ব্রিটিশ দ্বীপশহর কেইম্যান আইল্যান্ডের গভর্ণর হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার প্রায় তিন মাসের মাথায় গভর্ণর পদ থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে আনোয়ার চৌধুরীকে। তাঁর বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি অভিযোগের তদন্ত হচ্ছে বলে ব্রিটিশ কমনওয়েলথ অফিস থেকে আনোয়ার চৌধুরীকে ডেকে পাঠানো হয়েছে বলে জানিছেন কেইম্যান আইল্যান্ডের প্রধান প্রশাসক এলডেন ম্যাকল্যাফলিন। এসব অভিযোগের তদন্ত সম্পন্ন হতে অন্তত ৬ সপ্তাহ সময় লাগতে পারে বলেও জানান তিনি। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত আনোয়ার চৌধুরী গভর্ণর পদে থাকবেন না। ভারপ্রাপ্ত গভর্ণর হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন ডেপুটি গভর্ণর ফ্রেঞ্জ ম্যান্ডারসান। তদন্তে নির্দোশ প্রমাণিত হলে হয়তো তিনি স্বপদে ফিরে যেতে পারেন।
প্রিমিয়ার এলডেন জানিয়েছেন, আনোয়ার চৌধুরীর বিরুদ্ধে কি ধরনের অভিযোগ উঠেছে সে ব্যাপারে কিছুই খুলে বলা হয়নি ফরেন অফিস থেকে। ৫৮ বছর বয়সী সফল ব্রিটিশ বাংলাদেশী কুটনীতিক আনোয়ার চৌধুরীর বিরুদ্ধে কি অভিযোগ থাকতে পারে, সে ব্যাপারেও তার কোনো ধারণা নেই বলে জানান তিনি। তিন মাস আগে দ্বীপ শহর কেইম্যান আনোয়ার চৌধুরীকে গভর্ণর হিসেবে উষ্ণ সম্বর্ধনা দিয়েছেন কেইম্যান এর শান্তিপ্রিয় মানুষ।তাঁর বিরুদ্ধে কেইম্যান, ইউকে বা তার আগের কোনো কর্মস্থল থেকে কোনো অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে কি না, সে ব্যাপারে কোনো ধারনা দিতে পারেননি এলডেন।
মূলত ব্রিটেন থেকে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার মাইল দূরত্বে অবস্থিত এই দ্বীপপুঞ্জের প্রধান বা গর্ভনর নিয়োগ দেওয়া হয় হোয়াইট হল থেকে। প্রশাসনিক কাঠামো অনুযায়ী, গভর্নর এ দ্বীপের প্রধান। ব্রিটিশ সরকারের পরামর্শে রাণী গভর্নর নিয়োগ দেন। আর গভর্নর দ্বীপের প্রশাসন চালাতে নিয়োগ দেন একজন প্রিমিয়ার ও একটি কেবিনেট। বিশ্বের অন্যতম ফাইনানশিয়াল সেন্টার হিসেবে পরিচিত কেইম্যান আইল্যান্ডের অর্থনৈতিক কর্মকান্ড আবর্তিত হয় ব্যাংকিং, হেজ ফান্ড, বিনিয়োগ এবং ক্যাপ্টিভ ইন্সুরেন্স ও সাধারণ কর্পোরেট কার্যক্রম ঘিরে। কেইম্যান আইল্যান্ড হলো বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম ব্যাংকিং সেন্টার যেখানে ২৭৯টি ব্যাংক রয়েছে এবং এর মধ্যে ২৬০টি আন্তর্জাতিক ব্যবসায়ের জন্য অনুমোদিত।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের মার্চ মাসে ব্রিটেনের কেইম্যান আইল্যান্ডের গভর্নর হিসেবে শপথ নেওয়া বাংলাদেশি বংশদ্ভুত সিলেটের কৃতি সন্তান ঢাকায় নিযুক্ত সাবেক ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত আনোয়ার চৌধুরী – তিনি কেবল প্রথম বাংলাদেশিই নন, প্রথম এশিয়ান হিসেবেই কোনো ব্রিটিশ নাগরিক যিনি ব্রিটিশ নিয়ন্ত্রিত কোনো আইল্যান্ডের প্রধান বা গর্ভনর হিসেবে নিয়োগ পান।