ঢাকা ০৮:৫১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৯ মে ২০২৫, ২৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
প্যারিসে ফ্রান্স ক্রিকেট বোর্ডের নির্বাচনে বিজয়ী ৬ বাংলাদেশিকে অভ্যর্থনা প্রদান প্যারিসে অন্নপূর্ণা পূজা পরিষদের আয়োজনে বৈশাখী উৎসব পহেলা মে, শ্রমিক দিবস উপলক্ষে ফ্রান্সে বাংলাদেশী শ্রমিক গ্রুপের আয়োজনে দিবসকে স্মরণ প্যারিসে বেংগল টাইগার্সে স্পোর্টিং ক্লাবের জার্সি উন্মোচন অভিবাসন সাংবাদিকতার উন্নয়নে ‘মার্সেই সনদ’ সই ইতালিতে খোলা‌ মাঠে “বাংলাদেশ প্রবাসী কল্যাণ পরিষদে’র বর্ণাঢ্য বৈশাখী উৎসব দীর্ঘ ৯ মাস ধরে সেবা বঞ্চিত মানিকগঞ্জের চান্দহর ইউনিয়নবাসী বিএনপির দুই গ্রুপের দ্বন্দ্বে অচল ইউনিয়ন পরিষদ গাজার মানুষের দুর্দশা বন্ধ করুন, নেতানিয়াহুকে ম্যাক্রোঁ ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে ফ্রান্সের নেতৃত্বে ইউরোপও সক্রিয় হয়েছে ইইউর ‘নিরাপদ’ দেশের তালিকায় বাংলাদেশ, কঠিন হবে আশ্রয় পাওয়া

বাংলাদেশি গণমাধ্যম কি স্বাধীনতা হারাচ্ছে?

  • আপডেট সময় ১০:০০:৫৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ অগাস্ট ২০১৮
  • ২১৭ বার পড়া হয়েছে

নন্দিত আলোকচিত্রী ও মানবাধিকারকর্মী শহিদুল আলমের মুক্তির দাবি অব্যাহতভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ছাত্রদের আন্দোলনে উস্কানি দেয়ার অভিযোগে তিনি পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন। যে আন্দোলনের প্রেক্ষিতে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, তা দ্রুতই বিস্তৃতি লাভ করেছে, বৃহৎ পরিসরে রাজনৈতিক রূপ নিয়েছে। আসন্ন নির্বাচনের বছরে বাংলাদেশ খুবই সংবেদনশীল সময় অতিবাহিত করছে। পরিস্থিতির পাশাপাশি মানুষের মুখের ভাষা নিয়ন্ত্রণে উদ্যোগী হয়েছে সরকার। তারা সহিংসতা দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করছে। আর যেকোনো ধরনের ভিন্নমতকে চুপ করিয়ে তারা মানুষের মুখের ভাষা নিয়ন্ত্রণ করছে। যেন শুধুমাত্র সরকারের দেয়া বার্তাই মানুষের কাছে পৌঁছে।

রোহিঙ্গা সংকট বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে। তাই তারা চায় না, সরকারের কোনো খারাপ বিষয় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় জানুক। এ জন্য যখন শহিদুল আলম বিভিন্ন উদ্বেগের বিষয়ে আওয়াজ তুলেছেন, পরিষ্কারভাবেই তারা অনুভব করেছেন যে, শহিদুলের বক্তব্য আন্তর্জাতিক পরিসরে তাদের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ করছে। শহিদুল আলমকে বিচারের মুখোমুখি করা হলে তার বিরুদ্ধে ২০০৬ সালে জারি হওয়া আইসিটি আইনে অভিযোগ তোলা হয়। ২০০৯ সালে ক্ষমতায় বসার চার বছর পর শেখ হাসিনা সরকার আইনটির সংস্কার করে। অনলাইনে মানুষের দেয়া বিভিন্ন পোস্টের বিষয়ে তারা ৫৭ ধারায় যে পরিবর্তন আনে, গণমাধ্যমের ওপর নজরদারি করা বিদেশি এনজিওগুলো তার সমালোচনা করে। বাংলাদেশে বাকস্বাধীনতার অধিকারের পক্ষে আন্দোলনকারীরাও এর প্রতিবাদ করেন। উল্লেখ্য, সম্প্রতি অনলাইনে বাংলাদেশের বিভিন্ন ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর তীব্র উস্কানিমূলক পোস্ট সহিংসতার সৃষ্টি করেছে। এতে বাংলাদেশিদের মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে।

৫৭ ধারা খুবই অস্পষ্ট। এতে সরকারের সমালোচকদের সহজেই বেছে বেছে অভিযুক্ত করার সুযোগ দেয়া হয়েছে। সরকার এই আইনকে ব্যবহার করে যেকোনো ধরনের সমালোচনা কঠোরভাবে দমন করছে। এর মাধ্যমে তারা মানুষকে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে, আতঙ্ক সৃষ্টি করছে। যেন তারা ভবিষ্যতে অনলাইনে সরকারের সমালোচনা করে কোনো মন্তব্য না করে। শহিদুল আলমকে গ্রেপ্তার করে, একজনের কণ্ঠস্বর স্তব্ধ করে অন্যদের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি করা হয়েছে। সরকার জানতো, এতে তারা সমালোচনার মুখে পড়তে পারেন। কিন্তু এর বিনিময়ে কর্তৃপক্ষ নির্বাচনের বছরে একটি বার্তা দিতে চেয়েছেন। বাংলাদেশে ব্যাপক দমন-পীড়ন চলছে। যারা এর শিকার হচ্ছেন, তার মধ্যে সাংবাদিকরাও রয়েছেন।

(বিশ্লেষণীতে অবদান রেখেছেন হিউম্যান রাইটস ওয়াচের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক মিনাক্ষী গাঙ্গুলি, সাংবাদিক ডেভিড বার্গম্যান, ইয়োরস ইলেক্ট্রা বইয়ের লেখক ইখতিসাদ আহমেদ ও বাংলাদেশের তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু।)

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

লক ডাউন পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবেলায় ফ্রান্সে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি

যুক্তরাজ্যে করোনার মধ্যেই শিশুদের মাঝে নতুন রোগের হানা

প্যারিসে ফ্রান্স ক্রিকেট বোর্ডের নির্বাচনে বিজয়ী ৬ বাংলাদেশিকে অভ্যর্থনা প্রদান

বাংলাদেশি গণমাধ্যম কি স্বাধীনতা হারাচ্ছে?

আপডেট সময় ১০:০০:৫৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ অগাস্ট ২০১৮

নন্দিত আলোকচিত্রী ও মানবাধিকারকর্মী শহিদুল আলমের মুক্তির দাবি অব্যাহতভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ছাত্রদের আন্দোলনে উস্কানি দেয়ার অভিযোগে তিনি পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন। যে আন্দোলনের প্রেক্ষিতে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, তা দ্রুতই বিস্তৃতি লাভ করেছে, বৃহৎ পরিসরে রাজনৈতিক রূপ নিয়েছে। আসন্ন নির্বাচনের বছরে বাংলাদেশ খুবই সংবেদনশীল সময় অতিবাহিত করছে। পরিস্থিতির পাশাপাশি মানুষের মুখের ভাষা নিয়ন্ত্রণে উদ্যোগী হয়েছে সরকার। তারা সহিংসতা দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করছে। আর যেকোনো ধরনের ভিন্নমতকে চুপ করিয়ে তারা মানুষের মুখের ভাষা নিয়ন্ত্রণ করছে। যেন শুধুমাত্র সরকারের দেয়া বার্তাই মানুষের কাছে পৌঁছে।

রোহিঙ্গা সংকট বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে। তাই তারা চায় না, সরকারের কোনো খারাপ বিষয় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় জানুক। এ জন্য যখন শহিদুল আলম বিভিন্ন উদ্বেগের বিষয়ে আওয়াজ তুলেছেন, পরিষ্কারভাবেই তারা অনুভব করেছেন যে, শহিদুলের বক্তব্য আন্তর্জাতিক পরিসরে তাদের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ করছে। শহিদুল আলমকে বিচারের মুখোমুখি করা হলে তার বিরুদ্ধে ২০০৬ সালে জারি হওয়া আইসিটি আইনে অভিযোগ তোলা হয়। ২০০৯ সালে ক্ষমতায় বসার চার বছর পর শেখ হাসিনা সরকার আইনটির সংস্কার করে। অনলাইনে মানুষের দেয়া বিভিন্ন পোস্টের বিষয়ে তারা ৫৭ ধারায় যে পরিবর্তন আনে, গণমাধ্যমের ওপর নজরদারি করা বিদেশি এনজিওগুলো তার সমালোচনা করে। বাংলাদেশে বাকস্বাধীনতার অধিকারের পক্ষে আন্দোলনকারীরাও এর প্রতিবাদ করেন। উল্লেখ্য, সম্প্রতি অনলাইনে বাংলাদেশের বিভিন্ন ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর তীব্র উস্কানিমূলক পোস্ট সহিংসতার সৃষ্টি করেছে। এতে বাংলাদেশিদের মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে।

৫৭ ধারা খুবই অস্পষ্ট। এতে সরকারের সমালোচকদের সহজেই বেছে বেছে অভিযুক্ত করার সুযোগ দেয়া হয়েছে। সরকার এই আইনকে ব্যবহার করে যেকোনো ধরনের সমালোচনা কঠোরভাবে দমন করছে। এর মাধ্যমে তারা মানুষকে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে, আতঙ্ক সৃষ্টি করছে। যেন তারা ভবিষ্যতে অনলাইনে সরকারের সমালোচনা করে কোনো মন্তব্য না করে। শহিদুল আলমকে গ্রেপ্তার করে, একজনের কণ্ঠস্বর স্তব্ধ করে অন্যদের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি করা হয়েছে। সরকার জানতো, এতে তারা সমালোচনার মুখে পড়তে পারেন। কিন্তু এর বিনিময়ে কর্তৃপক্ষ নির্বাচনের বছরে একটি বার্তা দিতে চেয়েছেন। বাংলাদেশে ব্যাপক দমন-পীড়ন চলছে। যারা এর শিকার হচ্ছেন, তার মধ্যে সাংবাদিকরাও রয়েছেন।

(বিশ্লেষণীতে অবদান রেখেছেন হিউম্যান রাইটস ওয়াচের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক মিনাক্ষী গাঙ্গুলি, সাংবাদিক ডেভিড বার্গম্যান, ইয়োরস ইলেক্ট্রা বইয়ের লেখক ইখতিসাদ আহমেদ ও বাংলাদেশের তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু।)