ঢাকা ০১:০৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
প্যারিসে জুলাই বিপ্লবের কবিতাপাঠ ও আলোচনা সভা গুম-খুন, বর্বরতা তদন্তে জাতিসংঘ টিম ঢাকায় পুনর্গঠিত না হলে আওয়ামী লীগকে বাদ দিয়ে নির্বাচন অগ্রহণযোগ্য হবে না : বদিউল আলম মজুমদা আটক আ. লীগ নেতাকে র‍্যাবের গাড়ি থেকে ছিনতাইয়ের অভিযোগ বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে নিউইয়র্ক পোস্টের মতে প্যারিস আর বিশ্বের সেরা রোমান্টিক শহর নয়! দূর্নীতির অভিযোগে ফেসে যাচ্ছেন ফ্রান্সের তালহাসহ তিন রাষ্ট্রদূত প্যারিসে প্যারিফেরিকে গাড়ির গতি ঘন্টায় ৫০ কি.মি এ নামছে সড়ক পরিবহন উপদেষ্টার সঙ্গে ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ গনঅভ্যুথানের স্রোতে বিদায় স্বৈরশাসন ন্যাশন্স লীগের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে রাতে বেলজিয়ামের বিপক্ষে নামছে ফ্রান্স

মেক্রোঁর কূটনৈতিক বিজয় : অভিবাসী ইস্যুতে একমত ইউরোপ

  • আপডেট সময় ০৪:৫৫:৪৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ জুন ২০১৮
  • ৭৮৪ বার পড়া হয়েছে

১০ ঘন্টার ‘ম্যারাথন’ আলোচনার পর অবশেষে অভিবাসী ইস্যুতে ঐক্যমত্যে পৌছেছে ইউরোপের দেশগুলো। শুক্রবার বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে অভিবাসীর চাপ সামলাতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে সম্মত হন ইউরোপের নেতারা।  এতে বেশ কিছু কার্যকরী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা। এ খবর দিয়েছে বিবিসি।
খবরে বলা হয়েছে, অভিবাসী ইস্যুতে সিদ্ধান্ত নিতে শুক্রবার সকালে ব্রাসেলসে বৈঠকে বসেন ইউরোপের ২৮টি দেশের নেতারা। ঘন্টার পর ঘন্টা যুক্তি-তর্কের পরেও কোন সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারছিলেন না তারা । দীর্ঘ ১০ ঘন্টার আলোচনা শেষে ইউরোপের সরকার প্রধানরা নিজেদের মধ্যে সমঝোতা করতে সক্ষম হন। সিদ্ধান্ত নেন, ইউরোপের বিভিন্ন দেশে অভিবাসী কেন্দ্র নির্মাণ করা হবে। সংশ্লিষ্ট দেশ নিজস্ব অর্থায়নেই এ কেন্দ্র তৈরি করবে। এ কেন্দ্রগুলো প্রকৃত শরণার্থী ও অবৈধ অভিবাসীদের যাচাই করবে। অবৈধ অভিবাসীদের বাধ্যতামূলক নিজের দেশে ফেরত পাঠানো হবে। আর প্রকৃত শরণার্থীদের স্বেচ্ছায় পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করবে। তবে কোন কোন দেশে শরণার্থী কেন্দ্র নির্মাণ করা হবে ও কোথায় তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে সে বিষয়ে পরিস্কার কোন সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারেনি ইইউ।
আফ্রিকা থেকে হাজার হাজার শরণার্থী ইউরোপে পাড়ি জমায়। অভিবাসন প্রত্যাশী এসব শরণার্থীদের ইউরোপে প্রবেশের মূল পথ হলো ইতালি। তাই এ দেশটিতে অভিবাসীর চাপ সবচেয়ে বেশি। পরিস্থিতির উত্তরণে অন্য দেশগুলোর সহায়তা না পেলে ইউরোপীয় ইউনিয়নে গৃহীত সিদ্ধান্তে বাঁধা দেয়ার হুমকি দিয়েছে ইতালি। দেশটি বলেছে, অভিবাসী ইস্যুতে সহায়তা না পেলে তারা ভেটো ক্ষমতার ব্যবহার করবে। ইতালির প্রধানমন্ত্রী গিসেপ্পে কোন্তে বলেন, এই সম্মেলনের পর ইউরোপ আরো সংহত ও দায়িত্বশীল হয়ে উঠেছে। এখন ইতালি আর একা না। জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেল বলেন, মতভেদ দুর করতে আরো ইইউকে আরো অনেক কাজ করতে হবে।
এছাড়া বৈঠকে ইউরোপের বাইরের দিকের সীমান্ত আরো জোরদার করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তুরস্ক ও উত্তর আফ্রিকার দেশগুলোতে অর্থ সহায়তা আরো বৃদ্ধি করতে একমত হন সরকার প্রধানরা।  সামাজিক ও অর্থনৈতিক পরিবর্তনের জন্য আফ্রিকার দেশগুলোতে আরো বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। যেন সেখানকার অধিবাসীরা তুলনামূলক উন্নত জীবনের লোভে ইউরোপে পাড়ি না জমায়। ইউরোপে প্রবেশের জন্য শরণার্থীদের ব্যবহৃত নৌ ও স্থলপথ বন্ধ করার বিষয়ে আলোচনা করেন ইউরোপের নেতারা। তারা ‘ডাবলিন রেজুলেশনে’ পরিবর্তন আনার প্রস্তাব দেন।
ইতালি ছাড়া ইউরোপে শরণার্থীদের অন্যতম প্রবেশ পথ হলো গ্রীস। দেশ দু’টিতে বিপুল সংখ্যক শরণার্থী আশ্রয় নিয়েছে। তারা ইউরোপের অন্য দেশগুলোকেও শরণার্থীর বোঝা বহন করার প্রস্তাব দিয়েছে। কিন্তু ইউরোপের উন্নত দেশগুলো শরণার্থীর বেঝা নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। এ নিয়ে ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে বিভক্তি দেখা দিয়েছে। তাই দফায় দফায় বৈঠকে বসছেন তারা। জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেল বলেন, ইইউ’র জন্য অভিবাসী একটি বড় ইস্যু। তিনি নিজেও অভিবাসী ইস্যুতে জার্মানিতে ব্যাপক চাপের মুখে রয়েছেন। এ নিয়ে সৃষ্ট সঙ্কটে মার্কেল সরকারের পতনও ঘটতে পারে। মার্কেল সরকারের অংশীদার সিএসইউ দলের নেতা ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হোর্স্ট সিহোফার তাকে আগামী রবিবার পর্যন্ত সময় বেধে দিয়েছেন। এর মধ্যে সঙ্কটের নিরসন না হলে তিনি জোট ছেড়ে যাওয়ার হুমকি দিয়েছেন। সিহোফার জার্মান সীমান্তে আশ্রয় নেয়া অভিবাসীদের তাড়িয়ে দেয়ারও হুমকি দিয়েছেন। আর সিএসইউ’র সমর্থন ছাড়া মার্কেল পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারাবেন।

 

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

লক ডাউন পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবেলায় ফ্রান্সে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি

যুক্তরাজ্যে করোনার মধ্যেই শিশুদের মাঝে নতুন রোগের হানা

প্যারিসে জুলাই বিপ্লবের কবিতাপাঠ ও আলোচনা সভা

মেক্রোঁর কূটনৈতিক বিজয় : অভিবাসী ইস্যুতে একমত ইউরোপ

আপডেট সময় ০৪:৫৫:৪৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ জুন ২০১৮

১০ ঘন্টার ‘ম্যারাথন’ আলোচনার পর অবশেষে অভিবাসী ইস্যুতে ঐক্যমত্যে পৌছেছে ইউরোপের দেশগুলো। শুক্রবার বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে অভিবাসীর চাপ সামলাতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে সম্মত হন ইউরোপের নেতারা।  এতে বেশ কিছু কার্যকরী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা। এ খবর দিয়েছে বিবিসি।
খবরে বলা হয়েছে, অভিবাসী ইস্যুতে সিদ্ধান্ত নিতে শুক্রবার সকালে ব্রাসেলসে বৈঠকে বসেন ইউরোপের ২৮টি দেশের নেতারা। ঘন্টার পর ঘন্টা যুক্তি-তর্কের পরেও কোন সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারছিলেন না তারা । দীর্ঘ ১০ ঘন্টার আলোচনা শেষে ইউরোপের সরকার প্রধানরা নিজেদের মধ্যে সমঝোতা করতে সক্ষম হন। সিদ্ধান্ত নেন, ইউরোপের বিভিন্ন দেশে অভিবাসী কেন্দ্র নির্মাণ করা হবে। সংশ্লিষ্ট দেশ নিজস্ব অর্থায়নেই এ কেন্দ্র তৈরি করবে। এ কেন্দ্রগুলো প্রকৃত শরণার্থী ও অবৈধ অভিবাসীদের যাচাই করবে। অবৈধ অভিবাসীদের বাধ্যতামূলক নিজের দেশে ফেরত পাঠানো হবে। আর প্রকৃত শরণার্থীদের স্বেচ্ছায় পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করবে। তবে কোন কোন দেশে শরণার্থী কেন্দ্র নির্মাণ করা হবে ও কোথায় তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে সে বিষয়ে পরিস্কার কোন সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারেনি ইইউ।
আফ্রিকা থেকে হাজার হাজার শরণার্থী ইউরোপে পাড়ি জমায়। অভিবাসন প্রত্যাশী এসব শরণার্থীদের ইউরোপে প্রবেশের মূল পথ হলো ইতালি। তাই এ দেশটিতে অভিবাসীর চাপ সবচেয়ে বেশি। পরিস্থিতির উত্তরণে অন্য দেশগুলোর সহায়তা না পেলে ইউরোপীয় ইউনিয়নে গৃহীত সিদ্ধান্তে বাঁধা দেয়ার হুমকি দিয়েছে ইতালি। দেশটি বলেছে, অভিবাসী ইস্যুতে সহায়তা না পেলে তারা ভেটো ক্ষমতার ব্যবহার করবে। ইতালির প্রধানমন্ত্রী গিসেপ্পে কোন্তে বলেন, এই সম্মেলনের পর ইউরোপ আরো সংহত ও দায়িত্বশীল হয়ে উঠেছে। এখন ইতালি আর একা না। জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেল বলেন, মতভেদ দুর করতে আরো ইইউকে আরো অনেক কাজ করতে হবে।
এছাড়া বৈঠকে ইউরোপের বাইরের দিকের সীমান্ত আরো জোরদার করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তুরস্ক ও উত্তর আফ্রিকার দেশগুলোতে অর্থ সহায়তা আরো বৃদ্ধি করতে একমত হন সরকার প্রধানরা।  সামাজিক ও অর্থনৈতিক পরিবর্তনের জন্য আফ্রিকার দেশগুলোতে আরো বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। যেন সেখানকার অধিবাসীরা তুলনামূলক উন্নত জীবনের লোভে ইউরোপে পাড়ি না জমায়। ইউরোপে প্রবেশের জন্য শরণার্থীদের ব্যবহৃত নৌ ও স্থলপথ বন্ধ করার বিষয়ে আলোচনা করেন ইউরোপের নেতারা। তারা ‘ডাবলিন রেজুলেশনে’ পরিবর্তন আনার প্রস্তাব দেন।
ইতালি ছাড়া ইউরোপে শরণার্থীদের অন্যতম প্রবেশ পথ হলো গ্রীস। দেশ দু’টিতে বিপুল সংখ্যক শরণার্থী আশ্রয় নিয়েছে। তারা ইউরোপের অন্য দেশগুলোকেও শরণার্থীর বোঝা বহন করার প্রস্তাব দিয়েছে। কিন্তু ইউরোপের উন্নত দেশগুলো শরণার্থীর বেঝা নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। এ নিয়ে ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে বিভক্তি দেখা দিয়েছে। তাই দফায় দফায় বৈঠকে বসছেন তারা। জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেল বলেন, ইইউ’র জন্য অভিবাসী একটি বড় ইস্যু। তিনি নিজেও অভিবাসী ইস্যুতে জার্মানিতে ব্যাপক চাপের মুখে রয়েছেন। এ নিয়ে সৃষ্ট সঙ্কটে মার্কেল সরকারের পতনও ঘটতে পারে। মার্কেল সরকারের অংশীদার সিএসইউ দলের নেতা ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হোর্স্ট সিহোফার তাকে আগামী রবিবার পর্যন্ত সময় বেধে দিয়েছেন। এর মধ্যে সঙ্কটের নিরসন না হলে তিনি জোট ছেড়ে যাওয়ার হুমকি দিয়েছেন। সিহোফার জার্মান সীমান্তে আশ্রয় নেয়া অভিবাসীদের তাড়িয়ে দেয়ারও হুমকি দিয়েছেন। আর সিএসইউ’র সমর্থন ছাড়া মার্কেল পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারাবেন।