ফ্রান্সে বৈধভাবে বাস করা বাংলাদেশীদের একটি বড় অংশ শরনার্থী মর্যাদাপ্রাপ্ত বা উদ্বাস্তু। এর পাশাপাশি অভিবাসী হিসেবে ও বাংলাদেশীরা বৈধভাবে ফ্রান্সে বাস করছেন। উদ্বাস্তু মর্যাদা তাদেরই দেয়া হয় যাদের জন্য নিজ দেশে কোন না কোন সমস্যা রয়েছে এবং সে সমস্যার কারনে তারা সেখানে নিরাপদ নয়। সেক্ষেত্রে জেনেভা কনভেনশন অনুযায়ী তাদের উদ্বাস্তু মর্যাদা দেয়া হয়। জেনেভা কনভেনশনে স্বাক্ষরকারী প্রতিটি দেশেই উদ্বাস্তুদের নিরাপত্তা দেয়ার বিধান রয়েছে।
উদ্বাস্তু মর্যাদার পাশাপাশি রাষ্ট্রবিহীন নাগরিকদেরও নিরাপত্তা বিধানের কথা উল্লেখ রয়েছে জেনেভা কনভেনশনে।
এছাড়া অন্তবর্তী সুরক্ষা দেয়ারও বিধান রয়েছে। কোন ব্যক্তি’র সমস্যা যদি আপাতভাবে সাময়িক মনে হয় সে ক্ষেত্রে অন্তবর্তী বা সাময়িক সুরক্ষা দেয়া হয়। এটার মেয়াদ এক বছর হয়ে থাকে। এরপর প্রতি বছর এটা নবায়ন করা যায়।
উদ্বাস্তু মর্যাদা পাবার পর কোন কারনে তা বাতিল হয় সেটা অনেকেই জানেন না। নিজ দেশে কোন না কোন সমস্যার কারনে একজন দেশত্যাগে বাধ্য হন। এ কারনেই তাদের বিশেষ সুবিধা প্রদান করা হয়। অনেকে এ অধিকারকে অবহেলা করে উদ্বাস্তু মর্যাদা হারাতে পারেন।
কোন কারনে হারাতে পারে:
জেনেভা করভেনশনে এ বিষয়ে পরিষ্কার উল্লেখ আছে কোন ব্যক্তি যদি স্বেচ্ছায় তার মুল দেশের ( যে দেশ থেকে এসেছেন) নিরাপত্তা চায় তাহলে তার মর্যাদা বাতিল হবে। এখানে নিরাপত্তা অর্থে বলা হয়েছে, মুল দেশে ভ্রমনের উদ্দেশ্যে গমন, নিজ দেশের দুতাবাস অথবা কনস্যুলেট দপ্তরে যাতায়াত বা যোগাযোগ করা ইত্যাদি।
একজন ব্যক্তি উদ্বাস্তু হবার পর স্বাভাবিক নিয়মেই তার জাতীয়তা বিষয়টি স্থগিত হয়ে যায়। কোন ব্যক্তি যদি তার জাতীয়তা পুনরুদ্ধার করে তাহলে সে মর্যাদা হারাবে।
স্বেচ্ছায় নিজ দেশে প্রত্যাবর্তন করলে ও মর্যাদা হারাবে।
এছাড়া কেউ চাইলে নিজ উদ্যোগে এ মর্যাদা বাতিলের আবেদন করতে পারেন। এ বিষয়ে বিস্তারিত লেখা আছে জেনেভা কনভেনশনের মর্যাদা পরিবর্তন বিষয়ক ধারায়।
অন্তবর্তী বা সাময়িক সুরক্ষাপ্রাপ্ত ব্যক্তিরাও তাদের মর্যাদা হারাতে পারেন, যদি নিরাপত্তার নেই এমনটি প্রমানে ব্যর্থ হন।
এসবের পাশাপাশি তাদের মর্যাদা বাতিল হবে যাদের আচরনের মাধ্যমে প্রমানিত হবে, ফ্রান্সের নিরাপত্তার জন্য হুমকি, ফৌজদারী অভিযোগে সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তি, সামাজিক শান্তি ও অপরের জন্য হুমকি হয়ে ওঠা ব্যক্তি। তাদের ক্ষেত্রে উদ্বাস্তু মর্যাদা বাতিলের অধিকার সংরক্ষন করা হয়।
এর পাশাপাশি রাষ্ট্রবিহীন নাগরিকদের ক্ষেত্রে যদি প্রমানিত হয় সে অন্য কোন দেশের নাগরিকত্ব গুহন করেছে এবং তা গোপন করেছে সে ক্ষেত্রে তার মর্যাদা বাতিল হবে। উদাহরন হিসেবে বলা যায়, অনেক রোহিঙ্গা বর্তমানে রাষ্ট্রবিহীন নাগরিক হিসেবে উদ্বাস্তু মর্যাদা পাচ্ছে। কোন কারনে যদি প্রমানিত হয় তারা বাংলাদেশ বা অন্য কোন দেশের প্রকৃত নাগরিক ছিলো এবং সে পরিচয় গোপন রেখেছিলো তাহলে তার মর্যাদা বাতিল হবে।
উদ্বাস্তু মর্যাদা পাওয়া একজনের অধিকার কোন কোন ক্ষেত্রে একজন ফরাসী নাগরিকের চেয়ে কম নয়। সুতরাং হটকারিতা করে এ অধিকার নষ্ট করার কোন দরকার নেই।
সূত্র -দক্ষিণ সুরমা ফ্রান্স থেকে নেয়া ।