আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেলেও নির্বাচন করবেনই আজিজুস সামাদ ডন। শেষ পর্যন্ত যোগ দিতে পারেন ঐক্যফ্রন্টেও। এমন গুঞ্জনে সরব সুনামগঞ্জ ও সিলেটের ভোটের মাঠ। কোন বলয় থেকে নির্বাচন করবেন এ ব্যাপারে এখনো স্পষ্ট কিছু জানাননি ডন। জানান- ‘সময়ই বলে দেবে। তবে- সামনে নির্বাচন ছাড়া আর কোনো পথ খোলা নেই।’ এদিকে- আগামী দুদিনের মধ্যে সিদ্বান্ত নেবেন ডন। আর এক ভাই নজরুল ইসলাম ইতিমধ্যে ঐক্যফ্রন্টে যোগ দিয়েছে। নজরুলের কাছ থেকেও আমন্ত্রণ আছে ডনের।
ফলে ডন ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী হলে সিলেটের রাজনীতিতে অবাক করার কিছুই নেই।
সুনামগঞ্জ-৩ (জগন্নাথপুর-দক্ষিণ সুনামগঞ্জ) আসন থেকে এবার নৌকার মার্কার মনোনয়ন চেয়েছিলেন আজিজুস সামাদ চৌধুরী ডন। কিন্তু গতকাল সন্ধ্যায় প্রায় নিশ্চিত হয়ে গেছেন তিনি মনোনয়ন পাচ্ছেন না। আজিজুস সামাদ ডন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুস সামাদ আজাদের বড় ছেলে। ৭৫ পরবর্তী আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে দলের হাল ধরেন আবদুস সামাদ আজাদ। দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামের পর ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হন আবদুস সামাদ আজাদ। ২০০৫ সালে মারা যান বর্ষীয়াণ জননেতা সামাদ আজাদ। বাবার মৃত্যুর পর আজিজুস সামাদ আজাদ ডন উপনির্বাচন করতে চাইলেও দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ায় নির্বাচন করেননি তিনি। ২০০৮ সালের নির্বাচনে এ আসনে মনোনয়ন দেয়া হয় সাবেক যুগ্ম সচিব আবদুল মান্নানকে। আজিজুস সামাদ আজাদ ডনকে পরবর্তী নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত থাকতে বলা হয়। ২০১৪ সালেও এমএ মান্নানকে মনোনয়ন দেয়া হয়। এ সময় অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী করা হয় এমএ মান্নানকে।
এদিকে, মাঠ গোছাতে থাকেন আজিজুস সামাদ ডন। দলীয় হাইকমান্ড থেকে আশ্বস্ত করা হয় এবার মনোনয়ন দেয়া হবে। কিন্তু এবারো মনোনয়ন বঞ্চিত করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন নেতাকর্মীরা। অনেকেই বলেন, সকল জাতীয় নেতার সন্তানদের পদ পদবী দিলেও সামাদ আজাদের পরিবারকে বারবার অবজ্ঞা করা হচ্ছে। ১৪ বছর ধরে এলাকায় মাটি ও মানুষের সাথে মিশে আছেন আাজিজুস সামাদ ডন। জগন্নাথপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি, সুনামগঞ্জ জেলা পরিষদ সদস্য সৈয়দ সাবির মিয়া বলেন, ‘সব জরিপে আজিজুস সামাদ ডন এগিয়ে থাকলেও মনোনয়ন না দেয়া কোনো ভাবেই মেনে নেয়া যায় না। গ্রামের পর গ্রাম হেঁটে ডন সামাদ সংগঠনকে শক্তিশালী করেছেন জনবিচ্ছিন্ন কেউ এসে ফল ভোগ করুক আমরা চাই না।’
দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি হাজী আব্দুল্লা বলেন, ‘আজিজুস সামাদ আজাদ ডনকে নিয়ে আমরা মানুষের দুয়ারে-দুয়ারে গিয়েছি। নির্বাচন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছি। দল মনোনয়ন না দিলেও নির্বাচন আমাদের করতে হবে। আজিজুস সামাদ ডন মনোনয়ন না পাওয়ায় অনেকেই আজ আওয়ামী লীগ থেকে মুখ সরিয়ে নেবে।’ জগন্নাথপুর পৌরসভার কাউন্সিলর আবাব মিয়া বলেন, ‘স্বতন্ত্র হোক আর ঐক্যফ্রন্ট হোক নির্বাচন ছাড়া আমাদের আর কোনো গতি নেই।’ দক্ষিণ সুনামঞ্জ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের মার্কা ‘ডন’ । আজিজুস সামাদ ডনকে ভোট দেয়ার জন্য মানুষ মুখিয়ে আছে। নির্বাচন ভিন্ন অন্য কোনো পথ খোলা নেই।’ এ ব্যাপারে আজিজুস সামাদ ডন বলেন, ‘মনোনয়ন না পাওয়ার ইঙ্গিত পেয়ে মানুষের চাপ বাড়ছে। কান্নায় ভেঙ্গে পড়েছে সবাই। আমার নির্বাচনী এলাকারই শুধু নয় সিলেটের বিভিন্ন এলাকার মানুষ বিষয়টা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছে না। হয়তো সবার চাপে ইলেকশন করতে হতে পারে।’
সূত্রঃ মানবজমিন