ঢাকা ১০:৫৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ৪ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
ইইউর ‘নিরাপদ’ দেশের তালিকায় বাংলাদেশ, কঠিন হবে আশ্রয় পাওয়া ‌ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশের জন্য প্রস্তুত রোম জালালাবাদ এসোসিয়েশন ইতালির কমিটি ঘোষণা ও ঈদ পূর্ণমিলনী‌ প্যারিসে “কীভাবে গড়বেন নেক সন্তান” বইয়ের প্রকাশনা উৎসব অনুষ্ঠিত গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যার প্রতিবাদে প্যারিসে বিক্ষোভ সমাবেশ বাংলাদেশ ক্রিকেট ইতালির টুর্নামেন্টের গ্রুপ বাছাই সম্পন্ন: সোমবার উদ্বোধনী খেলা স্বাধীনতা দিবস পালন করেছে ফ্রান্স গ্লোবাল জালালাবাদ এসোসিয়েশন ফ্রান্সে জমকালো আয়োজনে বিয়ানীবাজার উপজেলা স্পোর্টিং ক্লাবের ইফতার ও জার্সি উন্মোচন প্যারিসে সাংবাদিকদের নতুন সংগঠনট “ফ্রান্স বাংলাদেশ জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন” শিওরখাল ওয়ান কমিউনিটির মানবিক উদ্যোগ: পবিত্র রমজানে ১০০ পরিবারে নগদ সহায়তা

করোনার টিকা নিতে ফরাসি নাগরিকদের অনীহা কেন?

  • আপডেট সময় ০১:০৩:৫৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২১
  • ১৫৬ বার পড়া হয়েছে

জেন ডেবুচের অবস্থান টিকার বিরুদ্ধে নয়। ৮০ বছর বয়সী এই ব্যক্তির দাবি প্রতিবছর ফ্লু’র টিকা নেওয়ার সময় সামনেই থাকেন তিনি। তবে করোনাভাইরাসের প্রশ্ন উঠতেই অবসরপ্রাপ্ত এই ট্রাক চালক জানালেন যোগ্য বিবেচিত হলেও তিনি টিকা নেবেন না। প্যারিসের এই বাসিন্দা বলেন, জানি না এর মধ্যে কী আছে?

গত ২৭ ডিসেম্বর থেকে ফাইজার-বায়োএনটেকের টিকা প্রদান শুরু করেছে ফ্রান্স। ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্য সদস্যরাও একই সময়ে তা শুরু করে। ডেবুচে বলেন, ফ্রান্স টিকাদানে অগ্রাধিকার দিচ্ছে নার্সিং হোমে বসবাসকারীদের। তিনি বলেন, ‘মনে হচ্ছে তারা বয়স্কদের গিনি পিগ হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছে।’

ডেবুচে একা নন। অডোক্সা পোলিং গ্রুপ এবং লা ফিয়াগোরো সংবাদপত্রের এক সাম্প্রতিক জরিপ অনুযায়ী, ফ্রান্সের ৫৮ শতাংশ জনগোষ্ঠী কোভিড-১৯ এর টিকা নিতে আগ্রহী নয়। যুক্তরাজ্যে এই সংখ্যা ৩৩ শতাংশ আর যুক্তরাষ্ট্রে ৪১ শতাংশ।

প্যারিসভিত্তিক থিংকট্যাংক জেন জাউরসের গবেষক অ্যান্টনি ব্রিসটিয়েলে বলেন, ‘বিজ্ঞান বিশেষজ্ঞ এবং সরকার যা বলছে তা বহু মানুষ বিশ্বাস করছেন না।’ তবে সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো সরকারের প্রতি অবিশ্বাস।  ১৯৯০’র দশকের শুরুতে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত দুইটি ঘটনার দিকে ইঙ্গিত করেন ব্রিসটিয়েলে। ওই সময় হেপাটাইটিস-বি ভাইরাসের টিকা প্রচলন এবং রক্ত দূষণ কেলেঙ্কারিতে সরকারের সম্পৃক্ততার অভিজ্ঞতা থেকে ফ্রান্সে বহু মানুষ ভয় পাচ্ছেন।

হেপাটাইটিস –বি টিকা গণহারে প্রয়োগের সময় একসঙ্গে বেশ কিছু রোগ ছড়িয়ে পড়ে। অনেকেই দুইটির মধ্যে সম্পৃক্ততা খুঁজতে থাকেন। তবে গবেষণায় কোনও সময়েই এর সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি। এছাড়া ১৯৯১ সালে ফ্রান্সের সবচেয়ে বড় জনস্বাস্থ্য কেলেঙ্কারি ঘটে। সরকার দেখতে পায় জেনেশুনে এইচআইভি আক্রান্তদের কাছ থেকে রক্ত সংগ্রহ করা হয়েছে। এর কারণে শত শত মানুষের মৃত্যু হয়। ফরাসি সরকার প্রাথমিকভাবে রক্তদূষণের কথা আগে থেকে জানার কথা অস্বীকার করে। পরে তিন মন্ত্রীকে গণহত্যায় অভিযুক্ত করা হয়। পরে এক জনের বিরুদ্ধে দোষ প্রমাণিত হলেও কোনও সাজা দেওয়া হয়নি।

ফলেন ফরাসি নাগরিকদের সরকারের প্রতি অবিশ্বাস থেকে গেছে। আজকের দিনে কোভিড-১৯ এর টিকা নিয়ে ছড়িয়ে পড়া ভুল তথ্য যোগ হয়ে সমস্যাটি আরও প্রকট হয়েছে। ব্রিসটিয়েলে বলেন, ‘বহু কথিত বিশেষজ্ঞ টেলিভিশনে গিয়ে মিথ্যে তথ্য বলছে। তারা যা বলছেন তা সত্যি না হলেও মূলধারার সংবাদমাধ্যমে তা প্রচার হওয়ায় অনেকেই তা মেনে নিচ্ছেন।’

সূত্র: আল জাজিরা

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

লক ডাউন পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবেলায় ফ্রান্সে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি

যুক্তরাজ্যে করোনার মধ্যেই শিশুদের মাঝে নতুন রোগের হানা

ইইউর ‘নিরাপদ’ দেশের তালিকায় বাংলাদেশ, কঠিন হবে আশ্রয় পাওয়া

করোনার টিকা নিতে ফরাসি নাগরিকদের অনীহা কেন?

আপডেট সময় ০১:০৩:৫৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২১

জেন ডেবুচের অবস্থান টিকার বিরুদ্ধে নয়। ৮০ বছর বয়সী এই ব্যক্তির দাবি প্রতিবছর ফ্লু’র টিকা নেওয়ার সময় সামনেই থাকেন তিনি। তবে করোনাভাইরাসের প্রশ্ন উঠতেই অবসরপ্রাপ্ত এই ট্রাক চালক জানালেন যোগ্য বিবেচিত হলেও তিনি টিকা নেবেন না। প্যারিসের এই বাসিন্দা বলেন, জানি না এর মধ্যে কী আছে?

গত ২৭ ডিসেম্বর থেকে ফাইজার-বায়োএনটেকের টিকা প্রদান শুরু করেছে ফ্রান্স। ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্য সদস্যরাও একই সময়ে তা শুরু করে। ডেবুচে বলেন, ফ্রান্স টিকাদানে অগ্রাধিকার দিচ্ছে নার্সিং হোমে বসবাসকারীদের। তিনি বলেন, ‘মনে হচ্ছে তারা বয়স্কদের গিনি পিগ হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছে।’

ডেবুচে একা নন। অডোক্সা পোলিং গ্রুপ এবং লা ফিয়াগোরো সংবাদপত্রের এক সাম্প্রতিক জরিপ অনুযায়ী, ফ্রান্সের ৫৮ শতাংশ জনগোষ্ঠী কোভিড-১৯ এর টিকা নিতে আগ্রহী নয়। যুক্তরাজ্যে এই সংখ্যা ৩৩ শতাংশ আর যুক্তরাষ্ট্রে ৪১ শতাংশ।

প্যারিসভিত্তিক থিংকট্যাংক জেন জাউরসের গবেষক অ্যান্টনি ব্রিসটিয়েলে বলেন, ‘বিজ্ঞান বিশেষজ্ঞ এবং সরকার যা বলছে তা বহু মানুষ বিশ্বাস করছেন না।’ তবে সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো সরকারের প্রতি অবিশ্বাস।  ১৯৯০’র দশকের শুরুতে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত দুইটি ঘটনার দিকে ইঙ্গিত করেন ব্রিসটিয়েলে। ওই সময় হেপাটাইটিস-বি ভাইরাসের টিকা প্রচলন এবং রক্ত দূষণ কেলেঙ্কারিতে সরকারের সম্পৃক্ততার অভিজ্ঞতা থেকে ফ্রান্সে বহু মানুষ ভয় পাচ্ছেন।

হেপাটাইটিস –বি টিকা গণহারে প্রয়োগের সময় একসঙ্গে বেশ কিছু রোগ ছড়িয়ে পড়ে। অনেকেই দুইটির মধ্যে সম্পৃক্ততা খুঁজতে থাকেন। তবে গবেষণায় কোনও সময়েই এর সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি। এছাড়া ১৯৯১ সালে ফ্রান্সের সবচেয়ে বড় জনস্বাস্থ্য কেলেঙ্কারি ঘটে। সরকার দেখতে পায় জেনেশুনে এইচআইভি আক্রান্তদের কাছ থেকে রক্ত সংগ্রহ করা হয়েছে। এর কারণে শত শত মানুষের মৃত্যু হয়। ফরাসি সরকার প্রাথমিকভাবে রক্তদূষণের কথা আগে থেকে জানার কথা অস্বীকার করে। পরে তিন মন্ত্রীকে গণহত্যায় অভিযুক্ত করা হয়। পরে এক জনের বিরুদ্ধে দোষ প্রমাণিত হলেও কোনও সাজা দেওয়া হয়নি।

ফলেন ফরাসি নাগরিকদের সরকারের প্রতি অবিশ্বাস থেকে গেছে। আজকের দিনে কোভিড-১৯ এর টিকা নিয়ে ছড়িয়ে পড়া ভুল তথ্য যোগ হয়ে সমস্যাটি আরও প্রকট হয়েছে। ব্রিসটিয়েলে বলেন, ‘বহু কথিত বিশেষজ্ঞ টেলিভিশনে গিয়ে মিথ্যে তথ্য বলছে। তারা যা বলছেন তা সত্যি না হলেও মূলধারার সংবাদমাধ্যমে তা প্রচার হওয়ায় অনেকেই তা মেনে নিচ্ছেন।’

সূত্র: আল জাজিরা