মিনহাজ হোসেন ইউরোপ ব্যুরো প্রধানঃ মাত্র ১৪ মাসের মাথায় পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী জোসেপ্পে কন্তে। ক্ষমতাসীন জোট সরকারের শরীক লেগা নর্দ পার্টির নেতা ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাত্তেও সালভেনির সঙ্গে বিরোধের জেরে পদত্যাগের আগে দেয়া বক্তব্যে সালভিনিকে ‘সুবিধাবাদী’ ও ‘দেশের জন্য ক্ষতিকর’ বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের জেরে সৃষ্ট রাজনৈতিক সঙ্কটের সমাধানে এখন জোটের অন্যান্য নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন দেশটির প্রেসিডেন্ট সার্জিও মাত্তারেল্লা। তবে দেশটির সরকার এখনো ভেঙে পড়েনি, সংসদ ভেঙে দেয়ার একমাত্র ক্ষমতা রয়েছে প্রেসিডেন্ট মাত্তারেল্লার হাতে। এদিকে সমাধানে না পৌঁছানো পর্যন্ত তত্ত্বাবধায়ক ক্ষমতাবলে দায়িত্ব পালন অব্যাহত রাখতে জোসেপ্পে কন্তেকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট মাত্তারেল্লা।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাত্তেও সালভিনি এখনো তার মন্ত্রীত্ব প্রত্যাহার করে নেননি। দেশটির ট্যাক্স কর্তনকারী ২০২০ সালের বাজেটের অনুমোদন পাওয়ার জন্য তিনি ক্ষমতাসীন সরকার টিকিয়ে রাখতে প্রস্তুত। কিন্তু দেশটির সংবিধান বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাজেট পাস করার ক্ষমতা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নেই। সুতরাং এই বাজেট পাস হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
মঙ্গলবার পার্লামেন্টে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সালভিনির তীব্র সমালোচনা করেন কন্তে। এরপরই পদত্যাগের ঘোষণা দেন তিনি। কিন্তু লেগা নর্দ পার্টির সঙ্গে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে সমাধানে পৌঁছানোর জন্য কন্তেকে পার্লামেন্টে পাঠাতে পারেন প্রেসিডেন্ট মাত্তারেল্লা।
এদিকে দেশটির মধ্য-বামপন্থী বিরোধীদল ডেমোক্রেটি পার্টি (পিডি) ও ফাইভ স্টার মুভমেন্টের সঙ্গে নতুন করে জোট বাধতে পারে। গত নির্বাচনে এ দু দলের ভোট ছিলো ফাইভ স্টার মুভমেন্টে ৩২.৩৬ শতাংশ এবং পিডি ১৮.৮৩ শতাংশ। এই দুই দল জোট গঠন করতে ইতোমধ্যে আলোচনা শুরু করে দিয়েছে। এ দু’দল সমঝোতায় আসতে পারলে হয়ত নতুন সরকার গঠনের সম্ভবনা রয়েছে, নইলে ইতালির রাজনৈতিক পরিস্থিতি অচলাবস্থার সৃষ্টি হতে পারে। উল্লেখ্য এর আগেও এ দু’দল কোয়ালিশন সরকার গঠন করতে ব্যর্থ হয়েছিল।
প্রেসিডেন্ট চলমান সঙ্কট নিয়ে আলোচনা শুরু করেছেন; যা শেষ হবে আজ বৃহস্পতিবার। আলোচনা ফলপ্রসূ না হলে আগামী অক্টোবরের শেষে অথবা আগামী বছর দেশটির সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। এমতাবস্থায় রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞগণ মনে করেন রাজনৈতিক সংকটের দিকেই এগোচ্ছে ইতালির পার্লামেন্ট।