ফেরদৌস করিম আখঞ্জী//
প্যারিস রিজিউনে আগামী বছরের মধ্যেই স্থাপিত হবে স্থায়ী শহীদ মিনার। আর এই ২ টি শহীদ মিনার স্থাপিত হবে প্যারিসের উপকন্ঠ সেন্ড দেনিস ও স্তা এলাকায়। এই ২ টি শহীদ মিনার স্থাপনের বিষয়ে বাংলাদেশি কমিউনিটির পক্ষ্য থেকে যে দুই তরুন কয়েক বছর ধরে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন তারা হলেন
ফ্রান্সে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত একমাত্র নির্বাচিত কাউন্সিলর রাব্বানী খান ও সেন্ট দেনিস এলাকার গত নির্বাচনের কাউন্সিল প্রার্থী সরোপ সদিউল। স্তা এলাকায় স্থায়ী শহীদ মিনার স্থাপনের বিষয়ে ফ্রান্স দর্পন যোগাযোগ করে ফ্রান্সে বর্তমানে একমাত্র নির্বাচিত কাউন্সিলর ফ্রসে আভেক রাব্বানীর ও অফিউরার প্রতিষ্টাতা কৌশিক রাব্বানী খানের সাথে।
এদিকে আগামি কাল বুধবার সরোফ সদিউল তার পক্ষের লোকজন নিয়ে বিকেল ৪ টায় তার নিজস্ব রেস্টুরেন্টে সাংবাদিক সম্মেলন আহবান করেছেন। ইতোমধ্যে প্যারিসে কর্মরত সকল সাংবাদিকদের আমন্ত্রন করেছেন কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব টি এম রেজা।
প্যারিস রিজিউনে আগামী বছরের মধ্যেই স্থাপন হবে এই বিষয়ে কথা বলতে ফ্রান্স দর্পন তার সাথে মোবাইলে কথা বলতে চাইলে তাকে পাওয়া যায়নি।
অন্যদিকে কাউন্সিলর রাব্বানীকে মোবাইল করলে তিনি ফ্রান্স দর্পণকে জানান,’বাংলাদেশি কমিউনিটির একটি আনন্দের বিষয় হল আগামি বছরের মধ্যেই আমার নির্বাচিত এলাকা স্তা’তে স্থায়ী শহীদ মিনার স্থাপিত হতে যাচ্ছে। এই বিষয়ে আমার মেয়র খুবই আন্তরিক। সব ঠিক টাক থাকলে আগামি বছরই স্থায়ী শহিদ মিনারে আমরা ভাষা শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করতে পারব। ‘ একটি স্থায়ী শহীদ মিনার নির্মানের জন্য আমি গত ২০১৯ সাল থেকেই কাজ করে যাচ্ছি।
গত কাল রাতে কৌশিক রাব্বানী খান তার ফেইস বুক আইডিতে শহীদ মিনার নির্মানের আপডেট দিয়ে স্ট্যাটাস দেন।
ফ্রান্স দর্পণের পাঠকদের জন্য সেই পোস্টটি হুবহু তুলে ধর হল।
প্যারিস রিজিউনে স্থায়ী শহীদ মিনার এবং আপডেট
১- অতীতে ওবেরভিলিয়ে তে সেটা হওয়ার জন্য উদীচীকে অনুমোদন দেয়া হয়। সমস্যা হলো যে পার্কে সেটার অনুমোদন দেয়া হয় সেটার এক অংশ পরে যায় প্যারিসে। যে কারণে তৎকালীন মেয়র মিরিয়াম দেড়কাউই এবং তার প্রথম ডেপুটি মেয়র এন্টোনি ডাগে অনেক চেষ্টা করেন। কিন্তু সেটা হয়ে উঠে নি।
২- আমাদের এসোসিয়েশন অফিওরা ওবেরভিলিয়ে তে। যে কারণে অন্তনি দাগে এবং মিরিয়াম দেড়কাউই এর সাথে আমার ভালো পরিচয় হয়।১০ জুলাই ২০১৯ ওবেরভিলিয়ে মেরির একটি প্রতিনিধি দল আমাদের অফিস ভিজিট করে। শহীদ মিনারের বিষয়ে তখন মেয়রের প্রথম ডেপুটি মেয়রের সাথে কথা হয়। তিনি আমাকে তখন এই ওবেরভিলিয়ে – প্যারিস নিয়ে যে সমস্যা তা বলেন। এবং আমাকেও এটাও সাজেস্ট করেন যেন আমি প্যারিসের ডেপুটি মেয়র ইয়ান ব্রোসার সাথে এই বিষয়ে কথা বলি। তিনি সহযোগিতা করলে সহজ হবে এটাও বলেন।
৩- ২০২০ এর জানুয়ারি মাসে, আমি ওবের ভিলিয়ে এর মেয়র মিরিয়াম, স্তা এর মেয়র এবং প্যারিসের ডেপুটি মেয়র কে অফিসে আমন্ত্রণ জানাই। সেই দিন মিরিয়াম এই শহীদ মিনারের কথা বলে আমি যে এলাকায় থাকি তার মেয়র আজেদিন তাইবি কে। এবং এর কিছুদিন পর নির্বাচন থাকায় তখন এই বিষয়টা পরে আলোচনা হবে বলা হয়।
৪- ২০২০ এর মার্চে নির্বাচন হয়। আমাদের মেয়র পাশ করে। কিন্তু মিরিয়াম হেরে যায়। অন্তনি ডাগে ও কোন পদে না থাকায় ওবেরভিলিয়ে তে শহীদ মিনার করা কঠিন হয়ে যায়। এবং সেটা যেন স্তা তে করা হয় সেই বিষয়ে আমরা কাজ শুরু করি। মিরিয়াম নিজেই আজেদিন কে বলে দেয়ার কারণে আজেদিন সেদিন থেকেই মৌখিক অনুমতি দিয়ে দেয়। আমাকে বলা হয় একটি লিখিত প্রজেক্ট সাবমিট করার জন্য। এবং সেটা আমি করিও। বর্তমানে সকল প্রশাসনিক কাজ শেষ হচ্ছে। তৎকালীন রাষ্ট্রদূত কাজী ইমতিয়াজ স্যারকেও মেরিতে আমন্ত্রণ জানানো হয়। একটি তারিখও সেট করা হয়। ৩০ মার্চ ২০২১। কিন্তু ইউনেস্কো তে একটি প্রোগ্রামের কারণে সেটা সম্ভব হয় নাই। নির্ঝর ভাইয়া যিনি তখন দূতাবাসের প্রথম সচিব, বিষিয়টি নিয়ে আমাকে সহযোগিতা করেছেন।
৫- ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২১ সালে আমি জানতে পারি যে সেন্ট দণি শহরে শরুফ ভাই প্রসেস করছেন এবং সেখান থেকেও একটি শহীদ মিনার করা হবে। তখনই শরুফ ভাইকে আমি স্তা এর বিষয়টা খুলে বলি। দুইজন একে অপরকে সহায়তা করার কথাও বলি। প্রতিনিয়ত একে অপরের সাথে যোগাযোগ রাখি এই বিষয়ে। দুই এলাকায় দুইটা শহীদ মিনার হলে তো ক্ষতি নেই। আর কেউ কাওকে কপিও করছে না।
এবং আপনারা জেনে আনন্দিত হবেন যে, যে শহীদ মিনার গত বছরের পর বছর হয় নাই, সেই শহীদ মিনার প্যারিস রিজনে হবে দুই জায়গায় ২০২৩ এর আগে। আমরা যে এগিয়ে যাচ্ছি সেটাই তার প্রমান।
আপনারা আশা করি আমাদের পাশে থাকবেন।