গোলাম সোবহান চৌধুরী দিপন- বালাগঞ্জ একটি প্রাচীন ও ঐতিহ্য মন্ডিত থানা । পশ্চিমে জগন্নাথপুর ও বিশ্বনাথ পূর্বে সাবেক দক্ষিণ সুরমা ও ফেন্চুগন্জ ;উত্তরে দক্ষিণ সুরমা এবং দক্ষিণে রাজনগর থানা এই সীমার মধ্যে শত গ্রাম জনপদে মানুষের নিজেস্ব মিত্সক্রিয়ায় এক স্হানীক বন্ধন ও সামাজিক জীবন একক প্রশাসনিক ব্লককে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে শত শত বছর ধরে । মানুষের আন্চলিক আবেগ ও সম-আন্চলিকতাবোধ গড়ে উঠেছে ঐ এলাকার ঐতিহ্য ও ইতিহাসের একক উৎস হতে ।
বহুকাল হতে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ভৌগলে বালাগঞ্জ তার নিজেস্ব সীমায় সংবদ্ধ হয়েছে । স্মরনাতীত কাল হতে মানুষের স্হানিক ও আন্চলিক এ রাজনৈতিক চেতনা ও আবেগ উক্ত প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক একক-কে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়ে আসছে । জনসংখ্যা বৃদ্ধি,যোগাযোগ ও প্রশাসনিক সুবিধা এবং মুক্তিযুদ্ধের সার্বাধিনায়ক-কে সম্মান জানাতে বালাগঞ্জের পশ্চিম ও উত্তর অংশে নতুন থানা ওসমানী নগর থানা গঠন এবং পরবর্তীতে উপজেলা ঘোষনা হলেও ঐতিহ্য ও সামাজিক সম্প্রতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি । সংসদীয় আসন বালাগঞ্জ-ওসমানী নগর-বিশ্বনাথ সিলেট-২ হিসেবে চিহ্ণিত ছিল । বালাগঞ্জের তিনটি ইউনিয়ন কেটে ফেন্চুগন্জ-দক্ষিণ সুরমা সিলেট-৩ আসনের সাথে সংযুক্ত করা হলে সংক্ষুব্ধ মানুষ উচ্চ আদালতে রীট পিটিশন দায়ের করে ।
সম্প্রতি সমগ্র বালাগঞ্জকে লেজুরের মতো জুড়ে দেওয়া হয়েছে ফেন্চুগন্জ-দক্ষিণ সুরমা (সিলেট-৩ ) সংসদীয় আসনের সাথে। অবহেলার শিকার প্রাচীন জনপদ বালাগন্জকে রাজনৈতিক ও আন্চলিক ভাবে ওসমানী নগরের সাথে বিচ্ছেদ ঘটিয়ে তাকে স্হায়ীরূপ দেওয়ার ব্যবস্হা হলো; কার বা কাদের স্বার্থে তা করা হলো কে জানে ! ওসমানীনগর-বিশ্বনাথ মিলে (সিলেট-২ ) আসন থাকলো । এটা কেবল মাত্র সংসদিয় সীমানা পুনবন্টনের ব্যাপার নয় । একটা প্রাচীন জনপদের ইতিহাস-ঐতিহ্যেরও বিপরীতে এ বিভক্তি/বিচ্ছেদ যা একটা জনপদের মানুষের আবেগ-আকাঙ্খা,ইতিহাস-ঐতিহ্য এবং স্মৃতির বিপরীতে প্রশাসনিক পদক্ষেপ । রাজনৈতিক সীমানা নির্ধারণে সময় জনপদের মানুষের প্রাচীন ইতিহাস ও ঐতিহ্য এবং অন্চলগত আবেগ ও চেতনা বিবেচনায় রেখে সিদ্ধান্ত গ্রহন করা উচিত ছিল । বিষয়টি পুনর্বিবচনার দাবি জানাই ।
লেখক-অ্যাডভোকেট, হাইকোর্ট ,ঢাকা ।