ঢাকা ০৩:০০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
বিজয় বিবস উপলক্ষে ইপিএস কমিউনিটি আয়োজন করল “শিশুদের চিত্রাঙ্কন ও কবিতা আবৃত্তি” গহরপুর জামিয়ার ৬৮তম বার্ষিক মাহফিল বৃহস্পতিবার: সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হযরত শাহ জামাল (রহ.) দারুস সুন্নাহ নুরীয়া ইসলামীয়া মাদ্রাসার ওয়াজ ও দুয়া মাহফিল ৫ জানুয়ারি প্যারিসে বাংলাদেশ দূতাবাসের আয়োজনে মহান বিজয় দিবস ২০২৪ উদযাপন বালাগঞ্জে শাহ আকিবুন নূর চৌধুরী বৃত্তি বিতরণ সম্পন্ন ফ্রান্সে প্রবাসে সাংবাদিকতার প্রতিবন্ধকতা ও উত্তরনের পন্থা শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত বালাগঞ্জে আল ইসলাহ ত্রি-বার্ষিক কাউন্সিল সম্পন্ন স্বদেশ গমন উপলক্ষে আবু বক্করকে সংবর্ধনা প্রদান ২১আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় তারেক রহমান খালাস পাওয়ায় ফ্রান্সে যুবদলের আনন্দ উৎসব বালাগঞ্জে আমনের বাম্পার ফলন : মাঠে মাঠে বাতাসে দুলছে ধানের শীষ

তদন্ত না করেই পাকিস্তানকে দোষারোপ ঠিক না: মমতার বিস্ফোরক প্রতিক্রিয়া

  • আপডেট সময় ০৮:০০:৩৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০১৯
  • ১৯২ বার পড়া হয়েছে

ভারতে যে কোনও সন্ত্রাসী বা জঙ্গি কর্মকাণ্ডে দেশটির রাজনীতিকরা প্রায় সময়ই পাকিস্তানকে দোষারোপ করেন। অতীতের মতো বৃহস্পতিবারের হামলার পরও ভারতের ক্ষমতাসীন দল, সরকার ও সংবাদমাধ্যমে পাকিস্তানের জড়িত থাকার অভিযোগ তোলা হয়েছে। তবে এবার পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হেঁটেছেন উল্টোপথে। তিনি বলেছেন, বিস্তারিত তদন্ত না করেই পাকিস্তানকে দোষারোপ করা ঠিক হচ্ছে না। কলকাতাভিত্তিক ভারতীয় বাংলা সংবাদমাধ্যম দ্য ওয়াল এখবর জানিয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) ভারতীয় রিজার্ভ পুলিশ বাহিনীর প্রায় ২৫০০ সদস্যকে নিয়ে ৭০টি গাড়ির একটি বহর জম্মু থেকে কাশ্মির যাচ্ছিলো। এরমধ্যে ৪৪ জন জওয়ানকে বহনকারী একটি বাসের ওপর আত্মঘাতী হামলা চালায় জয়েশ-ই-মোহাম্মদ সদস্যরা। প্রায় সাড়ে তিনশ’ কেজি বিস্ফোরকভর্তি গাড়ি নিয়ে বাসটিকে ধাক্কা দেওয়া হয়। এতে ৪০ জনেরও বেশি জওয়ান নিহত হয়। আহত হয় আরও অনেকে। হামলার পর স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে হামলার দায় স্বীকার করে জঙ্গিগোষ্ঠী জয়েশ-এ-মোহাম্মদ। গোষ্ঠীটি কাশ্মিরে ভারতীয় শাসনের অবসান চায়। মতাদর্শগতভাবে কাশ্মিরকে পাকিস্তানের অঙ্গীভূত করার পক্ষে অবস্থান তাদের।

স্বাধীনতার পর কাশ্মিরে সবচেয়ে ভয়াবহ এই জঙ্গি হামলার ঘটনায় পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। শুক্রবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) মোদি সরকারের জরুরি বৈঠকের পর অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি জানিয়েছেন, পাকিস্তানকে পুরোপুরি একঘরে করতে কূটনৈতিক তৎপরতা চালাবে দিল্লি। পাকিস্তানকে ভারতের দেওয়া ‘মোস্ট ফেভারড নেশন’-এর তকমা প্রত্যাহার করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি। পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে হামলাটির নিন্দা জানানো হয়েছে। তবে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ও সরকারের অভিযোগ অস্বীকার করেছে দেশটি। বলেছে, কোনও রকম তদন্ত ছাড়াই তাদের হামলায় জড়ানো হচ্ছে।

শুক্রবার সন্ধ্যায় পশ্চিমবঙ্গের সচিবালয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘পররাষ্ট্র বিষয়ে আমি সচরাচর মন্তব্য করি না। এ সব ক্ষেত্রে দেশের অবস্থানই আমার অবস্থান। তবে গতকাল (বৃহস্পতিবার) ঘটনার পর পরই জানিয়ে দেওয়া হয়, এ ঘটনার নেপথ্যে পাকিস্তানের হাত রয়েছে।’

মমতা আরও বলেন, ‘বিস্তারিত তদন্ত না করে কোনও সিদ্ধান্ত নিয়ে নেওয়া ঠিক নয়। বিষয়টা খুবই স্পর্শকাতর। সেটা মাথায় রেখে আগে তদন্ত করা হোক। তার পর দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।’

মমতার এই প্রতিক্রিয়ার পর অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি দাবি করেছেন, পুলওয়ামার ঘটনার নেপথ্যে যে পাকিস্তানের সরাসরি হাত রয়েছে, সে ব্যাপারে অকাট্য প্রমাণ রয়েছে নয়াদিল্লির কাছে।

কাশ্মিরে হামলায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের মধ্যে আকাশ-পাতাল পার্থক্য। ক্ষমতাসীন বিজেপি সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, পুলওয়ামার ঘটনা নিয়েও রাজনীতি করছেন মমতা। তিনি সংখ্যালঘুদের তুষ্ট করার জন্য এতটাই মরিয়া যে পুলওয়ামার ঘটনার পর পাকিস্তানের উপর দোষারোপেও তিনি আপত্তি জানাচ্ছেন।

তবে মমতাই অভিযোগ করেছেন এই হামলা নিয়ে রাজনীতি করছেন প্রধানমন্ত্রী নিজেই। মমতা বলেছেন, পুলওয়ামায় যা হয়েছে তা নিয়ে রাজনীতি করা উচিত নয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে ওই মর্মান্তিক ঘটনা নিয়েও রাজনীতি শুরু হয়ে গিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর উচিত ছিল এ দিনের সরকারি অনুষ্ঠান বাতিল করে তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করে দেওয়া।

কলকাতাভিত্তিক পর্যবেক্ষকদের মতে, মমতা পোড় খাওয়া রাজনীতিক। তিনি হয়তো তুষ্টীকরণের রাজনীতি করার জন্য তদন্তের প্রসঙ্গ তোলেননি।

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

লক ডাউন পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবেলায় ফ্রান্সে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি

যুক্তরাজ্যে করোনার মধ্যেই শিশুদের মাঝে নতুন রোগের হানা

বিজয় বিবস উপলক্ষে ইপিএস কমিউনিটি আয়োজন করল “শিশুদের চিত্রাঙ্কন ও কবিতা আবৃত্তি”

তদন্ত না করেই পাকিস্তানকে দোষারোপ ঠিক না: মমতার বিস্ফোরক প্রতিক্রিয়া

আপডেট সময় ০৮:০০:৩৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০১৯

ভারতে যে কোনও সন্ত্রাসী বা জঙ্গি কর্মকাণ্ডে দেশটির রাজনীতিকরা প্রায় সময়ই পাকিস্তানকে দোষারোপ করেন। অতীতের মতো বৃহস্পতিবারের হামলার পরও ভারতের ক্ষমতাসীন দল, সরকার ও সংবাদমাধ্যমে পাকিস্তানের জড়িত থাকার অভিযোগ তোলা হয়েছে। তবে এবার পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হেঁটেছেন উল্টোপথে। তিনি বলেছেন, বিস্তারিত তদন্ত না করেই পাকিস্তানকে দোষারোপ করা ঠিক হচ্ছে না। কলকাতাভিত্তিক ভারতীয় বাংলা সংবাদমাধ্যম দ্য ওয়াল এখবর জানিয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) ভারতীয় রিজার্ভ পুলিশ বাহিনীর প্রায় ২৫০০ সদস্যকে নিয়ে ৭০টি গাড়ির একটি বহর জম্মু থেকে কাশ্মির যাচ্ছিলো। এরমধ্যে ৪৪ জন জওয়ানকে বহনকারী একটি বাসের ওপর আত্মঘাতী হামলা চালায় জয়েশ-ই-মোহাম্মদ সদস্যরা। প্রায় সাড়ে তিনশ’ কেজি বিস্ফোরকভর্তি গাড়ি নিয়ে বাসটিকে ধাক্কা দেওয়া হয়। এতে ৪০ জনেরও বেশি জওয়ান নিহত হয়। আহত হয় আরও অনেকে। হামলার পর স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে হামলার দায় স্বীকার করে জঙ্গিগোষ্ঠী জয়েশ-এ-মোহাম্মদ। গোষ্ঠীটি কাশ্মিরে ভারতীয় শাসনের অবসান চায়। মতাদর্শগতভাবে কাশ্মিরকে পাকিস্তানের অঙ্গীভূত করার পক্ষে অবস্থান তাদের।

স্বাধীনতার পর কাশ্মিরে সবচেয়ে ভয়াবহ এই জঙ্গি হামলার ঘটনায় পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। শুক্রবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) মোদি সরকারের জরুরি বৈঠকের পর অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি জানিয়েছেন, পাকিস্তানকে পুরোপুরি একঘরে করতে কূটনৈতিক তৎপরতা চালাবে দিল্লি। পাকিস্তানকে ভারতের দেওয়া ‘মোস্ট ফেভারড নেশন’-এর তকমা প্রত্যাহার করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি। পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে হামলাটির নিন্দা জানানো হয়েছে। তবে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ও সরকারের অভিযোগ অস্বীকার করেছে দেশটি। বলেছে, কোনও রকম তদন্ত ছাড়াই তাদের হামলায় জড়ানো হচ্ছে।

শুক্রবার সন্ধ্যায় পশ্চিমবঙ্গের সচিবালয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘পররাষ্ট্র বিষয়ে আমি সচরাচর মন্তব্য করি না। এ সব ক্ষেত্রে দেশের অবস্থানই আমার অবস্থান। তবে গতকাল (বৃহস্পতিবার) ঘটনার পর পরই জানিয়ে দেওয়া হয়, এ ঘটনার নেপথ্যে পাকিস্তানের হাত রয়েছে।’

মমতা আরও বলেন, ‘বিস্তারিত তদন্ত না করে কোনও সিদ্ধান্ত নিয়ে নেওয়া ঠিক নয়। বিষয়টা খুবই স্পর্শকাতর। সেটা মাথায় রেখে আগে তদন্ত করা হোক। তার পর দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।’

মমতার এই প্রতিক্রিয়ার পর অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি দাবি করেছেন, পুলওয়ামার ঘটনার নেপথ্যে যে পাকিস্তানের সরাসরি হাত রয়েছে, সে ব্যাপারে অকাট্য প্রমাণ রয়েছে নয়াদিল্লির কাছে।

কাশ্মিরে হামলায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের মধ্যে আকাশ-পাতাল পার্থক্য। ক্ষমতাসীন বিজেপি সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, পুলওয়ামার ঘটনা নিয়েও রাজনীতি করছেন মমতা। তিনি সংখ্যালঘুদের তুষ্ট করার জন্য এতটাই মরিয়া যে পুলওয়ামার ঘটনার পর পাকিস্তানের উপর দোষারোপেও তিনি আপত্তি জানাচ্ছেন।

তবে মমতাই অভিযোগ করেছেন এই হামলা নিয়ে রাজনীতি করছেন প্রধানমন্ত্রী নিজেই। মমতা বলেছেন, পুলওয়ামায় যা হয়েছে তা নিয়ে রাজনীতি করা উচিত নয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে ওই মর্মান্তিক ঘটনা নিয়েও রাজনীতি শুরু হয়ে গিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর উচিত ছিল এ দিনের সরকারি অনুষ্ঠান বাতিল করে তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করে দেওয়া।

কলকাতাভিত্তিক পর্যবেক্ষকদের মতে, মমতা পোড় খাওয়া রাজনীতিক। তিনি হয়তো তুষ্টীকরণের রাজনীতি করার জন্য তদন্তের প্রসঙ্গ তোলেননি।