ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে আসা নিয়ে ব্রেক্সিট গণভোটের পর দ্বিতীয় বার্ষিকী চলছে। এ সময়েও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে কোনো চুক্তি ছাড়াই আলোচনা থেকে বেরিয়ে আসার প্রস্তুতি নিচ্ছে বৃটেন। এমনটা ইঙ্গিত দিয়েছেন বৃটেনের সিনিয়র কয়েকজন মন্ত্রী। বাণিজ্য বিষয়ক মন্ত্রী লিয়াম ফক্স বলেছেন, সমঝোতা আলোচনা বাতিল করে বেরিয়ে আসা নিয়ে কোনো ছলচাতুরি করছেন না প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে। অন্যদিকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন একটি ‘পূর্ণাঙ্গ বৃটিশ ব্রেক্সিটের’ আহ্বান জানিয়েছেন। অর্থাৎ এমন একটি ব্রেক্সিট প্রক্রিয়া হবে যেখানে বৃটিশরাই প্রাধান্য বিস্তার করবে। ব্রেক্সিট নিয়ে সর্বশেষ কি পরিস্থিতি তা জনগণকে জানানোর জন্য প্রচারণা শুরু করেছে ব্রেক্সিট বিরোধী একদল প্রচারক। তারা এ জন্য লন্ডনের রাস্তায় বিক্ষোভ করারও প্রস্তুতি নিচ্ছে। তারা বলছেন, ব্রেক্সিট এমন একটি বিষয় নয়, যার বিষয়ে চুক্তি হয়ে গেছে। এমন একটি ব্রেক্সিট বিরোধী গ্রুপ হলো পিপলস ভোট। ইউরোপ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার যেকোনো চুক্তিতে তারা গণভোট চায়। পিপলস ভোট বলেছে, জনগণের কথা শোনা হচ্ছে এটাই চায় মানুষ। কারণ, যে অবস্থা দেখা দিয়েছে তাতে বেক্সিট বিষয়ে কোনো চূড়ান্ত চুক্তি ছাড়াই আগামী বছর ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছাড়তে হবে বৃটেনকে। পিপলস ভোটের আয়োজকরা বলছেন, তারা যে বিক্ষোভ আয়োজন করছেন তা হবে এ যাবতকালের সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ। এতে উপস্থিত থাকবেন অভিনেতা স্যার টনি রবিনসন, ব্রেক্সিট প্রক্রিয়াকে তোলপাড় করে দেয়া ব্যবসায়ী নারী গিনা মিলার। উল্লেখ, বৃটেনের ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছাড়ার প্রশ্নে ২০১৬ সালের ২৩ শে জুন গণভোট হয়। এতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছেড়ে দেয়ার পক্ষে ভোট পড়ে শতকরা ৫১.৯ ভাগ। আর বিপক্ষে ভোট পড়ে শতকরা ৭৮.১ ভাগ। তারই ধারাবাহিকতায় ২০১৯ সালের ২৯ শে মার্চের মধ্যে বৃটেনকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যেতে হবে। তারা এর ৪৬ বছর আগে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ইউরোপীয়ান ইকোনমিক কমিউনিটিতে প্রথম যোগ দিয়েছিল। এখন ব্রেক্সিট বিরোধী গ্রুপ পিপলস ভোট বলছে, এই ৪৬ বছর পরে বৃটেন ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যেতে পারে শুধু তখনই যখন প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাকি ২৭ টি সদস্য দেশের মধ্যে যে সমঝোতা চুক্তি হয়েছে বা হচ্ছে, তা যদি আরেকটি গণভোটে দেয়া হয় এবং তা অনুমোদিত হয়। বৃটেনের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিষয়ক মন্ত্রী লিয়াম ফক্স বলেছেন, একটি চুক্তি হওয়া উচিত উভয় পক্ষের জন্য। তবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের এটা বোঝা অত্যাবশ্যক যে, যদি প্রস্তাবিত অফারগুলো যথেষ্ট ভাল না হয় তাহলে বৃটেন তা থেকে সরে যেতে পারে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী সব সময়ই বলে এসেছেন, একটি বাজে চুক্তি হওয়ার চেয়ে কোনো চুক্তি না হওয়াই ভালো।
সর্বশেষ সংবাদ