ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের পর এবার একটি মার্কিন থিংকট্যাংক বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে সমালোচনা করলো। বৃহস্পতিবার (১৫ নভেম্বর) ওয়াশিংটনে টম ল্যানটস হিউম্যান রাইটস কমিশন আয়োজিত ‘বাংলাদেশে নির্বাচন ও মানবাধিকার পরিস্থিতি’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে এ সমালোচনা করা হয়। অনুষ্ঠানে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, ওয়ার্ল্ড ভিশনসহ বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন। বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাটও অনুষ্ঠানে যোগ দেন। তবে তিনি কোনও কথা বলেননি। হিউম্যান রাইটস ওয়াচের পরিচালক জন সিফটন বলেন, ‘আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু ও অবাধ হবে—এমন কিছু বিশ্বাস করার কোনও কারণ নেই। নির্বাচনের আগে সরকারবিরোধী দলের কর্মীদের আটক করছে এবং মিডিয়া ও সুশীল সমাজের বাকরোধ করতে চাইছে।’ তিনি বলেন, ‘কেয়ারটেকার সরকার শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়া উভয়ের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। কিন্তু সরকার হাসিনার মামলা প্রত্যাহার করেছে।’ ওয়ার্ল্ড ভিশনের কর্মকর্তা লরা ব্রামন বলেন, ‘বাংলাদেশে অনেক উন্নতি হয়েছে। কিন্তু অনেক কিছু করার বাকি আছে।’
তিনি বলেন, ‘ডিসেম্বরের নির্বাচনে রাজনৈতিক সহিংতা বাংলাদেশের শিশুদের জন্য একটি বড় বিপদ এবং এই সহিংতায় অনেক সময়ে শিশুদের মারাত্মক ক্ষতি হয়।’
প্রশ্নোত্তর পর্বে ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ মিশনের উপপ্রধান মাহবুব সালেহ সিফটন এবং ব্রামন বিভিন্ন মন্তব্যের জবাব দেন।
সরকার নির্বাচনে বিদেশি পর্যবেক্ষক চায় না, এমন মন্তব্যের জবাবে সালেহ বলেন, ‘সরকার পর্যবেক্ষকদের স্বাগত জানায়।’
বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের আটক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধী দলের সংলাপে বিষয়টি আলোচিত হয়েছে। বিরোধী দলের যাদের বিরুদ্ধে ক্রিমিনাল মামলা নেই, প্রধানমন্ত্রী তাদের তালিকা দিতে বলেছেন।’
খালেদা জিয়ার শাস্তি প্রসঙ্গে মাহবুব সালেহ বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে শাস্তি দিয়েছে আদালত, সরকার নয়।’
চিত্রশিল্পী শহিদুল আলমের আটকের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘উনাকে আটক করা হয়েছে, কারণ তিনি জনসমক্ষে এমন মন্তব্য করেছেন—যা জাতীয় নিরাপত্তার পরিপন্থী ছিল।’
রোহিঙ্গাদের জোর করে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে বাংলাদেশ দূতাবাসের উপ-প্রধান সালেহ বলেন, ‘বহির্বিশ্বের চাপের কারণে নয়, বরং রোহিঙ্গারা ফেরত যেতে চায়নি বলে প্রত্যাবাসন শুরু হয়নি।’
শেখ হাসিনার মামলা প্রত্যাহার বিষয়ে জন সিফটনের মন্তব্যের জবাবে বাংলাদেশ মিশনের কাউন্সিলর নুরুল ইসলাম বলেন, ‘এ ধরনের দাবি একটি স্বাধীন বিচার বিভাগের ওপর সন্দেহ সৃষ্টির অপপ্রয়াস।’