মোহাম্মদ শাহ আলম : ক্ষমা একটি মহৎ গুণ। আমার বন্ধু সাইদুল্লাহ প্রায়ই মাপ চায়। সে মাপ চাইতে গিয়েও যদি কোনো ভুল করে বসে, সেই ভুলের জন্যও আবার মাফ চায়! মাঝে মাঝে অন্যের ভুলের জন্যও ক্ষমা চায়। এটিকে সিলেটি ভাষায় বিলাই তবা বলা হয় ।
ইংরেজ সংস্কৃতিতে ক্ষমা চাওয়া খুবই স্বাভাবিক ঘটনা। তাদের মুখে “Sorry” বা “Beg my pardon” যেন লেগেই থাকে।
কিন্তু বাঙালির মুখে “দুঃখিত” শব্দটা খুব সহজে আসে না। বাঙালি বরং যেভাবেই হোক যুক্তি দাঁড় করিয়ে বোঝাতে চায়—সে-ই ঠিক!
বাংলাদেশে যত “দুঃখিত” শুনেছি, তার বেশিরভাগই মোবাইল ফোনের কল সেন্টারে—
“দুঃখিত, আপনার একাউন্টে পর্যাপ্ত টাকা নেই, দয়া করে রিচার্জ করুন।”
এই ভদ্রতা আসলে বাণিজ্যিক, আন্তরিক নয়।
ইদানীং জামাতে ইসলামী আমির একাত্তরের ঘটনার জন্য ক্ষমা চেয়েছেন।
সামনে নির্বাচন—তাই জনগণকে বোদাই বানানোর নতুন নাটক শুরু।
আমেরিকায় বসে তিনি যা বললেন, তা ক্ষমা নয়—ফাজিল ধাঁচের এক প্রহসন।
যে সত্যিকারের অনুতপ্ত হয়, তার চোখ-মুখে, শরীরভঙ্গিতে সেটা প্রকাশ পায়।কিন্তু জামাত আমিরের ভাষা ছিল নিছক ফাতরামি।
তিনি বললেন, “১৯৪৭ থেকে ঐ দিন পর্যন্ত যা ভুল হয়েছে, তার জন্য ক্ষমা চাই।”এ কেমন ক্ষমা? বাহা! ভুলও ঝাপসা ক্ষমাও ঝাপসা ।
একটা দল, যারা একাত্তরের গণহত্যার অংশীদার ছিল, যারা মুক্তিযুদ্ধের শত্রুপক্ষে দাঁড়িয়েছিল,
তাদের উচিত ছিল জাতির সামনে স্পষ্ট ও বিনম্রভাবে মাথা নত করা।
কিন্তু তারা বরং নাটক করে ইতিহাসের প্রতি নতুন অবমাননা করল।
একটি গান আছে—
“ফুলেতে ধন্য ফাল্গুন, নাকি ফাল্গুনের ধন্য ফুল?”
প্রশ্ন জাগে—ভুলের জন্য ক্ষমা, নাকি ক্ষমার জন্য ভুল?
চুমো শফিক ক্ষমা চেয়েছেন। এখন জাতির সিদ্ধান্ত নিতে হবে—ক্ষমা করা হবে কিনা।
ইসলাম ধর্ম গ্রহণের আগে হযরত মুহাম্মদ (সা.) তাঁর চাচা হামজার খুনিকেও ক্ষমা করেছিলেন,
তবে বলেছিলেন—“সে যেন আমার সামনে না আসে।”
আমরাও তাই বলি—
আমরা ক্ষমা করতে প্রস্তুত,
কিন্তু জামাতে ইসলামী নামের কোনো রাজনৈতিক দল যেন আর কখনো বাংলাদেশে না থাকে।
লেখক: ব্রিটেন প্রবাসী ও অধিকার কর্মী
















