ঢাকা ১১:০০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৫, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
ফ্রান্সে বাংলাদেশ ইয়ুথ ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশন ব্রুতাইন এর নির্বাচন এবং পিঠা উৎসব অনুষ্ঠিত জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশন ফ্রান্সের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত প্যারিসে গোলাপগঞ্জ উপজেলা ক্রীড়া সংস্থা,ফ্রান্সের নতুন কমিটির অভিষেক ও পরিচিতি সভা অনুষ্টিত ফ্রান্সে নভেম্বর মাসে যেসব পরিবর্তন আসছে ২০২৬ সালের নির্বাচনে ভোট বর্জনের হুমকি শেখ হাসিনার ঝালকাঠির দুটি আসনে বিএনপির দুর্গে আঘাত হানতে প্রস্তুতি নিচ্ছে ‘ইসলামী জোট’ ফরাসি বাজেট নিয়ে সংসদে টানাপোড়েন: সরকার টিকে থাকবে কি? আওয়ামীলীগের নির্বাচনে অংশ গ্রহণের সুযোগ চান হাসিনা বালাগঞ্জ-গহরপুরে রুকন ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের স্বপ্নের মেগাপ্রকল্প ফ্রান্সের ফার্স্ট লেডি ব্রিজিত ম্যাক্রোঁকে নিয়ে অনলাইন বিদ্বেষমূলক প্রচারণা: ১০ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা শুরু

ফ্রান্স জুড়ে ইয়েলো ভেস্ট আন্দোলন অব্যাহতঃ গ্রেফতার ১২১

  • আপডেট সময় ০৬:০৬:০৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ জানুয়ারী ২০১৯
  • ৩৬৩ বার পড়া হয়েছে

শনিবার (১২ জানুয়ারি)ও ফ্রান্স জুড়ে জিলে যন (ইয়েলো ভেস্ট) আন্দোলনকারীরা সরকার বিরোধী মিছিল করেছে। ফরাসি প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে তাদের অভিযোগ, তিনি লাখ মানুষের দাবিকে অগ্রাহ্য করছেন। অন্যদিকে ফ্রান্সের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আন্দোলনকারীদের দমনে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণ করেছে। আয়ারল্যান্ডের আধাসরকারি সম্প্রচারমাধ্যম আরটিই জানিয়েছে, ফ্রান্স দেশজুড়ে মোতায়েন নিয়োগ করেছে নিরাপত্তা বাহিনীর প্রায় ৮০ হাজার সদস্যকে। শুধুমাত্র রাজধানী প্যারিসেই রয়েছে পাঁচ হাজার রায়ট পুলিশ।

ফ্রান্সের রাস্তায় চলমান আন্দোলনের প্রেক্ষিতে গত ১০ ডিসেম্বর প্রেসিডেন্ট ম্যাখোঁ জ্বালানি তেলের কর বৃদ্ধি বাতিল এবং অবসরভাতা ও ওভারটাইমের আয়ের ওপর থেকে কর প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন। ন্যূনতম মজুরিও সাত শতাংশ বৃদ্ধির ঘোষণা দেন। একই সঙ্গে তিনি জানান, আন্দোলনকারীদের দাবি দাওয়ার বিষয়ে দেশজুড়ে তিন মাস ধরে আলোচনা চলবে। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে অর্থনৈতিকভাবে উপেক্ষিত ফ্রান্সের মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত জনগণ আশ্বস্ত হয়নি। তারা রাষ্ট্রের নীতি নির্ধারনী প্রক্রিয়ায় কাঠামোগত পরিবর্তন চান।

ডি লা কনকর্ড চত্বরে পুলিশ বড় বড় ব্যারিকেড স্থাপন করেছে। সেখানে পাঠানো হয়েছে আর্মার্ড ভেহিক্যাল। অন্যদিকে শঁজ এলিজে এলাকায় রয়েছে কয়েকশ পুলিশ কর্মকর্তা। ওই এলাকায় থাকা গয়নার দোকান, ব্যাংক এবং অন্যান্য দোকানপাট জানলায় তক্তা লাগিয়েছে, যাতে আবার ভাঙচুর ও লুটপাট হলে ক্ষতি কম হয়।

হাজার হাজার আন্দোলনকারী গ্রা ডি লিয়োঁ রেলস্টেশনের কাছে থেকে মিছিল করে আর্ক ডি থ্রিওম্ফের দিকে যায়। সেখানে দেয়ালগুলো সব ঢাকা পড়ে গেছে আন্দোলনকারীদের গ্রাফিতিতে। পশ্চিম ফ্রান্স থেকে প্যারিসে যাওয়া একজন আন্দোলনকারী প্যাট্রিক বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, ‘আমরা প্যারিসে এসেছি আমাদের বক্তব্য তুলে ধরতে এবং স্বচক্ষে দেখতে যে এখানকার পরিস্থিতি আসলে কেমন।’

প্যারিসের উত্তরের একটি শহরে জড়ো হয়েছিলেন হাজারখানেক আন্দোলনকারী। অপর আরেকটি শহরে দেখা গেছে বারোশোর মতো আন্দোলনকারীকে রাস্তায় জমায়েত হতে। স্থানীয় পুলিশ আন্দোলনকারীদের মধ্যে পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে। তাদের গাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে বল বিয়ারিং পাওয়া গেছে। এদিকে একজন সাবেক বক্সারের ঘুষিতে দুই পুলিশ সদস্যের আহত হওয়ার ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস্টোফ কাস্টনার বলেছেন, আন্দোলনকারীরা সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। যারা আন্দোলনের ডাক দিচ্ছেন তারা জানেন, সহিংসতা হবে। সুতরাং পরিণতির জন্য তারা দায়ি থাকবেন।

ফ্রান্সের মোটরযান আইন অনুযায়ী, বেশি আলো প্রতিফলিত করে এমন এক ধরনের বিশেষ নিরাপত্তামূলক জ্যাকেট গাড়িতে রাখতে হয় চালকদের। এর রঙ সবুজাভ হলুদ (ইয়োলো)। আন্দোলনকারীরা এই জ্যাকেট (ভেস্ট) পরে বিক্ষোভের সূচনা করেছিল বলে আন্দোলনটি পরিচিতি পায় ‘ইয়েলো ভেস্ট’ নামে। এই আন্দোলনের কোনও ঘোষিত কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব নেই। গত নভেম্বরে শুরু হওয়া তাদের কর্মসূচিতে উত্তাল হতে শুরু করে প্যারিসসহ ফ্রান্সের বড় বড় সব শহর। জ্বালানি তেলের ওপর কর বৃদ্ধির সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে আসে সেইসব মানুষ, অর্থনৈতিক চাপে যারা এমনিতেই পর্যদুস্ত।

আন্দোলনকারীরা মনে করেন, ম্যাখোঁর আলোচনার ডাকে কোনও কাজ হবে না। সঁলিসের এক গোলচত্বরে অবস্থান নেওয়া ৬১ বছর বয়সী ইয়েলো ভেস্ট আন্দোলনকারী মিশেল বলেছেন, ‘এসব বিতর্কে কোনও ফল আসবে বলে মনে আমি করি না। আরআইসি কার্যকর হলে কিছু একটা হতে পারে।’ আরআইসির অর্থ ‘সিটিজেনস ইনিশিয়েটিভ রেফারেন্ডাম।’ আন্দোলনকারীদের প্রস্তাব হচ্ছে, কোনও বিষয়ে যদি সাত লাখ মানুষ দাবি জানান তাহলে সে বিষয়ে গণভোটের আয়োজন করতে হবে এক বছরের মধ্যে।

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

লক ডাউন পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবেলায় ফ্রান্সে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি

যুক্তরাজ্যে করোনার মধ্যেই শিশুদের মাঝে নতুন রোগের হানা

ফ্রান্সে বাংলাদেশ ইয়ুথ ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশন ব্রুতাইন এর নির্বাচন এবং পিঠা উৎসব অনুষ্ঠিত

ফ্রান্স জুড়ে ইয়েলো ভেস্ট আন্দোলন অব্যাহতঃ গ্রেফতার ১২১

আপডেট সময় ০৬:০৬:০৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ জানুয়ারী ২০১৯

শনিবার (১২ জানুয়ারি)ও ফ্রান্স জুড়ে জিলে যন (ইয়েলো ভেস্ট) আন্দোলনকারীরা সরকার বিরোধী মিছিল করেছে। ফরাসি প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে তাদের অভিযোগ, তিনি লাখ মানুষের দাবিকে অগ্রাহ্য করছেন। অন্যদিকে ফ্রান্সের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আন্দোলনকারীদের দমনে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণ করেছে। আয়ারল্যান্ডের আধাসরকারি সম্প্রচারমাধ্যম আরটিই জানিয়েছে, ফ্রান্স দেশজুড়ে মোতায়েন নিয়োগ করেছে নিরাপত্তা বাহিনীর প্রায় ৮০ হাজার সদস্যকে। শুধুমাত্র রাজধানী প্যারিসেই রয়েছে পাঁচ হাজার রায়ট পুলিশ।

ফ্রান্সের রাস্তায় চলমান আন্দোলনের প্রেক্ষিতে গত ১০ ডিসেম্বর প্রেসিডেন্ট ম্যাখোঁ জ্বালানি তেলের কর বৃদ্ধি বাতিল এবং অবসরভাতা ও ওভারটাইমের আয়ের ওপর থেকে কর প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন। ন্যূনতম মজুরিও সাত শতাংশ বৃদ্ধির ঘোষণা দেন। একই সঙ্গে তিনি জানান, আন্দোলনকারীদের দাবি দাওয়ার বিষয়ে দেশজুড়ে তিন মাস ধরে আলোচনা চলবে। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে অর্থনৈতিকভাবে উপেক্ষিত ফ্রান্সের মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত জনগণ আশ্বস্ত হয়নি। তারা রাষ্ট্রের নীতি নির্ধারনী প্রক্রিয়ায় কাঠামোগত পরিবর্তন চান।

ডি লা কনকর্ড চত্বরে পুলিশ বড় বড় ব্যারিকেড স্থাপন করেছে। সেখানে পাঠানো হয়েছে আর্মার্ড ভেহিক্যাল। অন্যদিকে শঁজ এলিজে এলাকায় রয়েছে কয়েকশ পুলিশ কর্মকর্তা। ওই এলাকায় থাকা গয়নার দোকান, ব্যাংক এবং অন্যান্য দোকানপাট জানলায় তক্তা লাগিয়েছে, যাতে আবার ভাঙচুর ও লুটপাট হলে ক্ষতি কম হয়।

হাজার হাজার আন্দোলনকারী গ্রা ডি লিয়োঁ রেলস্টেশনের কাছে থেকে মিছিল করে আর্ক ডি থ্রিওম্ফের দিকে যায়। সেখানে দেয়ালগুলো সব ঢাকা পড়ে গেছে আন্দোলনকারীদের গ্রাফিতিতে। পশ্চিম ফ্রান্স থেকে প্যারিসে যাওয়া একজন আন্দোলনকারী প্যাট্রিক বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, ‘আমরা প্যারিসে এসেছি আমাদের বক্তব্য তুলে ধরতে এবং স্বচক্ষে দেখতে যে এখানকার পরিস্থিতি আসলে কেমন।’

প্যারিসের উত্তরের একটি শহরে জড়ো হয়েছিলেন হাজারখানেক আন্দোলনকারী। অপর আরেকটি শহরে দেখা গেছে বারোশোর মতো আন্দোলনকারীকে রাস্তায় জমায়েত হতে। স্থানীয় পুলিশ আন্দোলনকারীদের মধ্যে পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে। তাদের গাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে বল বিয়ারিং পাওয়া গেছে। এদিকে একজন সাবেক বক্সারের ঘুষিতে দুই পুলিশ সদস্যের আহত হওয়ার ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস্টোফ কাস্টনার বলেছেন, আন্দোলনকারীরা সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। যারা আন্দোলনের ডাক দিচ্ছেন তারা জানেন, সহিংসতা হবে। সুতরাং পরিণতির জন্য তারা দায়ি থাকবেন।

ফ্রান্সের মোটরযান আইন অনুযায়ী, বেশি আলো প্রতিফলিত করে এমন এক ধরনের বিশেষ নিরাপত্তামূলক জ্যাকেট গাড়িতে রাখতে হয় চালকদের। এর রঙ সবুজাভ হলুদ (ইয়োলো)। আন্দোলনকারীরা এই জ্যাকেট (ভেস্ট) পরে বিক্ষোভের সূচনা করেছিল বলে আন্দোলনটি পরিচিতি পায় ‘ইয়েলো ভেস্ট’ নামে। এই আন্দোলনের কোনও ঘোষিত কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব নেই। গত নভেম্বরে শুরু হওয়া তাদের কর্মসূচিতে উত্তাল হতে শুরু করে প্যারিসসহ ফ্রান্সের বড় বড় সব শহর। জ্বালানি তেলের ওপর কর বৃদ্ধির সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে আসে সেইসব মানুষ, অর্থনৈতিক চাপে যারা এমনিতেই পর্যদুস্ত।

আন্দোলনকারীরা মনে করেন, ম্যাখোঁর আলোচনার ডাকে কোনও কাজ হবে না। সঁলিসের এক গোলচত্বরে অবস্থান নেওয়া ৬১ বছর বয়সী ইয়েলো ভেস্ট আন্দোলনকারী মিশেল বলেছেন, ‘এসব বিতর্কে কোনও ফল আসবে বলে মনে আমি করি না। আরআইসি কার্যকর হলে কিছু একটা হতে পারে।’ আরআইসির অর্থ ‘সিটিজেনস ইনিশিয়েটিভ রেফারেন্ডাম।’ আন্দোলনকারীদের প্রস্তাব হচ্ছে, কোনও বিষয়ে যদি সাত লাখ মানুষ দাবি জানান তাহলে সে বিষয়ে গণভোটের আয়োজন করতে হবে এক বছরের মধ্যে।