যুক্তরাজ্যে বর্ণবাদ ও ইসলাম-বিদ্বেষের বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১৭ মার্চ শনিবার দেশটির বিভিন্ন স্থানে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভে বর্ণবাদ, উগ্রপন্থা, ইসলাম-বিদ্বেষ ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নীতির নিন্দা জানান বিক্ষোভকারীরা। লন্ডন, কার্ডিফ ও গ্লাসগোর মতো শহরগুলোতে এ বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় ‘পানিশ অ্যা মুসলিম ডে’-এর মতো উগ্রবাদী তৎপরতার নিন্দা জানানো হয়। সংহতি জানানো হয় শরণার্থী ও অভিবাসীদের অধিকারের প্রতি।
বিক্ষোভকারীরা ‘অভিবাসী ও শরণার্থীদের স্বাগত’, ‘বর্ণবাদী হামলা বন্ধ কর’ প্রভৃতি স্লোগান দেন।
বর্ণবাদবিরোধী সংগঠন ‘স্ট্যান্ড আপ রেসিজম’ এ বিক্ষোভের আয়োজন করে। যুক্তরাজ্যজুড়ে প্রায় ২০ হাজার মানুষ এতে অংশ নেন। অনলাইনে বর্ণবাদী আক্রমণের শিকার লেবার পার্টির দুই এমপি ডেভিড ল্যামি এবং দিয়ানে অ্যাবোট-ও শনিবারের বিক্ষোভে উপস্থিত হন।
দিয়ানে অ্যাবোট বলেন, ইউরোপজুড়ে উগ্র ডানপন্থীদের উত্থান ঘটছে। তারা অভিবাসীবিরোধী, মুসলিমবিরোধী। আমরা তাদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হওয়া সব সম্প্রদায়ের পাশে আছি। আমাদের ঘৃণার রাজনীতির বিরোধিতা করতে হবে।
মুসলিম-বিদ্বেষের মাত্রা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে, খোদ ব্রিটিশ পার্লামেন্টে নিজেদের অফিসে এমন চিঠি পেয়েছেন দুই মুসলিম এমপি। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে এ ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। গত বুধবার পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমন্সে প্রধানমন্ত্রীর নির্ধারিত সাপ্তাহিক প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি এ বিষয়ে কথা বলেন। থেরেসা মে বলেন, মুসলিম এমপিদের কাছে সন্দেহজনক প্যাকেট পাঠানোর যে খবর এসেছে, আমি নিশ্চিত এই অগ্রহণযোগ্য ও ঘৃণ্য আচরণের নিন্দায় পুরো পার্লামেন্ট আমার সঙ্গে যোগ দেবে। ব্রিটিশ সমাজে এসবের কোনও ঠাঁই নেই।
যুক্তরাজ্যের চারজন মুসলিম এমপি ওই চিঠি পেয়েছেন। এরমধ্যে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত দুই এমপি রুশনারা আলী এবং রুপা হক ওয়েস্টমিনস্টারে নিজেদের পার্লামেন্টারি অফিসে ওই চিঠির প্যাকেটগুলো পান। রুপা হকের একজন স্টাফ ওই চিঠির প্যাকেট খুলেছিলেন। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে তাকে হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এর আগে সদ্য অবসরে যাওয়া মেট্রোপলিটন পুলিশের সন্ত্রাসবাদবিরোধী ইউনিটের প্রধান মার্ক রাউলে যুক্তরাজ্যে উগ্র ডানপন্থার উত্থানের বিষয়ে সতর্ক করেন। তিনি বলেন, উগ্র ডানপন্থীরা সংগঠিত ও উল্লেখযোগ্য হুমকি হয়ে উঠছে। এ বছরের গোড়ার দিকে তাদের চারটি সন্ত্রাসী হামলার ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে দেওয়া হয়েছে।
ফেরদৌসা হাদির নামে একজন বিক্ষোভকারী বলেন, যুক্তরাজ্যে বিশেষ করে মুসলিম সম্প্রদায় লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে। ৫৩ বছরের এই নারী বলেন, তারা আমাদের স্বীকার করে না। আমরা যে সমাজের অংশ এটা তারা মানতে চায় না। সূত্র: আল জাজিরা, আনাদোলু এজেন্সি।