মহাকাশে অভিনব মহড়া শুরু করল ফ্রান্সের বিশেষ সেনা। অ্যামেরিকা এবং জার্মানিও সেই মহড়ায় যোগ দিয়েছে।
স্টারওয়ার্স আর কল্পকাহিনি নয়। ভবিষ্যত যুদ্ধের জন্য মহাকাশেও নিজেদের শক্তি বাড়াচ্ছে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ। তবে ফ্রান্স যে মহড়া শুরু করেছে, তা ইউরোপে প্রথম। গোটা সপ্তাহ জুড়ে মহাকাশে নিজেদের উপগ্রহ সুরক্ষিত রাখার মহড়া চালাচ্ছে ফ্রান্স। এর জন্য সামরিক বাহিনীর একটি উইং তৈরি করা হয়েছে। যার নাম দেওয়া হয়েছে স্পেস কম্যান্ড। নতুন সেই স্পেস কম্যান্ডের প্রধান মিশেল ফ্রিডলিং জানিয়েছেন, মহাকাশে নিজের পরিকাঠামোর ‘স্ট্রেস টেস্ট’ শুরু হয়েছে।
পৃথিবীর সমস্ত শক্তিশালী দেশেরই মহাকাশে নিজেদের উপগ্রহ আছে। উপগ্রহের সাহায্যে নানান পরিষেবা দেওয়া হয়। আবার এই উপগ্রহ সামরিক কাজেও ব্যবহার করা হয়। স্যাটেলাইটের মাধ্যমে অন্য দেশের ছবি সংগ্রহ করে গুপ্তচরবৃত্তি নতুন কিছু নয়। উপগ্রহের তথ্য সামরিক সমঝোতার ভাষায় ঢুকে পড়েছে। বিশেষজ্ঞদের একাংশের বক্তব্য, ভবিষ্যতে বড় যুদ্ধ হলে মহাকাশে যুদ্ধ হবে। এক দেশ অন্য দেশের স্যাটেলাইট আক্রমণ করবে। ফ্রান্স যে মহড়া শুরু করেছে, তা সে কথা মাথায় রেখেই। মহাকাশে ফ্রান্সের যে সমস্ত উপগ্রহ আছে, অঘটন ঘটলে তা কী ভাবে রক্ষা করা হবে, তারই মহড়া শুরু হয়েছে। এই মহড়ার নাম দেওয়া হয়েছে ‘অ্যাস্টারএক্স’। ১৯৬৫ সালে এই নামেরই প্রথম উপগ্রহ মহাকাশে পাঠিয়েছিল ফ্রান্স।
মহড়ার সময় ফ্রান্সের মহাকাশ সেনা শুধু সুরক্ষা নয়, প্রয়োজনে পাল্টা আক্রমণের ছকও সাজাবে। মহাকাশে কোন অন্য দেশের কোন জিনিসগুলি ফ্রান্সের থ্রেট তারও পর্যালোচনা করা হবে বলে জানানো হয়েছে। অ্যামেরিকার স্পেস ফোর্স এবং জার্মানির স্পেস এজেন্সিও এই মহড়ায় অংশ নিয়েছে। গত সোমবার মহড়া শুরু হয়েছে। চলবে শুক্রবার পর্যন্ত।
২০১৯ সালে ফ্রান্সের স্পেস ফোর্স তৈরি হয়েছে। ফ্রান্স জানিয়েছে, ২০২৫ সালের মধ্যে তাদের মহাকাশ সেনাবাহিনীতে ৫০০ সেনা থাকবে। তার জন্য প্রায় পাঁচ বিলিয়ন ইউরো খরচ করা হবে বলে জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে ফ্রান্স অ্যান্টি স্যাটেলাইট লেজার অস্ত্রও তৈরি করতে শুরু করেছে। ফ্রান্সের দাবি, ২০১৭ সালে রাশিয়ার একটি উপগ্রহ ফ্রান্স এবং ইটালির একটি স্যাটেলাইটের অত্যন্ত কাছে চলে আসে। সেই স্যাটেলাইটটি ফ্রান্সের উপগ্রহের ট্রান্সমিশন ইন্টারসেপ্ট করার চেষ্টা করেছিল বলে অভিযোগ। তবে রাশিয়া কখনোই সেই অভিযোগ স্বীকার করেনি।