ডেস্ক: বিদেশি কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে বছরে ৩০ হাজার পাউন্ড (প্রায় ৩২ লাখ টাকা) বেতন দেওয়ার যে শর্ত রয়েছে, সেটি বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাজ্য সরকার। গতকাল মঙ্গলবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এ সিদ্ধান্তের কথা জানান।
বরিস জনসন বলেন, ব্রেক্সিট (ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্যের বিচ্ছেদ) পরবর্তী সময়ের জন্য সরকার যে অভিবাসন নীতি প্রণয়ন করতে যাচ্ছে, আয়ের ওই শর্ত তার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়। এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে গত এক দশক ধরে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ সরকারের কঠোর অভিবাসন নীতি থেকে অনেকখানি সরে এল। নতুন সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্যসেবা, গবেষণা, প্রকৌশল, রেস্তোরাঁ খাতসহ বিভিন্ন কাজে বিদেশি কর্মী নিয়োগের সবচেয়ে বড় বাধা দূর হবে।
এদিকে ৩১ জানুয়ারি ইইউ জোট থেকে যুক্তরাজ্যের বিচ্ছেদ ঘটবে। তবে বাণিজ্যসহ অন্যান্য বিষয়ে নতুন সম্পর্ক নির্ধারণের জন্য চলতি বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত ১১ মাস অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থা হিসেবে বিদ্যমান সম্পর্ক অটুট থাকবে। ৩১ ডিসেম্বর ইইউ নাগরিকদের অবাধ প্রবেশাধিকার বন্ধ করে দেওয়ার প্রত্যাশা সরকারের। ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে নতুন অভিবাসন নিয়ম চালুর লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে যুক্তরাজ্য সরকার।
প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন, ইইউ নাগরিকদের অবাধ প্রবেশাধিকার বন্ধ করতে ব্রেক্সিটের পক্ষে ভোট দিয়েছে দেশের জনগণ। ব্রেক্সিট–পরবর্তী নতুন অভিবাসন নিয়ম হবে বিশ্বের সব দেশের নাগরিকদের জন্য সমান। অস্ট্রেলিয়ার আদলে পয়েন্টভিত্তিক নিয়ম চালু করা হবে। এ নিয়মে ভিসা দেওয়ার ক্ষেত্রে মেধা, শিক্ষাগত যোগ্যতা, ইংরেজি দক্ষতা, সংশ্লিষ্ট কাজের দক্ষতাসহ বিভিন্ন দিক বিবেচনায় নেওয়া হবে।
ইইউ–বহির্ভূত দেশের নাগরিকদের বর্তমানেও পয়েন্টভিত্তিক নিয়ম মেনে যুক্তরাজ্যে যেতে হয়। কিন্তু ইইউভুক্ত দেশের নাগরিকেরা চাইলেই যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমাতে পারেন।
গত সোমবার লন্ডনে অনুষ্ঠিত ‘যুক্তরাজ্য-আফ্রিকা বিনিয়োগ সম্মেলনে’ প্রধানমন্ত্রী জনসন বলেন, ব্রেক্সিট-পরবর্তী অভিবাসন নিয়ম পাসপোর্ট নয়, মানুষকে প্রাধান্য দেবে।
পয়েন্টভিত্তিক এই নিয়ম কীভাবে কাজ করবে তা নিয়ে আগামী সপ্তাহের মধ্যে ‘মাইগ্রেশন এডভাইজরি কমিটি’ একটি প্রতিবেদনে প্রকাশের কথা রয়েছে। ওই প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে আগামী মার্চ মাসের মধ্যে সরকার নতুন অভিবাসন নিয়মের খসড়া প্রকাশ করবে।
সূত্র প্রথম আলো