ফ্রান্স বাংলা প্রেস ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সাংগঠনিক সম্পাদক ইমরান মাহমুদের পরিচালনায় প্রতিবাদ সভায় উপস্থিত ছিলেন ফ্রান্স প্রবাসী বাংলাদেশী ও বাংলাদেশ সরকারের অবসর প্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তা মীর জাহান, ফ্রান্সে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশী ব্যবসায়ী আমিনুল আহসান সরকার, ফ্রান্স প্রবাসী চাকুরীজীবী মামুনুর রশিদ ও ফ্রান্স প্রবাসী শিক্ষার্থী জাহিদুন নবী সহ আরো অনেক বাংলাদেশী প্রবাসী।
“প্রবাসী বিপ্লব ২০১৯” এর অন্যতম সমন্বয়ক ফ্রান্স বাংলা প্রেস ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ফারুক নওয়াজ খাঁন এক ভিডিও লাইভ বার্তায় সভায় উপস্থিত সবাইকে প্রবাসী বিপ্লব ২০১৯ এর সাথে একাত্মতা পোষণ করার জন্য ধন্যবাদ জানান।
তিনি আফ্রিকাতে বাংলাদেশী প্রবাসীদের ন্যাক্কারজনক ভাবে হত্যাকান্ডের শিকার হওয়ার জঘন্য ঘটনা গুলোর প্রতি তীব্র নিন্দা জানান। এছাড়া আফ্রিকাতে নিযুক্ত বাংলাদেশ দূতাবাসের কুটনৈতিক ব্যর্থতা ও দূতাবাস কর্মকর্তাদের আন্তরিকতার স্বদিচ্ছার অভাবে আফ্রিকাতে দীর্ঘদিন থেকে সংগঠিত হয়ে আসা এই ন্যাক্কারজনক হত্যাকান্ড গুলো বন্ধ করা যাচ্ছে না বলে মত প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, দূতাবাস চাইলে এই পর্যন্ত যত গুলো প্রবাসী বাংলাদেশী হত্যাকান্ড আফ্রিকাতে সংঘঠিত হয়েছে আর পুলিশ বাদী হয়ে তার বিপরীতে যত মামলা করেছে তা আফ্রিকান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে মনিটর করা সম্ভব। কারণ কোন হত্যা মামলাই বিচার না হওয়া পর্যন্ত তামাদি হয় না। শুধু বাদীর অনুপস্থিতির কারণে স্থগিতাদেশ দেয় আদালত।
পাশাপাশি দূতাবাস অথরিটি তথা বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপযুক্ত নজরদারীর অভাবও এই ধরণের হত্যাকান্ড গুলো বন্ধের কোন সুরাহা না হওয়ার জন্য অনেক আংশে দ্বায়ী বলে তিনি মনে করেন।
আফ্রিকাতে যারা হত্যাকান্ডের স্বীকার হচ্ছেন, তাদের পরিবারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের আইনে দূতাবাস কর্তৃপক্ষের গাফলতির বিরুদ্ধে বাংলাদেশের আদালতে মামলা করার সুযোগ আছে বলে তিনি জানান।
ইমরান মাহমুদ তার বক্তব্যে বলেন, প্রতিটি দূতাবাস তার স্ব স্ব দেশের ভূখণ্ড হিসেবে সাংবিধানিক ভাবে বিবেচিত। সুতরাং আফ্রিকাতে আনডকুমেন্টেড ভাবে প্রবেশ করা সকল বাংলাদেশী আফ্রিকার জন্য প্রথমিক ভাবে অবৈধ হলেও, তারা বাংলাদেশ দূতাবাসে বাংলাদেশের একজন নাগরিক হিসেবে জীবনের নিরাপত্তারর জন্য সকল নাগরিক সাপোর্ট পেতে পারেন। এছাড়া মৃত্যুর পর বৈধ না অবৈধ এই প্রশ্নটা একেবারেই অমূলক। এক্ষেত্রে হত্যা মামলা গুলো মনিটর করতে অবৈধ স্ট্যাটাস কখনই বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে না, প্রয়োজন শুধু একটু স্বদিচ্ছার।
ফ্রান্স প্রবাসী অবসর প্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তা মীর জাহান বলেন, অত্যন্ত দুঃখের সাথেই বলতে হয় আফ্রিকাতে এসব হত্যাকান্ড বন্ধের বিষয়ে কার্যত কোন উদ্যোগ বাংলাদেশ সরকারের নেই। তিনি আরও বলেন, আফ্রিকায় নিযুক্ত বাংলাদেশ দূতাবাস আমাদেরকে জানিয়েছেন, “খবর নিলে দেখা যায় যিনি মারা গেছেন তিনি অবৈধ, তাই আমরা সহযোগীতা করতে পারি না।” দূতাবাস কর্তৃপক্ষের এমন দায়িত্ব জ্ঞানহীন মন্তব্যের তীব্র নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, পৃথিবীর কোন দেশে এমন কোন আইন কি আছে, যে অবৈধ ভাবে কেউ আমার দেশে ঢুকলে তাকে হত্যা করা হবে? অথবা সাউথ আফ্রিকান সরকার কি ঐসব হত্যাকারীদের লাইসেন্স দিয়ে দিয়েছেন, বাংলাদেশের যারা এখানে অবৈধ ভাবে এসেছে তাদেরকে তোমরা মেরে ফেলো? যদি এমন আইন আর লাইসেন্স না থাকে তবে আমার দেশের দূতাবাস কেন একটি মিথ্যা ও ভুয়া অযুহাত দাঁড় করালো যে তারা অবৈধ তাই আমরা চাইলেও কিছু করতে পারি না।