অনেকেই তাদের মতামত প্রকাশ করে আমার দৃষ্ঠি আকর্ষন করেছেন ।
এ প্রসঙ্গে আমার বক্তব্য হলো :
আমি রাম বা কৃষ্ণকে নবী মনে করিনা এবং আমার বক্তব্যে এ ধরনের
কোন উদ্দেশ্যও ছিলোনা । কিন্তু আমার বক্তব্যের মাঝখানে টকশো পরিচালকের
হস্তক্ষেপ ও প্রতিপক্ষ আলোচক আমাদেরকে কাফের বলায় আমি এর জবাব দিতে গিয়ে কিছুটা আবেগপ্রবণ ও উত্তেজিত হয়ে যাওয়ায় আমি যে উদ্দেশ্যে কথা শুরু করেছিলাম সেভাবে শেষ করতে পারিনি । ফলে দুটি ভিন্ন প্রসঙ্গ একত্রিত হয়ে কথা অসমাপ্ত অবস্থায় টকশো বন্ধ হয়ে যায় । ফলে আমি পূর্ণাঙ্গ রুপে আমার বক্তব্য উপস্থাপন করতে পারিনি ।
আমি মূলত বলতে যাচ্ছিলাম ‘হরে কৃষ্ণ হরে রাম’
শ্লোগান যেটা দেয়া হয়েছে এটা সনাতন ধর্মের অনুসারীদের জন্য অফেন্সিভ কিছু নয় । কারন গত ক’দিন থেকেই শেখ হাসিনার লন্ডন সফর করা কালে যুক্তরাজ্য বি এনপি’র প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সমাবেশের একটি শ্লোগানকে কেন্দ্র করে তারা বলতে চেয়েছেন এটা সনাতন ধর্মাবলম্বনকারীদের প্রতি অবমাননা ও অফেন্সিভ ।এর ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে আমি বলেছি এটা মোটেই অফেন্সিভ নয় । বরং তারা যখন বলেন ,’হরে রাম হরে কৃষ্ণ ‘ তখন তারা মূলত বলেন ,’ধন্য রাম ধন্য কৃষ্ণ ‘ একথাটা কেউ উচ্চারন করলে এটা তাদের প্রতি অবমাননা করা বুঝায়না ।বরং এটা তাদের জন্য প্রাউড এরই বিষয় ।
উদাহরণ স্বরুপ আমি বলেছি ,যেমন আমরা যখন বলি আল্লাহ! আল্লাহ! ( তখন আমরা আল্লাহর প্রতি আমাদের সর্বোচ্চ সম্মান এবং ভালবাসাই প্রকাশ করি )।
তখন টকশো’র সন্চালক আমার অসমাপ্ত কথাকে ইন্টারাপ্ট করে বলেন :
‘ তা হলে কি আপনি প্রাউড হয়ে বলছেন কথাটা ?’
এ প্রশ্নে তিনি কথার মোড় ঘুরিয়ে পূর্বের
‘হরে কৃষ্ণ হরে রামে’র দিকে নিয়ে যেতে চান ।
কিন্তু আমি কথাকে সে দিকে নিয়ে যেতে দিতে চাইনি ।
প্রতিপক্ষের একজন আমাদেরকে উদ্দেশ্য করে ‘কাফির’ বলায় তাদের এই হাস্যকর কথাকে তাদের প্রতি ফিরিয়ে দিয়ে আমি আমার কথাকে অব্যাহত রাখি এবং বলি :
‘অফকোর্স প্রাউড । দিস ইজ প্রাউড ।’
অর্থাৎ আল্লাহ আল্লাহ বলা প্রাউডের বিষয় ।
কারন কেউ যদি বলে আল্লাহ !আল্লাহ ! তাহলে একটা মুসলমান প্রাউড হওয়া উচিত ।’
তার পর আমি এ প্রসংগে আমার বিশ্বাসের
পূণরুচ্চারন করে বলি :
” বিকজ শেষ নবী হুজুর পাক স:।
এর আগে এক লক্ষ চব্বিশ হাজার পয়গাম্বর ছিলেন ।
আদম আ: থেকে শেষ নবী আল্লাহর রাসূল স: কে মানি ।”
এ পর্যন্তই আমার মূল কথা ।
কিন্তু উপস্থাপকের ইন্টারাপসনে আমার কথাকে ঘুরিয়ে ফেলার চেষ্ঠার একটা রেশ আমার মধ্যে থেকে যায় । ফলে আমার পরবর্তী বাক্যে
কথায় একটু উপস্থাপন বিপত্তি ঘটে এবং ‘রাম কৃষ্ণ’ প্রসংগ
মাঝখানে ঢুকে পড়ে । এটা উপস্থিত অবস্থায় আমার স্লিপ অফ টাং এর কারনে ঘটেছে ।
আমার ঈমান এবং আমার স্বীকৃতি ঐটাই যা আমি উপরে ব্যক্ত করেছি । রাম এবং কৃষ্ণকে নবীদের সাথে তুলনা করার
কোন উদ্দেশ্য ছিলনা বা এর প্রশ্নই উঠে না ।
আমি সবাইকে বক্তব্যের শেষ অংশ খেয়াল করে শুনতে বিণীত অনুরোধ করবো ।
শেষদিকে প্রতিপক্ষের খসরুজ্জামান সাহেব ইন্টারাপ্ট করে বলেন : ‘ আপনি কি নবী রাসুলের সাথে রাম কৃষ্ণের…..
(তুলনা করতে চেয়েছেন ?) তার কথা শেষ হয়নি।
আমার শেষ বাক্যটা খেয়াল করলে স্পষ্ঠ শুনতে পাবেন :
আমি খসরুজ্জামা সাহেবের কথায় ইন্টারাপ্ট করে বলেছি:
‘না না ভাই……. ।’
আমি খসরুজ্জামান সাহেবের প্রশ্নের বিষয়টাও পরিষ্কার করতে চেয়েছিলাম । কিন্তু কথা কেটে যাওয়ায় তা কিছুটা
অ সমাপ্ত থেকে যায় ।
আমি খসরুজ্জামান সাহেবকে আমার কাছে ক্লিয়ারিফিকেসন দাবী করায় ধন্যবাদ জানাই ।
কারন এর ফলে আমি ‘না না ভাই ‘বলে আমার মূল কথাটা তুলে ধরতে পেরেছি।
এ প্রসংগে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে , মন্তব্য করে এবং আমাকে ব্যক্তিগত ম্যাসেজ ও ফোন করে অনেকে দৃষ্ঠি আকর্ষন করেছেন । এ জন্য আমি সকলের কাছে কৃতজ্ঞ ।
আমি মনে করি , এ রকম সচেতন জিন্দাদিল প্রতিবাদী ঈমানদার যে সমাজে আছে আমি সে সমাজের একজন নগন্য নাগরিক হতে পেরে নিজে গৌরব বোধ করি ও আমার ঈমানকে অনেক নিরাপদ মনে করি ।
তবু আমি বলি মানুষ ভূলের উর্ধে নয় । আমারও এক প্রসংগের সাথে আরেক প্রসংগের ঢুকে পড়াকে নিয়ন্ত্রন করা উচিত ছিল । আমি দুনিয়ার সব কিছুর উর্ধে আমার ঈমানকে স্থান দেই । এবং জ্ঞানবান ও সম্মানিত
উলামায়ে কেরামের নিকট থেকে শিখতে চেষ্ঠা করি ।
আমি আমার বক্তব্যের শেষাংসের
‘ রাম বলেন কৃষ্ণ বলেন ‘ বাক্য দ্বয়কে প্রত্যাহার করছি।
এবং এর জন্য আমি মহান আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করছি ।
ফেসবুক এবং অন্নান্য মিডিয়ায় আমার যে ভিডিও বক্তব্য
প্রচারিত হয়েছে আমার উপরোক্ত ব্যাখ্যার পর ভিডিওটি একটু কষ্ঠ করে আবার দেখে মিলিয়ে নিতে সবার প্রতি বিণীত অনুরোধ করছি ।