করোনা সংক্রমণের মারাত্মক হার কমাতে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট মাক্রোঁ কমপক্ষে এক মাসের কড়া লকডাউন ঘোষণা করেছেন৷ সেইসঙ্গে টিকাদান কর্মসূচির গতি বাড়িয়ে পরিস্থিতির উন্নতির আশা করছেন তিনি৷
করোনা ভাইরাস সংক্রমণের বেড়ে চলা হার নিয়ন্ত্রণে আনতে জার্মানিতে আরও কড়া লকডাউন নিয়ে রাজনৈতিক তর্কবিতর্কের মাঝে প্রতিবেশি দেশ ফ্রান্স কমপক্ষে এক মাসের জন্য কড়া লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিলো৷ দেশবাসীর উদ্দেশ্যে টেলিভিশন ভাষণে প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ বর্তমান করোনা পরিস্থিতির উল্লেখ করে একাধিক কড়াকড়ির ঘোষণা করলেন৷ দেশের কিছু অংশে বিচ্ছিন্নভাবে যে সব কড়া বিধিনিয়ম চালু ছিল, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গোটা দেশের জন্য সেগুলি প্রয়োগের সিদ্ধান্ত নিলেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট৷
মাক্রোঁ বলেন, মহামারির প্রত্যেকটি পর্যায়ে হয়তো ভুল সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷ তবে সেই ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে প্রতিবার ভুল শুধরে নেওয়া হয়েছে৷ তার মতে, এখনই পদক্ষেপ না নিলে নিয়ন্ত্রণ আর হাতে থাকবে না৷ উল্লেখ্য, দেশের বিপর্যস্ত অর্থনীতির স্বার্থে মাক্রোঁ এতদিন তৃতীয় লকডাউনের নিতে দ্বিধা করছিলেন৷
নতুন কড়াকড়ির আওতায় আগামী সপ্তাহান্ত থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর দোকানবাজার ছাড়া বাকি সব বিপণী বন্ধ রাখা হবে৷ সন্ধ্যা সাতটা থেকে কারফিউ চালু হবে৷ মানুষ নিজের বাসা থেকে ১০ কিলোমিটারের বেশি দূরে যেতে পারবেন না৷ অর্থাৎ দেশের মধ্যে মানুষের যাতায়াত কার্যত বন্ধ রাখা হচ্ছে৷ সারা দেশে তিন সপ্তাহের জন্য স্কুল পুরোপুরি বন্ধ থাকবে৷
ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাকি দেশের মতো ফ্রান্সেও করোনার টিকাদান কর্মসূচি ধীর গতিতে এগোচ্ছে৷ যথেষ্ট সংখ্যায় টিকার সরবরাহে ঘাটতির পাশাপাশি দেশের আমলাতান্ত্রিক জটিলতাকেও এই সংকটের জন্য দায়ী করা হচ্ছে৷ এখনো পর্যন্ত ফ্রান্সে মাত্র ১২ শতাংশ মানুষ টিকা পেয়েছেন৷ মাক্রোঁ টিকাদান কর্মসূচিতে গতি আনার প্রয়োজনীয়তার উল্লেখ করেন৷ তিনি বলেন, এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে ষাটের বেশি বয়সের মানুষ এবং এর এক মাস পর পঞ্চাশের বেশি বয়সের মানুষ টিকা পাবেন৷ কড়া লকডাউন ও দ্রুত টিকাদানের ফলে মে মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে ধাপে ধাপে কড়াকড়ি শিথিল করা সম্ভব হবে বলে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট আশা প্রকাশ করেন৷
এসবি/কেএম (ডিপিএ, রয়টার্স, এএফপি)