ফ্রান্সে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদের দ্বিতীয় সপ্তাহে চলা বিক্ষোভ দমন করতে কাঁদানে গ্যাস ও জলকামান ব্যবহার করেছে পুলিশ। শনিবার (২৪ নভেম্বর) রাজধানী প্যারিসের গুরুত্বপূর্ণ চ্যাম্পস-এলিসিস এলাকায় বিক্ষোভকারীদের ওপর এই কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করা হয়।
শনিবারের বিক্ষোভে কয়েক হাজার বিক্ষোভকারী চ্যাম্প-এলিসিস এলাকায় জড়ো হন। এলাকাটিতে প্রধানমন্ত্রীর আবাসিক কার্যালয়সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক কার্যালয় রয়েছে। বিক্ষোভকারীরা সেখানে থাকা ব্যারিকেড অতিক্রম করার চেষ্টা করলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ শুরু হয়। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে পুলিশ তাদের ওপর কাঁদানে গ্যাস ও জলকামান ব্যবহার করে। এই ঘটনায় পর বিক্ষোভকারীদের থামাতে প্যারিসের বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ৩০০০ পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি’র খবরে বলা হয়, গত ১২ মাসে ফ্রান্সে ডিজেলের দাম ২৩ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। দেশটির বেশিরভাগ গাড়িতে ডিজেল ব্যবহার করা হয়ে থাকে। গত দশকের প্রথম দিককার পর এখনই দেশটিতে তেলের দাম সবচেয়ে বেশি। বিশ্ববাজারে তেলের দাম কমলেও প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সরকার সেখানে ‘পরিস্কার গাড়ি ও জ্বালানি’ প্রচারাভিযানের অংশ হিসেবে তেলের ওপর হাইড্রোকার্বন ট্যাক্স বাড়িয়েছে। দেশটিতে বর্তমানে প্রতি লিটার ডিজেলের ওপর ৭.৬ সেন্ট ও প্রতি লিটার পেট্রোলের ওপর ৩.৯ সেন্ট হারে ট্যাক্স আরোপ করা হয়েছে। এছাড়া আগামী জানুয়ারি মাস থেকে আরও ৬.৫ সেন্ট ও ২.৯ সেন্ট হারে কর বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তেলের দামের এমন ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে স্থানীয় বাসিন্দারা আন্দোলনে নেমেছেন।
আগের শনিবারও ফ্রান্সের প্রায় ২০০০ স্থানে হলুদ জ্যাকেট পরিহিত প্রায় এক লাখ ২০ হাজার বিক্ষোভকারী সড়ক অবরোধ করে। সাধারণত দেশটির সব গাড়িতেই এই জ্যাকেট রাখতে হয়। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ গরীব মানুষকে বর্জন করছেন। এই সপ্তাহে এক ভাষণে ম্যাক্রোঁও স্বীকার করেছেন যে, তিনি সত্যিকার অর্থেই নেতাদের সঙ্গে ফরাসি জনগণকে পুনর্মিলিত করতে পারেননি। তবে তিনি বিরোধিদের বিরুদ্ধে এই আন্দোলনকে ছিনতাই করে নেওয়ার অভিযোগ তুলে বলেন, তার সংস্কার কর্মসূচি ঠেকাতেই এমনটা করছে তারা।সূত্র: বিবিসি।