গত বছরের জুলাই অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ৫ আগষ্ট ভারতে পালিয়ে যান সাবেক স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা ।এর পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিয়মিত কথা বলে যাচ্ছেন তিনি। তবে ভারতে অবস্থান করেও এই প্রথম বিদেশি কোন গন মাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দিলেন হাসিনা। তবে এটা ইমেইলের জবাব ভিত্তিক সাক্ষাৎকার । রয়টার্স এর এই সাক্ষাৎকারটি ফ্রান্স দর্পণ পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো ।
আগামী বছরের জাতীয় সংসদ নির্বাচনবর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনিজানান, আওয়ামী লীগকে নির্বাচন থেকে বিরত রাখার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে দলেরকোটি কোটি সমর্থক ভোট দেবে না।
৭৮ বছর বয়সী শেখ হাসিনা বুধবার নয়াদিল্লিতে নির্বাসন থেকে রয়টার্সকে পাঠানোএক ই–মেইল বার্তায় বলেন, আওয়ামী লীগকে বাদ দিয়ে গঠিত কোনো সরকারেরঅধীনে তিনি বাংলাদেশে ফিরবেন না। ২০২৪ সালের আগস্টে ছাত্রনেতৃত্বাধীন সহিংসআন্দোলনের পর তিনি ভারতে আশ্রয় নেন।
তার পতনের পর নোবেল শান্তি পুরস্কারজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে গঠিতঅন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাংলাদেশ পরিচালনা করছে। এই সরকার আগামীফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছে।
“আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা শুধু অন্যায় নয়, আত্মঘাতীও বটে,” বলেন শেখহাসিনা। “আগামী সরকারকে অবশ্যই নির্বাচনী বৈধতা অর্জন করতে হবে। আওয়ামীলীগের কোটি কোটি সমর্থক আছে—তাদের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে টেকসইরাজনৈতিক ব্যবস্থা গঠন করা সম্ভব নয়।”
‘সাধারণ বুদ্ধি যেন বিজয়ী হয়’
বাংলাদেশে বর্তমানে নিবন্ধিত ভোটারের সংখ্যা ১২ কোটি ৬০ লাখের বেশি। দীর্ঘদিনধরে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দেশের রাজনীতিতে প্রধান দুটি শক্তি হিসেবেআধিপত্য ধরে রেখেছে। বিশ্লেষকদের ধারণা, আসন্ন নির্বাচনে বিএনপি বিজয়ী হতেপারে।
গত মে মাসে নির্বাচন কমিশন আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত করে। এর আগেনিরাপত্তা উদ্বেগ ও দলের সিনিয়র নেতাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগের কারণদেখিয়ে ইউনুসের নেতৃত্বাধীন সরকার সব রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করেছিল।
“আমরা আমাদের ভোটারদের অন্য দলকে সমর্থন করতে বলছি না,” বলেন শেখহাসিনা। “আমরা এখনো আশা করি, সাধারণ বুদ্ধি ও ন্যায়বোধের জয় হবে এবংআমাদের নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া হবে।”
তিনি জানাননি, আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সরকারের সঙ্গে নির্বাচনে অংশগ্রহণেরবিষয়ে কোনো গোপন আলোচনার প্রচেষ্টা চলছে কি না।
ড. ইউনুসের দফতর রয়টার্সের মন্তব্যের অনুরোধের তাৎক্ষণিক কোনো জবাব দেয়নি।
শেখ হাসিনা, যিনি দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে ক্ষমতায় থেকে বাংলাদেশের অর্থনীতি রূপান্তরেভূমিকা রাখেন, মানবাধিকার লঙ্ঘন ও ভিন্নমত দমন করার অভিযোগে সমালোচিতছিলেন। ২০২৪ সালের নির্বাচনে তিনি চতুর্থবারের মতো টানা ক্ষমতায় আসেন, তবে সেনির্বাচন প্রধান বিরোধী দল বিএনপি বর্জন করেছিল; দলের শীর্ষ নেতারা তখনকারাগারে বা নির্বাসনে ছিলেন।










