মাঝরাতে কানেভাসে খল খল শব্দ
চোখখুলে আমি হই একেবারে স্তব্দ
ডেকে তুলি পরিবার কেঁদে উঠে কন্যায়
ঘুমাবার খাট দেখি ডুবুডুবু বন্যায়
বাতাসের ঝাটকায় উড়ে যায় টুল্লি
মেচমেচ করে খুঁটি ভেঙেপড়ে চুল্লি
বিদ্যুৎ চলে যায় আন্ধারে হাতড়াই
সবনাশা বন্যায় নিজ ঘরে সাঁতরাই
পিঠে বেঁধে মেয়ে আর কাঁধে নিয়ে পুত্র
ঘর ছেড়ে খুঁজে ফিরি বাঁচবার সুত্র
চারিদিকে থই থই বিদঘুটে আন্ধার
পাশকেটে ভেসেযায় কতজাত জানদার
ভাসাগাছে বাড়ি খেয়ে রুজি যায় তলিয়ে
‘ছেলে মে’কে ধরে রেখো’ শেষ কথা বলিয়ে
রুজিকে বাঁচাতে যাই ছেলে যায় ছিটকে
বউ ছেলে ভেসে যায়, মনে পড়ে পিঠকে–
পিঠেবাঁধা কন্যাও আর দেখি নড়ে না
সবহারা এ আমার সামনে পা’ পড়ে না–
ঠাঁয় থাকি দাঁড়িয়ে যে মন শুধু উৎলায়
পরদিন দেখি নিজে পড়শির দু’তলায়
পাশেরাখা কন্যার লাশটাকে জড়িয়ে
হাহাকার করি শুধু চোখে জল ঝরিয়ে
পানি আর পানি শুধু মাটি দেখি নাইরে
কন্যাটা পাবে না কি কবরেতে ঠাঁইরে?
মেয়েকে ভাসিয়ে শেষে স্রোত যেই দিকে
নিরুপায় বাবা এক চিরকুট লিখে–
’কেউ যদি খুঁজে পাও মাটি আর লাশ
আমার মেয়েকে দিও কবরেতে বাস’