ঢাকা ১১:৫৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৫, ৭ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
ফ্রান্সে লায়েক আহমদ তালুকদারের পিতার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত অখন্ড বাংলাদেশ আন্দোলনের প্রধান হাসনাত আরিয়ান খানকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ ফ্রান্সে বিশ্ব স্বজন ফাউন্ডেশনের ১ যুগপূর্তি উদযাপন বালাগঞ্জে জামালপুর তোহফা ফাউন্ডেশনের ২০২৫ সালের ক্যালেন্ডার উন্মোচন ফ্রান্স বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এম এ তাহেরকে প্যারিস বিমানবন্দরে ফুলেল অভ্যর্থনা দেওয়ানবাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকের সম্মাননা ও প্রয়াত শিক্ষকদের স্মরণে দোয়া মাহফিল সীমান্ত হত্যা বন্ধে লণ্ডনে ইন্ডিয়ান হাইকমিশন ঘেরাও কর্মসূচি পালিত ফ্রান্সে গহরপুরবাসীর প্রথম সামাজিক সংগঠন ‘গহরপুর এসোসিয়েশন ইন ফ্রান্স’-এর আত্মপ্রকাশ সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশে ব্যবসার মালিকানা পাবেন প্রবাসীরা স্রোতে’র আয়োজনে বিজয়ের কবিতাপাঠ

করোনার টিকা নিতে ফরাসি নাগরিকদের অনীহা কেন?

  • আপডেট সময় ০১:০৩:৫৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২১
  • ১৩৮ বার পড়া হয়েছে

জেন ডেবুচের অবস্থান টিকার বিরুদ্ধে নয়। ৮০ বছর বয়সী এই ব্যক্তির দাবি প্রতিবছর ফ্লু’র টিকা নেওয়ার সময় সামনেই থাকেন তিনি। তবে করোনাভাইরাসের প্রশ্ন উঠতেই অবসরপ্রাপ্ত এই ট্রাক চালক জানালেন যোগ্য বিবেচিত হলেও তিনি টিকা নেবেন না। প্যারিসের এই বাসিন্দা বলেন, জানি না এর মধ্যে কী আছে?

গত ২৭ ডিসেম্বর থেকে ফাইজার-বায়োএনটেকের টিকা প্রদান শুরু করেছে ফ্রান্স। ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্য সদস্যরাও একই সময়ে তা শুরু করে। ডেবুচে বলেন, ফ্রান্স টিকাদানে অগ্রাধিকার দিচ্ছে নার্সিং হোমে বসবাসকারীদের। তিনি বলেন, ‘মনে হচ্ছে তারা বয়স্কদের গিনি পিগ হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছে।’

ডেবুচে একা নন। অডোক্সা পোলিং গ্রুপ এবং লা ফিয়াগোরো সংবাদপত্রের এক সাম্প্রতিক জরিপ অনুযায়ী, ফ্রান্সের ৫৮ শতাংশ জনগোষ্ঠী কোভিড-১৯ এর টিকা নিতে আগ্রহী নয়। যুক্তরাজ্যে এই সংখ্যা ৩৩ শতাংশ আর যুক্তরাষ্ট্রে ৪১ শতাংশ।

প্যারিসভিত্তিক থিংকট্যাংক জেন জাউরসের গবেষক অ্যান্টনি ব্রিসটিয়েলে বলেন, ‘বিজ্ঞান বিশেষজ্ঞ এবং সরকার যা বলছে তা বহু মানুষ বিশ্বাস করছেন না।’ তবে সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো সরকারের প্রতি অবিশ্বাস।  ১৯৯০’র দশকের শুরুতে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত দুইটি ঘটনার দিকে ইঙ্গিত করেন ব্রিসটিয়েলে। ওই সময় হেপাটাইটিস-বি ভাইরাসের টিকা প্রচলন এবং রক্ত দূষণ কেলেঙ্কারিতে সরকারের সম্পৃক্ততার অভিজ্ঞতা থেকে ফ্রান্সে বহু মানুষ ভয় পাচ্ছেন।

হেপাটাইটিস –বি টিকা গণহারে প্রয়োগের সময় একসঙ্গে বেশ কিছু রোগ ছড়িয়ে পড়ে। অনেকেই দুইটির মধ্যে সম্পৃক্ততা খুঁজতে থাকেন। তবে গবেষণায় কোনও সময়েই এর সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি। এছাড়া ১৯৯১ সালে ফ্রান্সের সবচেয়ে বড় জনস্বাস্থ্য কেলেঙ্কারি ঘটে। সরকার দেখতে পায় জেনেশুনে এইচআইভি আক্রান্তদের কাছ থেকে রক্ত সংগ্রহ করা হয়েছে। এর কারণে শত শত মানুষের মৃত্যু হয়। ফরাসি সরকার প্রাথমিকভাবে রক্তদূষণের কথা আগে থেকে জানার কথা অস্বীকার করে। পরে তিন মন্ত্রীকে গণহত্যায় অভিযুক্ত করা হয়। পরে এক জনের বিরুদ্ধে দোষ প্রমাণিত হলেও কোনও সাজা দেওয়া হয়নি।

ফলেন ফরাসি নাগরিকদের সরকারের প্রতি অবিশ্বাস থেকে গেছে। আজকের দিনে কোভিড-১৯ এর টিকা নিয়ে ছড়িয়ে পড়া ভুল তথ্য যোগ হয়ে সমস্যাটি আরও প্রকট হয়েছে। ব্রিসটিয়েলে বলেন, ‘বহু কথিত বিশেষজ্ঞ টেলিভিশনে গিয়ে মিথ্যে তথ্য বলছে। তারা যা বলছেন তা সত্যি না হলেও মূলধারার সংবাদমাধ্যমে তা প্রচার হওয়ায় অনেকেই তা মেনে নিচ্ছেন।’

সূত্র: আল জাজিরা

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

লক ডাউন পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবেলায় ফ্রান্সে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি

যুক্তরাজ্যে করোনার মধ্যেই শিশুদের মাঝে নতুন রোগের হানা

ফ্রান্সে লায়েক আহমদ তালুকদারের পিতার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত

করোনার টিকা নিতে ফরাসি নাগরিকদের অনীহা কেন?

আপডেট সময় ০১:০৩:৫৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২১

জেন ডেবুচের অবস্থান টিকার বিরুদ্ধে নয়। ৮০ বছর বয়সী এই ব্যক্তির দাবি প্রতিবছর ফ্লু’র টিকা নেওয়ার সময় সামনেই থাকেন তিনি। তবে করোনাভাইরাসের প্রশ্ন উঠতেই অবসরপ্রাপ্ত এই ট্রাক চালক জানালেন যোগ্য বিবেচিত হলেও তিনি টিকা নেবেন না। প্যারিসের এই বাসিন্দা বলেন, জানি না এর মধ্যে কী আছে?

গত ২৭ ডিসেম্বর থেকে ফাইজার-বায়োএনটেকের টিকা প্রদান শুরু করেছে ফ্রান্স। ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্য সদস্যরাও একই সময়ে তা শুরু করে। ডেবুচে বলেন, ফ্রান্স টিকাদানে অগ্রাধিকার দিচ্ছে নার্সিং হোমে বসবাসকারীদের। তিনি বলেন, ‘মনে হচ্ছে তারা বয়স্কদের গিনি পিগ হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছে।’

ডেবুচে একা নন। অডোক্সা পোলিং গ্রুপ এবং লা ফিয়াগোরো সংবাদপত্রের এক সাম্প্রতিক জরিপ অনুযায়ী, ফ্রান্সের ৫৮ শতাংশ জনগোষ্ঠী কোভিড-১৯ এর টিকা নিতে আগ্রহী নয়। যুক্তরাজ্যে এই সংখ্যা ৩৩ শতাংশ আর যুক্তরাষ্ট্রে ৪১ শতাংশ।

প্যারিসভিত্তিক থিংকট্যাংক জেন জাউরসের গবেষক অ্যান্টনি ব্রিসটিয়েলে বলেন, ‘বিজ্ঞান বিশেষজ্ঞ এবং সরকার যা বলছে তা বহু মানুষ বিশ্বাস করছেন না।’ তবে সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো সরকারের প্রতি অবিশ্বাস।  ১৯৯০’র দশকের শুরুতে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত দুইটি ঘটনার দিকে ইঙ্গিত করেন ব্রিসটিয়েলে। ওই সময় হেপাটাইটিস-বি ভাইরাসের টিকা প্রচলন এবং রক্ত দূষণ কেলেঙ্কারিতে সরকারের সম্পৃক্ততার অভিজ্ঞতা থেকে ফ্রান্সে বহু মানুষ ভয় পাচ্ছেন।

হেপাটাইটিস –বি টিকা গণহারে প্রয়োগের সময় একসঙ্গে বেশ কিছু রোগ ছড়িয়ে পড়ে। অনেকেই দুইটির মধ্যে সম্পৃক্ততা খুঁজতে থাকেন। তবে গবেষণায় কোনও সময়েই এর সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি। এছাড়া ১৯৯১ সালে ফ্রান্সের সবচেয়ে বড় জনস্বাস্থ্য কেলেঙ্কারি ঘটে। সরকার দেখতে পায় জেনেশুনে এইচআইভি আক্রান্তদের কাছ থেকে রক্ত সংগ্রহ করা হয়েছে। এর কারণে শত শত মানুষের মৃত্যু হয়। ফরাসি সরকার প্রাথমিকভাবে রক্তদূষণের কথা আগে থেকে জানার কথা অস্বীকার করে। পরে তিন মন্ত্রীকে গণহত্যায় অভিযুক্ত করা হয়। পরে এক জনের বিরুদ্ধে দোষ প্রমাণিত হলেও কোনও সাজা দেওয়া হয়নি।

ফলেন ফরাসি নাগরিকদের সরকারের প্রতি অবিশ্বাস থেকে গেছে। আজকের দিনে কোভিড-১৯ এর টিকা নিয়ে ছড়িয়ে পড়া ভুল তথ্য যোগ হয়ে সমস্যাটি আরও প্রকট হয়েছে। ব্রিসটিয়েলে বলেন, ‘বহু কথিত বিশেষজ্ঞ টেলিভিশনে গিয়ে মিথ্যে তথ্য বলছে। তারা যা বলছেন তা সত্যি না হলেও মূলধারার সংবাদমাধ্যমে তা প্রচার হওয়ায় অনেকেই তা মেনে নিচ্ছেন।’

সূত্র: আল জাজিরা