ঢাকা ০৭:২৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৩ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
বালাগঞ্জে ‘আত-তাকওয়া’ প্রকল্প পরিদর্শনে প্রবীণ কমিউনিটি নেতা শাহনূর চৌধুরী বিসিএফ আয়োজিত স্টুডেন্টস এওয়ার্ড এন্ড রিইউনিয়ন ২০২৪ ক্রমশঃ এর ব্যাপ্তি ও গ্রহণযোগ্যতা বাংলাদেশ কমিউনিটি ইন ফ্রান্স (বিসিএফ) ৬ষ্ট কৃতি শিক্ষার্থী সংবর্ধনা অনুষ্টিত বিসিএফ কমিউনিটি এওয়ার্ড ২০২৪ – পেলেন ‘ফ্রান্স দর্পণ’ প্রকাশক মিয়া মাসুদ বিজয় বিবস উপলক্ষে ইপিএস কমিউনিটি আয়োজন করল “শিশুদের চিত্রাঙ্কন ও কবিতা আবৃত্তি” গহরপুর জামিয়ার ৬৮তম বার্ষিক মাহফিল বৃহস্পতিবার: সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হযরত শাহ জামাল (রহ.) দারুস সুন্নাহ নুরীয়া ইসলামীয়া মাদ্রাসার ওয়াজ ও দুয়া মাহফিল ৫ জানুয়ারি প্যারিসে বাংলাদেশ দূতাবাসের আয়োজনে মহান বিজয় দিবস ২০২৪ উদযাপন বালাগঞ্জে শাহ আকিবুন নূর চৌধুরী বৃত্তি বিতরণ সম্পন্ন ফ্রান্সে প্রবাসে সাংবাদিকতার প্রতিবন্ধকতা ও উত্তরনের পন্থা শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত

বালাগঞ্জে কুশিয়ারা ডাইকের বিভিন্ন স্থানে ভাঙন, হাজার হাজার পরিবার পানিবন্ধি

  • আপডেট সময় ০১:৩৯:৩৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ জুন ২০১৮
  • ২৩৩ বার পড়া হয়েছে

এস এম হেলাল, বালাগঞ্জ থেকে- সিলেটের বালাগঞ্জে কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে কুশিয়ারা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বালাগঞ্জ-খছরুপুর-শেরপুর সড়ক (বালাগঞ্জের কুশিয়ারা ডাইক)’ র বিভিন্ন স্থান ভেঙ্গে নদীর তীরবর্তী হাজার হাজার পরিবার পানিবন্ধি অবস্থায় চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। ডাইকের সড়ক ভেঙ্গে নিকটবর্তী জনবসতি এলাকা ও হাওরে পানি প্রবেশের কারণে পুরো উপজেলা নতুন করে প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।

কুশিয়ারা ডাইক ভাঙ্গন রাধাকোনা এলাকায় স্থানীয় জনগণ

১৮ জুন সোমবার বিকেলে সরেজমিন বালাগঞ্জ উপজেলার কুশিয়ারা নদীর তীরবর্তী বিভিন্ন স্থানে পরিদর্শনকালে জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় লোকজনের সাথে আলাপ করে জানা যায়, ১৭ জুন রাতে হঠাৎ কুশিয়ারা ডাইকের ৯টি স্থান ভেঙ্গে নদীর পানি হাওর ও জনপদে প্রবেশ করে। ফলে, কুশিয়ারা তীরবর্তী ২০টি গ্রামের আকস্মিক বন্যা দেখা দিয়েছে। এতে উপজেলার পূর্বপৈলনপুর ইউনিয়নের প্রায় ১০টি গ্রামের প্রায় ১হাজার ৬শ পরিবার, বালাগঞ্জ সদর ইউনিয়নের ৭টি গ্রামের ১হাজার ৫শ পরিবার, ও পূর্ব গৌরীপুর ইউনিয়নের ৩টি গ্রামের প্রায় ৫শতাধিক পরিবারের লোকজন পানিবন্ধি হয়ে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।

পানিবন্ধি সাফিয়া বেগম ও তাঁর পরিবার

বালাগঞ্জ ইউনিয়নের রাধারকোনা গ্রামের পানিবন্ধি জিতু মিয়ার স্ত্রী সাফিয়া বেগম বলেন, অবুঝ বাচ্ছা-কাচ্ছা নিয়া খুব বেশি বিপদে আছি। আর একপুটা পানি বাড়লে ঘরেও থাকা যাইত নায়।

এছাড়া বালাগঞ্জ উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণ, বাসষ্টেশন, হাসপাতাল আঙ্গিনা, পূর্ব-বাজার রোড, পোষ্ট অফিস রোড ও পুরাতন থানা রোড পানিতে নিম্মজ্জিত।

উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গন

এবং বালাগঞ্জ তয়রুন্নেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় সহ বন্যা কবলিত তিনটি ইউনিয়নের আর ও বেশ কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্টান পানিতে নিমজ্জিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

তয়রুন্নেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়

এদিকে ১৮জুন বালাগঞ্জ সদরের বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শন করেছেন সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ্ব শফিকুর রহমান চৌধুরী। পরিদর্শন কালে তিনি বলেন- এটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ, ভয় পাওয়ার কিছু নেই, আল্লাহ পাকের কৃপায় আমরা এর চেয়েও ভয়াবহ অবস্থা থেকে বেঁচেছি। বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা যতদিন বেঁচে আছেন, একটি মানুষও না খেয়ে মরবে না।

সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান চৌধুরী, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হুসাইন আহমদ, ব্যবসায়ী ম.আ. মুহিত ও অন্যান্যরা

বালাগঞ্জ উপজেলা সদরের বাসিন্দা ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হুসাইন আহমদ জানান, কুশিয়ারা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে বালাগঞ্জ উপজেলার ৬টি ইউনিয়নেই প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ইতোমধ্যে উপজেলার প্রায় প্রতিটি এলাকায় কম-বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

এ ছাড়া বালাগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আবদাল মিয়া, বালাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আব্দুল হক, থানার অফিসার ইনচার্জ এসএম জালাল উদ্দিন ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেছেন। আলাপকালে বালাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আব্দুল হক জানান, কুশিয়ারা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় “কুশিয়ারা ডাইকে”র কয়েকটি স্থান ভেঙ্গে উপজেলার ৩টি ইউনিয়ন আক্রান্ত হয়েছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনে আমরা প্রথম থেকে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। ইতিমধ্যে বন্যার্তদের জন্য ১২ মেট্রিকটন চাল বরাদ্ধ করা হয়েছে।

ত্রাণ বিতরণ করছেন নির্বাহী অফিসার মো. আব্দুল হক, থানার অফিসার ইনচার্জ এসএম জালাল উদ্দিন ও অন্যান্যরা

পূর্ব পৈলনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন বলেন, আমার ইউনিয়নের ১০টি গ্রামের লোকজনই পানিবন্ধি হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।

ত্রাণ বিতরণ করছেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবদাল মিয়া ও পূর্ব পৈলনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন

বালাগঞ্জ সদর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মুনিম বলেন, হঠাৎ ডাইক ভেঙ্গে যাওয়ায় আমার ইউনিয়নের ৭টি গ্রামের প্রায় দেড়-দুই হাজার পরিবারের মানুষ পানিবন্ধি হয়ে পড়েছেন। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ত্রান বিতরণ অব্যাহত রয়েছে।

ডাইক পরিদর্শন করছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আব্দুল হক ও সদর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মুনিম

বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় সব ধরণের সাহায্য সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে ও তিনি জানান।

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

লক ডাউন পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবেলায় ফ্রান্সে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি

যুক্তরাজ্যে করোনার মধ্যেই শিশুদের মাঝে নতুন রোগের হানা

বালাগঞ্জে ‘আত-তাকওয়া’ প্রকল্প পরিদর্শনে প্রবীণ কমিউনিটি নেতা শাহনূর চৌধুরী

বালাগঞ্জে কুশিয়ারা ডাইকের বিভিন্ন স্থানে ভাঙন, হাজার হাজার পরিবার পানিবন্ধি

আপডেট সময় ০১:৩৯:৩৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ জুন ২০১৮

এস এম হেলাল, বালাগঞ্জ থেকে- সিলেটের বালাগঞ্জে কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে কুশিয়ারা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বালাগঞ্জ-খছরুপুর-শেরপুর সড়ক (বালাগঞ্জের কুশিয়ারা ডাইক)’ র বিভিন্ন স্থান ভেঙ্গে নদীর তীরবর্তী হাজার হাজার পরিবার পানিবন্ধি অবস্থায় চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। ডাইকের সড়ক ভেঙ্গে নিকটবর্তী জনবসতি এলাকা ও হাওরে পানি প্রবেশের কারণে পুরো উপজেলা নতুন করে প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।

কুশিয়ারা ডাইক ভাঙ্গন রাধাকোনা এলাকায় স্থানীয় জনগণ

১৮ জুন সোমবার বিকেলে সরেজমিন বালাগঞ্জ উপজেলার কুশিয়ারা নদীর তীরবর্তী বিভিন্ন স্থানে পরিদর্শনকালে জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় লোকজনের সাথে আলাপ করে জানা যায়, ১৭ জুন রাতে হঠাৎ কুশিয়ারা ডাইকের ৯টি স্থান ভেঙ্গে নদীর পানি হাওর ও জনপদে প্রবেশ করে। ফলে, কুশিয়ারা তীরবর্তী ২০টি গ্রামের আকস্মিক বন্যা দেখা দিয়েছে। এতে উপজেলার পূর্বপৈলনপুর ইউনিয়নের প্রায় ১০টি গ্রামের প্রায় ১হাজার ৬শ পরিবার, বালাগঞ্জ সদর ইউনিয়নের ৭টি গ্রামের ১হাজার ৫শ পরিবার, ও পূর্ব গৌরীপুর ইউনিয়নের ৩টি গ্রামের প্রায় ৫শতাধিক পরিবারের লোকজন পানিবন্ধি হয়ে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।

পানিবন্ধি সাফিয়া বেগম ও তাঁর পরিবার

বালাগঞ্জ ইউনিয়নের রাধারকোনা গ্রামের পানিবন্ধি জিতু মিয়ার স্ত্রী সাফিয়া বেগম বলেন, অবুঝ বাচ্ছা-কাচ্ছা নিয়া খুব বেশি বিপদে আছি। আর একপুটা পানি বাড়লে ঘরেও থাকা যাইত নায়।

এছাড়া বালাগঞ্জ উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণ, বাসষ্টেশন, হাসপাতাল আঙ্গিনা, পূর্ব-বাজার রোড, পোষ্ট অফিস রোড ও পুরাতন থানা রোড পানিতে নিম্মজ্জিত।

উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গন

এবং বালাগঞ্জ তয়রুন্নেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় সহ বন্যা কবলিত তিনটি ইউনিয়নের আর ও বেশ কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্টান পানিতে নিমজ্জিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

তয়রুন্নেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়

এদিকে ১৮জুন বালাগঞ্জ সদরের বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শন করেছেন সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ্ব শফিকুর রহমান চৌধুরী। পরিদর্শন কালে তিনি বলেন- এটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ, ভয় পাওয়ার কিছু নেই, আল্লাহ পাকের কৃপায় আমরা এর চেয়েও ভয়াবহ অবস্থা থেকে বেঁচেছি। বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা যতদিন বেঁচে আছেন, একটি মানুষও না খেয়ে মরবে না।

সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান চৌধুরী, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হুসাইন আহমদ, ব্যবসায়ী ম.আ. মুহিত ও অন্যান্যরা

বালাগঞ্জ উপজেলা সদরের বাসিন্দা ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হুসাইন আহমদ জানান, কুশিয়ারা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে বালাগঞ্জ উপজেলার ৬টি ইউনিয়নেই প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ইতোমধ্যে উপজেলার প্রায় প্রতিটি এলাকায় কম-বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

এ ছাড়া বালাগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আবদাল মিয়া, বালাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আব্দুল হক, থানার অফিসার ইনচার্জ এসএম জালাল উদ্দিন ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেছেন। আলাপকালে বালাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আব্দুল হক জানান, কুশিয়ারা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় “কুশিয়ারা ডাইকে”র কয়েকটি স্থান ভেঙ্গে উপজেলার ৩টি ইউনিয়ন আক্রান্ত হয়েছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনে আমরা প্রথম থেকে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। ইতিমধ্যে বন্যার্তদের জন্য ১২ মেট্রিকটন চাল বরাদ্ধ করা হয়েছে।

ত্রাণ বিতরণ করছেন নির্বাহী অফিসার মো. আব্দুল হক, থানার অফিসার ইনচার্জ এসএম জালাল উদ্দিন ও অন্যান্যরা

পূর্ব পৈলনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন বলেন, আমার ইউনিয়নের ১০টি গ্রামের লোকজনই পানিবন্ধি হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।

ত্রাণ বিতরণ করছেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবদাল মিয়া ও পূর্ব পৈলনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন

বালাগঞ্জ সদর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মুনিম বলেন, হঠাৎ ডাইক ভেঙ্গে যাওয়ায় আমার ইউনিয়নের ৭টি গ্রামের প্রায় দেড়-দুই হাজার পরিবারের মানুষ পানিবন্ধি হয়ে পড়েছেন। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ত্রান বিতরণ অব্যাহত রয়েছে।

ডাইক পরিদর্শন করছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আব্দুল হক ও সদর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মুনিম

বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় সব ধরণের সাহায্য সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে ও তিনি জানান।