হাজী হাবিবঃ আজব রাজনীতির আর আজব মানুষের দেশ আমাদের গর্বের বাংলাদেশ। গণতন্ত্র মুক্তির জন্য গঠিত ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এর প্রতীক ধানের শীষে ভোট দেওয়ায়, জোর করে ক্ষমতায় থাকা সরকার আওয়ামীলীগের (নৌকা মার্কার মালিক) দ্বারা গ্রুপ ধর্ষনের স্বীকার হয় চার সন্তানের জননী গৃহবধু তার সন্তানদের চোখের সামনেই।
চরিত্রহীনা বলতে চাই? বলার কারনে জেল হয়ে যায় তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়ার ছেলে ও আওয়ামীলীগের ক্ষমতায় আসার পেছনে তৎকালীন সেনা সমর্থীত সরকারের অন্যতম সহায়ক ব্যারিষ্টার মইনুল হোসেনের! ফ্যাসিজমের বিরুদ্ধে কথা বললে ইলিয়াছ আলীসহ শত শত জাতীয়তাবাদী সৈনিক গুম হয়ে যায়, লুটপাট আর এক নায়কতন্ত্রের বিরুদ্ধে বললে হয়ে যায় হাজার হাজার মানুষ খুন। সাহস করে কথা বললে টগবগে বিপ্লবীদের বুকে গুলি করে অন্যায় ও বেআইনিভাবে বিচার বহির্ভূত হত্যা ক্রস-ফায়ার বলে, ন্যায় ও আইনী শাস্তি বলে হালাল করে নেয়। গণতন্ত্রের অন্যতম হাতিয়ার ‘নির্বাচনী যুদ্ধ’তে প্রতিযোগিতা করলে প্রায় ৫০জন সংসদ সদস্য প্রার্থীকে রক্তাক্ত করে অপর প্রার্থীদের ও ভোটারদের আতঙ্কিত করে ফেলে, করা হয় ডজনাধিক মহিলা প্রার্থীকে লাঞ্চিত, কেন্দ্রীয় মহিলা দলের কর্ণধার আফরোজা আব্বাস-কে হত্যার জন্য চারবার আক্রমণকরা হয়, আর এটাই নাকি তাদের লেভেল প্লেয়িং ফীল্ড, যা সদম্ভে তারা ও তার প্রশাসনিক সংস্থাগুলো বলে বেড়িয়েছে। লক্ষ লক্ষ পরিবার ঈদ পূজা পার্বণের আনন্দ থেকে বঞ্চিত হয় পরিবারের কর্তা ও মায়ের আদুরে সন্তানরা জেলে বা প্রবাস নামক কারাগারে, অপরাধ শুধু জাতীয়তাবাদী ও গণতান্ত্রিক চেতনায় বিশ্বাসী হওয়া।
জীবিত থাকলে এই সব অপকর্মের নায়কের ভুমিকা পালন করে, মৃত্যুর পর জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান হয়ে যায়, এ যেনো আওয়ামীলীগ করলে সাত খুন করেও নিষ্পাপ, একাত্তরে রাজাকারি করলেও হয়ে যায় বীর মুক্তিযোদ্ধা, এ বিষয়ে সত্যিই বলেছিলেন প্রিয় নেতা শহীদ সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী, দেশে আজব মেশিন আবিষ্কার হয়েছে, যার নাম আওয়ামী লীগ, যার এক পাশ দিয়ে রাজাকার ঢুকালে অন্য পাশ দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা হয়ে ডেলিভার হয়। আর তাদের সেই জীবদ্দশার অপরাধকর্মের মূল হোতাদেরকে মৃত্যুর পর পারলে বেহেস্তের সার্টিফিকেট দিয়ে দেই আমরা বিএনপির নেতাকর্মীরা!
বিএনপি করলে বুকে গুলি করতে বলে মাঈনউদ্দিন খান বাদল, ইনু, নটির দল বলে বিএনপির নেতা কর্মীদের দেয় গালি। বিএনপি সাম্প্রদায়িক জঙ্গি, দেশের শত্রু বলে প্রতিদিন তারা গালি দেয়। দলের প্রতিষ্ঠাতা স্বাধীনতার ঘোষক বীর উত্তম শহীদ জিয়াউর রহমান পাকিস্তানি অফিসারকে হত্যা করে মুক্তিযুদ্ধ শুরু করেন, কামরুলরা সেই মহান সেক্টর কমান্ডারকে পাকিস্তানের চর বলতেও দ্বিধা করে না। খালেদা জিয়া তিন তিন বারের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী, আকাশচুম্বি জনপ্রিয়তার জন্য প্রতিদিন গালি দেয় শেখ হাসিনা থেকে কর্মী মর্জিনা হাসান মাহমুদরা। বিনা কারনে প্রতিহিংসার শিকার হয়ে ৭৪ বছর বয়সে পরিত্যক্ত একটি স্যাঁত স্যাঁতে বিল্ডিং-এ ভদ্র, সুস্থধারা, আপোষহীন ও গণতন্ত্রের রাজনীতির উজ্জ্বল নক্ষত্রকে প্রহসনের রায়ে নিষ্ঠুরভাবে বন্দি করে রেখেছে এখনো। যুক্তি দিয়ে ইতিহাস থেকে কথা বলেন, মাটি ও মানুষের সাথে সম্পর্ক তাই ডজন ডজন মামলা দিয়ে সাজানো রায়ে সাজা দিয়ে দেশের কোটি কোটি তারুন্যের অহংকার তারেক রহমানকে নির্বাসিত করে রেখেছে। বাংলাদেশের রাজনীতিতে সবচেয়ে বেশি মুক্তিযাদ্ধা শহীদ জিয়ার গড়া দল-বিএনপি’র রাজনীতিতে সম্পৃক্ত। হালের ঐক্যফ্রন্ট সংবিধান প্রণেতা, স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলক, বেসামরিক বাহিনীর প্রতিষ্ঠাতা বঙ্গবীর কাদির ছিদ্দিকসহ
সবাই রাজাকার। সন্ত্রাসের মূর্ত প্রতীক শামিম ওসমান ডাকে গালফোলা, মায়ার মতো সন্ত্রাসী বলে ড. কামাল বেয়াদব।
চিরশান্তিতে চির নিদ্রায় শায়নের জায়গা কবর, আর সেখানে গিয়েও কবরবাসী শহীদ সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর উপর রাগ ঝাড়লো হামলা চালিয়ে ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদকের নেতৃত্বে একদল মানুষরূপী পশু। ১৩ দফা দাবী আদায় করতে শাপলা চত্বরে সমবেত হয়েছিলেন আলেম উলামারা, সেই হেফাজতের জিকিররত দ্বীনি ভাইদের উপর ১০,০০০ গোলা বারুদ বর্ষণ করে চালানো হয় নির্মম হত্যাযজ্ঞ। যারা দেশ ভাগের বিরোধিতা করেছেন তাদের-কে আইনে ফাসি ছিলনা, যাবজ্জীবন জেল দেয়ার পর মনে খুশী লাগে নাই, মিটে নাই জিদ, তাই আবারও আইন করে ফাসি দিয়ে লাশের জানাজায় মানুষকে আসতে দেওয়া হয়নি।
সেই বিরোধী মতের ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া আজ রোহিঙ্গাদের মত চলছে। এক সপ্তাহ পুর্বে ঢাকা উত্তরার এক স্কুল শিক্ষকের সাথে কথা হলো, তিনি তার ছেলের টিউশন ফি দিতে গেলেন, ঐ সেন্টারে অধ্যায়ন করা আরেক ছাত্র আসছে তার মাকে নিয়ে টিউশন ফি দিয়ে আর পড়তে আসবেনা বিদায় নিতে, তাকে জিঙ্গাসা করলে কেন আসবেনা, জবাবে ছাত্রটি জানায় তার বাবা ও ভাই বিএনপি করে দীর্ঘ দিন যাবত জেলে, ঢাকায় থেকে আমাদের জীবন যাপন কঠিন হয়ে গেছে, তাই গ্রামে চলে যাচ্ছি !
আর সাংবাদিক জগতেও আজ বিরাজ করছে চরম অরাজকতা, আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মজলুম মাহমুদুর রাহমানের প্রতি নির্যাতন নিপিডন জাতি অপলক দৃষ্টিতে দেখল। সাংবাদিকদের অবস্হ দেখলে মনে হয় সরকারের কথার বাহিরে কিছু লিখলে নির্মম নির্যাতন নেমে আসে ?
এই পরিস্থিতি আজ আমাদের সোনার বাংলার ?
একটি হাদিস মনে পড়লো, যারা সমাজে, রাষ্ট্রে অন্যায় অবিচার করে, তাদের শক্ত হাতে প্রতিবাদ করতে, তা না পারলে বুঝাতে, তারও মুরোদ না থাকলে অন্তর দিয়ে ঘৃণা করতে । আজ সময় এসেছে যারা নির্যাতনের চরম শিখরে তাদের জানাজায় শরীক না হয়ে বর্জন করা। কারও মনে কষ্ট দিতে নয়, প্রতিকার চাই । এক দেশি এক জাতি তাই ভাবতে হবে রাজনীতির কারনে কেন এই নির্মমতা চলবে ? লেখাটা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
লেখকঃ সাবেক সিনিয়র সহ সভাপতি ফ্রান্স বিএনপি ও সিনিয়র সহ সভাপতি, সাইবার ইউজার দল, কেন্দ্রীয় কমিটি।