ঢাকা ০৬:৩৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
কাজের আওতায় অনিবন্ধিত অভিবাসীদের বৈধতার শর্ত শিথিল করল স্পেন শহীদ আবু সাঈদসহ সবার প্রতি সালাম জানালেন বিলেতের প্রধান কবি আহমেদ ময়েজ বালাগঞ্জে উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের উদ্যেগে মানববন্ধন প্যারিসে খিয়াং নয়ন রচিত মোটিভেশনাল বিষয়ক ‘Impression de vie’ জীবনের ছাপ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন বালাগঞ্জে সাংবাদিকদের সাথে- নবাগত ওসি নির্মল দেব এর মতবিনিময় ড. মুহাম্মদ ইউনুসের নামে প্যারিসে রাস্তার নামকরণ: একটি গৌরবময় মুহূর্ত বাংলাদেশে সাধারণ ছাত্র ছাত্রীদের হত্যা ও নির্যাতনের প্রতিবাদে ফ্রান্সের তুলুজে বিশাল সমাবেশ প্যারিসের ঐতিহাসিক রিপাবলিক চত্বরজুড়ে বিক্ষুব্ধ বাংলাদেশ বালাগঞ্জের হাফিজ মাওলানা সামসুল ইসলাম লন্ডনের university of central Lancashire থেকে মাস্টার্স ডিগ্রী অর্জন করলেন বালাগঞ্জে সাংবাদিকদের সাথে উপ-নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী হাজী রফিক আহমদ এর মতবিনিময়

আদালতে প্রমাণ ছাড়া ‘বাবা ধর্ষক’ এমন শিরোনাম কতটা যৌক্তিক?

  • আপডেট সময় ০৪:২২:১৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০১৯
  • ২১৫ বার পড়া হয়েছে

Warning: Attempt to read property "post_excerpt" on null in /home/u305720254/domains/francedorpan.com/public_html/wp-content/themes/newspaper-pro/template-parts/common/single_two.php on line 117

আরিফ রহমান শিবলী 💻 বাংলাদেশে পারিবারিক ধর্ষণের খবর প্রকাশ বেড়ে গেছে গেলো কয়েক মাসে। গত ছয় মাসে এই ধরনের সংবাদ রেকর্ড ছাড়িয়েছে পুরো দেশে। বেশীরভাগ ক্ষেত্রে ‘বাবা ধর্ষক’ এই ধরনের সংবাদে সমাজে যেমন আতঙ্ক ছড়াচ্ছে, তেমনি শ্রদ্ধার আসনে থাকা প্রতিটা বাবা নিজেরাও লজ্জিত হচ্ছেন এ ধরনের সংবাদ দেখে।

অনুসন্ধান বলছে, সবচেয়ে বেশি এর প্রভাব পড়ছে শিশু কিশোরদের উপর। শিশু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরনের সংবাদ শিশুর মাঝে অস্থিরতা তৈরি যেমন করছে তেমনি পারিবারিক সুখ-শান্তি নষ্ট হচ্ছে। বাবা এবং সন্তানের মাঝে দূরত্ব তৈরি করছে এমন সংবাদ বলে জানিয়েছেন একাধিক অভিভাবক।

নিউজগুলো আমি নিজেও দেখেছি। আর নিজেকে প্রশ্ন করেছি আদালতের প্রমাণ ছাড়া বাবা নামক ছাদ কিংবা বটগাছ নামক মানুষগুলোর আগে পড়ে ধর্ষক শব্দ ব্যবহার করে সমাজকে বিপদে ঠেলে দেওয়া এখনকার সহজ সাংবাদিকতা দেখে।সংবাদগুলো প্রকাশিত হওয়ার পর সেই সাংবাদিক পরিবারগুলোতে কি তার প্রভাব পড়ে না? আমার দেখা অনেক সাংবাদিকদের কন্যা সন্তান রয়েছে, তাদের এই বাচ্চাগুলো কি সংবাদে ‘বাবা ধর্ষক’ পড়ার পর নিজেদের পরম নির্ভরযোগ্য (বাবা) মানুষটিকে নিরাপদ মনে করে?

প্রতিটা জিনিসের ভালোমন্দ একটি সমাজের উপর প্রভাব বিস্তার করে। আমি নিজেও দেশের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক অসংখ্য ট্রেনিং নিয়েছি এবং শিখছি প্রতিনিয়ত। ঢাকা আমেরিকান দুতাবাসের সহায়তায় এক ট্রেনিং সেসনে রয়টার্সের এক সাংবাদিক বলেছিলেন, প্রতিটা সংবাদ করার আগে সেটা সমাজের উপর কতটা প্রভাব পড়তে পারে তা নিয়ে ভাবতে হবে একাধিক বার।

বিশেষ করে শিশুদের উপর খারাপ প্রভাব পড়তে পারে এমন সংবাদ গুলোকে নিয়ে গবেষণা করে একাধিক বার এডিট করে তারপর প্রকাশ করা উচিৎ বলে হাতে কলমে শিখিয়েছেন আমাদের আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের এক্সপার্টগণ।এইটা কি আমাদের দেশীয় সংবাদ মাধ্যমগুলো মানছে? একটি সন্তানের নির্ভর যোগ্য মানুষ ‘বাবা’ সত্যিকারের ধর্ষক কিনা, তা আদালত প্রমাণ না হওয়া পর্যন্ত সংবাদে তুলে আনাটা ঠিক না আমার মতে। আর যদি প্রমাণ হয় আদালতে এমন ঘটনা (বাবা) নামক শ্রদ্ধার মানুষটি ঘটিয়েছেন, আমি এইটাই বলবো গুছিয়ে তা অন্যভাবে তুলে আনা উচিৎ। এমনভাবে এ ধরনের সংবাদ প্রকাশ কিংবা প্রচার দরকার যেটা শিশুর মনে অস্থিরতার প্রভাব না ফেলে।

লক্ষ লক্ষ বছর ধরে প্রতিটা বাবা কি নিজ কন্যাদের ধর্ষণ করে বড় করেছে? আমি মনে করি আমারই নয় সারা দেশের মানুষেরই প্রশ্ন আজ এটি। বাবারা আগলে রাখেন পরিবারকে, নিজ সন্তানকে। তাই দুই একজন মানসিক বিকারগস্ত মানুষের ভুল কাজকে মিডিয়ায় বড় আকারে তুলে ধরা লক্ষ লক্ষ বাবাকে যেমন অপমানিত করে।তেমনি আমি মনে করি সন্তানের সাথে বাবাদের দূরত্ব তৈরি করতে ভূমিকা পালন করে। সস্তা লাইক, কমেন্টস এর আশায় নতুন গজানো অনেক ভুঁইফোড় মিডিয়া তো ইউটিউব ফলো করে এমন অনেক পারিবারিক কাল্পনিক সংবাদ তৈরি করে দেশে অস্থিরতা তৈরি করছে।

এই ব্যাপারে তথ্যমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ আইনশৃংখলা বাহিনীকে চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানাই। পাশাপাশি বাংলাদেশের সকল সাংবাদিকদের ‘বাবা ধর্ষক’ এই ধরনের সংবাদগুলো প্রকাশের ক্ষেত্রে শিশুর মনে যেন অস্থিরতা না তৈরি না করে, সেভাবে তুলে আনার আহ্বান জানাচ্ছি।

লেখক-
আরিফ রহমান শিবলী
প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ও চেয়ারম্যান
‘এ.আর কিডস মিডিয়া’
বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়ার শিশু গণমাধ্যম

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

লক ডাউন পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবেলায় ফ্রান্সে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি

যুক্তরাজ্যে করোনার মধ্যেই শিশুদের মাঝে নতুন রোগের হানা

কাজের আওতায় অনিবন্ধিত অভিবাসীদের বৈধতার শর্ত শিথিল করল স্পেন

আদালতে প্রমাণ ছাড়া ‘বাবা ধর্ষক’ এমন শিরোনাম কতটা যৌক্তিক?

আপডেট সময় ০৪:২২:১৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০১৯

আরিফ রহমান শিবলী 💻 বাংলাদেশে পারিবারিক ধর্ষণের খবর প্রকাশ বেড়ে গেছে গেলো কয়েক মাসে। গত ছয় মাসে এই ধরনের সংবাদ রেকর্ড ছাড়িয়েছে পুরো দেশে। বেশীরভাগ ক্ষেত্রে ‘বাবা ধর্ষক’ এই ধরনের সংবাদে সমাজে যেমন আতঙ্ক ছড়াচ্ছে, তেমনি শ্রদ্ধার আসনে থাকা প্রতিটা বাবা নিজেরাও লজ্জিত হচ্ছেন এ ধরনের সংবাদ দেখে।

অনুসন্ধান বলছে, সবচেয়ে বেশি এর প্রভাব পড়ছে শিশু কিশোরদের উপর। শিশু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরনের সংবাদ শিশুর মাঝে অস্থিরতা তৈরি যেমন করছে তেমনি পারিবারিক সুখ-শান্তি নষ্ট হচ্ছে। বাবা এবং সন্তানের মাঝে দূরত্ব তৈরি করছে এমন সংবাদ বলে জানিয়েছেন একাধিক অভিভাবক।

নিউজগুলো আমি নিজেও দেখেছি। আর নিজেকে প্রশ্ন করেছি আদালতের প্রমাণ ছাড়া বাবা নামক ছাদ কিংবা বটগাছ নামক মানুষগুলোর আগে পড়ে ধর্ষক শব্দ ব্যবহার করে সমাজকে বিপদে ঠেলে দেওয়া এখনকার সহজ সাংবাদিকতা দেখে।সংবাদগুলো প্রকাশিত হওয়ার পর সেই সাংবাদিক পরিবারগুলোতে কি তার প্রভাব পড়ে না? আমার দেখা অনেক সাংবাদিকদের কন্যা সন্তান রয়েছে, তাদের এই বাচ্চাগুলো কি সংবাদে ‘বাবা ধর্ষক’ পড়ার পর নিজেদের পরম নির্ভরযোগ্য (বাবা) মানুষটিকে নিরাপদ মনে করে?

প্রতিটা জিনিসের ভালোমন্দ একটি সমাজের উপর প্রভাব বিস্তার করে। আমি নিজেও দেশের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক অসংখ্য ট্রেনিং নিয়েছি এবং শিখছি প্রতিনিয়ত। ঢাকা আমেরিকান দুতাবাসের সহায়তায় এক ট্রেনিং সেসনে রয়টার্সের এক সাংবাদিক বলেছিলেন, প্রতিটা সংবাদ করার আগে সেটা সমাজের উপর কতটা প্রভাব পড়তে পারে তা নিয়ে ভাবতে হবে একাধিক বার।

বিশেষ করে শিশুদের উপর খারাপ প্রভাব পড়তে পারে এমন সংবাদ গুলোকে নিয়ে গবেষণা করে একাধিক বার এডিট করে তারপর প্রকাশ করা উচিৎ বলে হাতে কলমে শিখিয়েছেন আমাদের আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের এক্সপার্টগণ।এইটা কি আমাদের দেশীয় সংবাদ মাধ্যমগুলো মানছে? একটি সন্তানের নির্ভর যোগ্য মানুষ ‘বাবা’ সত্যিকারের ধর্ষক কিনা, তা আদালত প্রমাণ না হওয়া পর্যন্ত সংবাদে তুলে আনাটা ঠিক না আমার মতে। আর যদি প্রমাণ হয় আদালতে এমন ঘটনা (বাবা) নামক শ্রদ্ধার মানুষটি ঘটিয়েছেন, আমি এইটাই বলবো গুছিয়ে তা অন্যভাবে তুলে আনা উচিৎ। এমনভাবে এ ধরনের সংবাদ প্রকাশ কিংবা প্রচার দরকার যেটা শিশুর মনে অস্থিরতার প্রভাব না ফেলে।

লক্ষ লক্ষ বছর ধরে প্রতিটা বাবা কি নিজ কন্যাদের ধর্ষণ করে বড় করেছে? আমি মনে করি আমারই নয় সারা দেশের মানুষেরই প্রশ্ন আজ এটি। বাবারা আগলে রাখেন পরিবারকে, নিজ সন্তানকে। তাই দুই একজন মানসিক বিকারগস্ত মানুষের ভুল কাজকে মিডিয়ায় বড় আকারে তুলে ধরা লক্ষ লক্ষ বাবাকে যেমন অপমানিত করে।তেমনি আমি মনে করি সন্তানের সাথে বাবাদের দূরত্ব তৈরি করতে ভূমিকা পালন করে। সস্তা লাইক, কমেন্টস এর আশায় নতুন গজানো অনেক ভুঁইফোড় মিডিয়া তো ইউটিউব ফলো করে এমন অনেক পারিবারিক কাল্পনিক সংবাদ তৈরি করে দেশে অস্থিরতা তৈরি করছে।

এই ব্যাপারে তথ্যমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ আইনশৃংখলা বাহিনীকে চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানাই। পাশাপাশি বাংলাদেশের সকল সাংবাদিকদের ‘বাবা ধর্ষক’ এই ধরনের সংবাদগুলো প্রকাশের ক্ষেত্রে শিশুর মনে যেন অস্থিরতা না তৈরি না করে, সেভাবে তুলে আনার আহ্বান জানাচ্ছি।

লেখক-
আরিফ রহমান শিবলী
প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ও চেয়ারম্যান
‘এ.আর কিডস মিডিয়া’
বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়ার শিশু গণমাধ্যম