ঢাকা ১২:৫৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ৫ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
ইইউর ‘নিরাপদ’ দেশের তালিকায় বাংলাদেশ, কঠিন হবে আশ্রয় পাওয়া ‌ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশের জন্য প্রস্তুত রোম জালালাবাদ এসোসিয়েশন ইতালির কমিটি ঘোষণা ও ঈদ পূর্ণমিলনী‌ প্যারিসে “কীভাবে গড়বেন নেক সন্তান” বইয়ের প্রকাশনা উৎসব অনুষ্ঠিত গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যার প্রতিবাদে প্যারিসে বিক্ষোভ সমাবেশ বাংলাদেশ ক্রিকেট ইতালির টুর্নামেন্টের গ্রুপ বাছাই সম্পন্ন: সোমবার উদ্বোধনী খেলা স্বাধীনতা দিবস পালন করেছে ফ্রান্স গ্লোবাল জালালাবাদ এসোসিয়েশন ফ্রান্সে জমকালো আয়োজনে বিয়ানীবাজার উপজেলা স্পোর্টিং ক্লাবের ইফতার ও জার্সি উন্মোচন প্যারিসে সাংবাদিকদের নতুন সংগঠনট “ফ্রান্স বাংলাদেশ জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন” শিওরখাল ওয়ান কমিউনিটির মানবিক উদ্যোগ: পবিত্র রমজানে ১০০ পরিবারে নগদ সহায়তা

ব্রেক্সিট পরবর্তী অভিবাসন নীতি : হতাশ বাংলাদেশি রেস্টুরেন্ট মালিকরা

  • আপডেট সময় ১০:১৩:০৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৬ এপ্রিল ২০১৮
  • ৯৩৯ বার পড়া হয়েছে

যুক্তরাজ্য সরকার যেভাবে ব্রেক্সিট বাস্তবায়ন করেছে তাতে ক্ষুব্ধ বাংলাদেশি রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ীরা। এদের অনেকেরই যুক্তরাজ্য জুড়ে রেস্টুরেন্ট ব্যবসা রয়েছে। তারা ২০১৬ সালের গণভোটে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছেড়ে যুক্তরাজ্যের বের হয়ে যাওয়ার পক্ষে ভোট দিয়েছিলেন। তাদেরকে নেতৃস্থানীয় সংসদ সদস্যরা আশ্বাস দিয়েছিলেন, ব্রেক্সিট কার্যকর হলে ইউরোপের অন্যান্য স্থান থেকে যাওয়া  অভিবাসী অনভিজ্ঞ রাঁধুনিদের তুলনায় বাংলাদেশি রাঁধুনিরা যুক্তরাজ্যে অধিক গ্রহণযোগ্যতা পাবেন।   কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, ইউরোপ থেকে যাওয়া অভিবাসীরা বাংলাদেশের মতো দেশ থেকে যাওয়া অভিবাসীদের তুলনায় যে অতিরিক্ত গ্রহণযোগ্যতা পেয়ে আসছিল, তা ব্রেক্সিট বাস্তবায়নের পরও একই থাকবে। এতে বাংলাদেশ থেকে দক্ষ রাঁধুনিদের যুক্তরাজ্যে অভিবাসী হওয়ার সুযোগ সীমিত হয়ে যাবে।

ব্রিটিশ কারি অ্যাওয়ার্ডসের প্রতিষ্ঠাতা এনাম আলি বলেছেন, ‘বিভিন্ন সময়ে বরিস জনসন (যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ব্রেক্সিটের পক্ষে সোচ্চার ভূমিকা রাখা ব্যক্তিত্ব) ও অন্যান্যদের আমরা বলতে শুনেছি, ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরে থেকে রাঁধুনিদের যুক্তরাজ্যে আনতে পারলে তা যুক্তরাজ্যের বাজারের জন্যই ভালো। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে, এ বিষয়ে কারও কোনও আগ্রহ নেই।’

তার ধারণা  অন্তত ৫০ শতাংশ—৬ হাজার— রেস্টুরেন্ট দক্ষ জনশক্তির অভাবে আগামী ১০ বছরের মধ্যে সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যাবে। এ বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করার জন্য তিনি বহু দিন ধরে প্রচারণা চালিয়ে আসছেন এবং সমস্যা সমাধানে কঠিনভাবে নিয়ন্ত্রিত ও অস্থায়ীভিত্তিতে হলেও রাঁধুনিদের জন্য ভিসা চালু করার পরামর্শ দিয়ে যুক্তরাজ্য সরকারকে চিঠি লিখেছিলেন। এতে করে রাঁধুনিরা বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাজ্যে এসে স্থানীয় কর্মীদের ঐতিহ্যবাহী খাবার রান্না করার প্রশিক্ষণ দিতে পারত।

সিলেটে জন্ম নেওয়া আলি পড়াশোনার জন্য যুক্তরাজ্যে এসেছিলেন ৭০ এর দশকে। নতুন প্রজন্মের রাঁধুনিদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য গত বছরে তিনি সুরের এপসমে ‘নর্থ ইস্ট সুরে কলেজ অফ টেকনোলজির’ (এনইএসসিওটি) সঙ্গে যৌথভাবে ‘লি রাজ অ্যাকাডেমি’ গড়ে তুলেছেন। একই বিষয়ে প্রচারণা চালানো বাংলাদেশ ক্যাটারার্স এসোসিয়েশনের মিন্টু চৌধুরী বলেছেন, ‘প্রতিদিন একটা বা দুটা বা তার বেশি রেস্টুরেন্ট বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই যার কারণ দক্ষ কর্মীর অভাব।’

রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ীরা অবশ্য লিবারেল ডেমোক্র্যাট নেতা স্যার ভিন্স কেবলের সমর্থন নিশ্চিত করতে পেরেছেন। তিনি রাঁধুনিদের জন্য ‘ভিন্দালু ভিসা’ নামে পরিচিতি পাওয়া বিশেষ অস্থায়ী ভিসার পক্ষে বক্তব্য দিয়েছেন যাতে যুক্তরাজ্যের ৩৬০ কোটি পাউন্ডের উপমহাদেশীয় খাবারের ব্যবসাকে সমস্যা থেকে বের করে আনা যায়।

কেবল বলেছেন, ‘এ বিষয়ে আগে হয়তো সন্দেহ ছিল কিন্তু এখন কারি রাঁধতে পারে এমন রাঁধুনিদের স্বল্পতা একটি স্পষ্ট সঙ্কটের রূপ ধারণ করেছে… কারি রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ীদের ব্রেক্সিটপন্থীরা স্পষ্টতই মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে ভুল পথে চালিত করেছে, যাতে তারা ইউরোপীয় ইউনিয়ন ত্যাগের পক্ষে ভোট দেয়। ব্রেক্সিট বাস্তবায়িত হলে, দক্ষিণ এশিয়া থেকে আরও বেশি কর্মী বিশেষ করে রাঁধুনিরা যুক্তরাজ্যে আসতে পারবে এমন ধারণা দেওয়া হয়েছিল। কারণ তখন ইউরোপ থেকে আসা কর্মীর সংখ্যা কমে যাবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা ঘটেনি।

সূত্র- বাংলা ট্রিবিউন

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

লক ডাউন পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবেলায় ফ্রান্সে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি

যুক্তরাজ্যে করোনার মধ্যেই শিশুদের মাঝে নতুন রোগের হানা

ইইউর ‘নিরাপদ’ দেশের তালিকায় বাংলাদেশ, কঠিন হবে আশ্রয় পাওয়া

ব্রেক্সিট পরবর্তী অভিবাসন নীতি : হতাশ বাংলাদেশি রেস্টুরেন্ট মালিকরা

আপডেট সময় ১০:১৩:০৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৬ এপ্রিল ২০১৮

যুক্তরাজ্য সরকার যেভাবে ব্রেক্সিট বাস্তবায়ন করেছে তাতে ক্ষুব্ধ বাংলাদেশি রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ীরা। এদের অনেকেরই যুক্তরাজ্য জুড়ে রেস্টুরেন্ট ব্যবসা রয়েছে। তারা ২০১৬ সালের গণভোটে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছেড়ে যুক্তরাজ্যের বের হয়ে যাওয়ার পক্ষে ভোট দিয়েছিলেন। তাদেরকে নেতৃস্থানীয় সংসদ সদস্যরা আশ্বাস দিয়েছিলেন, ব্রেক্সিট কার্যকর হলে ইউরোপের অন্যান্য স্থান থেকে যাওয়া  অভিবাসী অনভিজ্ঞ রাঁধুনিদের তুলনায় বাংলাদেশি রাঁধুনিরা যুক্তরাজ্যে অধিক গ্রহণযোগ্যতা পাবেন।   কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, ইউরোপ থেকে যাওয়া অভিবাসীরা বাংলাদেশের মতো দেশ থেকে যাওয়া অভিবাসীদের তুলনায় যে অতিরিক্ত গ্রহণযোগ্যতা পেয়ে আসছিল, তা ব্রেক্সিট বাস্তবায়নের পরও একই থাকবে। এতে বাংলাদেশ থেকে দক্ষ রাঁধুনিদের যুক্তরাজ্যে অভিবাসী হওয়ার সুযোগ সীমিত হয়ে যাবে।

ব্রিটিশ কারি অ্যাওয়ার্ডসের প্রতিষ্ঠাতা এনাম আলি বলেছেন, ‘বিভিন্ন সময়ে বরিস জনসন (যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ব্রেক্সিটের পক্ষে সোচ্চার ভূমিকা রাখা ব্যক্তিত্ব) ও অন্যান্যদের আমরা বলতে শুনেছি, ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরে থেকে রাঁধুনিদের যুক্তরাজ্যে আনতে পারলে তা যুক্তরাজ্যের বাজারের জন্যই ভালো। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে, এ বিষয়ে কারও কোনও আগ্রহ নেই।’

তার ধারণা  অন্তত ৫০ শতাংশ—৬ হাজার— রেস্টুরেন্ট দক্ষ জনশক্তির অভাবে আগামী ১০ বছরের মধ্যে সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যাবে। এ বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করার জন্য তিনি বহু দিন ধরে প্রচারণা চালিয়ে আসছেন এবং সমস্যা সমাধানে কঠিনভাবে নিয়ন্ত্রিত ও অস্থায়ীভিত্তিতে হলেও রাঁধুনিদের জন্য ভিসা চালু করার পরামর্শ দিয়ে যুক্তরাজ্য সরকারকে চিঠি লিখেছিলেন। এতে করে রাঁধুনিরা বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাজ্যে এসে স্থানীয় কর্মীদের ঐতিহ্যবাহী খাবার রান্না করার প্রশিক্ষণ দিতে পারত।

সিলেটে জন্ম নেওয়া আলি পড়াশোনার জন্য যুক্তরাজ্যে এসেছিলেন ৭০ এর দশকে। নতুন প্রজন্মের রাঁধুনিদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য গত বছরে তিনি সুরের এপসমে ‘নর্থ ইস্ট সুরে কলেজ অফ টেকনোলজির’ (এনইএসসিওটি) সঙ্গে যৌথভাবে ‘লি রাজ অ্যাকাডেমি’ গড়ে তুলেছেন। একই বিষয়ে প্রচারণা চালানো বাংলাদেশ ক্যাটারার্স এসোসিয়েশনের মিন্টু চৌধুরী বলেছেন, ‘প্রতিদিন একটা বা দুটা বা তার বেশি রেস্টুরেন্ট বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই যার কারণ দক্ষ কর্মীর অভাব।’

রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ীরা অবশ্য লিবারেল ডেমোক্র্যাট নেতা স্যার ভিন্স কেবলের সমর্থন নিশ্চিত করতে পেরেছেন। তিনি রাঁধুনিদের জন্য ‘ভিন্দালু ভিসা’ নামে পরিচিতি পাওয়া বিশেষ অস্থায়ী ভিসার পক্ষে বক্তব্য দিয়েছেন যাতে যুক্তরাজ্যের ৩৬০ কোটি পাউন্ডের উপমহাদেশীয় খাবারের ব্যবসাকে সমস্যা থেকে বের করে আনা যায়।

কেবল বলেছেন, ‘এ বিষয়ে আগে হয়তো সন্দেহ ছিল কিন্তু এখন কারি রাঁধতে পারে এমন রাঁধুনিদের স্বল্পতা একটি স্পষ্ট সঙ্কটের রূপ ধারণ করেছে… কারি রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ীদের ব্রেক্সিটপন্থীরা স্পষ্টতই মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে ভুল পথে চালিত করেছে, যাতে তারা ইউরোপীয় ইউনিয়ন ত্যাগের পক্ষে ভোট দেয়। ব্রেক্সিট বাস্তবায়িত হলে, দক্ষিণ এশিয়া থেকে আরও বেশি কর্মী বিশেষ করে রাঁধুনিরা যুক্তরাজ্যে আসতে পারবে এমন ধারণা দেওয়া হয়েছিল। কারণ তখন ইউরোপ থেকে আসা কর্মীর সংখ্যা কমে যাবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা ঘটেনি।

সূত্র- বাংলা ট্রিবিউন