ঢাকা ১১:২৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
“Dead” একটি শব্দ ও অচল প্রায় জীবন চাকা! আননূর মাদরাসার পক্ষ থেকে হাফিজ মাওলানা মুসলেহ উদ্দিন রাজু-কে মেলবন্ধন স্মারক প্রদান বালাগঞ্জে উপজেলা প্রেসক্লাবের সাথে “নবাগত ইউএনও সুজিত কুমার চন্দ’র মতবিনিময় বালাগঞ্জে উপজেলা প্রশাসনের ‘হাতের মুঠোয় সকল সেবা’ কার্যক্রম চালু বিমানের প্যারিস-ঢাকা ফ্লাইট পুনরায় চালুর জোরালো দাবী প্রবাসীদের বালাগঞ্জে ছাত্রদল নেতা সায়েম আহমদ হত্যা মামলার অভিযুক্ত যুবলীগ নেতা খলকু মিয়া আটক গহরপুর ছাত্রকল্যাণ পরিষদের উদ্যোগে এইচএসসি ও আলিম পরীক্ষায় উত্তীর্ণদেরকে সংবর্ধনা ও শিক্ষা সেমিনার অন্তর্বর্তীকালীন সকল সিদ্ধান্ত জনগণের ইচ্ছার প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই নেওয়া উচিত- বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরী অপপ্রচারের প্রতিবাদে সংবাদিক সম্মেলন করলেন সিলোট জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য লোকন মিয়া

প্রসূতি নারীর চেয়ে ‘গো-রক্ষায়’ মনোযোগী ভারত

  • আপডেট সময় ১১:৪৫:৪৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১ এপ্রিল ২০১৯
  • ১৭০ বার পড়া হয়েছে

প্রসূতি নারীদের চেয়ে গরু রক্ষায় ভারত সরকার অগ্রাধিকার দিচ্ছে বলে অভিযোগ ওঠেছে। প্রসূতি মায়েদের জন্য জীবন রক্ষাকারী ওষুধ নিষিদ্ধ করার উদ্যোগ নেওয়ার পর এই অভিযোগ ওঠেছে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট এ খবর জানিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রশাসন সুপ্রিম কোর্টকে বলেছে গর্ভবতী নারীদের পোস্টপার্টাম হেমোরেজিং ও গর্ভাবস্থার শেষ দিকে রোগাক্রমন নিয়ন্ত্রণে ব্যবহৃত অক্সিটসিন ওষুধ নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত বহাল রাখার জন্য। এই ওষুধ নিয়ে ভারতে বিতর্ক শুরু হয়েছে। কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের খবরে অভিযোগ করা হয়েছে, গাভীর দুগ্ধদান নিয়ন্ত্রণে ওষুধটি ব্যবহার করা হচ্ছে। কয়েকটি খবরে কোনও বৈজ্ঞানিক প্রমাণ ছাড়াই অভিযোগ করা হয়েছে, এতে করে গাভী বন্ধ্যাত্বের শিকার হয় এবং যে দুধ দেয় তা মানুষের জন্য ক্ষতিকর।

২০১৮ সালের এপ্রিলে প্রথম বেসরকারিভাবে অক্সিটসিন উৎপাদনে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। সরকার সরবরাহ নিয়ন্ত্রণে কর্ণাটকভিত্তিক সরকারি কোম্পানিকে ওষুধটি উৎপাদনের অনুমতি দেয়। তবে চিকিৎসকরা কোম্পানিটির সামর্থ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। কারণ এই কোম্পানিটি এর আগে অক্সিটসিন উৎপাদনই করেনি। তবে সরকারের এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হওয়ার আগে সুপ্রিম কোর্ট নিষেধাজ্ঞা জারি করে।

হিন্দু সংখ্যালঘুর দেশ ভারতে গরুকে পবিত্র হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কয়েক সপ্তাহ পরেই দেশটিতে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। হিন্দু জাতীয়তাবাদী বিজেপি সরকার ভোটে জেতার জন্য এই সময়েই ইস্যুটিকে সামনে নিয়ে এসেছে।

চিকিৎসক ও রোগীদের বিভিন্ন গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, বেসরকারিভাবে এই ওষুধের উৎপাদন নিষিদ্ধ করা সীমা ছাড়িয়ে গেছে এবং এক্ষেত্রে নারীদের জীবনে কেমন প্রভাব পড়বে তা বিবেচনায় নেয়নি সরকার।

সম্প্রতি মাতৃত্বকালীন মৃত্যু হার ভারতে কমলেও তা এখনও বড় অর্থনীতির দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় আছে। প্রতি বছর ২৬ মিলিয়ন শিশুর জন্ম হয় ভারতে। সরকারি তথ্য মতে, শিশুর জন্মদানের সময় প্রতি লাখে ১৩০ জন নারীর মৃত্যু হয়।

ভারতে চিকিৎসকদের বৃহত্তম সংগঠন ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (আইএমএ) জানিয়েছে, সন্তান জন্মদানের পরে মায়ের রক্তক্ষরণ ঠেকায় অক্সিটসিন। ফলে এই ওষুধের বিকল্প কিছু ভাবতে পারছেন না চিকিৎসকরা। সুপ্রিম কোর্টে দেওয়া বক্তব্যে সংগঠনটি বলেছে, বেসরকারিভাবে এই ওষুধের উৎপাদন নিষিদ্ধ করায় সরবরাহে ঘাটতি দেখা দেবে এবং এর ফলে কয়েক হাজার নিষ্পাপ মায়ের জীবন বিপন্ন হবে।

অ্যাক্টিভিস্ট গোষ্ঠী অল ইন্ডিয়া ড্রাগ অ্যাকশন নেটওয়ার্কও আদালতে সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। এই সংগঠনের সহ-সমন্বয়ক মালিনি আইসোলা বলেন, প্রতিটি সন্তান জন্মের সময় অক্সিটসিনের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করা উচিত। পোস্টাপার্টাম হেমোরেজিংয়ের মধ্য দিয়ে কোনও নারী যাবে তা আগে থেকেই ধারণা করা যায় না। ওষুধটি প্রাপ্যতা নিয়ে কোনও রকম প্রতিবন্ধকতা তৈরি উচিত না। অথচ সরকার গর্ভবতী মায়েদের জীবন রক্ষাকারী এই ওষুধের গুরুত্ব বিবেচনা না করেই তা নিষিদ্ধ করতে যাচ্ছে।

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

লক ডাউন পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবেলায় ফ্রান্সে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি

যুক্তরাজ্যে করোনার মধ্যেই শিশুদের মাঝে নতুন রোগের হানা

“Dead” একটি শব্দ ও অচল প্রায় জীবন চাকা!

প্রসূতি নারীর চেয়ে ‘গো-রক্ষায়’ মনোযোগী ভারত

আপডেট সময় ১১:৪৫:৪৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১ এপ্রিল ২০১৯

প্রসূতি নারীদের চেয়ে গরু রক্ষায় ভারত সরকার অগ্রাধিকার দিচ্ছে বলে অভিযোগ ওঠেছে। প্রসূতি মায়েদের জন্য জীবন রক্ষাকারী ওষুধ নিষিদ্ধ করার উদ্যোগ নেওয়ার পর এই অভিযোগ ওঠেছে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট এ খবর জানিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রশাসন সুপ্রিম কোর্টকে বলেছে গর্ভবতী নারীদের পোস্টপার্টাম হেমোরেজিং ও গর্ভাবস্থার শেষ দিকে রোগাক্রমন নিয়ন্ত্রণে ব্যবহৃত অক্সিটসিন ওষুধ নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত বহাল রাখার জন্য। এই ওষুধ নিয়ে ভারতে বিতর্ক শুরু হয়েছে। কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের খবরে অভিযোগ করা হয়েছে, গাভীর দুগ্ধদান নিয়ন্ত্রণে ওষুধটি ব্যবহার করা হচ্ছে। কয়েকটি খবরে কোনও বৈজ্ঞানিক প্রমাণ ছাড়াই অভিযোগ করা হয়েছে, এতে করে গাভী বন্ধ্যাত্বের শিকার হয় এবং যে দুধ দেয় তা মানুষের জন্য ক্ষতিকর।

২০১৮ সালের এপ্রিলে প্রথম বেসরকারিভাবে অক্সিটসিন উৎপাদনে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। সরকার সরবরাহ নিয়ন্ত্রণে কর্ণাটকভিত্তিক সরকারি কোম্পানিকে ওষুধটি উৎপাদনের অনুমতি দেয়। তবে চিকিৎসকরা কোম্পানিটির সামর্থ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। কারণ এই কোম্পানিটি এর আগে অক্সিটসিন উৎপাদনই করেনি। তবে সরকারের এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হওয়ার আগে সুপ্রিম কোর্ট নিষেধাজ্ঞা জারি করে।

হিন্দু সংখ্যালঘুর দেশ ভারতে গরুকে পবিত্র হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কয়েক সপ্তাহ পরেই দেশটিতে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। হিন্দু জাতীয়তাবাদী বিজেপি সরকার ভোটে জেতার জন্য এই সময়েই ইস্যুটিকে সামনে নিয়ে এসেছে।

চিকিৎসক ও রোগীদের বিভিন্ন গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, বেসরকারিভাবে এই ওষুধের উৎপাদন নিষিদ্ধ করা সীমা ছাড়িয়ে গেছে এবং এক্ষেত্রে নারীদের জীবনে কেমন প্রভাব পড়বে তা বিবেচনায় নেয়নি সরকার।

সম্প্রতি মাতৃত্বকালীন মৃত্যু হার ভারতে কমলেও তা এখনও বড় অর্থনীতির দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় আছে। প্রতি বছর ২৬ মিলিয়ন শিশুর জন্ম হয় ভারতে। সরকারি তথ্য মতে, শিশুর জন্মদানের সময় প্রতি লাখে ১৩০ জন নারীর মৃত্যু হয়।

ভারতে চিকিৎসকদের বৃহত্তম সংগঠন ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (আইএমএ) জানিয়েছে, সন্তান জন্মদানের পরে মায়ের রক্তক্ষরণ ঠেকায় অক্সিটসিন। ফলে এই ওষুধের বিকল্প কিছু ভাবতে পারছেন না চিকিৎসকরা। সুপ্রিম কোর্টে দেওয়া বক্তব্যে সংগঠনটি বলেছে, বেসরকারিভাবে এই ওষুধের উৎপাদন নিষিদ্ধ করায় সরবরাহে ঘাটতি দেখা দেবে এবং এর ফলে কয়েক হাজার নিষ্পাপ মায়ের জীবন বিপন্ন হবে।

অ্যাক্টিভিস্ট গোষ্ঠী অল ইন্ডিয়া ড্রাগ অ্যাকশন নেটওয়ার্কও আদালতে সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। এই সংগঠনের সহ-সমন্বয়ক মালিনি আইসোলা বলেন, প্রতিটি সন্তান জন্মের সময় অক্সিটসিনের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করা উচিত। পোস্টাপার্টাম হেমোরেজিংয়ের মধ্য দিয়ে কোনও নারী যাবে তা আগে থেকেই ধারণা করা যায় না। ওষুধটি প্রাপ্যতা নিয়ে কোনও রকম প্রতিবন্ধকতা তৈরি উচিত না। অথচ সরকার গর্ভবতী মায়েদের জীবন রক্ষাকারী এই ওষুধের গুরুত্ব বিবেচনা না করেই তা নিষিদ্ধ করতে যাচ্ছে।