ঢাকা ১১:১০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ জুলাই ২০২৪, ১০ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
ড. মুহাম্মদ ইউনুসের নামে প্যারিসে রাস্তার নামকরণ: একটি গৌরবময় মুহূর্ত বাংলাদেশে সাধারণ ছাত্র ছাত্রীদের হত্যা ও নির্যাতনের প্রতিবাদে ফ্রান্সের তুলুজে বিশাল সমাবেশ প্যারিসের ঐতিহাসিক রিপাবলিক চত্বরজুড়ে বিক্ষুব্ধ বাংলাদেশ বালাগঞ্জের হাফিজ মাওলানা সামসুল ইসলাম লন্ডনের university of central Lancashire থেকে মাস্টার্স ডিগ্রী অর্জন করলেন বালাগঞ্জে সাংবাদিকদের সাথে উপ-নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী হাজী রফিক আহমদ এর মতবিনিময় দেওয়ানবাজার ইউপি চেয়ারম্যান নাজমুল আলমের পক্ষ থেকে বন্যার্তদের মাঝে খাবার বিতরণ জনকল্যাণ ডেভেলপমেন্ট এসোসিয়েশন ইউকের পক্ষ থেকে উপহার সামগ্রী বিতরণ প্যারিসে অনুষ্ঠিত হলো, ‘রৌদ্র ছায়ায় কবি কন্ঠে কাব্য কথা’ শীর্ষক কবিতায় আড্ডা ফ্রান্স দর্পণ – কমিউনিটি-সংবেদনশীল মুখপত্র এম সি ইন্সটিটিউট ফ্রান্সের সুধী সমাবেশ অনুষ্ঠিত

প্যারিসের পার্শ্ববর্তী সেইন্ট ডেনিস পৌর এলাকায় স্থায়ী শহীদ মিনার প্রসংগে দূতাবাসের অবস্থান

ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের পার্শ্ববর্তী পৌর এলাকা সেইন্ড ডেনিসে আজ রবিবার উদ্বোধন হতে যাচ্ছে স্থায়ী শহীদ মিনার। এসোসিয়েশন “সিকানো বাঙালী”  নামক সংগঠন  স্থানীয় পৌর সভার সহায়তায় এই স্থায়ী শহীদ মিনার স্থাপন করছে। আজ ( রবিবার) সকাল ১১ টায় উদ্বোধন হবে বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা।

তবে ফ্রান্সে দীর্ঘদিন থেকে ২১ উদযাপন ও শহীদ মিনার নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। প্রতি বছর দুই পক্ষ প্যারিসের দুইটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান, “রিপাবলিক চত্ত্বর” ও “প্লাস ট্রকাডেরো”তে (আইফেল টাওয়ার সংলগ্ন) অস্থায়ী শহীদ মিনার স্থাপন করে মহান শহীদ দিবস পালন করে আসছে। একটি সম্মিলিত একুশ উদযাপন পরিষদ ও অপরটি একুশ উদযাপন পরিষদ, ফ্রান্স। শেষের গ্রুপকে নেতৃত্ব দেন ফ্রান্সের প্রভাবশালী বিতর্কিত বাংলাদেশী ব্যবসায়ী কাজী এনায়েত উল্লাহ। অন্য সংগঠনটি মূলত ফ্রান্সের বাংলাদেশী সাংবাদিকদের সংগঠন ফ্রান্স-বাংলাদেশ প্রেসক্লাব আয়োজন করে থাকে। দুই গ্রুপকেই বিভিন্ন সময় দূতাবাস ইন্দন দিয়ে গেছে। ফ্রান্স আওয়ামী লীগ বা বিএনপি এ ইস্যুতে অনেকটা মধ্য পন্থা নিয়ে আসছে। উভয় গ্রুপের অনুষ্ঠানেই তারা অংশ নিয়ে আসছেন। তবে স্থায়ী শহীদ মিনার হওয়ার পর এই ইস্যুতে যুক্ত হতে যাচ্ছে ফ্রান্স আওয়ামী লীগ। মূলত দূতাবাসের সাথে শহীদ মিনার স্থাপনকারীদের দ্বন্দ্বের কারনে আজকের অনুষ্ঠান বর্জনের ঘোষণা এসেছে ফ্রান্স আওয়ামী লীগ থেকে।

প্রসংগত, ফ্রান্স দূতাবাস অনেকটাই ফ্রান্স আওয়ামী লীগকে নিয়ন্ত্রণ করে। সম্প্রতি ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁর সফল বাংলাদেশ সফরের ক্রেডিট পুরোটাই দূতাবাস নিয়েছে। ফলে দূতাবাসের বাইরে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই ফ্রান্স আওয়ামী লীগের। শহীদ মিনার নির্মাণের সাথে সংশ্লিষ্টদের অনেকেই আওয়ামী লীগের সাথে যুক্ত থাকলেও দূতাবাসের বিরুধীতার কারণে আওয়ামী লীগ দলীয়ভাবে আজকের অনুষ্ঠান বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে।
অবশ্য ফ্রান্স বিএনপি শহীদ মিনার স্থাপনকে ভাল উদ্যোগ বলেছে। তারা মনে করে আওয়ামী লীগ তাদের দলীয় কোন্দলের কারনে স্থায়ী শহীদ মিনারকেও বিতর্কিত করছে।

এদিকে ইতোমধ্যে আজকে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের যাবতীয় প্রস্তুতিও শেষ হয়েছে বলে জানা গেছে। ফ্রান্সে বসবাসরত বাংলাদেশি কমিউনিটিকে দল মত নির্বিশেষে সর্বস্থরের মানুষদের উদ্বোধনী অনুষ্টানে আমন্ত্রণ করা হয়েছে। এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অথিতি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন, স্থানীয় মিউনিসিপালিটি (পৌর মেয়র) মেয়র মাথিও আনোতা।

আয়োজকরা এই শহীদ মিনারকে বাংলাদেশি কমিউনিটির প্যারিসের প্রথম স্থায়ী শহীদ  মিনার স্থাপনের দাবি করলেও ফ্রান্সে বাংলাদেশি দূতাবাস  ও কমিউনিটির অপর একটি অংশ এটিকে স্বীকৃতি দিচ্ছে না। দূতাবাস বলছে ইতিহাস বিকৃতি করে এটি নির্মাণ করায় দূতাবাস এটিকে ৫২ ভাষা আন্দোলনের প্রতীক হিসেবে দেখছে না।
কারণ হিসাবে দূতাবাসকে যে আমন্ত্রণ পত্র দেয়া হয় তাতে উল্লেখ করা হয়েছে এটি ফরাসি রেভুলোশনের প্রতীক।   ফ্রান্সে বাংলাদেশ  দূতাবাসের সামরিক উপদেষ্ঠা ব্রিগেডিয়ার মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে বলেছেন,  দূতাবাসের মাধ্যমেই প্যারিসে স্থায়ী শহীদ মিনার নির্মিত হবে।

এদিকে এই শহীদ মিনার প্রতিষ্ঠা নিয়ে প্রথম থেকেই আলোচনা সমালোচনা ছিল। এ নিয়ে  কমিউনিটির মধ্যে চলছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।  ফ্রান্স আওয়ামী লীগও ঘোষণা দিয়েছে যেহেতু  দুতাবাস যেখানে যাচ্ছে না সেখানে ফ্রান্স আওয়ামী লীগও যাবে না।

উল্লেখ্য, ফ্রান্সের প্যারিসে কয়েক বছর ধরে ঐতিহাসিক  রিপাবলিক চত্তরে সম্মিলিত একুশ উদযাপন পরিষদ এবং জুরেস পার্কে একুশ উদযাপন পরিষদ নামে ২ টি সংগঠন আলাদা আলাদা ভাবে মহান একুশে ফেব্রুয়ারি উদযাপন করে আসছে।  ফ্রান্স দূতাবাস ২ টি স্থানেই ফুল দিয়ে ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে।  এদিকে জুরেস পার্কে আয়োজনকারী একুশ উদযাপন পরিষদই এসিয়ানো সিকানো বাঙাগালী নামের সংগঠনের ব্যানারে এই স্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণ করেছে বলে অনেকেই মনে করেন।