ফ্রান্সের তরফে এখনো পর্যন্ত বৃহস্পতিবারের বৈঠক নিয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়নি। তবে সূত্র জানিয়েছে, বৈঠক সফল হয়েছে।
ইউক্রেন যুদ্ধ অবসানে রাশিয়ার সঙ্গে মধ্যস্থতায় নামছে এবার ফ্রান্সের নেতৃত্বে ইউরোপও। প্যারিস বৈঠকের পর এমনই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বৃহস্পতিবার প্যারিসে ফ্রান্স, ইউক্রেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ নেতারা একটি বৈঠকে বসেন। সেই বৈঠক সফল হয়েছে বলেই দাবি করছে সবপক্ষ।
গত কয়েক মাস ধরে যুক্তরাষ্ট্র একক দায়িত্বে রাশিয়া এবং ইউক্রেনের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছিল। যুদ্ধ বন্ধের প্রাথমিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেখানে কার্যত ব্রাত্য ছিল ইউরোপীয় দেশগুলো। এদিন প্যারিস বৈঠকের পর ইউরোপীয় দেশগুলোও এই আলোচনায় যোগ দেবে বলে মনে করা হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ফরাসি কর্মকর্তা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিরা এই আলোচনায় যোগ দিতে রাজি হয়েছেন এবং এইভাবে আলোচনা চালিয়ে যেতে সম্মত হয়েছেন।’
বৃহস্পতিবার একের পর এক বৈঠক হয়েছে প্রতিনিধিদের মধ্যে। জার্মানি এবং যুক্তরাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিনিধিরাও প্যারিসে পৌঁছেছেন। বৈঠক শুরুর আগে ম্যাখোঁর অফিস থেকে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছিল, ইউক্রেন যুদ্ধ অবসানের জন্য শান্তিচুক্তি কতটা এগিয়েছে, তা নিয়ে আলোচনা করতেই এই বৈঠকের আয়োজন হয়েছে।
জেলেনস্কির মন্তব্য
ক্ষমতায় এসেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছিলেন, দ্রুত ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বস্তুত, এই কাজটি করতে গিয়ে ইউরোপীয় নেতাদের কার্যত অন্ধকারে রেখে ট্রাম্প ক্রেমলিনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা শুরু করে দেন। ইউক্রেনকে যুদ্ধে সাহায্যের বিষয়টি নিয়েও বিতর্কিত অবস্থান নেয় যুক্তরাষ্ট্র। ট্রাম্প ঘোষণা করে দেন, ইউক্রেনকে সামরিক সাহায্য দেওয়া বন্ধ করে দেওয়া হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি শান্তিচুক্তির খসড়ায় ইউক্রেন সম্মতি জানালেও সম্প্রতি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, যুদ্ধ-বিরতির ওই খসড়া তার পক্ষে মেনে নেওয়া সম্ভব নয়।
এই পরিস্থিতিতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি দাবি করেছেন, প্যারিসে যারা বৈঠক করছেন, তারা ক্রেমলিনের ওপর আরো চাপ তৈরি করুক।
জেলেনস্কির ভাষায়, ‘রাশিয়া প্রতিদিন, প্রতিরাত আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে। আমাদের উচিত হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ চাপের সামনে ফেলা। তাহলেই এই যুদ্ধের অবসান সম্ভব। শান্তিচুক্তি তৈরি হওয়া সম্ভব।’
তবে বৃহস্পতিবারই ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, এই বৈঠককে তারা বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছেন না। কারণ তারা মনে করেন, ইউরোপের নেতারা চান না যে যুদ্ধ বন্ধ হোক।
কালের কন্ঠ