ঢাকা ১২:১৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
বিজয় বিবস উপলক্ষে ইপিএস কমিউনিটি আয়োজন করল “শিশুদের চিত্রাঙ্কন ও কবিতা আবৃত্তি” গহরপুর জামিয়ার ৬৮তম বার্ষিক মাহফিল বৃহস্পতিবার: সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হযরত শাহ জামাল (রহ.) দারুস সুন্নাহ নুরীয়া ইসলামীয়া মাদ্রাসার ওয়াজ ও দুয়া মাহফিল ৫ জানুয়ারি প্যারিসে বাংলাদেশ দূতাবাসের আয়োজনে মহান বিজয় দিবস ২০২৪ উদযাপন বালাগঞ্জে শাহ আকিবুন নূর চৌধুরী বৃত্তি বিতরণ সম্পন্ন ফ্রান্সে প্রবাসে সাংবাদিকতার প্রতিবন্ধকতা ও উত্তরনের পন্থা শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত বালাগঞ্জে আল ইসলাহ ত্রি-বার্ষিক কাউন্সিল সম্পন্ন স্বদেশ গমন উপলক্ষে আবু বক্করকে সংবর্ধনা প্রদান ২১আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় তারেক রহমান খালাস পাওয়ায় ফ্রান্সে যুবদলের আনন্দ উৎসব বালাগঞ্জে আমনের বাম্পার ফলন : মাঠে মাঠে বাতাসে দুলছে ধানের শীষ

অব্যাহত আছে ফ্রান্সে ইয়েলো ভেস্টের কর্মসূচি: অগ্নিসংযোগ, সংঘর্ষ, ভাঙচুর

  • আপডেট সময় ১১:১৪:২৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ৯ ফেব্রুয়ারী ২০১৯
  • ২৫৯ বার পড়া হয়েছে

বিক্ষোভের ১৩তম সপ্তাহেও ফ্রান্সের রাজপথ উত্তাল করে রেখেছে ইয়েলো ভেস্ট আন্দোলনকারীরা। শনিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) প্যারিসসহ ফ্রান্সের অন্যান্য শহরে তারা সংঘর্ষে জড়িয়েছে পুলিশের সঙ্গে। পুলিশের ছোঁড়া ছোট বিস্ফোরকে গুরুতরভাবে আহত হয়েছে এক আন্দোলনকারী। বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ইয়েলো ভেস্টের পক্ষ থেকে পুলিশি দমন পীড়নের প্রতিবাদ জানানো যেমন হয়েছে, তেমনি এ সপ্তাহের বিক্ষোভ কর্মসূচিতে সহিংসতা কমিয়ে আনার চেষ্টা করতেও দেখা গেছে তাদের।

ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দাবি, দেশজুড়ে ১২ হাজারের মতো আন্দোলনকারী বিক্ষোভে রাস্তায় নেমেছিল। আর প্যারিসের রাস্তায় ছিল হাজার চারেক মতো। কিন্তু দেশটির পুলিশের সূত্রগুলো বলছে ভিন্ন কথা। তাদের হিসেবে মতে প্যারিসের বাইরে ২১ হাজারের মতো বিক্ষোভকারী রাস্তায় নেমেছিল।

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া একজন হফ সালোন। তিনি একজন কমপিউটার ইঞ্জিনিয়ার। তার ভাষ্য, ‘আমরা শিশু নেই। আমরা আসলেই আমাদের পছন্দ-অপছন্দ নির্ধারণের অধিকার চাই। রাজনীতিবিদদের পছন্দের তালিকা গ্রহণযোগ্য নয়।’

ফ্রান্সের মোটরযান আইন অনুযায়ী, বেশি আলো প্রতিফলিত করে এমন এক ধরনের বিশেষ নিরাপত্তামূলক জ্যাকেট গাড়িতে রাখতে হয় চালকদের। এর রঙ সবুজাভ হলুদ (ইয়েলো)। আন্দোলনকারীরা এই জ্যাকেট (ভেস্ট) পরে বিক্ষোভের সূচনা করেছিল বলে আন্দোলনটি পরিচিতি পায় ‘ইয়েলো ভেস্ট’ নামে। এই আন্দোলনের কোনও ঘোষিত কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব নেই। গত নভেম্বরে শুরু হওয়া তাদের কর্মসূচিতে উত্তাল হতে শুরু করে প্যারিসসহ ফ্রান্সের বড় বড় সব শহর। জ্বালানি তেলের ওপর কর বৃদ্ধির সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে আসে সেইসব মানুষ, অর্থনৈতিক চাপে যারা এমনিতেই পর্যদুস্ত।

ফ্রান্সে শনিবারের (৯ ফেব্রুয়ারি) বিক্ষোভ কর্মসূচিতে জাতীয় পরিষদ ও সিনেটের মতো প্রতিষ্ঠানের চিহ্ন প্রদর্শন করতে দেখা গেছে। বাধা পেয়ে বিক্ষোভকারীদের কেউ কেউ পুলিশের দিকে ঢিল ছুড়েছে। তারা একটি স্কুটার ও পুলিশের একটি গাড়িতেও আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। কিছু দোকানপাট ভাঙচুরের শিকার হয়েছে।

বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দিতে পুলিশ ‘স্টিং বল গ্রেনেড’ ছুড়েছিল। এক বিক্ষোভকারী হাত দিয়ে তুলতে গেলে একটি ‘স্টিং বল গ্রেনেড’ বিস্ফোরিত হয়। এতে ওই তার এক হাত গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আরেক ব্যক্তিকে দেখা গেছে পুলিশের ব্যারিকেডের সামনে, যার মাথা দিয়ে গড়িয়ে রক্ত পড়ছিল।

এদিকে ফরাসি প্রেসিডেন্টের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ও সংসদের নিম্ন কক্ষের সভাপতি রিচার্ড ফেরান্ডের বাসভবনে অগ্নিসংযোগের চেষ্টা করা হয়েছে। এ ঘটনার জন্য কারা দায়ি তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। কিন্তু প্রেসিডেন্টসহ বিভিন্ন মহল এ নিয়ে ইয়েলো ভেস্ট আন্দোলনকারীদের প্রচণ্ড সমালোচনা করেছে।
সহিংসতার বিষয়ে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরাতে রকহায়া ডিয়ালো লিখেছিলেন, জাতীয় ভাস্কর্য ভেঙে ফেলা থেকে শুরু করে পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলা করার মতো যেসব সহিংস আচরণ ইয়েলো ভেস্ট আন্দোলনকারীদের করতে দেখা গেছে, তার পেছনে রয়েছে তাদের নিজেদেরই সহিংসতার ভুক্তভোগী হওয়ার দীর্ঘ ইতিহাস। তারা যে সহিংসতার ভুক্তভোগী, তা দৃষ্টির আড়ালে থাকা এক নিরবচ্ছিন্ন প্রক্রিয়া। সে সহিংসতা উপেক্ষিত হওয়ার, অবিচারের শিকার হওয়ার। বেকারত্ব, বঞ্চনা ও দারিদ্রে নিত্যদিন হেনস্থা হওয়া সাধারণ ফরাসিদের ক্ষোভ কাজ করেছে ইয়েলো ভেস্ট আন্দোলনের পেছনে।

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

লক ডাউন পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবেলায় ফ্রান্সে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি

যুক্তরাজ্যে করোনার মধ্যেই শিশুদের মাঝে নতুন রোগের হানা

বিজয় বিবস উপলক্ষে ইপিএস কমিউনিটি আয়োজন করল “শিশুদের চিত্রাঙ্কন ও কবিতা আবৃত্তি”

অব্যাহত আছে ফ্রান্সে ইয়েলো ভেস্টের কর্মসূচি: অগ্নিসংযোগ, সংঘর্ষ, ভাঙচুর

আপডেট সময় ১১:১৪:২৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ৯ ফেব্রুয়ারী ২০১৯

বিক্ষোভের ১৩তম সপ্তাহেও ফ্রান্সের রাজপথ উত্তাল করে রেখেছে ইয়েলো ভেস্ট আন্দোলনকারীরা। শনিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) প্যারিসসহ ফ্রান্সের অন্যান্য শহরে তারা সংঘর্ষে জড়িয়েছে পুলিশের সঙ্গে। পুলিশের ছোঁড়া ছোট বিস্ফোরকে গুরুতরভাবে আহত হয়েছে এক আন্দোলনকারী। বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ইয়েলো ভেস্টের পক্ষ থেকে পুলিশি দমন পীড়নের প্রতিবাদ জানানো যেমন হয়েছে, তেমনি এ সপ্তাহের বিক্ষোভ কর্মসূচিতে সহিংসতা কমিয়ে আনার চেষ্টা করতেও দেখা গেছে তাদের।

ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দাবি, দেশজুড়ে ১২ হাজারের মতো আন্দোলনকারী বিক্ষোভে রাস্তায় নেমেছিল। আর প্যারিসের রাস্তায় ছিল হাজার চারেক মতো। কিন্তু দেশটির পুলিশের সূত্রগুলো বলছে ভিন্ন কথা। তাদের হিসেবে মতে প্যারিসের বাইরে ২১ হাজারের মতো বিক্ষোভকারী রাস্তায় নেমেছিল।

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া একজন হফ সালোন। তিনি একজন কমপিউটার ইঞ্জিনিয়ার। তার ভাষ্য, ‘আমরা শিশু নেই। আমরা আসলেই আমাদের পছন্দ-অপছন্দ নির্ধারণের অধিকার চাই। রাজনীতিবিদদের পছন্দের তালিকা গ্রহণযোগ্য নয়।’

ফ্রান্সের মোটরযান আইন অনুযায়ী, বেশি আলো প্রতিফলিত করে এমন এক ধরনের বিশেষ নিরাপত্তামূলক জ্যাকেট গাড়িতে রাখতে হয় চালকদের। এর রঙ সবুজাভ হলুদ (ইয়েলো)। আন্দোলনকারীরা এই জ্যাকেট (ভেস্ট) পরে বিক্ষোভের সূচনা করেছিল বলে আন্দোলনটি পরিচিতি পায় ‘ইয়েলো ভেস্ট’ নামে। এই আন্দোলনের কোনও ঘোষিত কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব নেই। গত নভেম্বরে শুরু হওয়া তাদের কর্মসূচিতে উত্তাল হতে শুরু করে প্যারিসসহ ফ্রান্সের বড় বড় সব শহর। জ্বালানি তেলের ওপর কর বৃদ্ধির সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে আসে সেইসব মানুষ, অর্থনৈতিক চাপে যারা এমনিতেই পর্যদুস্ত।

ফ্রান্সে শনিবারের (৯ ফেব্রুয়ারি) বিক্ষোভ কর্মসূচিতে জাতীয় পরিষদ ও সিনেটের মতো প্রতিষ্ঠানের চিহ্ন প্রদর্শন করতে দেখা গেছে। বাধা পেয়ে বিক্ষোভকারীদের কেউ কেউ পুলিশের দিকে ঢিল ছুড়েছে। তারা একটি স্কুটার ও পুলিশের একটি গাড়িতেও আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। কিছু দোকানপাট ভাঙচুরের শিকার হয়েছে।

বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দিতে পুলিশ ‘স্টিং বল গ্রেনেড’ ছুড়েছিল। এক বিক্ষোভকারী হাত দিয়ে তুলতে গেলে একটি ‘স্টিং বল গ্রেনেড’ বিস্ফোরিত হয়। এতে ওই তার এক হাত গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আরেক ব্যক্তিকে দেখা গেছে পুলিশের ব্যারিকেডের সামনে, যার মাথা দিয়ে গড়িয়ে রক্ত পড়ছিল।

এদিকে ফরাসি প্রেসিডেন্টের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ও সংসদের নিম্ন কক্ষের সভাপতি রিচার্ড ফেরান্ডের বাসভবনে অগ্নিসংযোগের চেষ্টা করা হয়েছে। এ ঘটনার জন্য কারা দায়ি তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। কিন্তু প্রেসিডেন্টসহ বিভিন্ন মহল এ নিয়ে ইয়েলো ভেস্ট আন্দোলনকারীদের প্রচণ্ড সমালোচনা করেছে।
সহিংসতার বিষয়ে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরাতে রকহায়া ডিয়ালো লিখেছিলেন, জাতীয় ভাস্কর্য ভেঙে ফেলা থেকে শুরু করে পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলা করার মতো যেসব সহিংস আচরণ ইয়েলো ভেস্ট আন্দোলনকারীদের করতে দেখা গেছে, তার পেছনে রয়েছে তাদের নিজেদেরই সহিংসতার ভুক্তভোগী হওয়ার দীর্ঘ ইতিহাস। তারা যে সহিংসতার ভুক্তভোগী, তা দৃষ্টির আড়ালে থাকা এক নিরবচ্ছিন্ন প্রক্রিয়া। সে সহিংসতা উপেক্ষিত হওয়ার, অবিচারের শিকার হওয়ার। বেকারত্ব, বঞ্চনা ও দারিদ্রে নিত্যদিন হেনস্থা হওয়া সাধারণ ফরাসিদের ক্ষোভ কাজ করেছে ইয়েলো ভেস্ট আন্দোলনের পেছনে।