফল অনুযায়ী, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এরদোয়ান পেয়েছেন ৫৪ দশমিক ১১ শতাংশ ভোট। পার্লামেন্ট নির্বাচনে ৭৭ দশমিক ৩০ শতাংশ ব্যালট বাক্সের ফলাফল অনুযায়ী, পিপলস অ্যালায়েন্স পেয়েছে ৫৫ দশমিক ৩৭ শতাংশ ভোট।

প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এরদোয়ানের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী কামাল আতাতুর্কের দল সিএইচপি’র প্রার্থী মুহাররেম ইনজে এ পর্যন্ত পেয়েছেন ২৯ দশমিক ৯৬ শতাংশ ভোট। তার দলের নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল অ্যালায়েন্স পেয়েছে ৩৩ দশমিক ১ শতাংশ ভোট। ৬০০ আসনের পার্লামেন্ট নির্বাচনে জিততে হলে একেপি’কে ৩০০টির বেশি আসন নিশ্চিত করতে হবে। তবে নির্বাচনের পূর্ণাঙ্গ বা আনুষ্ঠানিক ফলাফল এখনও ঘোষণা করা না হলেও বেসরকারি ফলাফলের ভিত্তিতে এরইমধ্যে দেশ-বিদেশ থেকে অভিনন্দন বার্তা পেতে শুরু করেছেন এরদোয়ান।

এরদোয়ানের দল একেপি’র নেতৃত্বাধীন ‘পিপলস অ্যালায়েন্স’ জোটে রয়েছে একে পার্টি, ডানপন্থী জাতীয়তাবাদী দল এমএইচপি। অন্যদিকে ধর্মনিরপেক্ষ মতবাদে বিশ্বাসী কামাল আতাতুর্কের দল সিএইচপি’র নেতৃত্বে ‘ন্যাশনাল অ্যালায়েন্স’ জোটে রয়েছে ডানপন্থী ইয়ি পার্টি এবং ইসলামপন্থী দল সাদাত পার্টি। দুই শক্তিশালী জোটের কারণে এরদোয়ানের পিপলস অ্যালায়েন্সের নিরঙ্কুশ জয় কঠিন হয়ে পড়বে বলে মনে করা হচ্ছিল।

একেপি’র প্রধান প্রতিপক্ষ সিএইচপি আধুনিক তুরস্কের স্থপতি মোস্তফা কামাল আতাতুর্কের দল। ১৯১৯ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকেই তুরস্কের রক্ষণশীলরা দলটিকে অভিজাততন্ত্রের ধারক-বাহক হিসেবে দেখে এসেছে। অন্যদিকে কুর্দিরা দলটিকে দেখেছে বলপ্রয়োগকারী একনায়কতান্ত্রিক শক্তি হিসেবে। কিন্তু এখন যারা এরদোয়ানের বিরোধিতা করছেন তারা সব বিভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার পক্ষপাতী। তাদের প্রত্যাশা, এরদোয়ানবিরোধী ইসলামপন্থী ও কুর্দিদের এক করতে পারবেন মুহাররেম ইনজে।

এরদোয়ানের প্রধান সমর্থক হচ্ছেন রক্ষণশীল এবং ধার্মিক অপেক্ষাকৃত বয়স্ক তুর্কিরা। তিনি তুরস্কের এতকাল ধরে চলে আসা ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রব্যবস্থায় ইসলামী মূল্যবোধকে শক্তিশালী করেছেন এবং তার সময়ে দেশের অর্থনীতি ও অবকাঠামোতে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। তবে নিজ সমর্থকদের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয় হলেও এরদোয়ানকে একনায়ক ও স্বৈরাচারী মনে করে তার বিরোধীরা।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান লিখেছে, আধুনিক তুরস্কের ইতিহাসে এটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন। নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট বিপুল ক্ষমতা হাতে পাবেন তার শাসনকালের শুরু থেকেই। গণভোটে যে ক্ষমতা প্রেসিডেন্টের হাতে তুলে দিয়েছেন তুরস্কের জনগণ তাতে ভাইস প্রেসিডেন্ট ও মন্ত্রিসভার পাশাপাশি বিচারক নিয়োগের একচ্ছত্র ক্ষমতা পাবেন নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট। ফলে নিজের পরিকল্পনা অনুযায়ী ভবিষ্যৎ তুরস্ক গড়ে তোলার সুযোগ পাবেন তিনি।

তুরস্কের নির্বাচন কেন গুরুত্বপূর্ণ?

তুরস্কের অবস্থান এমন এক জায়গায় যে এর নেতা কে হচ্ছেন তার বৈশ্বিক গুরুত্ব আছে। কারণ দেশটির একদিকে ইউরোপ, অন্যদিকে ইরাক আর সিরিয়ার সীমান্ত। মুসলিম বিশ্বের নেতৃস্থানীয় দেশ তুরস্ক পশ্চিমা বিশ্বেরও গুরুত্বপূর্ণ মিত্র, ন্যাটো জোটের সদস্য। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য পদপ্রার্থী। তুরস্কের সেনাবাহিনী ন্যাটো জোটের দ্বিতীয় বৃহত্তম বাহিনী। জেরুজালেমে যুক্তরাষ্ট্রের ইসরায়েল দূতাবাস স্থাপন, মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে জাতিগত নিধনযজ্ঞের মতো মুসলমানদের জন্য স্পর্শকাতর ইস্যুগুলোতে বরাবরই আওয়াজ তুলেছেন এরদোয়ান। সৌদি জোটের কাতারবিরোধী অবরোধ প্রায় ব্যর্থ করে দেওয়ার পেছনে তার গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। ওই অবরোধকে ইসলামবিরোধী পদক্ষেপ বলে মনে করেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট। মূলত এরদোয়ান প্রশাসনের এমন নীতিগত অবস্থানের কারণেই আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশটির নির্বাচনকে আলাদা গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি, আল জাজিরা, বিবিসি, মিডল ইস্ট আই।