ঢাকা ০৬:৫০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
“Dead” একটি শব্দ ও অচল প্রায় জীবন চাকা! আননূর মাদরাসার পক্ষ থেকে হাফিজ মাওলানা মুসলেহ উদ্দিন রাজু-কে মেলবন্ধন স্মারক প্রদান বালাগঞ্জে উপজেলা প্রেসক্লাবের সাথে “নবাগত ইউএনও সুজিত কুমার চন্দ’র মতবিনিময় বালাগঞ্জে উপজেলা প্রশাসনের ‘হাতের মুঠোয় সকল সেবা’ কার্যক্রম চালু বিমানের প্যারিস-ঢাকা ফ্লাইট পুনরায় চালুর জোরালো দাবী প্রবাসীদের বালাগঞ্জে ছাত্রদল নেতা সায়েম আহমদ হত্যা মামলার অভিযুক্ত যুবলীগ নেতা খলকু মিয়া আটক গহরপুর ছাত্রকল্যাণ পরিষদের উদ্যোগে এইচএসসি ও আলিম পরীক্ষায় উত্তীর্ণদেরকে সংবর্ধনা ও শিক্ষা সেমিনার অন্তর্বর্তীকালীন সকল সিদ্ধান্ত জনগণের ইচ্ছার প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই নেওয়া উচিত- বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরী অপপ্রচারের প্রতিবাদে সংবাদিক সম্মেলন করলেন সিলোট জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য লোকন মিয়া

“Dead” একটি শব্দ ও অচল প্রায় জীবন চাকা!

  • আপডেট সময় ১২:৪৫:২৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪
  • ১০ বার পড়া হয়েছে

সাগর শাখাওয়াত : গতবছর এই দিনটি ছিলো পবিত্র ঈদুল আজহার দিন । সকাল থেকেই মন বিষাদ চেয়ে গিয়েছিল কারনটা না জানলেও মন হয়ত আগেই জেনে গিয়েছিল। বাসা থেকে খানিক দূরে আড্ডা দিচ্ছিলাম । ফোন আসলো বোনের মেয়ে সুহার নাম্বার থেকে । ফোনটা রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে চিৎকার দিতে লাগলো বললো নানুর অবস্থা খারাপ । দৌড়ে বাসায় গিয়ে এম্বুল্যান্স রেডি করে ভাই বোন সবাই দৌড় দিলাম হসপিটালে । এর কিছুদিন পূর্বেও মা এমন অসুস্থ ছিলেন । ভেবেছিলাম হয়ত আগের মতনই শরীর খারাপ করেছে মায়ের । মাকে ইমার্জেন্সিতে রেখে ভেতরে গিয়ে ডাক্তার কে ডেকে দ্রুত চিকিৎসা দিতে বলতে লাগলাম আমি চলে গেলাম রেজিস্ট্রারের কাছে । রেজিস্ট্রার আমার মুখের দিকে তাকায় বারংবার আর স্লিপের মধ্যে লিখতে শুরু করলো । এর মাঝে যে অন্য ডাক্তার এসে কখন যে মাকে এম্বুল্যান্সে আগেই মা কে পরীক্ষা করে দেখলো, মা যে চলে গেল আমি তখনও বুঝতে পারি নি । রেজিস্ট্রার আমাকে মায়ের নাম জিজ্ঞেস করলো, বয়স জিজ্ঞেস করলো তারপর জিজ্ঞেস করলো ঠিকানা । সব বলার পর একটু অবাক হলাম সে ঔষধ ইনসুলিন বা কোন কিছু না লিখে কি যেনো লিখতে লাগলো । “রোগীর অবস্থা “ এই ঘরে একটি শব্দই আমার পুরো দুনিয়া মূহুর্তেই থামিয়ে দেয় এবং ফ্লোরে বসে পড়ি । শব্দটি লিখা ছিলো “ Dead ” । জীবন চলার পথে মানুষ অনেক বিপদের সম্মুখীন হয়, এ বিপদের মধ্যে হৃদয় বিদারক যন্ত্রনাদায়ক বিপদ হচ্ছে যখন কোন “গর্ভধারিনী মা আপনার হাতে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করে দুনিয়া ছেড়ে চলে যায়

এমন এক আদর্শ নারীর আঁচলে বেড়ে উঠেছি কিছুরই কমতি ছিলো না আমার । আমার আরেকজন বড়-ভাই ছিলেন যিনি আট বছর বয়সে মারা যান । তার শূন্যতার জায়গায় মায়ের কোল জুঁড়ে দুনিয়ায় আসি । আমি নাকি তার স্পেশাল আদরের সন্তান । অনুশাসনে মা এত কঠিন ছিলেন কোনদিন চড় থাপ্পড়ও দিতেন না আমাকে । বলেছিলো মা না থাকলেও জীবনের নিরাপত্তার জন্য আমার সবকিছু থাকবে । কারো উপর নির্ভর না করতে । অতিব প্রয়োজন হলে হাতেম ভাই / ভাইজানের কাছে যেতে । কারো হক নষ্ট না করতে বলে গিয়েছে । বলেছিলো কোনদিন অন্যায় বা খারাপ মানুষের সামনে মাথা না ঝুঁকিয়ে দম নিয়ে কথা বলার জন্য

এ কথাগুলো বুঝতে কষ্ট হতো না, কারন তখন আমি মা থেকে অনেক দূরে । দূরত্বই মানুষের গুরুত্ব বাড়ে । অতিব দুরন্তপনা ও বেপোরোয়া জীবনে ইউজ টু ছিলাম আমি । এই শঙ্কায় দেশেই রাখেন নি পাঠিয়ে দেন যুক্তরাজ্যে পড়াশুনার জন্য । পড়াশুনা আন্ডার গ্রেজুয়েশন শেষ করে আস্তে আস্তে উপার্জন করা শুরু করলাম । প্রথম প্রথম মা কে টাকা দিতে চাইলে নিতেন না বলতো “আমার আছো তুমি চলো ।শামীম স্বপন টাকা দিয়েছে লাগলে মা বলবো । এরপর আস্তে আস্তে মা কে বুঝানোর চেষ্টা করতে সক্ষম হই যে আমি বড় হয়ে গিয়েছি । শুরু করলাম হাতেম ভাই ভাইজানের দেখাদেখি মায়ের দেখবাল করা । চিংড়ি/ইলিশ/রুপচাদা মাছ খেতে পছন্দ করতো, ৪০ কেজির নিচে অনলাইলে অর্ডার করতাম না । ফলের মাঝে আম খেতে বেশী পছন্দ করতো । এক ছুটির দিনে ফোন দিলাম বাংলাদেশে তখন সন্ধ্যা । কথায় কথায় বললো আম দুধ খেতে ইচ্ছে করছে । বললাম খেলেন না কেনো ? উত্তর আসলো কেউ নেই আম কিনে আনার জন্য । মা আমার আমই তো খাবে । আমের বাগান শুদ্ধা কিনে দিচ্ছি বলে ফোনটা রাখলাম ।

প্যারিসে আমারই সাথে চলাফেরা করতো রাজশাহীর একছোট ভাই নাম সোহরাব। বাসায় আড্ডার চলে সে বলেছিলো আমাদের আম লিচু বাগান আছে । আপনি গেলে আপনার জন্য পুরো বাগান । তরুন প্রজন্ম এমনিতেই আমাকে অনেক পছন্দ করে তাহ দেশ হোক বিদেশ হোক । সাথে সাথে কল করে বললাম । আমার আম লাগবে আজকে রাতেই পাঠাতে হবে । বললো কতগুলো লাগবে আর আমি জানি না আমি আব্বাকে কল করে দেখছি রাতে স্টক আছে কিনা । কিছুক্ষন পর সে জানালো আছে কিছু বাট আমার কতগুলো লাগবে ? বললাম তোদের কাছে কতগুলো স্টক আছে ? সে বললো ভাইয়া ২১ ক্যারটের মতন । বলেছি আমার সবগুলো লাগবে । সে বলতে লাগলো এত আম দিয়ে কি করবেন আপনি ? ওরে বলছি যাহ জিজ্ঞেস করি ঠিক তাই করবি প্রয়োজনের অতিরিক্ত কিছু বলবি না । পরে ও বললো ঠিকানা দেন আম কাল দুপুরের মাঝে চলে যাবে । পরেরদিন আমের ট্রাক বাড়ির সামনে । দিলাম মা কে ফোন আর বললাম মেইন গেট খুলুন আপনার জন্য আম পাঠিয়েছি । আমের ট্রাক দেখে মা অবাক । বললো এত আম ? বলেছি আমার মা যদি বলে আমি দুনিয়া কিনে দিবো আম আর তেমন কি । মা যদি আমাকে এত ভালোবাসে একটু ভালোতো আমিও মাকে বাসতে পারি ।

জিজ্ঞেস করেছিলাম এমন কি খেতে মন চায়, পরতে মন চায়, দেখতে মন চায় বা বাবাকে বলেছিলেন বাবার সামর্থ্য ছিলো না আমাকে বলুন । বললো আমার যেই ছেলে দিনের দুটো পর্যন্ত ঘুমাতো সেই ছেলেও আমাকে রাণী করে রেখেছে । আমি আসমান সমান খুশী । মায়ের বিয়োগে যে কষ্ট আর তীব্র যন্ত্রনাতে নিমজ্জিত থাকি এই কথাটাই আমাকে প্রশান্তি দেয় । প্রত্যেক তরুন প্রজন্ম বিশেষ করে যারা তোরা আমার কাছের একটা আবেদন থাকবে “ মা পাগল হ, দেখবি আসমান সমান পাহাড় সমস্যাতেও জীবন তোদের ফুল উপহার দিচ্ছে । আর চেয়ার শূন্য মানুষের তীব্র যন্ত্রনা যা মানুষকে মেরে ফেলতে পারে অনায়াসে । মা ও নেই আমার কিছু অর্ডারের ও নেই ।

মার কথা মনে হলো আজ বিশেষ করে যেই মানুষটি আমরা দুনিয়াতে আসার নয়টি মাস আগ থেকেই ভালোবেসে ফেলেন তিনি আমাদের “মা । এই নেয়ামত পাইলাম না তার খেয়াল রাখার,খেদমত করার ;আর তুই ভাই মাইরা ডিপ ফ্রিজে রাইখা দিলি ? তুই ছিলি এই মায়ের মানিক, আদরের জাদু ধন । অথচ আমাদের তৈরী করতে মা যে ঘাম ঝরিয়েছেন তাহ এক মহাসমুদ্র সমান । আমরা বাঙালীর আদরের নাড়ি ছেড়া ধন । যখন নষ্ট স্রোতে আজকাল মা সন্তানের দূরত্ব বেড়েছে, আদর্শিকতা বিসর্জন দিচ্ছে সে সময়ে গর্ব করতো বলতে পারবো আমি একজন আদর্শ নারীর সন্তান ।

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

লক ডাউন পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবেলায় ফ্রান্সে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি

যুক্তরাজ্যে করোনার মধ্যেই শিশুদের মাঝে নতুন রোগের হানা

“Dead” একটি শব্দ ও অচল প্রায় জীবন চাকা!

“Dead” একটি শব্দ ও অচল প্রায় জীবন চাকা!

আপডেট সময় ১২:৪৫:২৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪

সাগর শাখাওয়াত : গতবছর এই দিনটি ছিলো পবিত্র ঈদুল আজহার দিন । সকাল থেকেই মন বিষাদ চেয়ে গিয়েছিল কারনটা না জানলেও মন হয়ত আগেই জেনে গিয়েছিল। বাসা থেকে খানিক দূরে আড্ডা দিচ্ছিলাম । ফোন আসলো বোনের মেয়ে সুহার নাম্বার থেকে । ফোনটা রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে চিৎকার দিতে লাগলো বললো নানুর অবস্থা খারাপ । দৌড়ে বাসায় গিয়ে এম্বুল্যান্স রেডি করে ভাই বোন সবাই দৌড় দিলাম হসপিটালে । এর কিছুদিন পূর্বেও মা এমন অসুস্থ ছিলেন । ভেবেছিলাম হয়ত আগের মতনই শরীর খারাপ করেছে মায়ের । মাকে ইমার্জেন্সিতে রেখে ভেতরে গিয়ে ডাক্তার কে ডেকে দ্রুত চিকিৎসা দিতে বলতে লাগলাম আমি চলে গেলাম রেজিস্ট্রারের কাছে । রেজিস্ট্রার আমার মুখের দিকে তাকায় বারংবার আর স্লিপের মধ্যে লিখতে শুরু করলো । এর মাঝে যে অন্য ডাক্তার এসে কখন যে মাকে এম্বুল্যান্সে আগেই মা কে পরীক্ষা করে দেখলো, মা যে চলে গেল আমি তখনও বুঝতে পারি নি । রেজিস্ট্রার আমাকে মায়ের নাম জিজ্ঞেস করলো, বয়স জিজ্ঞেস করলো তারপর জিজ্ঞেস করলো ঠিকানা । সব বলার পর একটু অবাক হলাম সে ঔষধ ইনসুলিন বা কোন কিছু না লিখে কি যেনো লিখতে লাগলো । “রোগীর অবস্থা “ এই ঘরে একটি শব্দই আমার পুরো দুনিয়া মূহুর্তেই থামিয়ে দেয় এবং ফ্লোরে বসে পড়ি । শব্দটি লিখা ছিলো “ Dead ” । জীবন চলার পথে মানুষ অনেক বিপদের সম্মুখীন হয়, এ বিপদের মধ্যে হৃদয় বিদারক যন্ত্রনাদায়ক বিপদ হচ্ছে যখন কোন “গর্ভধারিনী মা আপনার হাতে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করে দুনিয়া ছেড়ে চলে যায়

এমন এক আদর্শ নারীর আঁচলে বেড়ে উঠেছি কিছুরই কমতি ছিলো না আমার । আমার আরেকজন বড়-ভাই ছিলেন যিনি আট বছর বয়সে মারা যান । তার শূন্যতার জায়গায় মায়ের কোল জুঁড়ে দুনিয়ায় আসি । আমি নাকি তার স্পেশাল আদরের সন্তান । অনুশাসনে মা এত কঠিন ছিলেন কোনদিন চড় থাপ্পড়ও দিতেন না আমাকে । বলেছিলো মা না থাকলেও জীবনের নিরাপত্তার জন্য আমার সবকিছু থাকবে । কারো উপর নির্ভর না করতে । অতিব প্রয়োজন হলে হাতেম ভাই / ভাইজানের কাছে যেতে । কারো হক নষ্ট না করতে বলে গিয়েছে । বলেছিলো কোনদিন অন্যায় বা খারাপ মানুষের সামনে মাথা না ঝুঁকিয়ে দম নিয়ে কথা বলার জন্য

এ কথাগুলো বুঝতে কষ্ট হতো না, কারন তখন আমি মা থেকে অনেক দূরে । দূরত্বই মানুষের গুরুত্ব বাড়ে । অতিব দুরন্তপনা ও বেপোরোয়া জীবনে ইউজ টু ছিলাম আমি । এই শঙ্কায় দেশেই রাখেন নি পাঠিয়ে দেন যুক্তরাজ্যে পড়াশুনার জন্য । পড়াশুনা আন্ডার গ্রেজুয়েশন শেষ করে আস্তে আস্তে উপার্জন করা শুরু করলাম । প্রথম প্রথম মা কে টাকা দিতে চাইলে নিতেন না বলতো “আমার আছো তুমি চলো ।শামীম স্বপন টাকা দিয়েছে লাগলে মা বলবো । এরপর আস্তে আস্তে মা কে বুঝানোর চেষ্টা করতে সক্ষম হই যে আমি বড় হয়ে গিয়েছি । শুরু করলাম হাতেম ভাই ভাইজানের দেখাদেখি মায়ের দেখবাল করা । চিংড়ি/ইলিশ/রুপচাদা মাছ খেতে পছন্দ করতো, ৪০ কেজির নিচে অনলাইলে অর্ডার করতাম না । ফলের মাঝে আম খেতে বেশী পছন্দ করতো । এক ছুটির দিনে ফোন দিলাম বাংলাদেশে তখন সন্ধ্যা । কথায় কথায় বললো আম দুধ খেতে ইচ্ছে করছে । বললাম খেলেন না কেনো ? উত্তর আসলো কেউ নেই আম কিনে আনার জন্য । মা আমার আমই তো খাবে । আমের বাগান শুদ্ধা কিনে দিচ্ছি বলে ফোনটা রাখলাম ।

প্যারিসে আমারই সাথে চলাফেরা করতো রাজশাহীর একছোট ভাই নাম সোহরাব। বাসায় আড্ডার চলে সে বলেছিলো আমাদের আম লিচু বাগান আছে । আপনি গেলে আপনার জন্য পুরো বাগান । তরুন প্রজন্ম এমনিতেই আমাকে অনেক পছন্দ করে তাহ দেশ হোক বিদেশ হোক । সাথে সাথে কল করে বললাম । আমার আম লাগবে আজকে রাতেই পাঠাতে হবে । বললো কতগুলো লাগবে আর আমি জানি না আমি আব্বাকে কল করে দেখছি রাতে স্টক আছে কিনা । কিছুক্ষন পর সে জানালো আছে কিছু বাট আমার কতগুলো লাগবে ? বললাম তোদের কাছে কতগুলো স্টক আছে ? সে বললো ভাইয়া ২১ ক্যারটের মতন । বলেছি আমার সবগুলো লাগবে । সে বলতে লাগলো এত আম দিয়ে কি করবেন আপনি ? ওরে বলছি যাহ জিজ্ঞেস করি ঠিক তাই করবি প্রয়োজনের অতিরিক্ত কিছু বলবি না । পরে ও বললো ঠিকানা দেন আম কাল দুপুরের মাঝে চলে যাবে । পরেরদিন আমের ট্রাক বাড়ির সামনে । দিলাম মা কে ফোন আর বললাম মেইন গেট খুলুন আপনার জন্য আম পাঠিয়েছি । আমের ট্রাক দেখে মা অবাক । বললো এত আম ? বলেছি আমার মা যদি বলে আমি দুনিয়া কিনে দিবো আম আর তেমন কি । মা যদি আমাকে এত ভালোবাসে একটু ভালোতো আমিও মাকে বাসতে পারি ।

জিজ্ঞেস করেছিলাম এমন কি খেতে মন চায়, পরতে মন চায়, দেখতে মন চায় বা বাবাকে বলেছিলেন বাবার সামর্থ্য ছিলো না আমাকে বলুন । বললো আমার যেই ছেলে দিনের দুটো পর্যন্ত ঘুমাতো সেই ছেলেও আমাকে রাণী করে রেখেছে । আমি আসমান সমান খুশী । মায়ের বিয়োগে যে কষ্ট আর তীব্র যন্ত্রনাতে নিমজ্জিত থাকি এই কথাটাই আমাকে প্রশান্তি দেয় । প্রত্যেক তরুন প্রজন্ম বিশেষ করে যারা তোরা আমার কাছের একটা আবেদন থাকবে “ মা পাগল হ, দেখবি আসমান সমান পাহাড় সমস্যাতেও জীবন তোদের ফুল উপহার দিচ্ছে । আর চেয়ার শূন্য মানুষের তীব্র যন্ত্রনা যা মানুষকে মেরে ফেলতে পারে অনায়াসে । মা ও নেই আমার কিছু অর্ডারের ও নেই ।

মার কথা মনে হলো আজ বিশেষ করে যেই মানুষটি আমরা দুনিয়াতে আসার নয়টি মাস আগ থেকেই ভালোবেসে ফেলেন তিনি আমাদের “মা । এই নেয়ামত পাইলাম না তার খেয়াল রাখার,খেদমত করার ;আর তুই ভাই মাইরা ডিপ ফ্রিজে রাইখা দিলি ? তুই ছিলি এই মায়ের মানিক, আদরের জাদু ধন । অথচ আমাদের তৈরী করতে মা যে ঘাম ঝরিয়েছেন তাহ এক মহাসমুদ্র সমান । আমরা বাঙালীর আদরের নাড়ি ছেড়া ধন । যখন নষ্ট স্রোতে আজকাল মা সন্তানের দূরত্ব বেড়েছে, আদর্শিকতা বিসর্জন দিচ্ছে সে সময়ে গর্ব করতো বলতে পারবো আমি একজন আদর্শ নারীর সন্তান ।