পরিবার আত্মীয়-স্বজনদের টানে প্রতিনিয়ত দেশের পানে ছুটে আসছেন বহু প্রবাসী। দীর্ঘ সময় প্রবাস জীবনের পরিশ্রমের ক্ষ্যান্ত দিয়ে দেশে ফেরেন একটু ভালোবাসার টানে। কিন্তু বিমানবন্দরে নেমেই যখন কর্মকর্তাদের নানা প্রশ্ন আর হয়রানির শিকার হন, তখন মুহূর্তেই ফিকে হয়ে যায় সেই ভালবাসা।
প্রবাসীদের হয়রানি করায় বিমানবন্দরের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তাদের দীর্ঘদিনের। প্রবাসীদের এসব সমস্যা, সমাধানসহ নানা প্রসঙ্গে র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সারোয়ার আলমের সঙ্গে কথা হয়।
র্যাব হেডকোয়ার্টারে ওমান প্রতিনিধি সঙ্গে সম্প্রতি এক আলাপচারিতায় প্রবাসীদের হয়রানি বন্ধে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপসহ না বিষয়ে কথা বলেন তিনি। আশ্বাস দেন সমাধানেরও।
প্রবাসীদের সমস্যার কথা বলতেই তিনি বলেন, ‘প্রবাসীরা আমাদের দেশের অ্যাম্বাসেডরের মতো, তাদের মাধ্যমেই বিদেশিরা আমাদের বাংলাদেশ সম্পর্কে জানেন। আমাদের কালচার ও আচার-ব্যবহার সম্পর্কে জানেন। আমাদের কর্মদক্ষতা সম্পর্কে জানেন।’ আরেকটি বিষয় হলো তারা যখন অর্থ-লেনদেন করে, তখন যেন হুন্ডির মাধ্যমে টাকা না পাঠায়। বৈধভাবে সঠিক উপায়ে দেশে টাকা পাঠায়।’
র্যাব কর্মকর্তা সারোয়ার আলম বলেন, ‘বিমানবন্দরে প্রবাসীরা যাতে হয়রানির শিকার না হন, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে অবহিত করেছি। ইতিমধ্যেই ঢাকা এয়ারপোর্টে প্রবাসীদের হয়রানি বন্ধে একটি হটলাইন চালু করার কথা হয়েছে। এয়ারপোর্টে কোনো প্রবাসী হয়রানির শিকার হলে তাৎক্ষণিক হটলাইনের মাধ্যমে অভিযোগ দিতে পারেন।’
হয়রানির কথা বলতে গিয়ে র্যাব কর্মকর্তা বলেন, ‘আমি গত দুইমাস পূর্বে দুবাই গিয়েছিলাম, আমাকে দুবাই প্রবাসীরা এয়ারপোর্টে তাদের হয়রানিসহ নানা সমস্যার কথা তুলে ধরেন। ইতিমধ্যেই আমি প্রবাসীদের সমস্যাগুলো মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছি। খুব শিগগিরই সেগুলো সমাধান করা হবে। ’
প্রবাসীদের সমস্যা জানাতে নিজের ব্যক্তিগত নম্বর দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমি প্রবাসীদেরকে আমার ব্যক্তিগত নম্বর দিয়েছিলাম, কিন্তু বর্তমানে দৈনিক ৭০০ থেকে ৯০০ কল আসে প্রবাসীদের নানা অভিযোগ নিয়ে। যার বেশিরভাগ অভিযোগই ব্যক্তিগত। শাশুড়ি মেয়ে দিচ্ছে না, ব্যক্তিগত লেনদেন অথবা পারিবারিক সমস্যার জন্যও আমাকে কল দেন। ’
আলাপচারিতায় চট্টগ্রাম এয়ারপোর্টে সম্প্রতি এক প্রবাসীকে হয়রানি করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এই ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক, কোনোভাবেই একজন প্রবাসীর সঙ্গে খারাপ আচরণ করা যাবে না। কারণ এটি একটি ফৌজদারি অপরাধ। একজন প্রবাসী দীর্ঘদিন পর দেশে আসেন, সুতরাং তাকে সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার মানসিকতা থাকতে হবে।’
অভিযুক্তদের বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়ে র্যাব কর্মকর্তা বলেন, ‘দোষীদের বিরুদ্ধে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।’
মোবাইলে ভুক্তভোগীর বিষয় নিয়ে তিনি বলেন, ‘অনেকেই একান্ত ব্যক্তিগত ব্যাপারে কল দেন, যে কারণে আসলেই যারা ভুক্তভোগী তারা কল দিয়ে লাইনে পান না জরুরি নম্বরে। সে কারণে সেবার মান নিম্নমুখী হতে পারে। সুতরাং সংশ্লিষ্ট নম্বর যেই সেবার জন্য দেওয়া হয়েছে, শুধুমাত্র সেই নম্বরে সেই সেবার জন্যই কল দেবেন। ’
প্রসঙ্গত, ভেজালবিরোধী অভিযান পরিচালনা করে দেশজুড়ে প্রসংশিত হন র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম। তার মেধা-কর্মদক্ষতায় আর সাহসিকতায় রাজধানীর ভেজালবিরোধী অভিযান প্রাণ ফিরে পেয়েছে। একই সঙ্গে ক্যাসিনোর মতো বড় বড় সব অভিযান পরিচালনা করে টাইমলাইনে আসেন তিনি। ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানে পরিচালনা করে অন্ধকার জগতের গডফাদারদের আইনের আওতায় নিয়ে এসেছেন তিনি। বাদ যায়নি সরকার দলীয় বড় বড় নেতারাও।