ঢাকা ০৮:০৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
কাজের আওতায় অনিবন্ধিত অভিবাসীদের বৈধতার শর্ত শিথিল করল স্পেন শহীদ আবু সাঈদসহ সবার প্রতি সালাম জানালেন বিলেতের প্রধান কবি আহমেদ ময়েজ বালাগঞ্জে উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের উদ্যেগে মানববন্ধন প্যারিসে খিয়াং নয়ন রচিত মোটিভেশনাল বিষয়ক ‘Impression de vie’ জীবনের ছাপ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন বালাগঞ্জে সাংবাদিকদের সাথে- নবাগত ওসি নির্মল দেব এর মতবিনিময় ড. মুহাম্মদ ইউনুসের নামে প্যারিসে রাস্তার নামকরণ: একটি গৌরবময় মুহূর্ত বাংলাদেশে সাধারণ ছাত্র ছাত্রীদের হত্যা ও নির্যাতনের প্রতিবাদে ফ্রান্সের তুলুজে বিশাল সমাবেশ প্যারিসের ঐতিহাসিক রিপাবলিক চত্বরজুড়ে বিক্ষুব্ধ বাংলাদেশ বালাগঞ্জের হাফিজ মাওলানা সামসুল ইসলাম লন্ডনের university of central Lancashire থেকে মাস্টার্স ডিগ্রী অর্জন করলেন বালাগঞ্জে সাংবাদিকদের সাথে উপ-নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী হাজী রফিক আহমদ এর মতবিনিময়

কোরআন-হাদিসের আলোকে মহামারীর কারণ

  • আপডেট সময় ০৪:৫৯:০৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২১
  • ২৬০ বার পড়া হয়েছে

Warning: Attempt to read property "post_excerpt" on null in /home/u305720254/domains/francedorpan.com/public_html/wp-content/themes/newspaper-pro/template-parts/common/single_two.php on line 117

কোরআন-হাদিসে মহামারি ও বালা-মুছিবতকে মানুষের গুনাহের ফসল বলা হয়েছে। সে হিসেবে  করোনাভাইরাসও আমাদের গুনাহ ও অন্যায়ের ফসল। বান্দা যখন বেপরোয়াভাবে গুনাহ করে আল্লাহ তায়ালা তাকে সতর্ক করতে বিভিন্ন পরীক্ষায় ফেলেন। যেন সে গুনাহ থেকে নিবৃত্ত হয়।

আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘মানুষের কৃতকর্মের ফলে স্থলে ও সমুদ্রে বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়ে; যার ফলে তাদের কৃতকর্মের কোনো কোনো কর্মের শাস্তি তাদেরকে তিনি আস্বাদন করান, যাতে তারা ফিরে আসে। (সূরা রূম : ৪১)।

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যখন কোনো সম্প্রদায়ের মাঝে অশ্লীলতার প্রসার ঘটে তখন তাদের মাঝে মহামারি এবং এমন দুর্ভিক্ষ দেখা দেয় যার নমুনা তারা পূর্বপুরুষদের মাঝে দেখেনি। (ইবনে মাজাহ: ৪০১৯)।   

আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই

মুমিনের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। সে সর্বদা আল্লাহর ফায়সালা ও সিদ্ধান্তের উপর সমর্পিত থাকে। বিশেষ করে বান্দা যখন আল্লাহ তায়ালার হুকুম মেনে চলে তবে তার জীবন হয় চিন্তামুক্ত।

আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, ‘ জেনে রাখো, আল্লাহর বন্ধুদের কোনো ভয় নেই এবং তারা দুঃখিতও হবে না। (সূরা ইউনূস : ৬২)।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যখন কোনো ব্যক্তি মহামারিতে পতিত হয় এবং নেকির আশায় সে ধৈর্য্যসহকারে সেখানে অবস্থান করে এবং এ বিশ্বাস রাখে যে, আল্লাহ তাআলার হুকুম ব্যতিত কিছুই হয় না, তাহলে সে শহীদের সওয়াব পায়। (বুখারী শরীফ : ৫৪০২)।

আমাদের করণীয় 

আল্লাহর স্মরণ ও যিকির বাড়িয়ে দেয়া। বেশি বেশি তওবা ইস্তেগফার করা। হাদিসে বর্ণিত দুয়ার আমল করা। যেমন-

ক. আল্লাহুম্মা ইন্নি আঊযুবিকা মিনাল  বারাসি ওয়াল জুনূনি ওয়াল জুযামি ওয়া মিন সায়্যিইল আসক্বামি। (আবু দাউদ: ১৫৫৪)।

খ. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন ঘর থেকে বের হতেন তখন এ দুআ পড়তেন, বিসমিল্লাহি তাওয়াক্কালতু আলাল্লাহ, লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ। (আবু দাউদ: ৫০৯৫)।

তিনি বলেন, তখন ফিরিশতারা তার জন্য এ বলে দুয়া করতে থাকে, তোমাকে সঠিক পথ দান করা হোক এবং সবধরণের বালা মছিবত ও মন্দতা থেকে রক্ষা করা হোক। 

গ. যে ব্যক্তি প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যায় তিনবার এই দুআটি পড়বে , ‘বিসমিল্লাহিল্লাযি লা ইয়ার্দুরু মাআ ইস্মিহী শাইউন ফিল র্আদি ওয়ালা ফিস্ সামা-ই ওয়া হুওয়াস্ সামিউল আলীম’ তাহলে সে আকস্মিক বিপদ-আপদ মহামারী থেকে রক্ষা পাবে। (তিরমিযী: ৩৩৮৮)।

ঘ. ‘লা ইলাহা ইল্লা আনতা সুবহানাকা ইন্নি কুনতু মিনায যালিমীন’ দুআটি বেশি বেশি পাঠ করা।

ঙ. এই দুআটি পাঠ করা- আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকাল আফিয়াতা ফিদ দুনয়া ওয়াল আখিরাহ- হে আল্লাহ! আপনার কাছে দুনিয়া ও আখিরাতে আফিয়াত চাই। 

চ. বেশি বেশি দান-সাদকা ও মাতা-পিতার সেবা করা, পরিবারের লোকদের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখা। নবী (সা.) বলেন, দান-সাদকা ও সৎ কর্ম অপমৃত্যু থেকে রক্ষা করে।

ছ. তাহাজ্জুদের সালাত আদায় করে দুআ করা। নবী সা. বলেন, তাহাজ্জুদের সালাত শরীরের যাবতীয় রোগবালাই দূর করে।

নিজের ঘর ও অঞ্চল থেকে অতীব প্রয়োজন ছাড়া বের না হওয়া। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন তোমরা কোথাও মহামারির সংবাদ পাবে তখন সেদিকে যেও না। আর যদি তোমরা মহামারীতে আক্রান্ত ভূমিতে পূর্ব থেকেই অবস্থান করো তাহলে সেখান থেকে পালিয়ো না। (বুখারী: ৫৭৩৯, মুসলিম: ২২১৯)।

একান্ত যদি যেতেই হয় তাহলে সেই এলাকা বা শহরে প্রবেশ করে এই দুআ করা- আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা খাইরা হাযিহিল ক্বারইয়াহ ওয়া খাইরা আহলিহা ওয়া আউযু বিকা মিন শাররিহা ওয়া র্শারি আহলিহা ওয়া শাররি মা ফীহা। (সুনানে কুবরা: নাসাঈ: ৫/২৫৬, মুস্তাদরাকে হাকিম: ১/৬১৪)।   

* পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা এবং ঘরবাড়ি ও আঙ্গিনা পরিচ্ছন্ন রাখা। যত্রতত্র কফ, থুথু এবং নাকের ময়লা না ফেলা। 

* অজু অবস্থায় থাকা। কেননা হাদিসে শরীফে পবিত্রতাকে ঈমানের অঙ্গ বলা হয়েছে।

সুতরাং আসুন, আতঙ্কিত না হয়ে সতর্ক ও সাবধান হই, বেশি বেশি আল্লাহর স্মরণ ও যিকির করি, তাওবা ইস্তিগফার করি এবং আল্লাহ তায়ালার দরবারে দুয়া, রোনাযারি ও কান্নাকাটি করি ।

ওগো মাবুদ, আপনি আমাদের দেশের সকলকে বিশেষ করে আমাদের বিবি-বাচ্চা, মাতা-পিতা এবং আত্মীয়-স্বজনকে করোনাভাইরাসসহ সবধরণের রোগ ও বালা-মছিবত থেকে হেফাযত করুন। আমীন।  

লেখক: খতিব, সার্কিট হাউজ জামে মসজিদ, কাকরাইল 

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

লক ডাউন পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবেলায় ফ্রান্সে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি

যুক্তরাজ্যে করোনার মধ্যেই শিশুদের মাঝে নতুন রোগের হানা

কাজের আওতায় অনিবন্ধিত অভিবাসীদের বৈধতার শর্ত শিথিল করল স্পেন

কোরআন-হাদিসের আলোকে মহামারীর কারণ

আপডেট সময় ০৪:৫৯:০৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২১

কোরআন-হাদিসে মহামারি ও বালা-মুছিবতকে মানুষের গুনাহের ফসল বলা হয়েছে। সে হিসেবে  করোনাভাইরাসও আমাদের গুনাহ ও অন্যায়ের ফসল। বান্দা যখন বেপরোয়াভাবে গুনাহ করে আল্লাহ তায়ালা তাকে সতর্ক করতে বিভিন্ন পরীক্ষায় ফেলেন। যেন সে গুনাহ থেকে নিবৃত্ত হয়।

আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘মানুষের কৃতকর্মের ফলে স্থলে ও সমুদ্রে বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়ে; যার ফলে তাদের কৃতকর্মের কোনো কোনো কর্মের শাস্তি তাদেরকে তিনি আস্বাদন করান, যাতে তারা ফিরে আসে। (সূরা রূম : ৪১)।

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যখন কোনো সম্প্রদায়ের মাঝে অশ্লীলতার প্রসার ঘটে তখন তাদের মাঝে মহামারি এবং এমন দুর্ভিক্ষ দেখা দেয় যার নমুনা তারা পূর্বপুরুষদের মাঝে দেখেনি। (ইবনে মাজাহ: ৪০১৯)।   

আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই

মুমিনের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। সে সর্বদা আল্লাহর ফায়সালা ও সিদ্ধান্তের উপর সমর্পিত থাকে। বিশেষ করে বান্দা যখন আল্লাহ তায়ালার হুকুম মেনে চলে তবে তার জীবন হয় চিন্তামুক্ত।

আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, ‘ জেনে রাখো, আল্লাহর বন্ধুদের কোনো ভয় নেই এবং তারা দুঃখিতও হবে না। (সূরা ইউনূস : ৬২)।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যখন কোনো ব্যক্তি মহামারিতে পতিত হয় এবং নেকির আশায় সে ধৈর্য্যসহকারে সেখানে অবস্থান করে এবং এ বিশ্বাস রাখে যে, আল্লাহ তাআলার হুকুম ব্যতিত কিছুই হয় না, তাহলে সে শহীদের সওয়াব পায়। (বুখারী শরীফ : ৫৪০২)।

আমাদের করণীয় 

আল্লাহর স্মরণ ও যিকির বাড়িয়ে দেয়া। বেশি বেশি তওবা ইস্তেগফার করা। হাদিসে বর্ণিত দুয়ার আমল করা। যেমন-

ক. আল্লাহুম্মা ইন্নি আঊযুবিকা মিনাল  বারাসি ওয়াল জুনূনি ওয়াল জুযামি ওয়া মিন সায়্যিইল আসক্বামি। (আবু দাউদ: ১৫৫৪)।

খ. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন ঘর থেকে বের হতেন তখন এ দুআ পড়তেন, বিসমিল্লাহি তাওয়াক্কালতু আলাল্লাহ, লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ। (আবু দাউদ: ৫০৯৫)।

তিনি বলেন, তখন ফিরিশতারা তার জন্য এ বলে দুয়া করতে থাকে, তোমাকে সঠিক পথ দান করা হোক এবং সবধরণের বালা মছিবত ও মন্দতা থেকে রক্ষা করা হোক। 

গ. যে ব্যক্তি প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যায় তিনবার এই দুআটি পড়বে , ‘বিসমিল্লাহিল্লাযি লা ইয়ার্দুরু মাআ ইস্মিহী শাইউন ফিল র্আদি ওয়ালা ফিস্ সামা-ই ওয়া হুওয়াস্ সামিউল আলীম’ তাহলে সে আকস্মিক বিপদ-আপদ মহামারী থেকে রক্ষা পাবে। (তিরমিযী: ৩৩৮৮)।

ঘ. ‘লা ইলাহা ইল্লা আনতা সুবহানাকা ইন্নি কুনতু মিনায যালিমীন’ দুআটি বেশি বেশি পাঠ করা।

ঙ. এই দুআটি পাঠ করা- আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকাল আফিয়াতা ফিদ দুনয়া ওয়াল আখিরাহ- হে আল্লাহ! আপনার কাছে দুনিয়া ও আখিরাতে আফিয়াত চাই। 

চ. বেশি বেশি দান-সাদকা ও মাতা-পিতার সেবা করা, পরিবারের লোকদের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখা। নবী (সা.) বলেন, দান-সাদকা ও সৎ কর্ম অপমৃত্যু থেকে রক্ষা করে।

ছ. তাহাজ্জুদের সালাত আদায় করে দুআ করা। নবী সা. বলেন, তাহাজ্জুদের সালাত শরীরের যাবতীয় রোগবালাই দূর করে।

নিজের ঘর ও অঞ্চল থেকে অতীব প্রয়োজন ছাড়া বের না হওয়া। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন তোমরা কোথাও মহামারির সংবাদ পাবে তখন সেদিকে যেও না। আর যদি তোমরা মহামারীতে আক্রান্ত ভূমিতে পূর্ব থেকেই অবস্থান করো তাহলে সেখান থেকে পালিয়ো না। (বুখারী: ৫৭৩৯, মুসলিম: ২২১৯)।

একান্ত যদি যেতেই হয় তাহলে সেই এলাকা বা শহরে প্রবেশ করে এই দুআ করা- আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা খাইরা হাযিহিল ক্বারইয়াহ ওয়া খাইরা আহলিহা ওয়া আউযু বিকা মিন শাররিহা ওয়া র্শারি আহলিহা ওয়া শাররি মা ফীহা। (সুনানে কুবরা: নাসাঈ: ৫/২৫৬, মুস্তাদরাকে হাকিম: ১/৬১৪)।   

* পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা এবং ঘরবাড়ি ও আঙ্গিনা পরিচ্ছন্ন রাখা। যত্রতত্র কফ, থুথু এবং নাকের ময়লা না ফেলা। 

* অজু অবস্থায় থাকা। কেননা হাদিসে শরীফে পবিত্রতাকে ঈমানের অঙ্গ বলা হয়েছে।

সুতরাং আসুন, আতঙ্কিত না হয়ে সতর্ক ও সাবধান হই, বেশি বেশি আল্লাহর স্মরণ ও যিকির করি, তাওবা ইস্তিগফার করি এবং আল্লাহ তায়ালার দরবারে দুয়া, রোনাযারি ও কান্নাকাটি করি ।

ওগো মাবুদ, আপনি আমাদের দেশের সকলকে বিশেষ করে আমাদের বিবি-বাচ্চা, মাতা-পিতা এবং আত্মীয়-স্বজনকে করোনাভাইরাসসহ সবধরণের রোগ ও বালা-মছিবত থেকে হেফাযত করুন। আমীন।  

লেখক: খতিব, সার্কিট হাউজ জামে মসজিদ, কাকরাইল