গত বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এক বছরে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশের (ইইউ) ১ লাখ ৩০ হাজার নাগরিক যুক্তরাজ্য ছেড়ে গেছেন। ২০০৮ সালের পর এটি ইইউ নাগরিকদের যুক্তরাজ্য ছাড়ার সর্বোচ্চ রেকর্ড। আজ বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্যের জাতীয় পরিসংখ্যান দপ্তর (অফিস ফর ন্যাশনাল স্ট্যাটিসটিকস) প্রকাশিত অভিবাসন তথ্যে এ চিত্র উঠে এসেছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইইউ অভিবাসীর সংখ্যা কমার বিপরীতে ইইউ-বহির্ভূত দেশের অভিবাসন বেড়েছে যুক্তরাজ্যে। তবে সব মিলিয়ে আলোচ্য এক বছর সময়ে যুক্তরাজ্যে বসতি গড়া মোট অভিবাসীর সংখ্যা ২৯ হাজার কমে হয়েছে ২ লাখ ৪৪ হাজার। মোট অভিবাসন হলো, একটি নির্দিষ্ট সময়ে যে পরিমাণ লোক যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমায় এবং যে পরিমাণ লোক যুক্তরাজ্য ত্যাগ করে তার পার্থক্য।
ইইউর সঙ্গে যুক্তরাজ্যের বিচ্ছেদ (ব্রেক্সিট নামে পরিচিত) ঘটানোর সিদ্ধান্তের ফলে যুক্তরাজ্যে কর্মরত ইইউ নাগরিকেরা প্রস্থান করছে বলে শোনা যাচ্ছিল। সরকারি এই পরিসংখ্যান চিত্র সেই গুঞ্জনের সত্যতা নিশ্চিত করল।
বর্তমানে ইইউর নিয়ম অনুযায়ী, এই জোটভুক্ত ২৮টি দেশের নাগরিক অবাধে এক দেশ থেকে অন্য দেশে গিয়ে বসবাস এবং কাজ করতে পারেন। তাঁরা পাড়ি দেওয়া সংশ্লিষ্ট দেশের নাগরিকদের জন্য বিদ্যমান সব সরকারি সুযোগ-সুবিধাও ভোগ করেন। বিচ্ছেদের পর ইইউ নাগরিকেরা যুক্তরাজ্যে অবাধে প্রবেশের এই সুযোগ আর পাবেন না। ইইউ নাগরিকদের চলে যাওয়ার কারণে ইতিমধ্যে যুক্তরাজ্যে বিভিন্ন শ্রম ও মেধাভিত্তিক খাতে কর্মী-সংকট দেখা দিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
পরিসংখ্যান প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এক বছরে ইইউ থেকে যুক্তরাজ্যে আসা অভিবাসীর সংখ্যাও কমেছে ৪৭ হাজার। এ সময় মোট ২ লাখ ২০ হাজার ইইউ নাগরিক যুক্তরাজ্যে পাড়ি দেন। বেশিসংখ্যক ইইউ নাগরিকের প্রস্থান এবং স্বল্পসংখ্যক ইইউ নাগরিকের আগমনের ঘটনায় আলোচ্য এক বছরে যুক্তরাজ্যে বসতি গড়া ইইউ নাগরিকের মোট সংখ্যা কমে হয়েছে ৯০ হাজার, যা গত পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন।
একই সময়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরের দেশগুলো থেকে ২ লাখ ৮৫ হাজার অভিবাসী যুক্তরাজ্যে পাড়ি দিয়েছেন। বিপরীতে মাত্র ৮০ হাজার যুক্তরাজ্য ছেড়ে গেছেন। ফলে ইইউ-বহির্ভূত দেশের মোট অভিবাসীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৫ হাজারে, যা গত ছয় বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
ওই এক বছরে ৭৩ হাজার ব্রিটিশ নাগরিক দেশে ফিরেছেন। বিপরীতে ১ লাখ ২৫ হাজার ব্রিটিশ নাগরিক বিদেশে পাড়ি দিয়েছেন।