মোঃ নজমুল কবির
বিশ্বব্যাপী কোভিড অতিমারীর দাপটে অন্যান্য স্বাভাবিক কর্মকাণ্ডের মতই সামাজিক ও ধর্মীয় উৎসব হতে পারছিলো না। এমন একটি দমবন্ধ হয়ে আসা অবস্থা অতিক্রম করে স্বাভাবিক জীবনাচারে ফিরে আসতে পারার মধ্যেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মত ফ্রান্সেও পালিত হলো ‘ঈদ ফেস্টিভ্যাল – ২০২২’। ফ্রান্সের জনপ্রিয় সামাজিক সংগঠন বাংলাদেশ কমিউনিটি ইন ফ্রান্স (বিসিএফ) এর সার্বিক তত্বাবধানে ও ব্যবস্থাপনায় আয়োজিত এ উৎসবে প্যারিসের সবচেয়ে বড় জনসমাগম ঘটে যা ইতোপূর্বে দেখা যায়নি। প্যারিসের পার্ক দো লা ভিলেত এর সুবিশাল সবুজ চত্বরটি প্রবাসী বাংলাদেশীদের বৃহত্তম জমায়েতের পদচারনায় মুখর হয়ে ওঠে।
ফ্রান্সে বসবাসরত বাংলাদেশী পরিবারের সদস্যদের ছোট শিশু থেকে শুরু করে তরুণ-যুবক-বয়োজেষ্ঠ্যদের যেন একটি মেলবন্ধন ছিলো।
ঈদ উপলক্ষে কেনা বাহারী রকম নতুন পোষাক পড়ে আবালবৃদ্ধবনিতা যেন একটি মাল্টি কালার বাংলাদেশকে তুলে ধরেছিলো। পুরো পার্কটি দেখে মনে হচ্ছিলো যেন, বাংলাদেশীরা ভূখন্ডটি অধিকৃত করে ফেলেছে!
ঈদের দিন দুপুর গড়িয়ে বিকেল শুরু হবার সাথে সাথেই মানুষ পার্কে আসতে শুরু করে। ঘন্টাখানেকের মধ্যেই গ্লোবসংলগ্ন পার্ক চত্বরটি বাংলাদেশীদের দখলে চলে যায়।
আয়োজক সংগঠন বিসিএফ এর আহ্বান ও উদ্যোগে ঈদ উৎসবে সকলের ধারনাকে অতিক্রম করে প্রায় পাঁচ হাজার মানুষের সমাগম ঘটে। ‘আমরা ভাবতেই পারিনি এমন বাধভাঙ্গা জোয়ার আসবে। আমরা থমকে গেছি, চমকিত এবং বিহ্বল হয়ে গেছি’ বলছিলেন বিসিএফ প্রধান এমডি নূর। উপস্থিত অনেকের মুখেই ‘উৎসবে উপস্থিত সংখ্যা’ নিয়ে এমন অবাক হবার কথা বলেন।
বিসিএফ এই উৎসবের উদ্যোগ, আয়োজন ও পরিকল্পনায় ছিলো। আর এই উৎসবকে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা ও সমর্থন যুগিয়েছে আরো প্রায় ২০ টি সামাজিক ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।
উৎসবকে ঘিরে ছিলো খেলাধূলা, রান্না প্রতিযোগিতা, নাচ-গান আর খাবারের আয়োজন।
উৎসবে ফ্রান্সপ্রবাসী বাংলাদেশ কমিউনিটির বিভিন্ন সূধীজন, রাজনৈতিক ও সামাজিক ব্যক্তিত্ব, সাংবাদিক নেতারা উপস্থিত ছিলেন। উৎসবে ফ্রান্সে বসবাসরত বিপুলসংখ্যক পরিবার উপস্থিত ছিলো। প্যারিসের বাইরে অন্যান্য শহর থেকেও অনেক পরিবার উৎসবে এসে র্যোগদান করেন এবং আনন্দের অংশীদার হন। উৎসবে উপস্থিত অসংখ্য ব্যক্তি এধরনের উৎসব আয়োজন করবার জন্য বিসিএফ এর সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান। আগামীতেও এমন অনুষ্ঠান আয়োজনে তাগিদ দেন।