ঢাকা ০৭:৫৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৫, ৯ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
বৃটেনে সাফল্যের আলো ছড়ালেন বাংলাদেশি তরুণী তাহমিনা আহমদ পোস্টাল ব্যালটে ভোট ও ইসির অ্যাপ্স “পোস্টাল ভোটে বিডি” শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত ৬৫ বছরের ঊর্ধ্বদের জন্য ফরাসি ভাষা ও নাগরিক শিক্ষা পরীক্ষার বাধ্যবাধকতা থেকে অব্যাহতি পর্তুগাল-বাংলাদেশ কমিউনিটির আয়োজনে আনন্দ ভ্রমণ কারাদণ্ড কার্যকরের আগে এলিসি প্রাসাদে পূর্বসূরি সারকোজিকে আমন্ত্রণ জানালেন ম্যাক্রোঁ লুভর জাদুঘরে দুঃসাহসিক ডাকাতি: ফ্রান্সে দোষারোপের রাজনীতি তুঙ্গে বিশ্ববিখ্যাত প্যারিস ল্যুভর জাদুঘরে চুরি ফ্রান্সে “আশা এবং আমার সংগ্রাম” গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন ও প্রকাশনা দেড় হাজারের বেশি মানুষের অংশগ্রহনে লন্ডনে অনুষ্ঠিত হলো ১২তম মুসলিম চ্যারিটি রান বিগত ১১৭ বছরের সব দলিল অনলাইনে যাচ্ছে, ভূমি মালিকদের করণীয়

অভিবাসীদের মর্যাদা নিশ্চিতের আশ্বাস নতুন ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর

  • আপডেট সময় ০৯:৫০:৩৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ মে ২০১৮
  • ২৪৭ বার পড়া হয়েছে

দায়িত্ব নেওয়ার পরই যুক্তরাজ্যের অভিবাসী বিতর্ক সমাধানের চেষ্টার আশ্বাস দিলেন দেশটির প্রথম মুসলিম স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ। পাকিস্তানি বংশোদ্ভুত এই ব্রিটিশ মন্ত্রী অভিবাসীদের মর্যাদা ও তাদের সঙ্গে আচরণের বিষয়টি নিশ্চিত করার অঙ্গীকার করেছেন।

অবৈধ অভিবাসী বিতাড়ন সম্পর্কিত সরকারি নীতি নিয়ে কেলেঙ্কারির মুখে রবিবার (২৯ এপ্রিল) রাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাম্বার রাডের পদত্যাগের পর তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়।  সাজিদ জাভিদের এমন নিয়োগ তাই বিস্ময় তৈরি করেছে। শুধু প্রথম দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভূতই নয়, এই প্রথম কোনও মুসলিম ব্রিটেনের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেলেন।

অবৈধ অভিবাসীদের ইস্যুতে বিতর্কের জেরে রবিবার পদত্যাগ করেন ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যামবার রুড। আগামী কয়েক বছরে দশ শতাংশ বেশি অবৈধ অভিবাসীকে ব্রিটেন থেকে বের করে দেওয়ার পরিকল্পনা ফাঁস হওয়ার জের ধরে এই ঘোষণা দেন তিনি। ওই পরিকল্পনা নিয়ে সমালোচনার মুখে ছিলেন রুড।

তবে প্রথম দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভুত ব্রিটিশ এমপি জাভিদের এমন নিয়োগকে প্রধানমন্ত্রীর নতুন কৌশল হিসেবে দেখা হচ্ছে। উইন্ডরাশ কেলেঙ্কারির ঘটনা থেকে বাঁচতে দ্বিতীয় প্রজন্মের এই অভিবাসী রাজনীতিককে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। কেলেঙ্কারির ঘটনায় দেখা যায়, কমনওয়েলথভুক্ত ক্যারিবিয়ান দেশ জ্যামাইকা থেকে আসা ব্যক্তিদের নাগরিকত্বের দলিল না থাকায় খারাপ আচরণ করা হচ্ছে।

দায়িত্ব নেওয়ার পর সাজিদ জাভিদ বলেন, ‘সবচেয়ে জরুরি কাজ হলো ক্যারিবিয়ান থেকে আসা তথাকথিত ‌উইন্ডরাশ প্রজন্মে’র ব্রিটিশ নাগরিকদের সাহায্য করা। তাদের সঙ্গে যাতে শিষ্টাচার ও সততার সঙ্গে আচরণ করা হয় তা নিশ্চিত করা দরকার কারণ এটাই তাদের প্রাপ্য। মানুষ কী দেখতে চায় আমি তাই চিন্তা করছি।’

সাজিদ জাভিদের বাবা শতকের ষাটের দশকে পাকিস্তান থেকে ব্রি‌টে‌নে এসে প্রথমে কাপড়ের কারখানায় কাজ করেন। পরে বাসচালকের চাকরি নেন তিনি। জাভিদ এর আগে কমিউনিটি, স্থানীয় সরকার ও গৃহায়ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। প্রথম প্রজন্মের অভিবাসীর সন্তান হয়ে সাজিদ জাভিদের অন্যতম প্রধান দায়িত্ব হবে অভিবাসন নিয়ে ব্রিটেনের জনগণের উদ্বেগ সামলানো। তিনি দেশের অভিবাসন নীতি পর্যালোচনা করে ন্যায্যতা ও অভিবাসীদের মর্যাদা আর শ্রদ্ধার সঙ্গে আচরণ করার বিষয়টি  নিশ্চিত করার অঙ্গীকার করেছেন।

সাবেক ব্যবসায়ী এই ৪৮ বছর বয়সী রাজনীতিক ২০১০ সাল থেকে ব্রুমসগ্রোভ থেকে কনজারভেটিভ পার্টির এমপির দায়িত্বপালন করছেন। এর আগে তিনি সরকারের ব্যবসায় ও সাংস্কৃতিক বিষয়ের সঙ্গে জড়িত ছিলেন।

‘দ্য সানডে টেলিগ্রাফ’ পত্রিকাতে জাভিদ লিখেছেন, ‘বিষয়গুলো প্রথম শোনা ও পড়া শুরুর সময় আমি উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ি। এটা তাৎক্ষণিকভাবে আমার ওপর প্রভাব ফেলেছে। আমি নিজে দ্বিতীয় প্রজন্মের অভিবাসী। আমার বাবা-মাও উইন্ডরা শ প্রজন্মের মতোই এদেশে এসেছে’। তিনি আরও বলেন,   ‘তারা (তার বাবা-মা) দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সংস্কার কাজ করার জন্য এই দেশে এসছিলেন। তারা কমনওয়েলথ দেশ থেকে এসেছেন। তাদের এমন কাজের জন্য এখানে আনা হয়েছিল যা অনেকেই অপছন্দ করবেন। আমার বাবা একটি কাপড়ের মিলে কাজ করেছেন। পরে তিনি বাসচালক হিসেবে চাকরি নেন’।

ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘যখন উইন্ডরাশ বিষয়টি শুনি আমি ভেবেছি, এটা আমার মা হতে পারতেন, আমর বাবা হতে পারতেন, আমার চাচার সঙ্গে বা আমার সঙ্গেও এমনটা হতে পারতো।’

উইন্ডরাশ স্ক্যান্যাল নামে পরিচিতি পাওয়া বর্তমান অভিবাসন বিতর্কটি সামনে আসে যখন কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলো থেকে কিছু অভিবাসীদের ব্রিটেন থেকে বের করে দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়। ১৯৪০ থেকে ১৯৭০ এর দশক পর্যন্ত ব্রিটেনে আসা এসব অভিবাসী তা তাদের আত্মীয়দের অবৈধ অভিবাসী ঘোষণার পরিকল্পনার কথা সামনে আসলে ব্রিটেনে বিতর্ক শুরু হয়। গত সপ্তাহে সামনে আসা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যামবার রুডের পূর্ণাঙ্গ  চিঠিটি গত রবিবার প্রকাশ করে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান। প্রধানমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে আরও দশ শতাংশ বেশি অবৈধ অভিবাসীকে বের করে দেওয়ার কথা জানানো হয়। এর জের ধরেই বিতর্কের মুখে পড়েন অ্যামবার রুড।

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

লক ডাউন পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবেলায় ফ্রান্সে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি

যুক্তরাজ্যে করোনার মধ্যেই শিশুদের মাঝে নতুন রোগের হানা

বৃটেনে সাফল্যের আলো ছড়ালেন বাংলাদেশি তরুণী তাহমিনা আহমদ

অভিবাসীদের মর্যাদা নিশ্চিতের আশ্বাস নতুন ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর

আপডেট সময় ০৯:৫০:৩৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ মে ২০১৮

দায়িত্ব নেওয়ার পরই যুক্তরাজ্যের অভিবাসী বিতর্ক সমাধানের চেষ্টার আশ্বাস দিলেন দেশটির প্রথম মুসলিম স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ। পাকিস্তানি বংশোদ্ভুত এই ব্রিটিশ মন্ত্রী অভিবাসীদের মর্যাদা ও তাদের সঙ্গে আচরণের বিষয়টি নিশ্চিত করার অঙ্গীকার করেছেন।

অবৈধ অভিবাসী বিতাড়ন সম্পর্কিত সরকারি নীতি নিয়ে কেলেঙ্কারির মুখে রবিবার (২৯ এপ্রিল) রাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাম্বার রাডের পদত্যাগের পর তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়।  সাজিদ জাভিদের এমন নিয়োগ তাই বিস্ময় তৈরি করেছে। শুধু প্রথম দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভূতই নয়, এই প্রথম কোনও মুসলিম ব্রিটেনের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেলেন।

অবৈধ অভিবাসীদের ইস্যুতে বিতর্কের জেরে রবিবার পদত্যাগ করেন ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যামবার রুড। আগামী কয়েক বছরে দশ শতাংশ বেশি অবৈধ অভিবাসীকে ব্রিটেন থেকে বের করে দেওয়ার পরিকল্পনা ফাঁস হওয়ার জের ধরে এই ঘোষণা দেন তিনি। ওই পরিকল্পনা নিয়ে সমালোচনার মুখে ছিলেন রুড।

তবে প্রথম দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভুত ব্রিটিশ এমপি জাভিদের এমন নিয়োগকে প্রধানমন্ত্রীর নতুন কৌশল হিসেবে দেখা হচ্ছে। উইন্ডরাশ কেলেঙ্কারির ঘটনা থেকে বাঁচতে দ্বিতীয় প্রজন্মের এই অভিবাসী রাজনীতিককে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। কেলেঙ্কারির ঘটনায় দেখা যায়, কমনওয়েলথভুক্ত ক্যারিবিয়ান দেশ জ্যামাইকা থেকে আসা ব্যক্তিদের নাগরিকত্বের দলিল না থাকায় খারাপ আচরণ করা হচ্ছে।

দায়িত্ব নেওয়ার পর সাজিদ জাভিদ বলেন, ‘সবচেয়ে জরুরি কাজ হলো ক্যারিবিয়ান থেকে আসা তথাকথিত ‌উইন্ডরাশ প্রজন্মে’র ব্রিটিশ নাগরিকদের সাহায্য করা। তাদের সঙ্গে যাতে শিষ্টাচার ও সততার সঙ্গে আচরণ করা হয় তা নিশ্চিত করা দরকার কারণ এটাই তাদের প্রাপ্য। মানুষ কী দেখতে চায় আমি তাই চিন্তা করছি।’

সাজিদ জাভিদের বাবা শতকের ষাটের দশকে পাকিস্তান থেকে ব্রি‌টে‌নে এসে প্রথমে কাপড়ের কারখানায় কাজ করেন। পরে বাসচালকের চাকরি নেন তিনি। জাভিদ এর আগে কমিউনিটি, স্থানীয় সরকার ও গৃহায়ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। প্রথম প্রজন্মের অভিবাসীর সন্তান হয়ে সাজিদ জাভিদের অন্যতম প্রধান দায়িত্ব হবে অভিবাসন নিয়ে ব্রিটেনের জনগণের উদ্বেগ সামলানো। তিনি দেশের অভিবাসন নীতি পর্যালোচনা করে ন্যায্যতা ও অভিবাসীদের মর্যাদা আর শ্রদ্ধার সঙ্গে আচরণ করার বিষয়টি  নিশ্চিত করার অঙ্গীকার করেছেন।

সাবেক ব্যবসায়ী এই ৪৮ বছর বয়সী রাজনীতিক ২০১০ সাল থেকে ব্রুমসগ্রোভ থেকে কনজারভেটিভ পার্টির এমপির দায়িত্বপালন করছেন। এর আগে তিনি সরকারের ব্যবসায় ও সাংস্কৃতিক বিষয়ের সঙ্গে জড়িত ছিলেন।

‘দ্য সানডে টেলিগ্রাফ’ পত্রিকাতে জাভিদ লিখেছেন, ‘বিষয়গুলো প্রথম শোনা ও পড়া শুরুর সময় আমি উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ি। এটা তাৎক্ষণিকভাবে আমার ওপর প্রভাব ফেলেছে। আমি নিজে দ্বিতীয় প্রজন্মের অভিবাসী। আমার বাবা-মাও উইন্ডরা শ প্রজন্মের মতোই এদেশে এসেছে’। তিনি আরও বলেন,   ‘তারা (তার বাবা-মা) দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সংস্কার কাজ করার জন্য এই দেশে এসছিলেন। তারা কমনওয়েলথ দেশ থেকে এসেছেন। তাদের এমন কাজের জন্য এখানে আনা হয়েছিল যা অনেকেই অপছন্দ করবেন। আমার বাবা একটি কাপড়ের মিলে কাজ করেছেন। পরে তিনি বাসচালক হিসেবে চাকরি নেন’।

ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘যখন উইন্ডরাশ বিষয়টি শুনি আমি ভেবেছি, এটা আমার মা হতে পারতেন, আমর বাবা হতে পারতেন, আমার চাচার সঙ্গে বা আমার সঙ্গেও এমনটা হতে পারতো।’

উইন্ডরাশ স্ক্যান্যাল নামে পরিচিতি পাওয়া বর্তমান অভিবাসন বিতর্কটি সামনে আসে যখন কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলো থেকে কিছু অভিবাসীদের ব্রিটেন থেকে বের করে দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়। ১৯৪০ থেকে ১৯৭০ এর দশক পর্যন্ত ব্রিটেনে আসা এসব অভিবাসী তা তাদের আত্মীয়দের অবৈধ অভিবাসী ঘোষণার পরিকল্পনার কথা সামনে আসলে ব্রিটেনে বিতর্ক শুরু হয়। গত সপ্তাহে সামনে আসা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যামবার রুডের পূর্ণাঙ্গ  চিঠিটি গত রবিবার প্রকাশ করে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান। প্রধানমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে আরও দশ শতাংশ বেশি অবৈধ অভিবাসীকে বের করে দেওয়ার কথা জানানো হয়। এর জের ধরেই বিতর্কের মুখে পড়েন অ্যামবার রুড।