ঢাকা ১১:১৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ জুলাই ২০২৪, ১০ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
ড. মুহাম্মদ ইউনুসের নামে প্যারিসে রাস্তার নামকরণ: একটি গৌরবময় মুহূর্ত বাংলাদেশে সাধারণ ছাত্র ছাত্রীদের হত্যা ও নির্যাতনের প্রতিবাদে ফ্রান্সের তুলুজে বিশাল সমাবেশ প্যারিসের ঐতিহাসিক রিপাবলিক চত্বরজুড়ে বিক্ষুব্ধ বাংলাদেশ বালাগঞ্জের হাফিজ মাওলানা সামসুল ইসলাম লন্ডনের university of central Lancashire থেকে মাস্টার্স ডিগ্রী অর্জন করলেন বালাগঞ্জে সাংবাদিকদের সাথে উপ-নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী হাজী রফিক আহমদ এর মতবিনিময় দেওয়ানবাজার ইউপি চেয়ারম্যান নাজমুল আলমের পক্ষ থেকে বন্যার্তদের মাঝে খাবার বিতরণ জনকল্যাণ ডেভেলপমেন্ট এসোসিয়েশন ইউকের পক্ষ থেকে উপহার সামগ্রী বিতরণ প্যারিসে অনুষ্ঠিত হলো, ‘রৌদ্র ছায়ায় কবি কন্ঠে কাব্য কথা’ শীর্ষক কবিতায় আড্ডা ফ্রান্স দর্পণ – কমিউনিটি-সংবেদনশীল মুখপত্র এম সি ইন্সটিটিউট ফ্রান্সের সুধী সমাবেশ অনুষ্ঠিত

নিরাপদ সড়ক চাই : আন্দোলনকে বিভ্রান্ত করার পায়তারা চলছে, সজাগ থাকুন

  • আপডেট সময় ১০:১৮:৫৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ অগাস্ট ২০১৮
  • ৪২৫ বার পড়া হয়েছে

আহমদ ময়েজ- শিশু-কিশোররা আবেগঘন বার্তা দিয়েও শেখ হাসিনা বা তার সরকারের মন গলাতে পারছে না। এক পথশিশু পোষ্টারে লিখেছে, আমিই রাসেল/ আমি এখন রাস্তায়/ বুবু তুমি কোথায়?‘‘
এক গল্পকার লিখেছেন, প্রধানমমন্ত্রীর উচিৎ ছিল পায়ে হেঁটে এসে আন্দোলনের সঙ্গে নিজেকে সম্পৃক্ত করা। কী মায়াময় বার্তা। মূলতঃ আমওয়ামী ধারার লেখক, বুদ্ধিজীবী, সেমিবুদ্ধিজীবী কেউই আওয়ামী দুঃশাসন কথাটা মানতে পারছেন না। এর জন্যই তাদের ভেতর থেকে এমন মায়াকান্নাভাষায় প্রতিবাদ করতে দেখা যায়।
কোটা আন্দোলনকারীরা পোস্টারে বঙ্গবন্ধুর ছবি এঁটে প্রতিবাদ করছেন। এই ছবি ছাত্রলীগের সন্ত্রাস বা পুলিশী সন্ত্রাস থেকে তারা রক্ষা করতে পারেনি। বরং এই সন্ত্রাসী ঘরানা থেকে আন্দোলনকে বিভ্রান্ত করার জন্য নানা প্রশ্ন উত্থাপন করছে। এটি কার বিরুদ্ধে আন্দোলন? সেটাই নাকি তারা বুঝতে পারছে না। রবীন্দ্রনাথ বলেছিলেন, অন্ধ হলে প্রলয় বন্ধ হয় না। একদিকে বুদ্ধিবৃত্তিক বিভ্রান্তি তৈরির কৌশল অবলম্বন করছে, অন্যদিকে সরাসরি সন্ত্রাসী হামলা চালাচ্ছে। বুঝতে হবে, এরা একে অন্যের সম্পুরকই বটে।

শিশু-কিশোরদের আন্দোলন নিয়েই এমনটিও চলছে। তবে শেখ হাসিনার রাজত্বকালে আজ পর্যন্ত কেউ সিকিভাগ ফলাফল অর্জন করতে পারেনি যা এই শিশু-কিশোররা দেখিয়েছে। তাদেরকেও পিষে মারার চেষ্টা করা হয়েছে। বড় বড় টিভি পর্দায় শাসকগোষ্ঠী তাদের মৃত্যু নিয়ে অট্ট হাসি হেসেছেন। কিন্তু তাদেরকে দমানো যায়নি। দেখা যাচ্ছে, রাষ্ট্রের আইনশৃৃখলা বাহিনীর কাজ যথেষ্ট রপ্ত করেছে এই বালক-বালিকারা। শাহবাগের মোড়ে মন্ত্রী তোফায়েল আহমদের গাড়ি ভুল পথ ধরে আসায় তারা ঘুরিয়ে দিয়েছে যা ট্রাফিক আইনের লোকদেরই করার কথা ছিল। সেখানে কোনো জোরদজবরদস্তি ছিল না।

এখানে এসে একটু জোরালোভাবে কিছু কথা বলতে চাই। কোটা আন্দোলনকে যেভাবে বিভ্রান্ত করার জন্য মুখোশ পরে একদল ছাত্র ভিসির বাসায় আক্রমণ চালিয়ে পুরো দায় কোটা আন্দোলনকারীদের ঘাড়ে চাপাতে চাচ্ছে, সঙ্গে বশংবদ মিডিয়া সেটাকেই প্রাধান্য দেবার চেষ্টা করছে, একইভাবে এই শিশু-কিশোরদের আন্দোলনকে ভুল পথে পরিচালিত করার জন্য মুখোশ পরিধান করে এক দল আন্দালনকারীদের ভেতরে ঢুকে তাদের ভাঙচুরের রাজনীতিতে রূপান্ত করতে চাচ্ছে। সেদিকে সবার সজাগ দৃষ্টি রাখা দরকার।

তবে ইতোমধ্যে একজন ধরা পড়েছে। ঢাকায় গত ১ আগস্ট আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীরা যখন গাড়ির ফিটন্যাস, ড্রাইভারের লাইসেন্স চেক করছিল সে সময় একজন তুলনামূলকভাবে চলমান আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীদের চেয়ে বড় একজন ছাত্র গাড়ি ভাঙচুর করছিল। আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীরা তাকে পাকড়াও করে। তারা বলে, তুমি কে? আমরা তো গাড়ি ভাঙচুরের আন্দোলন করি না। তুমি কেন গাড়ি ভাঙলে? কোনো উত্তর নেই। তার ভাবভঙি দেখে পুলিশ এসে তাকে পাকড়াও করে। সে স্বদম্ভে বলে, আমি ছাত্রলীগ করি। বুঝুন এরা কতো দাম্ভিক, অন্যায় করেও স্বগর্বে উচ্চারণ করে আমি ছাত্রলীগ করি।

শেষে দেখা গেলো, সে আন্দোলনের কেউ নয়। হবিগঞ্জের বৃন্দাবন কলেজের ছাত্র। সে আরো কোথায় যাবার কথা। কিন্তু মাঝখানে আন্দোলনকে বিভ্রান্ত করার জন্য এক পশলা ভাঙচুর করে নিলো। যাতে সাধারণ মানুষ, মিডিয়া ও সরকার দ্রুত এদেরকে কোটা আন্দোলনকারীদের ন্যায় জেল হাজতে ভরে দেয়।
কোটা আন্দোলনের পিছনে ছাত্রলীগকে লেলিয়ে দিয়েছিল সরকার। এরা পিটিয়ে সবাইকে তক্তা বানালেও পুলিশ তাদেরকে পাকড়াও করেনি। পাকড়াও করেছে সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের। ছাত্রলীগ নারীর উপর প্রকাশ্যে নির্যাতন করলেও তথাকথিত প্রগতিশীল নারীনেত্রীরা রাস্তায় নেমে আসেন না। তারা কেবল দোষ খুঁজেন তেতুল হুজুরের!

বড়কথা হলো: যারা আন্দোলনকে বিভ্রান্ত করার জন্য পায়তারা করছে তারা বিএনপি হোক, জামাত হোক, আওয়ামী লীগ হোক বা সরকারের অন্য কোনো মাধ্যম হোক তাদের প্রতি সতর্ক দৃষ্টি রাখা দরকার। কিন্তু সেটা কে রাখবে? সোশ্যাল মিডিয়ার দায়িত্ববান মানুষের প্রতিই আমার এই আস্তা তৈরী হচ্ছে ক্রমশঃ। পৃথিবীর তৃতীয় নয়ন এখন সোশ্যাল মিডিয়া।
সময় সহায় হোক।

লেখক : কবি, সাবেক সম্পাদক – সাপ্তাহিক সুরমা, লন্ডন

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

লক ডাউন পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবেলায় ফ্রান্সে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি

যুক্তরাজ্যে করোনার মধ্যেই শিশুদের মাঝে নতুন রোগের হানা

ড. মুহাম্মদ ইউনুসের নামে প্যারিসে রাস্তার নামকরণ: একটি গৌরবময় মুহূর্ত

নিরাপদ সড়ক চাই : আন্দোলনকে বিভ্রান্ত করার পায়তারা চলছে, সজাগ থাকুন

আপডেট সময় ১০:১৮:৫৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ অগাস্ট ২০১৮

আহমদ ময়েজ- শিশু-কিশোররা আবেগঘন বার্তা দিয়েও শেখ হাসিনা বা তার সরকারের মন গলাতে পারছে না। এক পথশিশু পোষ্টারে লিখেছে, আমিই রাসেল/ আমি এখন রাস্তায়/ বুবু তুমি কোথায়?‘‘
এক গল্পকার লিখেছেন, প্রধানমমন্ত্রীর উচিৎ ছিল পায়ে হেঁটে এসে আন্দোলনের সঙ্গে নিজেকে সম্পৃক্ত করা। কী মায়াময় বার্তা। মূলতঃ আমওয়ামী ধারার লেখক, বুদ্ধিজীবী, সেমিবুদ্ধিজীবী কেউই আওয়ামী দুঃশাসন কথাটা মানতে পারছেন না। এর জন্যই তাদের ভেতর থেকে এমন মায়াকান্নাভাষায় প্রতিবাদ করতে দেখা যায়।
কোটা আন্দোলনকারীরা পোস্টারে বঙ্গবন্ধুর ছবি এঁটে প্রতিবাদ করছেন। এই ছবি ছাত্রলীগের সন্ত্রাস বা পুলিশী সন্ত্রাস থেকে তারা রক্ষা করতে পারেনি। বরং এই সন্ত্রাসী ঘরানা থেকে আন্দোলনকে বিভ্রান্ত করার জন্য নানা প্রশ্ন উত্থাপন করছে। এটি কার বিরুদ্ধে আন্দোলন? সেটাই নাকি তারা বুঝতে পারছে না। রবীন্দ্রনাথ বলেছিলেন, অন্ধ হলে প্রলয় বন্ধ হয় না। একদিকে বুদ্ধিবৃত্তিক বিভ্রান্তি তৈরির কৌশল অবলম্বন করছে, অন্যদিকে সরাসরি সন্ত্রাসী হামলা চালাচ্ছে। বুঝতে হবে, এরা একে অন্যের সম্পুরকই বটে।

শিশু-কিশোরদের আন্দোলন নিয়েই এমনটিও চলছে। তবে শেখ হাসিনার রাজত্বকালে আজ পর্যন্ত কেউ সিকিভাগ ফলাফল অর্জন করতে পারেনি যা এই শিশু-কিশোররা দেখিয়েছে। তাদেরকেও পিষে মারার চেষ্টা করা হয়েছে। বড় বড় টিভি পর্দায় শাসকগোষ্ঠী তাদের মৃত্যু নিয়ে অট্ট হাসি হেসেছেন। কিন্তু তাদেরকে দমানো যায়নি। দেখা যাচ্ছে, রাষ্ট্রের আইনশৃৃখলা বাহিনীর কাজ যথেষ্ট রপ্ত করেছে এই বালক-বালিকারা। শাহবাগের মোড়ে মন্ত্রী তোফায়েল আহমদের গাড়ি ভুল পথ ধরে আসায় তারা ঘুরিয়ে দিয়েছে যা ট্রাফিক আইনের লোকদেরই করার কথা ছিল। সেখানে কোনো জোরদজবরদস্তি ছিল না।

এখানে এসে একটু জোরালোভাবে কিছু কথা বলতে চাই। কোটা আন্দোলনকে যেভাবে বিভ্রান্ত করার জন্য মুখোশ পরে একদল ছাত্র ভিসির বাসায় আক্রমণ চালিয়ে পুরো দায় কোটা আন্দোলনকারীদের ঘাড়ে চাপাতে চাচ্ছে, সঙ্গে বশংবদ মিডিয়া সেটাকেই প্রাধান্য দেবার চেষ্টা করছে, একইভাবে এই শিশু-কিশোরদের আন্দোলনকে ভুল পথে পরিচালিত করার জন্য মুখোশ পরিধান করে এক দল আন্দালনকারীদের ভেতরে ঢুকে তাদের ভাঙচুরের রাজনীতিতে রূপান্ত করতে চাচ্ছে। সেদিকে সবার সজাগ দৃষ্টি রাখা দরকার।

তবে ইতোমধ্যে একজন ধরা পড়েছে। ঢাকায় গত ১ আগস্ট আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীরা যখন গাড়ির ফিটন্যাস, ড্রাইভারের লাইসেন্স চেক করছিল সে সময় একজন তুলনামূলকভাবে চলমান আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীদের চেয়ে বড় একজন ছাত্র গাড়ি ভাঙচুর করছিল। আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীরা তাকে পাকড়াও করে। তারা বলে, তুমি কে? আমরা তো গাড়ি ভাঙচুরের আন্দোলন করি না। তুমি কেন গাড়ি ভাঙলে? কোনো উত্তর নেই। তার ভাবভঙি দেখে পুলিশ এসে তাকে পাকড়াও করে। সে স্বদম্ভে বলে, আমি ছাত্রলীগ করি। বুঝুন এরা কতো দাম্ভিক, অন্যায় করেও স্বগর্বে উচ্চারণ করে আমি ছাত্রলীগ করি।

শেষে দেখা গেলো, সে আন্দোলনের কেউ নয়। হবিগঞ্জের বৃন্দাবন কলেজের ছাত্র। সে আরো কোথায় যাবার কথা। কিন্তু মাঝখানে আন্দোলনকে বিভ্রান্ত করার জন্য এক পশলা ভাঙচুর করে নিলো। যাতে সাধারণ মানুষ, মিডিয়া ও সরকার দ্রুত এদেরকে কোটা আন্দোলনকারীদের ন্যায় জেল হাজতে ভরে দেয়।
কোটা আন্দোলনের পিছনে ছাত্রলীগকে লেলিয়ে দিয়েছিল সরকার। এরা পিটিয়ে সবাইকে তক্তা বানালেও পুলিশ তাদেরকে পাকড়াও করেনি। পাকড়াও করেছে সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের। ছাত্রলীগ নারীর উপর প্রকাশ্যে নির্যাতন করলেও তথাকথিত প্রগতিশীল নারীনেত্রীরা রাস্তায় নেমে আসেন না। তারা কেবল দোষ খুঁজেন তেতুল হুজুরের!

বড়কথা হলো: যারা আন্দোলনকে বিভ্রান্ত করার জন্য পায়তারা করছে তারা বিএনপি হোক, জামাত হোক, আওয়ামী লীগ হোক বা সরকারের অন্য কোনো মাধ্যম হোক তাদের প্রতি সতর্ক দৃষ্টি রাখা দরকার। কিন্তু সেটা কে রাখবে? সোশ্যাল মিডিয়ার দায়িত্ববান মানুষের প্রতিই আমার এই আস্তা তৈরী হচ্ছে ক্রমশঃ। পৃথিবীর তৃতীয় নয়ন এখন সোশ্যাল মিডিয়া।
সময় সহায় হোক।

লেখক : কবি, সাবেক সম্পাদক – সাপ্তাহিক সুরমা, লন্ডন