প্রবাসী বাংলাদেশীদের নিবেদিতপ্রাণ প্রচেষ্টায় সিলেটে নির্মিত হতে যাচ্ছে বিশ্বমানের এনআরবি হাসপাতাল। চিকিৎসা খাতে নতুন দিগন্ত উন্মোচনের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠানটি ঘোষণা করেছে তাদের বহুল প্রতীক্ষিত দ্বিতীয় ধাপের তহবিল সংগ্রহ ও নৈশভোজ অনুষ্ঠান। এটি অনুষ্ঠিত হবে রবিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, সন্ধ্যা ৭টায়, লন্ডনের রমফোর্ডের দ্যা সিটি প্যাভেলিয়ান মিলনায়তনে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন এনআরবি হাসপাতালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ব্যারিস্টার লুৎফুর রহমান, জ্যেষ্ঠ কর্মসূচি পরিচালক শফিকুল ইসলাম শিকদার এবং ব্র্যান্ডিং ও বিপণন পরিচালক আরাফ বিন তারেক।
এনআরবি হাসপাতালের চেয়ারম্যান মোঃ লুৎফর রহমান বলেন, আমরা কেবল একটি হাসপাতাল গড়ছি না; একটি আশার বাতিঘর বাস্তবায়ন গড়তে যাচ্ছি ।যেখানে স্বাস্থ্যসেবা হবে মানবতার সর্বোচ্চ অঙ্গীকার।
এই হাসপাতালটি প্রান্তিক ও গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর জন্য সুলভ, আধুনিক এবং মানসম্মত চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করবে। প্রবাসীদের অর্থনৈতিক অবদান ও আন্তরিকতার ফসল হিসেবে প্রথম ধাপের তহবিল সংগ্রহে উমরপুর ও আশারকান্দি ইউনিয়নের প্রবাসীরা ১৫০-রও বেশি সম্মানিত দাতা সদস্যের মাধ্যমে £২.৫ মিলিয়ন পাউন্ডের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। ইতিমধ্যে পাঁচ একর জমি অধিগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে এবং স্থাপত্য ও প্রকৌশল নকশা প্রণয়ন শুরু হয়েছে।
অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীরা ‘Founder Member’ (£১,০০০) থেকে শুরু করে ‘Patron’ (£৫০,০০০) পর্যন্ত বিভিন্ন স্তরে অবদান রাখতে পারবেন। দান এককালীন অথবা ১–৫ বছর মেয়াদে কিস্তিতে দেওয়া যাবে। প্রতিটি স্তরের দাতাদের জন্য থাকছে আজীবন চিকিৎসা সুবিধা, বিশেষ সম্মাননা এবং পরিবারের জন্য বিশেষাধিকারমূলক সেবা।
থাকবে ২৫০ শয্যার ইনপেশেন্ট সুবিধা,৫০ শয্যার অত্যাধুনিক আইসিইউ,১২টি আন্তর্জাতিক মানের অপারেশন থিয়েটার,আধুনিক টেলিমেডিসিন ও পূর্ণাঙ্গ ডায়াগনস্টিক সেবা,স্বীকৃত মেডিকেল কলেজ ও নার্সিং ইনস্টিটিউট।
অনুষ্ঠানে চিকিৎসক, আইনজীবী, শিক্ষাবিদ, ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবিদসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশীরা উপস্থিত থাকবেন। তারা আর্থিক সহায়তার পাশাপাশি অভিজ্ঞতা, নেটওয়ার্ক এবং নেতৃত্ব দিয়ে এই মহৎ উদ্যোগকে সফলতার শিখরে পৌঁছে দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
স্বাস্থ্যসেবা মানবজীবনের মৌলিক অধিকার, কিন্তু দুঃখজনকভাবে বাংলাদেশের গ্রামীণ ও প্রান্তিক অঞ্চলে এই অধিকার এখনও পুরোপুরি নিশ্চিত নয়। প্রবাসী বাংলাদেশীরা তাদের কষ্টার্জিত অর্থ, অভিজ্ঞতা এবং ভালোবাসা দিয়ে সিলেটে যে বিশ্বমানের হাসপাতাল গড়ার স্বপ্ন দেখছেন, তা নিঃসন্দেহে মানবিকতা, একতা এবং দেশপ্রেমের উজ্জ্বল উদাহরণ।
আমরা বিশ্বাস করি, এনআরবি হাসপাতালের এই উদ্যোগ কেবল সিলেট নয়, বরং সমগ্র বাংলাদেশে স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নয়নে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে।
এই প্রকল্প সফল হলে আগামী প্রজন্ম দেখবে, কীভাবে প্রবাসীদের ঐক্য, ত্যাগ ও নিষ্ঠা একটি জাতির ভবিষ্যৎ পাল্টে দিতে পারে। সুতরাং, আসুন আমরা সবাই এই মহান উদ্যোগের অংশীদার হই—অর্থ, সময়, পরামর্শ কিংবা শুভকামনা দিয়ে।
সূত্র : নতুন দিন২৪