আবারও ছয় বছরের জন্য রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন ভ্লাদিমির পুতিন। এ নিয়ে ৪র্থ বারের মতো তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন।
সেন্ট্রাল ইলেকশন কমিশনের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি অনলাইন বলছে, রবিবার (১৮ মার্চ) নির্বাচন শেষে ৭৫ শতাংশ ভোট পেয়েছেন পুতিন। তিনি সহজেই হারিয়েছেন তার প্রতিদ্বন্দ্বীদের।
সিএনএনের খবরে প্রকাশ, পুতিনের এবারের প্রতিদ্বন্দ্বী হলেন সাত জন। এর মধ্যে পুতিনের নিকতম প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে বামপন্থী দলের পাভেল গ্রুদিনিন ১১.২ শতাংশ ভোট পেয়ে ২য় অবস্থানে রয়েছেন। এছাড়া, ন্যাশনালিস্ট লিব্যারাল ডেমোক্রেটিক পার্টির ভ্লাদিমির ঝিরিনোভস্কি ৬.৭ শতাংশ ভোট পেয়ে ৩য় এবং মিডিয়া ব্যক্তিত্ব সেনিয়া সোবচাক ২.৫ শতাংশ ভোট পেয়ে ৪র্থ অবস্থানে রয়েছেন।
অন্য প্রার্থীরা হলেন– পাভেল গ্রুদিনিন (কমিউনিস্ট পার্টি), কাসেনিয়া সোবচাক (সিভিল ইনিশিয়েটিভ), ভ্লাদিমির ঝিরিনোভস্কি (লিবারাল ডেমোক্রেটিক পার্টি), সের্গেই বাবুরিন (অল পিপলস ইউনিয়ন) মাক্সিম সুরিয়াখিন (কমিউনিস্টস অব রাশিয়া), বোরিস তিতভ (পার্টি অব গ্রোথ) এবং গিগোরি ইয়াভলিনস্কি (ইয়াভলোকো)।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো বলছে, ২০১২ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে পুতিন ৬৪ শতাংশ ভোট পেয়েছিলেন। আর এবার এর চেয়ে প্রায় ১০ শতাংশ বেশি ভোট পেয়েছেন তিনি।
রাশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে স্থানীয় সময় সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে রাত ৮টা পর্যন্ত একটানা চলে। এরমধ্যে রাশিয়ার দূরপ্রাচ্যের এলাকাগুলোতে সবার আগে ভোটগ্রহণ শেষ হয়।
পৃথিবীর সবচেয়ে বড় দেশ রাশিয়ায় ১১টি টাইমজোনে এ ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। মোট ৯৭ হাজার ভোটকেন্দ্রে প্রায় ১০ কোটি ৯০ লাখ নিবন্ধিত ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। এ নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনসহ মোট ৮ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন।
নির্বাচন পরিচালনা বিষয়ক কেন্দ্রীয় কমিটি জানিয়েছে, সারাদেশে ৩০ হাজার পর্যবেক্ষক নির্বাচন পর্যবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করেন। প্রতিটি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ সিসিটিভি ফুটেজের মাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচারের ব্যবস্থা করেছে নির্বাচন কমিশন।
রুশ সংবিধান অনুযায়ী একজন রাজনীতিক ছয় বছরের জন্য দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। ২০০৮ সাল পর্যন্ত রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের এই মেয়াদ ছিল চার বছর। ওই বছর তৎকালীন প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভের শাসনামলে এই মেয়াদকাল চার বছর থেকে বাড়িয়ে ছয় বছর করা হয়।
নিয়ম অনুযায়ী রাশিয়ায় একজন প্রেসিডেন্ট পর পর দুই দফার বেশি ক্ষমতায় থাকতে পারেন না। প্রেসিডেন্ট পুতিন ২০০০ সালে প্রথম দফায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। টানা দুই দফায় আট বছর এই দায়িত্ব পালনের পর সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার কারণে ২০০৮ সালের নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারেননি তিনি। ওই বছর দিমিত্রি মেদভেদেভ রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং পুতিন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এরপর ২০১২ সালে অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে আবারও জয়লাভ করেন পুতিন।