ঢাকা ০৭:৫৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৫, ৯ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
বৃটেনে সাফল্যের আলো ছড়ালেন বাংলাদেশি তরুণী তাহমিনা আহমদ পোস্টাল ব্যালটে ভোট ও ইসির অ্যাপ্স “পোস্টাল ভোটে বিডি” শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত ৬৫ বছরের ঊর্ধ্বদের জন্য ফরাসি ভাষা ও নাগরিক শিক্ষা পরীক্ষার বাধ্যবাধকতা থেকে অব্যাহতি পর্তুগাল-বাংলাদেশ কমিউনিটির আয়োজনে আনন্দ ভ্রমণ কারাদণ্ড কার্যকরের আগে এলিসি প্রাসাদে পূর্বসূরি সারকোজিকে আমন্ত্রণ জানালেন ম্যাক্রোঁ লুভর জাদুঘরে দুঃসাহসিক ডাকাতি: ফ্রান্সে দোষারোপের রাজনীতি তুঙ্গে বিশ্ববিখ্যাত প্যারিস ল্যুভর জাদুঘরে চুরি ফ্রান্সে “আশা এবং আমার সংগ্রাম” গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন ও প্রকাশনা দেড় হাজারের বেশি মানুষের অংশগ্রহনে লন্ডনে অনুষ্ঠিত হলো ১২তম মুসলিম চ্যারিটি রান বিগত ১১৭ বছরের সব দলিল অনলাইনে যাচ্ছে, ভূমি মালিকদের করণীয়

‘সৌদি-আমিরাতে ফ্রান্সের অস্ত্র রফতানি আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন’-আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংঘটন

  • আপডেট সময় ১০:৫০:৫০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ মার্চ ২০১৮
  • ২৯৫ বার পড়া হয়েছে

ইয়েমেনে সামরিক আগ্রাসন চালানো সৌদি আরব ও আরব আমিরাতের কাছে অস্ত্র বিক্রির ঘটনায় সমালোচনার মুখে পড়েছে ফ্রান্স। মানবাধিকার সংস্থাগুলোর নতুন এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফরাসি সরকার ইয়েমেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে সৌদি আরব ও আমিরাতকে অস্ত্র সরবরাহ করে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে থাকতে পারে।

ফ্রান্সভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যাকশন বাই ক্রিস্টিয়ান্স ফর দ্য অ্যাবোলিশন অব টর্চার (এসিএটি-ফ্রান্স)-এর সঙ্গে মিলে এই প্রতিবেদন তৈরি করেছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।

ফ্রান্সভিত্তিক আইনি প্রতিষ্ঠান আনসিলে অ্যাভোকাট বলছে, ওই দুই আরব দেশে ফ্রান্সের অস্ত্র রফতানি আন্তর্জাতিক অঙ্গীকারের লঙ্ঘন হতে পারে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ফ্রান্স সরকার সৌদি আরবে ও আমিরাতে সামরিক সরঞ্জাম রফতানির অনুমোদন দিয়েছে, যেখানে এই অস্ত্র ইয়েমেনের সংঘাতে ব্যবহৃত হতে পারে। এটি ব্যবহার করে সেখানে যুদ্ধাপরাধ চালানো হতে পারে।

ফ্রান্স অস্ত্র বাণিজ্য চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী দেশগুলোর একটি। ২০১৪ সালে দেশটি ওই চুক্তি অনুমোদন করে। এর মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক মানবিক আইন লঙ্ঘনে ব্যবহৃত হতে পারে এ ধরনের ক্ষেত্রে অস্ত্র বিক্রি বা রফতানি না করতে দেশটির ওপর আইনি বাধ্যবাধকতা আরোপিত হয়।

ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী ফিলিপ এডোয়ার্ড বলেছেন, আমদানিকারক দেশগুলো আত্মরক্ষামূলক উদ্দেশ্যেই এ অস্ত্র সংগ্রহ করেছে। দেশগুলোতে হুথি আগ্রাসন ঠেকাতেই এসব সমরাস্ত্র সামগ্রী রফতানি ফ্রান্স।

চলতি মার্চের গোড়ার দিকে ফরাসি প্রেসিডেন্ট বলেন, সংযুক্ত আরব আমিরাতের বাহিনী কিছু ফরাসি সরঞ্জাম নিয়ে ইয়েমেনের ভূখণ্ডে অবস্থান করছে। কিন্তু এগুলো এমন অস্ত্র নয় যা সমান্তরাল ক্ষতিতে জড়িত এবং যা অবশ্যই থামাতে হয়।

 মঙ্গলবার অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের এক বিবৃতিতে ফরাসি সরকারের স্বচ্ছতার অভাবের নিন্দা জানানো হয়েছে। সংস্থাটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফরাসি কর্তৃপক্ষের অস্ত্র রফতানি ও বিক্রির ক্ষেত্রে যথেষ্ট স্বচ্ছতার অভাব রয়েছে।

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ইয়েমেনের যুদ্ধবিরোধী একটি জোট গতিশীল হচ্ছে। এই জোটের পক্ষ থেকে সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন জোটের কয়েকটি দেশে ‘অব্যাহত সহায়তা ও অস্ত্র বিক্রির যৌক্তিকতা’ নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে।

২০১৫ সালের মার্চে ইরান সমর্থিত শিয়াপন্থী হুথি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে ‘অপারেশন ডিসাইসিভ স্টর্ম’ নামে সামরিক অভিযান পরিচালনা শুরু করে সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন জোট। এ অভিযানে এখন পর্যন্ত অন্তত ১০ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন। যুদ্ধের ফলে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে প্রতিরোধযোগ্য রোগে মৃত্যু হয়েছে আরও ১০ হাজার মানুষের। গৃহহীন হয়েছেন কয়েক লাখ মানুষ। সৌদি জোটের বিমান হামলা থেকে বাদ পড়েনি জানাজার নামাজ থেকে শুরু করে বিয়েবাড়িও। তবে এতো কিছুর পরও হুথিদের কাছ থেকে দেশটির রাজধানী সানা’র নিয়ন্ত্রণ নিতে ব্যর্থ হয়েছে সৌদি আরব। কিন্তু তাদের ভয়াবহ বিমান হামলার তাণ্ডবে দুর্ভিক্ষের মুখে পড়েছেন দেশটির সাধারণ মানুষ।

স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইন্সটিটিউট (এসআইপিআরআই) বলছে ২০১৩ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত সৌদি আরবের তৃতীয় বৃহত্তম অস্ত্র সরবরাহকারী দেশের পরিণত হয়েছে ফ্রান্স। একই সময়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দ্বিতীয় বৃহত্তম অস্ত্র সরবরাহকারী রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে দেশটি।

২০১৮ সালের জানুয়ারির গোড়ার দিকে আমিরাতে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধের ঘোষণা দেয় নরওয়ে। ইয়েমেন যুদ্ধে জড়িত পক্ষগুলোর কাছে জার্মানির অস্ত্র রফতানি স্থগিতের ঘোষণার কয়েক দিনের মাথায় নরওয়ের পক্ষ থেকে ওই ঘোষণা আসে।

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

লক ডাউন পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবেলায় ফ্রান্সে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি

যুক্তরাজ্যে করোনার মধ্যেই শিশুদের মাঝে নতুন রোগের হানা

বৃটেনে সাফল্যের আলো ছড়ালেন বাংলাদেশি তরুণী তাহমিনা আহমদ

‘সৌদি-আমিরাতে ফ্রান্সের অস্ত্র রফতানি আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন’-আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংঘটন

আপডেট সময় ১০:৫০:৫০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ মার্চ ২০১৮

ইয়েমেনে সামরিক আগ্রাসন চালানো সৌদি আরব ও আরব আমিরাতের কাছে অস্ত্র বিক্রির ঘটনায় সমালোচনার মুখে পড়েছে ফ্রান্স। মানবাধিকার সংস্থাগুলোর নতুন এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফরাসি সরকার ইয়েমেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে সৌদি আরব ও আমিরাতকে অস্ত্র সরবরাহ করে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে থাকতে পারে।

ফ্রান্সভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যাকশন বাই ক্রিস্টিয়ান্স ফর দ্য অ্যাবোলিশন অব টর্চার (এসিএটি-ফ্রান্স)-এর সঙ্গে মিলে এই প্রতিবেদন তৈরি করেছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।

ফ্রান্সভিত্তিক আইনি প্রতিষ্ঠান আনসিলে অ্যাভোকাট বলছে, ওই দুই আরব দেশে ফ্রান্সের অস্ত্র রফতানি আন্তর্জাতিক অঙ্গীকারের লঙ্ঘন হতে পারে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ফ্রান্স সরকার সৌদি আরবে ও আমিরাতে সামরিক সরঞ্জাম রফতানির অনুমোদন দিয়েছে, যেখানে এই অস্ত্র ইয়েমেনের সংঘাতে ব্যবহৃত হতে পারে। এটি ব্যবহার করে সেখানে যুদ্ধাপরাধ চালানো হতে পারে।

ফ্রান্স অস্ত্র বাণিজ্য চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী দেশগুলোর একটি। ২০১৪ সালে দেশটি ওই চুক্তি অনুমোদন করে। এর মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক মানবিক আইন লঙ্ঘনে ব্যবহৃত হতে পারে এ ধরনের ক্ষেত্রে অস্ত্র বিক্রি বা রফতানি না করতে দেশটির ওপর আইনি বাধ্যবাধকতা আরোপিত হয়।

ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী ফিলিপ এডোয়ার্ড বলেছেন, আমদানিকারক দেশগুলো আত্মরক্ষামূলক উদ্দেশ্যেই এ অস্ত্র সংগ্রহ করেছে। দেশগুলোতে হুথি আগ্রাসন ঠেকাতেই এসব সমরাস্ত্র সামগ্রী রফতানি ফ্রান্স।

চলতি মার্চের গোড়ার দিকে ফরাসি প্রেসিডেন্ট বলেন, সংযুক্ত আরব আমিরাতের বাহিনী কিছু ফরাসি সরঞ্জাম নিয়ে ইয়েমেনের ভূখণ্ডে অবস্থান করছে। কিন্তু এগুলো এমন অস্ত্র নয় যা সমান্তরাল ক্ষতিতে জড়িত এবং যা অবশ্যই থামাতে হয়।

 মঙ্গলবার অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের এক বিবৃতিতে ফরাসি সরকারের স্বচ্ছতার অভাবের নিন্দা জানানো হয়েছে। সংস্থাটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফরাসি কর্তৃপক্ষের অস্ত্র রফতানি ও বিক্রির ক্ষেত্রে যথেষ্ট স্বচ্ছতার অভাব রয়েছে।

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ইয়েমেনের যুদ্ধবিরোধী একটি জোট গতিশীল হচ্ছে। এই জোটের পক্ষ থেকে সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন জোটের কয়েকটি দেশে ‘অব্যাহত সহায়তা ও অস্ত্র বিক্রির যৌক্তিকতা’ নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে।

২০১৫ সালের মার্চে ইরান সমর্থিত শিয়াপন্থী হুথি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে ‘অপারেশন ডিসাইসিভ স্টর্ম’ নামে সামরিক অভিযান পরিচালনা শুরু করে সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন জোট। এ অভিযানে এখন পর্যন্ত অন্তত ১০ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন। যুদ্ধের ফলে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে প্রতিরোধযোগ্য রোগে মৃত্যু হয়েছে আরও ১০ হাজার মানুষের। গৃহহীন হয়েছেন কয়েক লাখ মানুষ। সৌদি জোটের বিমান হামলা থেকে বাদ পড়েনি জানাজার নামাজ থেকে শুরু করে বিয়েবাড়িও। তবে এতো কিছুর পরও হুথিদের কাছ থেকে দেশটির রাজধানী সানা’র নিয়ন্ত্রণ নিতে ব্যর্থ হয়েছে সৌদি আরব। কিন্তু তাদের ভয়াবহ বিমান হামলার তাণ্ডবে দুর্ভিক্ষের মুখে পড়েছেন দেশটির সাধারণ মানুষ।

স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইন্সটিটিউট (এসআইপিআরআই) বলছে ২০১৩ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত সৌদি আরবের তৃতীয় বৃহত্তম অস্ত্র সরবরাহকারী দেশের পরিণত হয়েছে ফ্রান্স। একই সময়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দ্বিতীয় বৃহত্তম অস্ত্র সরবরাহকারী রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে দেশটি।

২০১৮ সালের জানুয়ারির গোড়ার দিকে আমিরাতে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধের ঘোষণা দেয় নরওয়ে। ইয়েমেন যুদ্ধে জড়িত পক্ষগুলোর কাছে জার্মানির অস্ত্র রফতানি স্থগিতের ঘোষণার কয়েক দিনের মাথায় নরওয়ের পক্ষ থেকে ওই ঘোষণা আসে।