ঢাকা ০৫:৫৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৩১ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিসিএফ আয়োজিত স্টুডেন্টস এওয়ার্ড এন্ড রিইউনিয়ন ২০২৪ ক্রমশঃ এর ব্যাপ্তি ও গ্রহণযোগ্যতা

  • আপডেট সময় ১১:২৭:৪৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪
  • ১৪৬ বার পড়া হয়েছে

নজমুল কবিরঃ কনকনে শীত। অতি ধীরলয়ে হালকা বৃষ্টি। বিশাল মিলনায়তন প্রস্তুত। আয়োজকদের শংকা, লোকজন আসবে তো! কিন্তু সন্ধ্যা যত ঘনীভূত হয়, উপস্থিতি ততই ঘন হয়ে আসে। অনুষ্ঠান শুরুর আগেই গোলটেবিল ঘিরে বসানো চেয়ার পূর্ণ হয়ে যায়। পেছনে সারি সারি অতিরিক্ত চেয়ারেও ঠাই নেই। দাঁড়িয়ে আছেন অনেকেই! আয়োজকদের এবার কপালে চিন্তার ভাঁজ। দাঁড়িয়ে থাকা আগতদের বসার ব্যবস্থা নেই! এমন কী অনুষ্ঠানে কমিউনিটি পুরস্কার পেয়েছেন এমন অতিথিরাও দাঁড়িয়ে আছেন! কাকে উঠিয়ে কাকে বসার ব্যবস্থা করা যায়, তা নিয়ে আয়োজকদের গলদঘর্ম।

‘ঠাঁই নেই ঠাঁই নেই’ মিলনায়তনে বাংলাদেশ দূতাবাস, প্যারিস এর কর্মকর্তাদের আগমন অনুষ্ঠানের পরিপূর্ণ সৌন্দর্যরূপে আলাদা দ্যূতি ছড়িয়েছে। তাদের স্বতস্ফুর্ত অংশগ্রহন, পুরস্কার বিতরণ এবং উদ্দীপনাপূর্ণ বক্তব্য উপস্থিত সকলকে মুগ্ধ করেছে। প্রবাসীদের এটিই চাওয়া৷ কেননা দূতাবাসইতো আমাদের অভিভাবক। তারা কমিউনিটির আনন্দের অংশীদার হবেন, বেদনায় মাথায় ভরসার হাত রেখে অভয় দেবেন। বিসিএফ এর এই অনুষ্ঠানে দূতাবাস কর্মকর্তাদের উপস্থিতি, বিজয়ী মেধাবীদেরও অনুপ্রাণিত করবে সেটি নিশ্চিত বলা যায়। দূতাবাসের সাথে বাংলাদেশ কমিউনিটির সুনিবিড় মেলবন্ধন এভাবেই তৈরি হবে। আমাদের আস্থা আর ভরসার জায়গাটা এভাবেই দৃঢ় হবে।

বিসিএফ এর নিজস্ব অন্তর্গত একটি শক্তি আছে যেটির কারনে অধিকাংশের কাছে গ্রহনীয় হয়ে ওঠে। বিসিএফ এমন একটি প্লাটফর্ম যেখানে গন্যমান্য ব্যক্তি, রাজনৈতিক ও সামাজিক নেতা, কমিউনিটির নানাস্তরের ব্যক্তিবর্গ একই টেবিলে কিম্বা পাশাপাশি চেয়ারে বসে। এখানে এলে রাজনৈতিক বিভাজন, ব্যক্তিগত এবং মতাদর্শগত বিভাজন ভুলে একই মিলনায়তনে অনুষ্ঠান উপভোগ করে। এমন দৃশ্য বারবার দেখা গেছে বিসিএফ এর প্রোগ্রামে। দূতাবাস কর্মকর্তারা এসে পারস্পরিক সৌহার্দ্যের যে মেসেজ দিয়ে গেলেন তা কমিউনিটি বিভাজন দূর করতে ভূমিকা রাখবে।

অনুষ্ঠানে প্যারিসে কর্মরত সাংবাদিকদের স্বতস্ফুর্ত উপস্থিতি কমিউনিটির প্রতি তাদের দায়বদ্ধতার একটি চমৎকার উদাহরণ তৈরি করেছে।

২৪ ডিসেম্বর, মঙ্গলবার তেমন দৃশ্য দেখা গেছে বিসিএফ কর্তৃক আয়োজিত ‘স্টুডেন্ট এওয়ার্ড এন্ড রিইউনিয়ন ২০২৪’ অনুষ্ঠানে।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে পুরস্কার বিতরণ এবং বক্তব্য প্রদান করেন বাংলাদেশ দূতাবাস ফ্রান্স এর মিশন উপপ্রধান কাজী এহসানুল হক, সামরিক এটাশে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মিজানুর রহমান এবং দূতালয় প্রধান ওয়ালিদ বিন কাশেম।

জনপ্রিয় সংগঠন বাংলাদেশ কমিউনিটি ইন ফ্রান্স (বিসিএফ) ফ্রান্সে বিভিন্ন কলেজ বিশ্বিবদ্যালয় থেকে পাস করা কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা দিয়েছে। ২৪ ডিসেম্বর মঙ্গলবার প্যারিসের একটি অভিজাত মিলনায়তনে বিপুলসংখ্যক ফ্রান্সপ্রবাসী বাংলাদেশীদের উপস্থিতিতে তাদের সংবর্ধনা এবং ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। এবারে ২১ জন নিবন্ধিত শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা দেয়া হয়। এর মধ্যে বাক পর্যায়ে ৭ জন, অনার্স ১ জন, মাস্টার্স ১২ জন এবং ১ জনকে সংবর্ধনা দেয়া হয়।

অনুষ্ঠানে ফ্রান্সে বসবাসরত বিভিন্নক্ষেত্রে অবদান রাখার জন্য ক্রেস্ট প্রদান এবং সংবর্ধনা দেয়া হয়। যাদের পুরস্কৃত করা হয় তারা হলেন, হাসনাত জেহান (লাইফটাইম এচিভমেন্ট), আরিফ রানা-কুমকুম সৈয়দা (সংস্কৃতি), মিয়া মাসুদ (উদ্যোক্তা), আরশী বড়ুয়া (উদীয়মান বেহালা বাদক), জহিরুল রানা (সেরা উপস্থাপক) এবং মোজাম্মেল হোসেন (সেরা বিসিএফ কর্মী)।

উক্ত অনুষ্ঠানে ফ্রান্স নারী ক্রিকেট টীম এর ১৩ সদস্য এবং ফ্রান্স জাতীয় ক্রিকেট টীমের ৪ জন খেলোয়াড়কেও মেডেল এবং ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।

অনুষ্ঠানে অন্যতম আকর্ষণ ছিলো ফ্রান্সে বেড়ে ওঠা ক্ষুদে শিল্পীদের আঁকা চিত্রকর্মের প্রতিযোগিতা।

অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন মৌসুমী চক্রবর্তী এবং সোমা দাস এবং কোরিওগ্রাফার জিএম শরীফুল ইসলামের পরিচালনায় নৃত্য পরিবেশন করেন অমৃতা রায়, ছায়া দাস, মল্লিকা রানী বোস এবং প্রিয়তা বড়ুয়া।

বিসিএফ এর এই আয়োজনের সাফল্য কামনা করে সৌহার্দ্য প্রকাশস্বরূপ একটি ক্রেস্ট উপহার প্রদান করে ফ্রান্সে বাংলাদেশী শ্রমিক গ্রুপ। গ্রুপের পরিচালক আবু হাসান তার সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক তানিম হোসেনের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল এই ক্রেস্টটি বিসিএফ সভাপতি এমডি নুর এর কাছে হস্তান্তর করেন।

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনায় ছিলেন জহিরুল রানা এবং তাকে সহায়তা করেন তানিয়া রহমান। জহিরুল রানা তার স্বভাবসুলভ এবং সুললিত কন্ঠ মাধুরী দিয়ে সঞ্চালনায় পেশাদারিত্বের ছাপ রেখে উপস্থিত দর্শকদের একরকম যাদুমন্ত্রের মত বশীভূত করে রেখেছিলেন। অনুষ্ঠানের ব্যপ্তি দীর্ঘ হলেও দর্শকরা ধৈর্য ধরে পুরো অনুষ্ঠানটিই উপভোগ করেছে।

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

লক ডাউন পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবেলায় ফ্রান্সে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি

যুক্তরাজ্যে করোনার মধ্যেই শিশুদের মাঝে নতুন রোগের হানা

ফ্রান্স বিএনপির স্থবিরতা নিয়ে হতাশ কর্মী সমর্থকরা

বিসিএফ আয়োজিত স্টুডেন্টস এওয়ার্ড এন্ড রিইউনিয়ন ২০২৪ ক্রমশঃ এর ব্যাপ্তি ও গ্রহণযোগ্যতা

আপডেট সময় ১১:২৭:৪৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪

নজমুল কবিরঃ কনকনে শীত। অতি ধীরলয়ে হালকা বৃষ্টি। বিশাল মিলনায়তন প্রস্তুত। আয়োজকদের শংকা, লোকজন আসবে তো! কিন্তু সন্ধ্যা যত ঘনীভূত হয়, উপস্থিতি ততই ঘন হয়ে আসে। অনুষ্ঠান শুরুর আগেই গোলটেবিল ঘিরে বসানো চেয়ার পূর্ণ হয়ে যায়। পেছনে সারি সারি অতিরিক্ত চেয়ারেও ঠাই নেই। দাঁড়িয়ে আছেন অনেকেই! আয়োজকদের এবার কপালে চিন্তার ভাঁজ। দাঁড়িয়ে থাকা আগতদের বসার ব্যবস্থা নেই! এমন কী অনুষ্ঠানে কমিউনিটি পুরস্কার পেয়েছেন এমন অতিথিরাও দাঁড়িয়ে আছেন! কাকে উঠিয়ে কাকে বসার ব্যবস্থা করা যায়, তা নিয়ে আয়োজকদের গলদঘর্ম।

‘ঠাঁই নেই ঠাঁই নেই’ মিলনায়তনে বাংলাদেশ দূতাবাস, প্যারিস এর কর্মকর্তাদের আগমন অনুষ্ঠানের পরিপূর্ণ সৌন্দর্যরূপে আলাদা দ্যূতি ছড়িয়েছে। তাদের স্বতস্ফুর্ত অংশগ্রহন, পুরস্কার বিতরণ এবং উদ্দীপনাপূর্ণ বক্তব্য উপস্থিত সকলকে মুগ্ধ করেছে। প্রবাসীদের এটিই চাওয়া৷ কেননা দূতাবাসইতো আমাদের অভিভাবক। তারা কমিউনিটির আনন্দের অংশীদার হবেন, বেদনায় মাথায় ভরসার হাত রেখে অভয় দেবেন। বিসিএফ এর এই অনুষ্ঠানে দূতাবাস কর্মকর্তাদের উপস্থিতি, বিজয়ী মেধাবীদেরও অনুপ্রাণিত করবে সেটি নিশ্চিত বলা যায়। দূতাবাসের সাথে বাংলাদেশ কমিউনিটির সুনিবিড় মেলবন্ধন এভাবেই তৈরি হবে। আমাদের আস্থা আর ভরসার জায়গাটা এভাবেই দৃঢ় হবে।

বিসিএফ এর নিজস্ব অন্তর্গত একটি শক্তি আছে যেটির কারনে অধিকাংশের কাছে গ্রহনীয় হয়ে ওঠে। বিসিএফ এমন একটি প্লাটফর্ম যেখানে গন্যমান্য ব্যক্তি, রাজনৈতিক ও সামাজিক নেতা, কমিউনিটির নানাস্তরের ব্যক্তিবর্গ একই টেবিলে কিম্বা পাশাপাশি চেয়ারে বসে। এখানে এলে রাজনৈতিক বিভাজন, ব্যক্তিগত এবং মতাদর্শগত বিভাজন ভুলে একই মিলনায়তনে অনুষ্ঠান উপভোগ করে। এমন দৃশ্য বারবার দেখা গেছে বিসিএফ এর প্রোগ্রামে। দূতাবাস কর্মকর্তারা এসে পারস্পরিক সৌহার্দ্যের যে মেসেজ দিয়ে গেলেন তা কমিউনিটি বিভাজন দূর করতে ভূমিকা রাখবে।

অনুষ্ঠানে প্যারিসে কর্মরত সাংবাদিকদের স্বতস্ফুর্ত উপস্থিতি কমিউনিটির প্রতি তাদের দায়বদ্ধতার একটি চমৎকার উদাহরণ তৈরি করেছে।

২৪ ডিসেম্বর, মঙ্গলবার তেমন দৃশ্য দেখা গেছে বিসিএফ কর্তৃক আয়োজিত ‘স্টুডেন্ট এওয়ার্ড এন্ড রিইউনিয়ন ২০২৪’ অনুষ্ঠানে।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে পুরস্কার বিতরণ এবং বক্তব্য প্রদান করেন বাংলাদেশ দূতাবাস ফ্রান্স এর মিশন উপপ্রধান কাজী এহসানুল হক, সামরিক এটাশে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মিজানুর রহমান এবং দূতালয় প্রধান ওয়ালিদ বিন কাশেম।

জনপ্রিয় সংগঠন বাংলাদেশ কমিউনিটি ইন ফ্রান্স (বিসিএফ) ফ্রান্সে বিভিন্ন কলেজ বিশ্বিবদ্যালয় থেকে পাস করা কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা দিয়েছে। ২৪ ডিসেম্বর মঙ্গলবার প্যারিসের একটি অভিজাত মিলনায়তনে বিপুলসংখ্যক ফ্রান্সপ্রবাসী বাংলাদেশীদের উপস্থিতিতে তাদের সংবর্ধনা এবং ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। এবারে ২১ জন নিবন্ধিত শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা দেয়া হয়। এর মধ্যে বাক পর্যায়ে ৭ জন, অনার্স ১ জন, মাস্টার্স ১২ জন এবং ১ জনকে সংবর্ধনা দেয়া হয়।

অনুষ্ঠানে ফ্রান্সে বসবাসরত বিভিন্নক্ষেত্রে অবদান রাখার জন্য ক্রেস্ট প্রদান এবং সংবর্ধনা দেয়া হয়। যাদের পুরস্কৃত করা হয় তারা হলেন, হাসনাত জেহান (লাইফটাইম এচিভমেন্ট), আরিফ রানা-কুমকুম সৈয়দা (সংস্কৃতি), মিয়া মাসুদ (উদ্যোক্তা), আরশী বড়ুয়া (উদীয়মান বেহালা বাদক), জহিরুল রানা (সেরা উপস্থাপক) এবং মোজাম্মেল হোসেন (সেরা বিসিএফ কর্মী)।

উক্ত অনুষ্ঠানে ফ্রান্স নারী ক্রিকেট টীম এর ১৩ সদস্য এবং ফ্রান্স জাতীয় ক্রিকেট টীমের ৪ জন খেলোয়াড়কেও মেডেল এবং ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।

অনুষ্ঠানে অন্যতম আকর্ষণ ছিলো ফ্রান্সে বেড়ে ওঠা ক্ষুদে শিল্পীদের আঁকা চিত্রকর্মের প্রতিযোগিতা।

অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন মৌসুমী চক্রবর্তী এবং সোমা দাস এবং কোরিওগ্রাফার জিএম শরীফুল ইসলামের পরিচালনায় নৃত্য পরিবেশন করেন অমৃতা রায়, ছায়া দাস, মল্লিকা রানী বোস এবং প্রিয়তা বড়ুয়া।

বিসিএফ এর এই আয়োজনের সাফল্য কামনা করে সৌহার্দ্য প্রকাশস্বরূপ একটি ক্রেস্ট উপহার প্রদান করে ফ্রান্সে বাংলাদেশী শ্রমিক গ্রুপ। গ্রুপের পরিচালক আবু হাসান তার সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক তানিম হোসেনের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল এই ক্রেস্টটি বিসিএফ সভাপতি এমডি নুর এর কাছে হস্তান্তর করেন।

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনায় ছিলেন জহিরুল রানা এবং তাকে সহায়তা করেন তানিয়া রহমান। জহিরুল রানা তার স্বভাবসুলভ এবং সুললিত কন্ঠ মাধুরী দিয়ে সঞ্চালনায় পেশাদারিত্বের ছাপ রেখে উপস্থিত দর্শকদের একরকম যাদুমন্ত্রের মত বশীভূত করে রেখেছিলেন। অনুষ্ঠানের ব্যপ্তি দীর্ঘ হলেও দর্শকরা ধৈর্য ধরে পুরো অনুষ্ঠানটিই উপভোগ করেছে।