প্যারিস, সোমবার – ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ তার পূর্বসূরি নিকোলাস সারকোজিকে এলিসি প্রাসাদে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। আধুনিক ফরাসি ইতিহাসে প্রথমবারের মতো কোনো সাবেক রাষ্ট্রপ্রধান কারাগারে প্রবেশ করতে যাচ্ছেন — তার আগেই এই সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হবে।
গত মাসে সারকোজিকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়, অভিযোগ—তিনি তার “ঘনিষ্ঠ সহযোগী” ও “অনানুষ্ঠানিক মধ্যস্থতাকারীদের” মাধ্যমে লিবিয়ার নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফির শাসন থেকে রাজনৈতিক অর্থায়ন পাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছিলেন। এর বিনিময়ে গাদ্দাফির শাসনের জন্য অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক সুবিধা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল বলে আদালত জানায়। ২০০৭ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে নিজের প্রথম প্রচারণা পরিচালনার প্রস্তুতির সময়ই এই অনিয়ম ঘটে বলে অভিযোগে উল্লেখ আছে।
গত সপ্তাহান্তে সারকোজি জানান, তিনি মঙ্গলবার থেকে কারাদণ্ড ভোগ শুরু করবেন।
প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ বলেন, এই সাক্ষাতের উদ্দেশ্য বিচার বিভাগের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ নয়। “ব্যক্তিগত সম্পর্কের দিক থেকে এ ধরনের পরিস্থিতিতে পূর্বসূরিকে আতিথ্য দেওয়া স্বাভাবিক,” — বলেন ম্যাক্রোঁ, স্লোভেনিয়া সফরকালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে।
ফ্রান্সের বিচারমন্ত্রী জেরাল্ড দারমানাঁ, যিনি ২০১৪ সালে সারকোজির মুখপাত্র ছিলেন এবং এখনো তাঁর ঘনিষ্ঠ, জানান—তিনি রায় ঘোষণার পর থেকেই সারকোজির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন এবং নিরাপত্তাজনিত কারণে কারাগারেও তাঁকে দেখতে যাবেন।
রবিবার প্রকাশিত লা ত্রিবুন দিমাঞ্চে পত্রিকায় দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সারকোজি জানান, তিনি প্যারিস শহরের অভ্যন্তরে অবস্থিত একমাত্র কারাগার ‘প্রিজন দ্য লা সঁতে’-তে তাঁর সাজা ভোগ করবেন।
এতে সারকোজি হবেন দ্বিতীয় ফরাসি নেতা, যিনি কারাগারে প্রবেশ করছেন—নাজি সহযোগী ফিলিপ পেতাঁর পর। ১৯৪০ সালে জার্মানির সঙ্গে অস্ত্রবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরের পর পেতাঁর নাম যুক্ত হয়েছে ফরাসি ইতিহাসের এক অন্ধকার অধ্যায়ের সঙ্গে।
তবে সারকোজি কতদিন কারাবন্দি থাকবেন, তা এখনো পরিষ্কার নয়। আইন অনুযায়ী, তিনি সাজা শুরু করার পর শাস্তি হ্রাস বা পরিবর্তনের আবেদন করতে পারবেন। সে ক্ষেত্রে ইলেকট্রনিক ব্রেসলেটের মাধ্যমে গৃহবন্দি অবস্থায় শাস্তি ভোগের সুযোগ পেতে পারেন।