এম. আজাদ,প্যারিসঃ জালালাবাদ এসোসিয়েশন ফ্রান্সের আয়োজনে গতকাল রবিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) ফ্রান্সের প্যারিসে প্রায় সহস্রাধিক মানুষের উপস্থিতিতে জমকালো অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে হয়ে গেল সিলেট উৎসব।
জালালাবাদ এসোসিয়েশনের বিশ্বব্যাপী উৎসব পালনের ধারাবাহিকতায় ঢাকা, কলকাতা, নিউ ইয়র্ক ও টরেন্টোর পর প্যারিসে এই উৎসব পালিত হল।
গতকাল প্যারিস ও তার পার্শবর্তী এলাকায় সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত যন্ত্রচালিত যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকায় নির্ধারিত সময়ের চেয়ে কিছুটা বিলম্বে অনুষ্ঠান শুরু হয়।
অনুষ্টানের প্রধান অতিথি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও Campaign for Popular Education এর নির্বাহী পরিচালক, Education watch এর সদস্য সচিব, জালালাবাদ এসোসিয়েশনের এর আজীবন সদস্য রাশেদা কে চোধুরী সন্ধ্যা ৬ ঘটিকার সময় উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্ভোধন করেন।
জালালাবাদ এসোসিয়েশন ফ্রান্স এর সভাপতি জনাব হেনু মিয়ার সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আলী হোসেনের উপস্থাপনায় – প্রথমেই পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন এসোসিয়েশনের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক হাফিজুর রহমান ও অনুষ্ঠানের মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন ট্রেজারার আজাদ মিয়া।
উৎসব অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফ্রান্স এ অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত কাজী ইমতিয়াজ হোসেন ।
চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক, আল হারামাইন গ্রূপ অব কোম্পানি, চেয়ারম্যান, এন আর বি ব্যংক, বিশিষ্ট সমাজ সেবক, জালালাবাদ এসোসিয়েশনের আজীবন সদস্য জনাব মাহতাবুর রহমান নাসির ।
জালালাবাদ এসোসিয়েশন ইতালি ও যুক্তরাজ্যের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যবৃন্দ ,ফ্রান্সের বাংলাদেশ কমিউনিটির নেতৃবৃন্দ ও বিপুল সংখ্যক ফ্রান্স প্রবাসীরা আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
জালালাবাদ এসোসিয়েশন ফ্রান্সের কার্যনির্বাহী কমিটিকে শপথবাক্য পাঠ করান জালালাবাদ এসোসিয়েশনের আজীবন সদস্য উৎসব অনুষ্টানের প্রধান অথিতি জনাবা রাশেদা কে চোধুরী, এরপর সবাই মিলে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি সম্মান জানিয়ে সকলে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন।
এরপর সমস্বরে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করে সম্মাননা স্বারক প্রদান পর্ব শুরু হয়, রাষ্ট্রে, শিক্ষায় ও প্রবাসী কল্যানে ও সমাজে, অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ এসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে জনাবা রাশেদা কে চোধুরী,জনাব কাজী ইমতিয়াজ হুসেন,জনাব মাহতাব উদ্দিন নাসির,জনাব মুহিবুর রহমান,জনাব টি এম রেজা, জনাব ফারুক খান, জনাব অলি আহমেদ শামীম সহ মোট ৯ জন কেসম্মাননা স্বারক প্রদান করা হয়
প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে জালালাবাদ এসোসিয়েশন ঢাকা’র সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের শুভেচ্ছাবার্তার মাধ্যমে এরকম একটি প্রাণবন্ত উৎসব আয়োজনের জন্য আয়োজকদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন, তিনি এসোসিয়েশনের বিশ্বব্যাপী যে সেবা কার্যক্রম রয়েছে তা উপস্থিত সকলকে অবহিত করেন এবং নানারকম গৃহীত কার্যক্রম তুলে ধরেন, বিশেষ করে তিনি সমাজে নারীর ক্ষমতায়ন ও অংশগ্রহন নিশ্চিতকরণে সর্বোচ্চ গুরুত্তারোপ করেন।
বিশেষ অতিথির ভাষণে চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক, আল হারামাইন গ্রূপ অব কোম্পানি, চেয়ারম্যান, এন আর বি ব্যংক, বিশিষ্ট সমাজ সেবক, জালালাবাদ এসোসিয়েশনের আজীবন সদস্য জনাব মাহতাবুর রহমান নাসির প্যারিসে এসোসিয়েশনের একটি দপ্তর স্থাপন করে প্রবাসীদের কল্যানে কাজ করার জন্য তিনি সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন এবং অনুষ্ঠানে ফ্রান্স প্রবাসীদের উপস্তিতিতে অত্যন্ত সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং এখানে পুনরায় আসার আশ্বাস প্রদান করেন।
ফ্রান্স এ অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত জনাব কাজী ইমতিয়াজ হোসেন তার বক্তব্যে বাংলাদেশের উন্নয়নে সিলেট অঞ্চলের জনগণের অবদানের বেশ কিছু উদাহরণ দিয়ে এই ধারা অব্যাহত রাখার জন্য এবং জালালাবাদ এসোসিয়েশনকে সব ধরণের সহযোগিতা প্রদান করার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে জালালাবাদ এসোসিয়েশন ফ্রান্স ও সিলেট বিভাগের ইতিহাস ঐতিহ্য ভিত্তিক দুটি ডকুমেন্টরি প্রদর্শিত করেন ইউরোপ স টি প্রতিনিধি ও অনলাইন নিউজ পোর্টাল প্যারিস বার্তা সম্পাদক মাম হিমু।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে ছিল বাংলাদেশ থেকে আসা জনপ্রিয় কন্ঠশিল্পী পলাশ ও ফ্রান্সের স্থানীয় শিল্পীদের পরিবেশনায় জমকালো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
এক পর্যায়ে সিলেটের অতিহ্যবাহী “ধামাইল” নাচে প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথিবৃন্দের অংশগ্রহণে এক আনন্দঘন মুহূর্তের সূচনা হয়, সব মিলিয়ে দর্শকদের উপচে পড়া উপস্থিতিতে সিলেট উৎসব যেন যেন প্যারিসের বুকে এক টুকরো বাংলাদেশে পরিণত হয়েছিল।
অনুষ্ঠান শেষে বিশেষ অতিথি জনাব মাহতাবুর রহমান নাসেরের সৈজন্যে সোনার বাংলা রেস্টুরেন্টে নৈশভোজের আয়োজন করা হয়।