ঢাকা ০৬:২৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৩ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
বালাগঞ্জে ‘আত-তাকওয়া’ প্রকল্প পরিদর্শনে প্রবীণ কমিউনিটি নেতা শাহনূর চৌধুরী বিসিএফ আয়োজিত স্টুডেন্টস এওয়ার্ড এন্ড রিইউনিয়ন ২০২৪ ক্রমশঃ এর ব্যাপ্তি ও গ্রহণযোগ্যতা বাংলাদেশ কমিউনিটি ইন ফ্রান্স (বিসিএফ) ৬ষ্ট কৃতি শিক্ষার্থী সংবর্ধনা অনুষ্টিত বিসিএফ কমিউনিটি এওয়ার্ড ২০২৪ – পেলেন ‘ফ্রান্স দর্পণ’ প্রকাশক মিয়া মাসুদ বিজয় বিবস উপলক্ষে ইপিএস কমিউনিটি আয়োজন করল “শিশুদের চিত্রাঙ্কন ও কবিতা আবৃত্তি” গহরপুর জামিয়ার ৬৮তম বার্ষিক মাহফিল বৃহস্পতিবার: সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হযরত শাহ জামাল (রহ.) দারুস সুন্নাহ নুরীয়া ইসলামীয়া মাদ্রাসার ওয়াজ ও দুয়া মাহফিল ৫ জানুয়ারি প্যারিসে বাংলাদেশ দূতাবাসের আয়োজনে মহান বিজয় দিবস ২০২৪ উদযাপন বালাগঞ্জে শাহ আকিবুন নূর চৌধুরী বৃত্তি বিতরণ সম্পন্ন ফ্রান্সে প্রবাসে সাংবাদিকতার প্রতিবন্ধকতা ও উত্তরনের পন্থা শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত

বাংলাদেশের অর্থনীতিতে প্রবাসীদের ভূমিকা ও গুরুত্ব- মো: রাসেল আহম্মেদ

  • আপডেট সময় ১০:৪৭:৪১ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ মে ২০১৮
  • ২৯৯ বার পড়া হয়েছে

স্বাধীনতার পর পরেই বাংলাদেশের মানুষ জীবিকানির্বাহের তাগিদে প্রবাসে আসতে শুরু করেছিল বিশেষ করে ১৯৭৬ এর পর থেকে মিডিল ইস্টের বিভিন্ন দেশে। কারন সদ্য স্বাধীন হওয়া দেশের পক্ষে এত বিপুল সংখ্যক মানুষের কর্মসংস্থান করা সম্ভব ছিল না। আশির দশকের শেষ ভাগে এসে এর পালে গতি পেল অথ্যাৎ বিপুল পরিমাপে মানুষ বিদেশ যেতে আরম্ভ করলো। বিগত চল্লিশ বছরে যা এখন প্রায় ১ কোটি ২০ লক্ষের ঘরে পৌছেছে এবং প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমরা প্রবাসীরা এখন বছরে প্রায় ১৫ বিলিয়ন ডলার দেশে পাঠায় এবং তা দেশের মোট GDP এর প্রায় ১০ ভাগের ও বেশী! রেডিমেড গার্মেন্টসের পরে অর্থনীতিতে প্রবাসীদের অবদান সবচেয়ে বেশী অথ্যাৎ দ্বিতীয় স্থান যা দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে রাখতে ব্যাপক ভূমিকা রাখছে। প্রবাসীদের কারনে এখন বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ রেকর্ড পরিমাপে আছে এবং যার পরিমাপ প্রায় ৩৩ বিলিয়ন USD। গ্রামীন অঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রবাসীদের ভূমিকা সবচেয়ে বেশী। দেশ গঠনে বলিষ্ঠ ভূমিকা প্রদানকারী এসব প্রবাসীরা বরাবরি উপেক্ষিত হয়েছে। কারন প্রবাসীদের সিংহভাগই নিজেদের উদ্যাগে বিভিন্ন দেশে পারী জমিয়েছে। যদিও সরকারী বেসরকারি কিছু প্রচেষ্টা ছিল কিন্তু তা ছিল প্রয়োজনের তুলনায় খুবই নগণ্য। তাই সাধারন মানুষ বাধ্য হয়ে নিজ উদ্যাগে পাড়ি দিয়েছেন বিশ্বের নানান প্রান্তরে। আর পরিবার পরিজনের মায়া ত্যাগ করে মাথার ঘাম পায়ে পেলে তৈরি করে যাচ্ছে নিজের ও দেশের বর্ণিল সোনালী ভবিষ্যৎ। কিন্তু এসব মানুষের অনেকের খুব তিক্ত অভিজ্ঞতা সম্মুখীন হতে হয় বিদেশ পারি দেওয়ার সময়। দেশী বিদেশী দালাল ও প্রতারকের কারনে অনেকে তাদের সহায় সম্বল হারিয়ে পথে বসে। তারপরে ও তারা ঘুরে দাড়ানোর স্বপ্ন দেখে এবং সংগ্রাম চালিয়ে যায় সোনালী আগামীর আশায়। আর এবাবে দাঁড়িয়ে যায় একটি দেশের সামগ্রিক অর্থনীতি। কিন্তু যেসকল মানুষ এত কষ্ট করে দেশকে সামনে নেওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করছে তাদের প্রতি সরকার এখনো তেমন যত্নবান মনে হচ্ছে না। এখন পর্যন্ত রাষ্ট্র তেমন কোন বিশেষায়িত ব্যবস্থা নেয়নি প্রবাসীদের কল্যাণে যার মাধ্যমে তাদের পরিবারের সুরক্ষা করা যায়। রাষ্ট্র সকল মানুষের কাজের নিশ্চয়তা দিতে পারলে কোন মানুষ প্রবাস নামক কারাগার বরন করতো না। অনেকক্ষেত্রে আমরা দেখি প্রবাসে কারো মৃত্যু হলে তার লাশ পর্যন্ত দেশে ফেরত পাঠাতে অনেক জটিলতার সম্মুখীন হতে হয় বিশেষ করে অর্থনীতিক সমস্যা। দশ জনের কাছ থেকে চাঁদা তুলে লাশের ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হয়। এক জন প্রবাসী হিসাবে যাহা অত্যন্ত লজ্জাকর, বেদনাদায়ক ও অনাকাঙ্ক্ষিত। কারন এ মানুষ গুলো এত সংগ্রাম করলো নিজের ও দেশের জন্য অথচ রাষ্ট্র তাদের দেশে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা টুকু করতে পারলো না নিজ খরছে? অথবা যেসকল মানুষ বিদেশ আসতে প্রতারনার শিকার হচ্ছে তাদের সহযোগিতার জন্য অনন্ত একটি ওয়ান স্টপ সার্ভিস সেন্টার পর্যন্ত খোলা গেল না? টিভি রিপোর্টে দেখলাম পিলিপাইন আমাদের অর্ধেক জনবল বিদেশ পাঠিয়ে আমাদের দুই গুনের বেশী প্রবাসী আয় ঘরে তুলছে। কারন তারা গুরুত্ব দেয় দক্ষ শ্রমিক পাঠানোর উপর আর আমরা এখনো আছি আগের মতই কানামাছি বোঁ বোঁ যারে পার তারে ছোঁ। দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য যদিও সাম্প্রতিক সময়ে কিছু সরকারী উদ্যেগ নেওয়া হয়েছে কিন্তু তা এখনো প্রয়োজনের তুলনায় নিতান্তই কম তাই আরো বেশী সরকারী ও বেসরকারি উদ্যেগ নিতে হবে। তাহলে প্রবাসীরা দেশের উন্নয়নে আরো বেশী ভূমিকা রাখতে পারবে। এবং তা দক্ষ শ্রমিক গটনে ও প্রবাসী আয় বৃদ্ধিতে ব্যাপক গুরুত্ববহন করবে। প্রবাসীদের ঘর বাড়ী নির্মানে সরকারী ও বেসরকারি সহজ শর্তে তেমন কোন ব্যাংক সহযোগিতা এখনো পাওয়া যায় না। যারা দেশের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে নিরলসভাবে অথচ তাদের পরিবারের কল্যাণে সহজ শর্তে ব্যাংক লোনের ব্যবস্থা পর্যন্ত নেই বল্লেই চলে। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে প্রবাসীদের নিয়ে নানান অরুচিকর ও অসম্মানজনক কথা বার্তা বলতে শুনেছি। শাহজালাল বিমানবন্দরে প্রবাসীদের হয়রানি নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে। সর্বোপরি প্রবাসীদের দেশে বিদেশে সমস্যা গুলো চিহ্নিত করে বাস্তবিক ও যোগ উপযোগী উদ্যেগ নিতে পারলে দেশের অগ্রগতিতে আমরা প্রবাসীরা আরো ব্যাপক ভূমিকা রাখতে পারবো। আশা করি যথাযত কর্তৃপক্ষ প্রবাসীদের কল্যাণে বিষয় সমূহ গুরুত্ব সহকারে ভেবে দেখবেন এমন প্রত্যাশা সকল প্রবাসীর। লেখক_মো: রাসেল আহম্মেদ। পর্তুগাল প্রবাসী লেখক ও সাংবাদিক।

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

লক ডাউন পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবেলায় ফ্রান্সে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি

যুক্তরাজ্যে করোনার মধ্যেই শিশুদের মাঝে নতুন রোগের হানা

বালাগঞ্জে ‘আত-তাকওয়া’ প্রকল্প পরিদর্শনে প্রবীণ কমিউনিটি নেতা শাহনূর চৌধুরী

বাংলাদেশের অর্থনীতিতে প্রবাসীদের ভূমিকা ও গুরুত্ব- মো: রাসেল আহম্মেদ

আপডেট সময় ১০:৪৭:৪১ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ মে ২০১৮

স্বাধীনতার পর পরেই বাংলাদেশের মানুষ জীবিকানির্বাহের তাগিদে প্রবাসে আসতে শুরু করেছিল বিশেষ করে ১৯৭৬ এর পর থেকে মিডিল ইস্টের বিভিন্ন দেশে। কারন সদ্য স্বাধীন হওয়া দেশের পক্ষে এত বিপুল সংখ্যক মানুষের কর্মসংস্থান করা সম্ভব ছিল না। আশির দশকের শেষ ভাগে এসে এর পালে গতি পেল অথ্যাৎ বিপুল পরিমাপে মানুষ বিদেশ যেতে আরম্ভ করলো। বিগত চল্লিশ বছরে যা এখন প্রায় ১ কোটি ২০ লক্ষের ঘরে পৌছেছে এবং প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমরা প্রবাসীরা এখন বছরে প্রায় ১৫ বিলিয়ন ডলার দেশে পাঠায় এবং তা দেশের মোট GDP এর প্রায় ১০ ভাগের ও বেশী! রেডিমেড গার্মেন্টসের পরে অর্থনীতিতে প্রবাসীদের অবদান সবচেয়ে বেশী অথ্যাৎ দ্বিতীয় স্থান যা দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে রাখতে ব্যাপক ভূমিকা রাখছে। প্রবাসীদের কারনে এখন বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ রেকর্ড পরিমাপে আছে এবং যার পরিমাপ প্রায় ৩৩ বিলিয়ন USD। গ্রামীন অঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রবাসীদের ভূমিকা সবচেয়ে বেশী। দেশ গঠনে বলিষ্ঠ ভূমিকা প্রদানকারী এসব প্রবাসীরা বরাবরি উপেক্ষিত হয়েছে। কারন প্রবাসীদের সিংহভাগই নিজেদের উদ্যাগে বিভিন্ন দেশে পারী জমিয়েছে। যদিও সরকারী বেসরকারি কিছু প্রচেষ্টা ছিল কিন্তু তা ছিল প্রয়োজনের তুলনায় খুবই নগণ্য। তাই সাধারন মানুষ বাধ্য হয়ে নিজ উদ্যাগে পাড়ি দিয়েছেন বিশ্বের নানান প্রান্তরে। আর পরিবার পরিজনের মায়া ত্যাগ করে মাথার ঘাম পায়ে পেলে তৈরি করে যাচ্ছে নিজের ও দেশের বর্ণিল সোনালী ভবিষ্যৎ। কিন্তু এসব মানুষের অনেকের খুব তিক্ত অভিজ্ঞতা সম্মুখীন হতে হয় বিদেশ পারি দেওয়ার সময়। দেশী বিদেশী দালাল ও প্রতারকের কারনে অনেকে তাদের সহায় সম্বল হারিয়ে পথে বসে। তারপরে ও তারা ঘুরে দাড়ানোর স্বপ্ন দেখে এবং সংগ্রাম চালিয়ে যায় সোনালী আগামীর আশায়। আর এবাবে দাঁড়িয়ে যায় একটি দেশের সামগ্রিক অর্থনীতি। কিন্তু যেসকল মানুষ এত কষ্ট করে দেশকে সামনে নেওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করছে তাদের প্রতি সরকার এখনো তেমন যত্নবান মনে হচ্ছে না। এখন পর্যন্ত রাষ্ট্র তেমন কোন বিশেষায়িত ব্যবস্থা নেয়নি প্রবাসীদের কল্যাণে যার মাধ্যমে তাদের পরিবারের সুরক্ষা করা যায়। রাষ্ট্র সকল মানুষের কাজের নিশ্চয়তা দিতে পারলে কোন মানুষ প্রবাস নামক কারাগার বরন করতো না। অনেকক্ষেত্রে আমরা দেখি প্রবাসে কারো মৃত্যু হলে তার লাশ পর্যন্ত দেশে ফেরত পাঠাতে অনেক জটিলতার সম্মুখীন হতে হয় বিশেষ করে অর্থনীতিক সমস্যা। দশ জনের কাছ থেকে চাঁদা তুলে লাশের ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হয়। এক জন প্রবাসী হিসাবে যাহা অত্যন্ত লজ্জাকর, বেদনাদায়ক ও অনাকাঙ্ক্ষিত। কারন এ মানুষ গুলো এত সংগ্রাম করলো নিজের ও দেশের জন্য অথচ রাষ্ট্র তাদের দেশে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা টুকু করতে পারলো না নিজ খরছে? অথবা যেসকল মানুষ বিদেশ আসতে প্রতারনার শিকার হচ্ছে তাদের সহযোগিতার জন্য অনন্ত একটি ওয়ান স্টপ সার্ভিস সেন্টার পর্যন্ত খোলা গেল না? টিভি রিপোর্টে দেখলাম পিলিপাইন আমাদের অর্ধেক জনবল বিদেশ পাঠিয়ে আমাদের দুই গুনের বেশী প্রবাসী আয় ঘরে তুলছে। কারন তারা গুরুত্ব দেয় দক্ষ শ্রমিক পাঠানোর উপর আর আমরা এখনো আছি আগের মতই কানামাছি বোঁ বোঁ যারে পার তারে ছোঁ। দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য যদিও সাম্প্রতিক সময়ে কিছু সরকারী উদ্যেগ নেওয়া হয়েছে কিন্তু তা এখনো প্রয়োজনের তুলনায় নিতান্তই কম তাই আরো বেশী সরকারী ও বেসরকারি উদ্যেগ নিতে হবে। তাহলে প্রবাসীরা দেশের উন্নয়নে আরো বেশী ভূমিকা রাখতে পারবে। এবং তা দক্ষ শ্রমিক গটনে ও প্রবাসী আয় বৃদ্ধিতে ব্যাপক গুরুত্ববহন করবে। প্রবাসীদের ঘর বাড়ী নির্মানে সরকারী ও বেসরকারি সহজ শর্তে তেমন কোন ব্যাংক সহযোগিতা এখনো পাওয়া যায় না। যারা দেশের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে নিরলসভাবে অথচ তাদের পরিবারের কল্যাণে সহজ শর্তে ব্যাংক লোনের ব্যবস্থা পর্যন্ত নেই বল্লেই চলে। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে প্রবাসীদের নিয়ে নানান অরুচিকর ও অসম্মানজনক কথা বার্তা বলতে শুনেছি। শাহজালাল বিমানবন্দরে প্রবাসীদের হয়রানি নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে। সর্বোপরি প্রবাসীদের দেশে বিদেশে সমস্যা গুলো চিহ্নিত করে বাস্তবিক ও যোগ উপযোগী উদ্যেগ নিতে পারলে দেশের অগ্রগতিতে আমরা প্রবাসীরা আরো ব্যাপক ভূমিকা রাখতে পারবো। আশা করি যথাযত কর্তৃপক্ষ প্রবাসীদের কল্যাণে বিষয় সমূহ গুরুত্ব সহকারে ভেবে দেখবেন এমন প্রত্যাশা সকল প্রবাসীর। লেখক_মো: রাসেল আহম্মেদ। পর্তুগাল প্রবাসী লেখক ও সাংবাদিক।